ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

Gopi

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
Contents Show

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

শ্রমিক শ্রেণির সার্বিক তথা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির অংশগ্রহণ

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বোম্বাই -এর শ্রমিক শ্রেণি –

ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনার দিন থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত অর্থাৎ 1942 খ্রিস্টাব্দের 9 থেকে 14 আগস্ট বোম্বাইতে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে গণবিক্ষোভ ঘটে। শিল্পাঞ্চল ও বন্দর এলাকায় ধর্মঘট পালিত হয়। সরকারি প্রশাসন সাময়িক লোপ পায়। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার পুলিশ ও সেনা তলব করে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গুজরাটের শ্রমিক শ্রেণি –

মজদুর মহাজন সঙ্ঘের পরিচালনায় আমেদাবাদের বস্ত্রশিল্পের প্রায় 1 লক্ষ 25 হাজার শ্রমিক ধর্মঘটে শামিল হয়। তারা আজাদ সরকার নামে একটি সমান্তরাল প্রশাসন গড়ে তোলে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বিহারের শ্রমিক শ্রেণি –

এখানে টাটা লৌহ ইস্পাত কারখানার শ্রমিকরা 10-13 আগস্ট টানা চারদিন ধর্মঘট করে। তারা দাবির জানায় যে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবে। 12 আগস্ট ডালমিয়া নগরে শ্রমিক ধর্মঘট সংঘটিত হয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মহীশূরের শ্রমিক শ্রেণি –

ব্যাঙ্গালুরু শিল্পাঞ্চল ও বিভিন্ন খনি অঞ্চলে শ্রমিক ধর্মঘট হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ গুলি চালায়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অন্যান্য রাজ্যের শ্রমিক শ্রেণি –

এগুলি ছাড়া দিল্লি, লক্ষ্ণৌ, কানপুর, নাগপুর, মাদ্রাজ, কলকাতা প্রভৃতি স্থানেও স্বতঃস্ফূর্ত শ্রমিক ধর্মঘট সংঘটিত হয়।

ভারতে শ্রমিক আন্দোলনের সূচনালগ্ন থেকেই কমিউনিস্টরা এই আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত থাকলেও ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক শ্রেণি বামপন্থীদের সাহায্য বা সহযোগিতা কোনোটাই পায়নি। তৎসত্ত্বেও ভারত ছাড়ো আন্দোলন পর্বে শ্রমিক শ্রেণির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা নিঃসন্দেহে স্মরণীয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির অংশগ্রহণ কেমন ছিল?

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিক শ্রেণির অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও ব্যাপক। বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ও কারখানায় ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও সমান্তরাল সরকার গঠনের মাধ্যমে তারা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বোম্বাইয়ের শ্রমিকরা কীভাবে আন্দোলনে অংশ নেয়?

1942 সালের 9 থেকে 14 আগস্ট বোম্বাইয়ের শ্রমিকরা ব্যাপক ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সংগঠিত করে। শিল্প ও বন্দর এলাকায় কর্মবিরতির ফলে সরকারি প্রশাসন অচল হয়ে পড়ে। ব্রিটিশ সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করে।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে গুজরাটের শ্রমিকদের ভূমিকা কী ছিল?

আমেদাবাদের মজদুর মহাজন সঙ্ঘ-এর নেতৃত্বে প্রায় 1 লক্ষ 25 হাজার বস্ত্রশ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেয়। তারা “আজাদ সরকার” নামে একটি সমান্তরাল প্রশাসন গঠন করে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে বিহারের শ্রমিকরা কীভাবে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে?

বিহারের টাটা লৌহ ও ইস্পাত কারখানার শ্রমিকরা 10 থেকে 13 আগস্ট টানা চারদিন ধর্মঘট করে। তাদের দাবি ছিল—জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবে না। 12 আগস্ট ডালমিয়া নগরেও বড় ধর্মঘট সংঘটিত হয়।

ভারত ছাড়ো আন্দোলনে মহীশূর ও অন্যান্য অঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলন কেমন ছিল?

মহীশূরে ব্যাঙ্গালুরু শিল্পাঞ্চল ও খনি এলাকায় শ্রমিক ধর্মঘট হয়, যা দমন করতে পুলিশ গুলি চালায়। এছাড়া দিল্লি, লক্ষ্ণৌ, কানপুর, নাগপুর, মাদ্রাজ ও কলকাতায় স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘট ও বিক্ষোভ দেখা দেয়।

কমিউনিস্টরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের সমর্থন দিয়েছিল কি?

না, ভারত ছাড়ো আন্দোলনে কমিউনিস্টরা শ্রমিকদের সমর্থন দেয়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তারা ব্রিটিশদের সমর্থন করায়, তারা এই আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তবে শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

শ্রমিকদের ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

শ্রমিক শ্রেণির ব্যাপক অংশগ্রহণ ভারত ছাড়ো আন্দোলনকে গণআন্দোলনে রূপ দিয়েছিল। তাদের ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও সমান্তরাল সরকার গঠনের প্রচেষ্টা ব্রিটিশ শাসনের ভিত নাড়া দিয়েছিল। এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে শ্রমিকদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শ্রমিকদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?

মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?

বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?

বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?

রশিদ আলি দিবসকে কেন্দ্র করে কলকাতা কীভাবে গণআন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল?

রশিদ আলি দিবসকে কেন্দ্র করে কলকাতা কীভাবে গণআন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল?

About The Author

Gopi

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

পাঁচটি কঠিন বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আলোচনা করো।

নর্দমার জলকে কীভাবে পরিশোধন করা হয়?

BOD এবং COD বলতে কী বোঝো?

মাতঙ্গিনী হাজরা বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম কেন?

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা লেখো।