এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?
স্বল্পদৃষ্টি (মায়োপিয়া) –
এই ত্রুটিযুক্ত চোখে কাছের জিনিস স্পষ্টভাবে দেখলেও দূরের জিনিস স্পষ্টভাবে দেখা যায় না। এক্ষেত্রে দূরের বস্তু থেকে আগত রশ্মিগুচ্ছ চোখের লেন্সে প্রতিসৃত হয়ে রেটিনায় প্রতিবিম্ব সৃষ্টি না করে রেটিনার সামনের কোনো বিন্দুতে প্রতিবিম্ব সৃষ্টি করে। উপযোজন ক্ষমতা প্রয়োগ করেও এই প্রতিবিম্বকে রেটিনার ওপর ফেলা যায় না এবং এক্ষেত্রে দূর বিন্দু স্বাভাবিক অসীম দূরত্বে না থেকে চোখের কাছে সরে আসে। সাধারণত রেটিনার আকার সুস্থ চোখের চেয়ে বেশি হলে বা চোখের লেন্সের ফোকাস দূরত্ব কমে গেলে অথবা কর্নিয়া তলের বক্রতা বৃদ্ধিতে এই ধরনের ত্রুটি দেখা যায়।

স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটির প্রতিকার –
এক্ষেত্রে রশ্মিগুচ্ছকে কম অভিসারী করে রেটিনায় ফেললে প্রতিবিম্ব রেটিনায় সৃষ্টি হওয়ায় বস্তুকে সঠিকভাবে দেখা যাবে-তাই চোখের সামনে উপযুক্ত ফোকাস দৈর্ঘ্যের অবতল লেন্স ব্যবহার করে সমান্তরাল রশ্মিগুচ্ছকে এমনভাবে অপসারী রশ্মিগুচ্ছে পরিণত করা হয় যে চোখের লেন্সে রশ্মিগুচ্ছ দূর বিন্দু P থেকে আসছে বলে মনে হয়। এর ফলে প্রতিবিম্ব রেটিনায় গঠিত হওয়ায় চোখ বস্তুকে দেখতে পায়।
এই কারণে হ্রস্বদৃষ্টি বা স্বল্পদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যক্তি ঋণাত্মক ক্ষমতাযুক্ত চশমা ব্যবহার করেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
স্বল্পদৃষ্টি বা মায়োপিয়া কাকে বলে?
স্বল্পদৃষ্টি (মায়োপিয়া) হলো চোখের একটি সাধারণ ত্রুটি যেখানে কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখা গেলেও দূরের বস্তু ঝাপসা দেখা যায়। এর কারণ হলো চোখের লেন্স বা কর্নিয়ার বক্রতার সমস্যা, যার ফলে আলোকরশ্মি রেটিনার সামনে ফোকাস করে।
স্বল্পদৃষ্টির প্রধান লক্ষণগুলো কী কী?
স্বল্পদৃষ্টির প্রধান লক্ষণগুলো হল –
1. দূরের বস্তু ঝাপসা দেখা,
2. চোখ চোখে চাপ বা ক্লান্তি অনুভব,
3. মাথাব্যথা,
4. রাতে দৃষ্টিশক্তি আরও খারাপ হওয়া,
5. চোখ কুঁচকে করে দেখার প্রবণতা।
স্বল্পদৃষ্টির কারণ কী?
স্বল্পদৃষ্টির কারণ হল –
1. চোখের গঠনগত সমস্যা – রেটিনা থেকে লেন্সের দূরত্ব বেশি হলে (চোখ লম্বা হলে)।
2. লেন্স বা কর্নিয়ার বক্রতা বেশি হলে ফোকাস দূরত্ব কমে যায়।
3. জিনগত কারণ – বাবা-মায়ের স্বল্পদৃষ্টি থাকলে সন্তানেরও হতে পারে।
4. পরিবেশগত কারণ – দীর্ঘক্ষণ কাছের কাজ (মোবাইল, বই পড়া) করা।
স্বল্পদৃষ্টি কীভাবে শনাক্ত করা যায়?
একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ (অপথ্যালমোলজিস্ট) বা অপটোমেট্রিস্ট চোখের পরীক্ষা করে স্বল্পদৃষ্টি নির্ণয় করতে পারেন। সাধারণত একটি স্নেলেন চার্ট বা অটোরিফ্র্যাক্টোমিটার যন্ত্রের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি পরিমাপ করা হয়।
স্বল্পদৃষ্টির চিকিৎসা বা প্রতিকার কী?
স্বল্পদৃষ্টির চিকিৎসা বা প্রতিকার হল –
1. চশমা – ঋণাত্মক (অবতল) লেন্স ব্যবহার করে আলোকরশ্মিকে সঠিকভাবে রেটিনায় ফোকাস করানো হয়।
2. কন্টাক্ট লেন্স – চশমার বিকল্প হিসেবে নরম বা হার্ড লেন্স ব্যবহার করা যায়।
3. লেজার সার্জারি – কর্নিয়ার আকৃতি পরিবর্তন করে স্থায়ী সমাধান দেওয়া যায়।
4. অর্থোকেরাটোলজি – বিশেষ রাতের কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করে সাময়িকভাবে দৃষ্টিশক্তি উন্নত করা যায়।
স্বল্পদৃষ্টি কি সারাজীবন থাকে?
সাধারণত এটি স্থায়ী সমস্যা, তবে বয়সের সাথে পরিবর্তন হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চাদের স্বল্পদৃষ্টি বয়স বাড়ার সাথে কমে, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে স্থায়ী হয়।
স্বল্পদৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কী?
হ্যাঁ, বিশেষ করে কিশোর বয়সে দৃষ্টিশক্তি দ্রুত খারাপ হতে পারে। নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো এবং সঠিক চশমা ব্যবহার করলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি কাকে বলে? কীভাবে স্বল্পদৃষ্টিজনিত ত্রুটি দূর করা যায়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন