আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ” -এর “বায়ুর বিভিন্ন কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বারখান বালিয়াড়ির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
বায়ুর গতিপথে আড়াআড়িভাবে গড়ে-ওঠা অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়িকে বারখান বলা হয়। বারখানের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে, যেমন –
- বারখানের বায়ুমুখী ঢাল খাড়া হয় না এবং উত্তল আকৃতির হয়। কিন্তু বিপরীত দিকের ঢাল খুব খাড়া এবং অবতল আকৃতির হয়।
- বারখানের দুই পাশে দুটি শিং -এর মতো শিরা আধখানা চাঁদের দুই প্রান্তের মতো বিস্তৃত হয়।
- বারখানের উচ্চতা সাধারণত 15 থেকে 30 মিটার পর্যন্ত হয় এবং এক-একটি বারখান প্রায় 5 থেকে 200 মিটার পর্যন্ত স্থান জুড়ে অবস্থান করে।
- সমতল জায়গায় একসঙ্গে অনেকগুলি বারখান পরপর গড়ে উঠতে পারে, তবে এগুলি সাধারণত অস্থায়ী বা চলমান বালিয়াড়ি হয়।
সিফ বালিয়াড়ির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
প্রবহমান বায়ুর গতিপথের সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে-ওঠা খুব দীর্ঘ কিন্তু সংকীর্ণ বালিয়াড়িকে বলা হয় সিফ। এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
- সিফ বালিয়াড়ি 100 কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর উচ্চতা 100 মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
- অনেকসময় পরস্পর সমান্তরালভাবে অনেকগুলি সিফ বালিয়াড়ি গড়ে উঠতে দেখা যায়।
- কখনো-কখনো প্রবল বায়ুপ্রবাহে অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়ি বা বারখানের মাঝের অংশ ক্ষয় হয়ে যায় এবং দুই পাশে শিং -এর মতো শিরা দুটি ক্রমশ বড়ো হয়ে অনুদৈর্ঘ্য বা সিফ বালিয়াড়িরূপে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠে।
- দুটি সিফ বালিয়াড়ির মধ্যবর্তী অংশকে করিডোর বলে। এর মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবল বেগে সোজাসুজি প্রবাহিত হয়।
- বালিয়াড়ির শীর্ষদেশ তীক্ষ্ণ করাত আকৃতির হয়।
বারখান ও সিফ বালিয়াড়ির মধ্যে পার্থক্য লেখো।
বারখান ও সিফ বালিয়াড়ির পার্থক্যগুলি হল –
| বিষয় | বারখান | সিফ বালিয়াড়ি | 
| অর্থ | বারখান একটি তুর্কি শব্দ। যার অর্থ কিরঘিজ স্তেপের বালির পাহাড়। | সিফ একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ সোজা তরবারি। | 
| অবস্থান বায়ুর সাথে | এটি বায়ুর গতিপথের সাথে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠে। | এটি বায়ুর গতিপথের সাথে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠে। | 
| আকৃতি | এটি দেখতে অর্ধবৃত্তাকার। | এটি দেখতে তরবারির মতো। | 
| শিরার উপস্থিতি | বারখানের দুই প্রান্তে দুটি শিং -এর মতো শিরা অবস্থান করে। | সিফের প্রান্তভাগে কোনো শিরা থাকে না। | 
মরু অঞ্চলে বায়ুর কার্যের প্রাধান্য লক্ষ করা যায় কেন?
মরু অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশে বায়ুর কার্যের প্রাধান্যলাভের প্রধান কারণ –
- উষ্ণতার প্রসর – মরু অঞ্চলে দৈনিক ও বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর খুব বেশি হওয়ায় যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় শিলা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় পরিণত হয়। পরে বায়ু এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলি দিয়ে অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের শিলা যেমন ক্ষয় করে, তেমনি এগুলি উড়িয়ে নিয়ে অন্যত্র জমা করে ভূমিরূপ গঠন করে।
- বৃষ্টিপাতের স্বল্পতা – বৃষ্টিপাতের স্বল্পতার জন্য মরু অঞ্চলে গাছপালা দেখা যায় না। গাছ বায়ুপ্রবাহকে বাধা প্রদান করে এবং বালিকণাকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে অগ্রসর হতে দেয় না। ফলে বৃক্ষশূন্যতাও মরু অঞ্চলে বায়ুর সক্রিয়তাকে সাহায্য করে।
লোয়েস ভূমি বা লোয়েস সমভূমি কী?
ধারণা – বায়ুবাহিত পীতরঙের চুনময় প্রবেশ্য সূক্ষ্ম কণাসমূহ লোয়েস নামে পরিচিত।
সৃষ্টির পদ্ধতি – সূক্ষ্ম কণাসমূহ মরুভূমি অথবা বহিঃধৌত সমভূমি থেকে বায়ুর দ্বারা বাহিত হয়ে ও বহু দূরে সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভূমিরূপের সৃষ্টি করে, তাকে লোয়েস ভূমি বা লোয়েস সমভূমি বলা হয়। উদাহরণ – মধ্য এশিয়ার গোবি মরুভূমি থেকে প্রতি বছর শীতের সময় মৌসুমি বায়ুর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বালিরাশি উত্তর চিনের হোয়াংহো নদী উপত্যকায় সঞ্চিত হয়ে লোয়েস ভূমি গঠন করেছে। এর গভীরতা 30 থেকে 200 মিটার। একইভাবে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি থেকে বালি উড়ে এসে ইজরায়েলের দক্ষিণাংশে লোয়েস ভূমি গঠন করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য স্থানেও কিছু লোয়েস ভূমি দেখা যায়, যেমন – ইউরোপের ফ্রান্সে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি-মিসৌরি নদী উপত্যকার কোনো কোনো স্থানে এবং ভারতের উত্তর গুজরাতে।

ইয়ারদাং ও বারখান -এর মধ্যে প্রভেদ কী?
ইয়ারদাং ও বারখান -এর মধ্যে প্রধান প্রভেদগুলি হল –
| বিষয় | ইয়ারদাং | বারখান | 
| প্রকৃতি | বায়ুর ক্ষয়জাত ভূমিরূপ হল ইয়ারদাং। | বায়ুর সঞ্চয়জাত ভূমিরূপ হল বারখান। | 
| বায়ুর কার্যগত প্রক্রিয়া | বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় ইয়ারদাং গঠিত হয়। | বায়ুর সঞ্চয়কার্যের প্রক্রিয়াগুলি বারখান গঠনে সাহায্য করে। | 
| আকৃতি | ইয়ারদাং বিচিত্র আকৃতির শৈলশিরার মতো দেখতে হয়। | আধখানা চাঁদ বা অর্ধচন্দ্রাকৃতি বালিয়াড়ি হল বারখান। | 
| উপাদান | কঠিন শিলা দিয়ে ইয়ারদাং গঠিত হয়। | বারখান গঠিত হয় বালির স্তূপ দিয়ে। | 
| উচ্চতা | ইয়ারদাং -এর উচ্চতা 6-15 মিটার পর্যন্ত হয়। | বারখান বালিয়াড়ির উচ্চতা 30 মিটার পর্যন্ত হয়। | 
বায়ুর অপসারণের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপগুলি কী কী?
বায়ুর অপসারণের ফলে মরু অঞ্চলে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। যেমন –
- ধান্দ – তীব্র বায়ুপ্রবাহে মরু অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠ থেকে বালি অপসারিত হওয়ার ফলে ছোটো-বড়ো নানা আয়তনের গর্তের সৃষ্টি হয়। রাজস্থানের মরু অঞ্চলে এই ধরনের ছোটো-বড়ো বিভিন্ন আয়তনের গর্তগুলিকে বলা হয় ধান্দস।
- অপসারণসৃষ্ট গর্ত বা ব্লো আউট – অনেক সময় বায়ুর অপসারণ ক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠে সুবিশাল অবনত অঞ্চল বা গর্তের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ – মিশরের কাতারা হল একটি অবনত ভূমি।
- মরূদ্যান – বিশাল অঞ্চল জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে বালি অপসারিত হতে হতে যদি অবনত অংশটির গভীরতা ভূগর্ভের জলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তবে সেখানে মরূদ্যান (oasis) গড়ে ওঠে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধ একটি বিশালাকৃতি মরূদ্যানের ওপর অবস্থিত।

পেডিমেন্ট ও বাজাদা -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
পেডিমেন্ট ও বাজাদা -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
| বিষয় | পেডিমেন্ট | বাজাদা | 
| ধারণা | মরু অঞ্চলে পর্বতের পাদদেশে বায়ু ও জলধারার সম্মিলিত কাজের ফলে গঠিত মৃদু ঢালযুক্ত কঠিন শিলাগঠিত সমভূমিকে পেডিমেন্ট বলে। | পেডিমেন্টের পরবর্তী অঞ্চলে পলি সঞ্চিত হয়ে যে সমতল ভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে বাজাদা বলে। | 
| প্রকৃতি | বায়ু ও সাময়িক জলধারার সম্মিলিত ক্ষয়কাজের ফলে পেডিমেন্ট গড়ে ওঠে। | পেডিমেন্টের নীচের অংশে সাময়িক জলধারার সঞ্চয় কার্যে বাজাদা গড়ে ওঠে। | 
| পৃষ্ঠদেশ | পেডিমেন্টের পৃষ্ঠদেশ প্রায় সমতল বা অবতল হয়। | বাজাদার পৃষ্ঠদেশ তরঙ্গায়িত এবং অমসৃণ হয়। | 
বায়ুর ক্ষয়কার্যের প্রভাব কোথায় সর্বাপেক্ষা বেশি?
পৃথিবীর যেসব এলাকায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 25 সেন্টিমিটারের কম সেইসব উষ্ণ মরু অঞ্চল বা মরুপ্রায় অঞ্চলে স্বাভাবিক উদ্ভিদ খুবই কম জন্মায়। ফলে ভূমি প্রায় অনাবৃত এবং চারপাশ উন্মুক্ত থাকে বলে বায়ু তীব্র গতিতে প্রবাহিত হয় ও ক্ষয়কার্য করে। তা ছাড়া, এইসব অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাধান্যের জন্য স্বাভাবিকভাবে প্রচুর শিলাচূর্ণ, বালিকণা প্রভৃতির সৃষ্টি হয়। এজন্য উষ্ণ-মরু অঞ্চল তথা শুষ্ক অঞ্চলেই বায়ুর ক্ষয়কার্যের প্রভাব সর্বাপেক্ষা বেশি হয়।
উপকূল অঞ্চলে বায়ুর কাজ বেশি কার্যকরী কেন?
উপকূল অঞ্চলে বায়ুর কাজ বেশি কার্যকরী কারণ –
- বাধাহীন উপকূল – বাতাস বাধাহীনভাবে সমুদ্রের দিক থেকে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসে তাই উপকূলীয় অংশের বালিকে সহজে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।
- সমুদ্রের তরঙ্গ – উপকূলভাগে সমুদ্রের ঢেউ আছাড় খেয়ে খেয়ে শিলা ভেঙে বালিতে পরিণত করে।
- বালি সঞ্চয় – উপকূলের ওইসব বালি সমুদ্রের বাতাস উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে কাছাকাছি কোথাও জমা করে বালিয়াড়ি তৈরি করতে পারে। দিঘা এবং কাঁথি অঞ্চলে এমন বালিয়াড়ি দেখা যায়।
পৃথিবীর কোথায় কোথায় মরুভূমি দেখা যায়?
পৃথিবীর মোট স্থলভাগের প্রায় ভাগ \(\frac13\) বা \(30\) ভাগ মরুভূমির অন্তর্গত। এগুলি রয়েছে নিম্ন অক্ষাংশে এবং মধ্য অক্ষাংশে।
- নিম্ন অক্ষাংশের মরুভূমি – পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে 20°-30° অক্ষাংশের মধ্যে মহাদেশের পশ্চিমদিকে সবচেয়ে বেশি মরুভূমি গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে –- আফ্রিকার সাহারা ও কালাহারি;
- এশিয়ার আরব মরুভূমি, বালুচিস্তানের মরুভূমি বা থর;
- উত্তর আমেরিকার সোনোরান;
- দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা;
- অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম অস্ট্রেলীয় মরুভূমি উল্লেখযোগ্য।
 
- মধ্য অক্ষাংশের মরুভূমি –- এশিয়ার গোবি, তাকলামাকান, তুর্কিস্তানের মরুভূমি;
- উত্তর আমেরিকার মোহাভি ও কলোরাডো মরুভূমি মধ্য অক্ষাংশের মরুভূমি।
 
মরুভূমিতে বালুকাকণা কীভাবে সৃষ্টি হয়?
মরুভূমিতে যেমন বৃষ্টি হয় না, তেমনি সেখানে বালির কণা সঞ্চিত হয়ে বালির সাগর তৈরি হয়। এই বালির কণা সৃষ্টির মূল কারণ হল প্রধানত উষ্ণতার পার্থক্য। দিনেরবেলা মরুভূমির উষ্ণতা প্রায় 45°C-50°C বা তার বেশি উঠে যায়। আবার, রাতে তাপমাত্রা প্রায় 8°C-10°C -এর কাছাকাছি নেমে আসে। এতে শিলার খনিজগুলি ক্রমাগত ভিন্ন ভিন্ন হারে প্রসারিত ও সংকুচিত হয়। এভাবে শিলার যান্ত্রিক আবহবিকার ঘটে ও শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে বালির কণায় পরিণত হয়। গ্র্যানাইট, নিস্ প্রভৃতি শিলাখণ্ডগুলি ভেঙে বালির কণার সৃষ্টি করে। এইসব কণার মধ্যে কোয়ার্টজ কণা থাকে। যা শিলাকে ক্ষয় করতে সাহায্য করে।
মরূদ্যান কীভাবে সৃষ্টি হয়?
মরু অঞ্চলে বায়ুর অপসারণ প্রক্রিয়ার ফলে মরুভূমির বালি এক স্থান থেকে আর-এক স্থানে উড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে মরুভূমির কোনো অংশে এই প্রক্রিয়া চললে সেই স্থানের ভূমিভাগ ক্রমশ অবনত হয়। এইভাবে বালি অপসারিত হতে হতে যখন অবনত এলাকাটির গভীরতা ভূগর্ভের জলস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তখন সেখানে মরূদ্যান সৃষ্টি হয়।
মোনাজনক ও ইনসেলবার্গ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মোনাডনক ও ইনসেলবার্গ -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
| বিষয় | মোনাজনক | ইনসেলবার্গ | 
| ধারণা | সমপ্রায়ভূমিতে কঠিন শিলাগঠিত অনুচ্চ টিলা বা পাহাড় হল মোনাডনক। | মরুসমপ্রায়ভূমির ওপরে কঠিন শিলাগঠিত অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্গ বলে। | 
| সৃষ্টি | এটি নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত হয়। | এটি বায়ু ও জলধারার কার্যের ফলে গঠিত হয়। | 
| আকৃতি | এটা দেখতে অনেকটা ওলটানো গামলার মতো হয়। | এটি খাড়া ঢালযুক্ত দ্বীপের মতো বিচ্ছিন্ন। | 
| অবস্থান | এটি আর্দ্র জলবায়ুতে দেখা যায়। | এটি শুষ্ক মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যায়। | 
মেসা ও বিউট -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মেসা ও বিউট -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
| বিষয় | বিউট | বিউট | 
| শব্দার্থ | স্পেনীয় শব্দ মেসার অর্থ টেবিল। অর্থাৎ এগুলি টেবিলের মতো দেখতে। | ফরাসি শব্দ ‘বিউট’ -এর অর্থ ক্ষুদ্র পাহাড়। মেসা অতিরিক্ত ক্ষয়ে গিয়ে ঢিপির মতো দেখতে হয়। | 
| আকৃতি | এগুলির আকার এবং আকৃতি বৃহৎ হয়। | এগুলির আকার ছোটো হয়। | 
| উপরিপৃষ্ঠ | বায়ুর ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট এই ভূমিভাগের ওপরের অংশ সমতল ও টেবিলের মতো হয়। | এগুলির উপরিভাগ কিছুটা অসমতল হয়। | 
মরু সম্প্রসারণের কারণগুলি আলোচনা করো।
ধারাবাহিকভাবে মরুভূমির সম্প্রসারণ তথা আয়তন বৃদ্ধিকে বাংলায় মরুকরণ এবং ইংরেজিতে ডেজার্টটিফিকেশন বলে। কোথাও প্রাকৃতিক কারণে, আবার কোথাও মানুষের ক্রিয়াকলাপে মরুভূমির সম্প্রসারণ ঘটে। যেমন –
মরুভূমি সম্প্রসারণের প্রাকৃতিক কারণ –
- মরুভূমি থেকে আগত বালিপূর্ণ বাতাসের মাধ্যমে মরু-সংলগ্ন অঞ্চলে বালি জমা হতে হতে ধীরে ধীরে মরুভূমির সম্প্রসারণ ঘটে।
- বার বার খরা হলে মাটি এতটাই শুক হয়ে যায় যে, সেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল-সহ সমগ্র বস্তুতন্ত্রেই চরম বিপর্যয় নেমে আসে। এরকম অবস্থা মরুভূমি-সংলগ্ন অঞ্চলে মরুভূমির সম্প্রসারণ ঘটায়।
- বর্তমানে বিশ্বউষ্ণায়নের জন্য আবহাওয়া তথা জলবায়ুর যে পরিবর্তন ঘটছে, তা মরুভূমির সম্প্রসারণে অনুকূল প্রভাব ফেলেছে।
মরুভূমি সম্প্রসারণের মনুষ্যসৃষ্ট কারণ – মরুভূমি-সংলগ্ন অঞ্চলে-
- ব্যাপকহারে বৃক্ষচ্ছেদন,
- অনিয়ন্ত্রিত বা অতিরিক্ত পশুচারণ,
- অবৈজ্ঞানিক প্রথায় কৃষিকাজ,
- অবৈজ্ঞানিক প্রথায় জলসেচ (এর ফলে মাটির লবণতা বৃদ্ধি পেয়ে তা চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ে, যা মরুকরণে সাহায্য করে) প্রভৃতি মনুষ্যসৃষ্ট কারণে মরুভূমির সম্প্রসারণ ঘটে।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ” -এর “বায়ুর বিভিন্ন কাজ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
 





মন্তব্য করুন