আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” -এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ “সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কলকারখানার বর্জ্য বলতে কী বোঝ?
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই, রং, রাসায়নিক দ্রব্য, আকরিক নিষ্কাশন প্রক্রিয়ায় নির্গত বিভিন্ন ধাতু, এসব হল কারখানার বর্জ্য বস্তু। এসব বন্ধু সরাসরি প্রকৃতিতে ফিরে এলে পরিবেশের খুব ক্ষতি হয়।
চিকিৎসা-সংক্রান্ত বর্জ্য বলতে কী বোঝ?
চিকিৎসাক্ষেত্র থেকে নির্গত বর্জ্য হল চিকিৎসা-সংক্রান্ত বর্জ্য। ওষুধের ফয়েল, ইনজেকশনের সিরিঞ্জ, বাতিল ওষুধ, তুলো, রক্তমাখা গজ, টেস্ট টিউব কাচ, কাটা প্লাস্টার ইত্যাদি হল চিকিৎসা-সংক্রান্ত বর্জ্য। এর মধ্যে ক্যাথিটার, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ হল বিষাক্ত বর্জ্য।
ওপেন ডাম্পিং বা উন্মুক্ত বর্জ্য জমা কী?
সাধারণভাবে শহরের কাছে, নীচু খোলা জমিতে বর্জ্য উন্মুক্তভাবে ফেলে রাখাকে ওপেন ডাম্পিং বা উন্মুক্ত বর্জ্য জমা বলে। এই পদ্ধতির খরচ খুব কম এবং রক্ষণাবেক্ষণেও তেমন খরচ হয় না। কলকাতার ধাপার মাঠে এমন ওপেন ডাম্পিং -এর ব্যবস্থা রয়েছে।

জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য কী?
জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য বলতে সেইসব বর্জ্যকে বোঝায় যেগুলি মাটি বা জলের মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হতে পারে। সবজি, পাতা, ফল, ফুল ইত্যাদি বর্জ্য জৈব ভঙ্গুর বর্জ্যের উদাহরণ।
জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য কী?
যেসব বর্জ্য পদার্থ অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হতে পারে না, ফলে দীর্ঘদিন প্রকৃতিতে একইরকমভাবে থেকে যায় তাকে জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য বলে। প্লাস্টিক, কাচ, পলিথিন, ডিডিটি হল এই ধরনের বর্জ্য। এরা পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে।
বিষাক্ত বর্জ্য কী?
যেসব বর্জ্য জীবজগতের ওপর খারাপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, তাদের বিষাক্ত বর্জ্য বলে। বিষাক্ত বর্জ্যও জীব অবিশ্লেষ্য বর্জ্য। ডিডিটি, প্লাস্টিক, কীটনাশক প্রভৃতি হল বিষাক্ত বর্জ্য।
অবিষাক্ত বর্জ্য কী?
যেসব বর্জ্য জীবজগতের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারে না, তাদের অবিষাক্ত বর্জ্য বলে। এসব বর্জ্য মূলত জীব বিশ্লেষ্য পদার্থ। খাবারের অবশিষ্ট অংশ বা বাড়িতে উৎপাদিত জৈব বর্জ্য, কৃষিতে সৃষ্ট বর্জ্য প্রভৃতি এই ধরনের বর্জ্য।
বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার বলতে কী বোঝ?
বাড়ির ছেঁড়া কাপড়, কাগজ, বাতিল পদার্থকে পুনরায় অন্য কাজে ব্যবহার করা হল বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার। বর্তমানে বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
লিচেট কাকে বলে?
বৃষ্টির জল ল্যান্ডফিলের বর্জ্য পদার্থ ধুয়ে জলাশয়ে বা ভৌমজলে মেশে। এইসব ময়লা ধোয়া বা বর্জ্য ধোয়া জলকে লিচেট (leachate) বলে। লিচেট ভৌমজলকে দূষিত করে। ফলে নদী, পুকুরের জলও দূষিত হয়।

পুনঃচক্রীকরণ কী?
অথবা, পুনর্নবীকরণ বলতে কী বোঝ?
বিভিন্ন কঠিন বর্জ্য পদার্থকে সামান্য পরিশোধন ও প্রক্রিয়াকরণ করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী বস্তুতে পরিণত করার পদ্ধতিকে বলা হয় পুনঃচক্রীকরণ বা পুনর্নবীকরণ বা পুনরাবর্তন। ভাঙা কাচ, ছেঁড়া কাপড়, টায়ার, প্লাস্টিক দ্রব্যকে একেবারে বাতিল না করে সেগুলি থেকে আবার নতুন দ্রব্য বানানো যায়। যেমন – ভাঙা কাচ থেকে নতুন কাচের দ্রব্য, ছেঁড়া কাপড় থেকে কাগজ তৈরি প্রভৃতি।
আখের ছিবড়ে বা বাগাসে কী?
চিনিকলগুলি থেকে প্রচুর পরিমাণ আখের ছিবড়ে উৎপন্ন হয়। এই বর্জ্য দিয়ে কাগজের মণ্ড (paper pulp) বানানো যায় যা থেকে কাগজ তৈরি হয়।
পরিবেশ মিত্র বর্জ্য কী?
যেসব বর্জ্য পরিবেশের ক্ষতি করে না, তাদের পরিবেশ মিত্র বর্জ্য বলে। টিন, লোহা, স্টিল, মাটি, চট, কাগজ এসব হল পরিবেশ মিত্র বর্জ্য।
ভাগীরথী-হুগলি নদীতে অতিদূষণের কারণ কী?
ভাগীরথী-হুগলি নদীর দু-পাশে স্থাপিত অসংখ্য কলকারখানা থেকে তরল এবং কঠিন আবর্জনা নদীতে পড়ছে। অন্যদিকে, জলযানের তেল, মোবিল, মূর্তি বিসর্জন ভাগীরথী-হুগলিকে দূষিত করছে, হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পকেন্দ্রের বর্জ্যও হুগলি নদীর জলদূষণের অন্যতম কারণ।
পরিবেশের ওপর কঠিন বর্জ্যের দুটি কুপ্রভাব লেখো।
পরিবেশের ওপর কঠিন বর্জ্যের দুটি কুপ্রভাব হল –
- কঠিন বর্জ্য বহুদিন ধরে মাটির ওপর পড়ে থাকলে সেখানকার জল ও মাটিকে দূষিত করতে পারে। এতে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের মৃত্যু হতে পারে।
- কঠিন বর্জ্য ড্রেন বা পয়ঃপ্রণালী দিয়ে প্রবাহিত বর্জ্যকে বাধা প্রদান করে। এর ফলে রাস্তার পাশের ড্রেন অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝ?
যে কার্যকরি পরিচালন পদ্ধতির মাধ্যমে বর্জ্য বস্তুর সংগ্রহ, অপসারণ, পরিবহণ, শোধন, ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস ও পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করা হয়, তাকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে। প্রকৃতপক্ষে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কোনো একক কাজ নয়, অনেকগুলি কাজের সমষ্টি। এই ব্যবস্থাপনার প্রধান দিকগুলি হল –
- বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস,
- বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার এবং
- বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ।
কম্পোস্টিং কাকে বলে?
কম ক্ষতিকারক জৈব বর্জ্য থেকে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সাহায্যে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার উৎপাদনের পদ্ধতিকে কম্পোস্টিং বলে। দুটি পদ্ধতিতে এই কম্পোস্টিং হয় –
- মাটিতে পরিখা বা ট্রেঞ্চের মত লম্বা গর্ত করে তার মধ্যে নানা ধরনের জৈব বর্জ্য ফেলে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি দ্বারা বিয়োজন এবং
- যান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ একটি যন্ত্রের মধ্যে জৈব বর্জ্যগুলিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে তার মধ্যে ব্যাকটেরিয়া মিশিয়ে বিয়োজন।

পৌরসভার বর্জ্য বলতে কী বোঝ?
শহরের বা পৌর এলাকার বাড়ি, অফিস, বিদ্যালয়, বাজার, রেস্টুরেন্ট, হোটেল প্রভৃতি স্থানে সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থকে পৌরসভার বর্জ্য বলে। এর মধ্যে থাকে শাকসবজির অবশিষ্টাংশ, ছেঁড়া কাগজ, শিশি-বোতল, ছেঁড়া কাপড়, ডাবের খোলা, পলিথিন ব্যাগ, ভাঙা প্লাস্টিক, ধাতব টুকরো প্রভৃতি।
বর্জ্য পদার্থ কী?
‘বর্জ্য’ কথাটির অর্থ ‘যা বর্জনযোগ্য’। যে-কোনো কঠিন, তরল কিংবা গ্যাসীয় পদার্থ, যেগুলি আমাদের কাজে লাগে না, অপ্রয়োজনীয় এবং ব্যবহারের অযোগ্য, তাই ফেলে দেওয়া প্রয়োজন, সেগুলিকেই বলে বর্জ্য পদার্থ। এগুলি সাধারণত তিন প্রকার –
- কঠিন বর্জ্য (যেমন – ভাঙা কাচ, ভাঙা প্লাস্টিক, ধাতব টুকরো ইত্যাদি),
- তরল বর্জ্য (পোড়া তেল, প্রাণীর মলমূত্র, ডিটারজেন্ট ও সাবান মিশ্রিত জল ইত্যাদি) এবং
- গ্যাসীয় বর্জ্য (সালফার ডাইঅক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরোকার্বন প্রভৃতি)।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি প্রয়োজনীয়তা লেখো।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুটি প্রয়োজনীয়তা হল –
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করলে, জল, মাটি, বায়ুদূষণ অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
- বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা ভালো হলে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
ওশান ডাম্পিং কী?
সমুদ্রে আবর্জনা ফেলাকে ওশান ডাম্পিং বলে। সমুদ্রতীর থেকে জলের দিকে প্রায় 300 কিমি দূরে 10000 ফুট গভীরতায় প্রতিবছর দুকোটি টন কঠিন বর্জ্য মহাসমুদ্রে ফেলছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রান্স, জাপান, হংকং এরাও মহাসমুদ্রের গভীরে বর্জ্য ঢালছে।

তেজস্ক্রিয় বর্জ্য থেকে কী ধরনের রোগব্যাধি হয়?
তেজস্ক্রিয় বর্জ্য থেকে নানা ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। এর মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গের ক্যানসার, গর্ভস্থ ভ্রুণের জিনগত বিভিন্ন রোগ হল উল্লেখযোগ্য। তেজস্ক্রিয় পদার্থ বহুদিন প্রকৃতিতে থেকে যায় বলে এগুলি অতীব ক্ষতিকর।
কঠিন পৌর বর্জ্য বলতে কী বোঝ?
পৌরসভা, পৌরনিগম বা নগর অঞ্চলে প্রতিদিনের ব্যবহারের পর বাতিল করা বা প্রত্যাখ্যান করা বিভিন্ন কঠিন বস্তুই হল কঠিন পৌর বর্জ্য (Municipal Solid Waste বা MSW)। খাবারের অবশিষ্টাংশ, সবজির খোসা, পুরোনো কাগজ, ভাঙা কাচ, ফোটো, গাছের পাতা প্রভৃতি কঠিন পৌর বর্জ্যের অন্তর্গত।
স্ক্রাবার কী?
কলকারখানার দূষিত বায়ুকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে স্ক্রাবার বলে। এই যন্ত্রটি কলকারখানার নির্গত গ্যাসীয় বর্জ্য থেকে বিষাক্ত পদার্থকে শোষণ করে। স্ক্রাবারে রাখা কলিচুন এবং জলের মধ্যে দিয়ে দূষিত বায়ু চালনা করলে বস্তুকণাগুলি শোধিত হয়। স্ক্রাবার দুরকমের হয়, যথা – আর্দ্র এবং শুষ্ক স্ক্রাবার।

তরল বর্জ্য বলতে কী বোঝ?
যেসব তরল পদার্থের কোনো ব্যবহার নেই অথবা পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়, তাদের তরল বর্জ্য বলে। যেমন – বর্জ্য জল, চর্বি, গৃহস্থালি ও শিল্পকারখানা নিঃসৃত তেল, শিল্পকারখানা থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থমিশ্রিত জল প্রভৃতি। এই জাতীয় বর্জ্য বিষাক্ত ও বিষহীন উভয় প্রকৃতির হতে পারে।
কঠিন বর্জ্য থেকে কী কী ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে?
কঠিন বর্জ্য থেকে নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়ায়। প্রধানত কৃমি জাতীয় রোগ, আমাশয়, নানাপ্রকার চামড়ার রোগ, টাইফয়েড ইত্যাদি রোগ কঠিন বর্জ্য থেকে হতে পারে। যারা বর্জ্য অপসারণ করে তাদের রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
প্লাস্টিক কী ধরনের বর্জ্য? এর মূল সমস্যা কী?
প্লাস্টিক হল অবিশ্লেষ্য বর্জ্য। প্লাস্টিক সর্বত্র পাওয়া যায় কিন্তু এর বিয়োজন হয় না বা প্রকৃতিতে সহজে মিশে যায় না। সহজে পচন ঘটে না বলে বহুদিন পরিবেশে টিকে থাকে এবং জল, মাটিকে দূষিত করে। প্লাস্টিক পোড়ালে ভয়ংকর বায়ুদূষণ হয়।
কঠিন বর্জ্য পোড়ানো উচিত নয় কেন?
কঠিন বর্জ্য পোড়ালে পরিবেশদূষণের সমস্যা মারাত্মক বেড়ে যায়। এই বর্জ্য থেকে নির্গত সালফার ডাইঅক্সাইড, হাইড্রোজেন ফ্লুরাইড, কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস বায়ুকে দূষিত করে। তাই কঠিন বর্জ্য অবৈজ্ঞানিকভাবে পোড়ানো ঠিক নয়।
উপযুক্ত সময়ে বর্জ্য অপসারণ না করতে পারলে কী হয়?
সঠিক সময়ে বর্জ্যগুলি ঠিকমতো অপসারণ করতে না পারলে নানা ধরনের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এদের দ্বারা নানা ধরনের রোগব্যাধির সংক্রমণ হতে পারে। বর্জ্য পরিবেশের সৌন্দর্যহানি ঘটায়।
বর্জ্য পরিচালন বলতে কী বোঝ?
বর্জ্য পরিচালন বলতে বর্জ্য বা আবর্জনার নিয়ন্ত্রণকে বোঝায়। মানুষের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য পরিবেশকে দূষিত করে। সেজন্য বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা দরকার। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না হলে পরিবেশের অবনমন হয়।
উন্মুক্তভাবে বর্জ্য জমা করলে কী অসুবিধা হয়?
উন্মুক্তভাবে বর্জ্য জমা করলে যে যে অসুবিধা হয়, সেগুলি হল –
- উন্মুক্তভাবে বর্জ্য জমা করলে সেই বর্জ্যের ওপর মশা, মাছি, ইঁদুর, নানা কীটপতঙ্গ বাসা বাঁধে। এর দ্বারা রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ে।
- উন্মুক্ত বর্জ্য পদার্থ পরিবেশে দুর্গন্ধ ছড়ায়।
- এসব বর্জ্য মুক্ত পরিবেশে পোড়ালে বায়ু দূষিত হয়।
বর্জ্য জলকে কীভাবে জীবাণুমুক্ত করা যায়?
জীবাণুনাশক পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থাৎ অতিবেগুনি রশ্মির ব্যবহার, জল ফুটিয়ে খাওয়া, ওজোন গ্যাসের ব্যবহার, জলে ক্লোরিনের ব্যবহার ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ করে বর্জ্য জলকে জীবাণুমুক্ত করা যায়।
নির্মাণ শিল্পের বর্জ্যগুলি কী কী?
নির্মাণ শিল্পে ইট, কাঠ, পাথর, বালি, সিমেন্ট, প্লাস্টিক বর্জ্য দ্রব্য উৎপন্ন হয়। এ ছাড়া লোহার টুকরো, সিরামিক টালি, ফিটিংস দ্রব্য ইত্যাদি নির্মাণ শিল্পের বর্জ্য। বর্তমানে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ অধিক বেড়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে অধিক পরিমাণ নির্মাণকাজ।

নির্মাণ শিল্পের বর্জ্য থেকে কী সমস্যা হয়?
নির্মাণ শিল্পের বর্জ্য যেমন ইট, বালি, সিমেন্ট, চুন, স্টোনচিপস্ থেকে শ্রমিকদের ফুসফুসের ও পেটের রোগ হতে পারে, এ ছাড়া নির্মাণ শিল্পের বর্জ্য যেখানে পড়ে সেখানকার মাটি অনুর্বর হয়ে পড়ে, এই কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়।
কারখানার বর্জ্য থেকে কী সমস্যা তৈরি হয়?
কলকারখানা থেকে যেসব নোংরা আবর্জনা নদীতে বা খালে পড়ে তাতে নদীর জল দূষিত হয়ে যায়, মাছ ও জলজ প্রাণীদের ক্ষতি হয়। এ ছাড়া জলের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। কারখানার নিকটবর্তী মাটি অনুর্বর হয়ে কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটে।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে কীভাবে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়?
বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বর্জ্য অপসারণ করা হয় না। এই পদ্ধতিতে সপ্তাহে তিন-চার দিন ময়লা পরিষ্কার করার গাড়ি একটি নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড় করানো থাকে। পৌরসভার সাফাইকর্মীরা প্রত্যেক বাড়ি বা অফিস থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে সেই গাড়িতে জমা করেন।

ফ্লাই অ্যাশের গুরুত্ব বর্তমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত কয়লার ছাইকে ফ্লাই অ্যাশ বলে। এই অ্যাশ বর্তমানে ইট শিল্পে, সিমেন্ট শিল্পে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বড়ো বড়ো রাস্তা নির্মাণ এবং নীচু জলাভূমি ভরাট করতে ফ্লাই অ্যাশের গুরুত্ব খুব বেড়েছে। ফ্লাই অ্যাশ নামক বর্জ্য এখন সম্পদে পরিণত হয়েছে।
পুরোনো কাগজকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয় কেন?
বর্জ্য পুরোনো কাগজকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়। কারণ বর্জ্য কাগজে ধুলোবালি, প্লাস্টিক, রং ইত্যাদি থাকে। বর্জ্য কাগজ থেকে সেগুলি পৃথক করে কাগজের মণ্ড তৈরি করা হয়। ওই মণ্ড থেকে কাগজের বোর্ড, কাগজের ব্যাগ, ফলস্ সিলিং ও অন্যান্য দ্রব্য প্রস্তুত করা যায়।
বর্জ্য প্লাস্টিককে কীভাবে কাজে লাগানো যায়?
বর্জ্য প্লাস্টিক জৈব অবিশ্লেষ্য পদার্থ। তাই বহুদিন পরেও তা মাটির সাথে মিশে যায় না। তাই বর্জ্য প্লাস্টিক একটি পরিবেশগত সমস্যা। একমাত্র বর্জ্য প্লাস্টিককে গলিয়ে নতুন প্লাস্টিক তৈরিই হল এর একমাত্র সমাধান।
তুমি বাড়িতে কীভাবে বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ করবে?
আমি বাড়ির জৈব বিশ্লেষ্য এবং অবিশ্লেষ্য পদার্থগুলিকে আলাদা আলাদা প্যাকেটে ভরে রাখব। এরপর বর্জ্য সংগ্রাহক এলে তার গাড়িতে দিয়ে দেব। তবে বাড়িতে যাতে কম বর্জ্য উৎপন্ন হয় সেদিকে লক্ষ রাখব।
আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের চতুর্থ অধ্যায় “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা” –এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ “সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
 





মন্তব্য করুন