মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ – ভারতের জলসম্পদ – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভূগোল - ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ - ভারতের জলসম্পদ - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের তিনটি করে নদীর নাম করো।

উত্তর ভারতের তিনটি নদী হল গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও সিন্ধু। দক্ষিণ ভারতের তিনটি নদী হল গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী।

গোদাবরী ও নর্মদা নদীর উৎসস্থল ও মোহানা কোথায়?

গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্রের নাসিক জেলার অন্তর্গত পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ত্রিম্বকেশ্বর উচ্চভূমি থেকে উৎপন্ন হয়েছে। নদীটি রাজমুদ্রীর কাছে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।

নর্মদা নদী মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড় রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত মহাকাল পর্বতের অমরকণ্টক শৃঙ্গ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। নর্মদা নদীটি ভারুচের কাছে খাম্বাত উপসাগরে পড়েছে।

গঙ্গার দুটি উপনদী ও দুটি শাখানদীর নাম করো।

অথবা, গঙ্গার যে-কোনো দুটি উপনদীর নাম করো।

গঙ্গার দুটি উপনদী হল যমুনা ও রামগঙ্গা। গঙ্গার দুটি শাখানদী হল ভাগীরথী-হুগলি এবং পদ্মা।

দক্ষিণ ভারতের কোন্ কোন্ নদীর মোহানায় বদ্বীপ আছে?

দক্ষিণ ভারতের গোদাবরী, মহানদী, কৃষ্ণা এবং কাবেরী নদীর মোহানায় বদ্বীপ আছে।

ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি কোথায়? এর দুটি উপনদীর নাম করো।

তিব্বতের রাক্ষসতাল-মানস সরোবরের প্রায় 90 কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে চেমায়ুং দুং নামে একটি হিমবাহ থেকে ব্রহ্মপুত্রের উৎপত্তি।

ব্রহ্মপুত্র নদের দুটি উপনদী হল সুবনসিরি এবং লোহিত।

ভারতের দুটি পশ্চিমবাহিনী নদীর নাম করো।

ভারতের দুটি পশ্চিমবাহিনী নদীর নাম যথাক্রমে নর্মদা এবং তাপি বা তাপ্তী।

অন্তর্বাহিনী নদী কাকে বলে?

যেসব নদী উচ্চভূমি বা পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে দেশের অভ্যন্তরে কোনো হ্রদ বা আবদ্ধ জলাভূমিতে মেশে, অথবা মরুভূমিতে গিয়ে শুকিয়ে যায়, সেগুলিকে অন্তর্বাহিনী নদী বলে। যেমন – রাজস্থানের লুনি নদী আজমেরের পাশে আনাসাগর হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে কচ্ছের রান অঞ্চলে গিয়ে মিশেছে।

অন্তঃসলিলা বা ফল্গু নদী কাকে বলে?

নদী সাধারণত ভূপৃষ্ঠ বরাবর প্রবাহিত হয়। কিন্তু চুনাপাথরগঠিত অঞ্চলে কোনো কোনো সময় চুনাপাথরের সচ্ছিদ্রতা বা প্রবেশ্যতা বেশি (চুনাপাথর জলে দ্রবীভূত হয়) বলে নদী ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এই ধরনের নদীকে বলে অন্তঃসলিলা বা ফল্গু নদী। চুনাপাথরগঠিত অঞ্চল পার হয়ে নদীটি পুনরায় ভূপৃষ্ঠে আত্মপ্রকাশ করে। অন্ধ্রপ্রদেশের বোরা গুহালুতে গোস্থানী নদী এইভাবে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভারতের দুটি প্রধান জলবিভাজিকার নাম লেখো।

ভারতের দুটি প্রধান জলবিভাজিকা হল – বিন্ধ্য পর্বত ও পশ্চিমঘাট পর্বত।

গঙ্গার বাম ও ডানতীরের উপনদীগুলির নাম লেখো।

গঙ্গার বামতীরের উপনদীগুলি হল রামগঙ্গা, গোমতী, ঘর্ঘরা, গণ্ডক, কোশি প্রভৃতি।

গঙ্গার ডানতীরের উপনদীগুলি হল যমুনা, সোন প্রভৃতি।

গঙ্গার দুটি প্রধান শীর্ষনদীর নাম করো। এরা কোথায় মিলিত হয়ে গঙ্গানদীর সৃষ্টি করেছে?

গঙ্গার দুটি প্রধান শীর্ষনদীর নাম হল ভাগীরথী ও অলকনন্দা। এরা উত্তরাখণ্ড রাজ্যের দেবপ্রয়াগে এই দুটি নদী মিলিত হয়ে গঙ্গানদীর সৃষ্টি করেছে।

কোন্ কোন্ নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র?

ডিহং, ডিবং এবং লোহিত নদীর মিলিত ধারার নাম ব্রহ্মপুত্র।

ভারতের কয়েকটি পূর্ববাহিনী নদীর নাম লেখো।

ভারতের কয়েকটি পূর্ববাহিনী নদী হল – মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী প্রভৃতি।

গোদাবরীর কয়েকটি উপনদী ও শাখানদীর নাম করো।

গোদাবরীর উল্লেখযোগ্য উপনদীগুলি হল মঞ্জিরা, প্রাণহিতা, ইন্দ্রাবতী প্রভৃতি।

গোদাবরীর শাখানদীগুলির মধ্যে গৌতমী ও বশিষ্ঠ প্রধান।

গঙ্গার প্রধান উপনদীর নাম কী? এটির উৎপত্তি কোথায়?

গঙ্গার প্রধান উপনদী হল যমুনা। যমুনা নদীটি কুমায়ুন হিমালয়ের যমুনোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে।

গঙ্গার তীরে অবস্থিত কয়েকটি শহরের নাম লেখো।

গঙ্গার তীরে অবস্থিত উল্লেখযোগ্য শহরগুলি হল – কলকাতা, পাটনা, এলাহাবাদ এবং কানপুর।

সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর নাম কী?

সিন্ধুর পাঁচটি উপনদী হল – শতদ্রু, বিপাশা, ইরাবতী, চন্দ্রভাগা এবং বিতস্তা বা ঝিলাম।

গতিপথে জলপ্রপাত আছে ভারতের এরকম দুটি নদীর নাম করো।

ভারতের দুটি নদী যার গতিপথে জলপ্রপাত আছে, তা হল – কাবেরী নদী (শিবসমুদ্রম জলপ্রপাত) এবং শরাবতী নদী (গেরসোপ্পা জলপ্রপাত)।

ভারতের দুটি লবণাক্ত হ্রদের নাম লেখো।

ভারতের দুটি লবণাক্ত হ্রদ হল – রাজস্থানের সম্বর এবং জম্মু ও কাশ্মীরের প্যাংগং।

গঙ্গানদীর উৎপত্তিস্থলের নাম কী?

উচ্চ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় 7010 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ তুষারগুহা গঙ্গানদীর উৎপত্তিস্থল।

ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতটির নাম কী? এটি কোন্ নদীর গতিপথে অবস্থিত?

ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাতটির নাম গেরসোপ্পা (253 মিটার)। এটি পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢাল থেকে উৎপন্ন শরাবতী নদীর গতিপথে এই জলপ্রপাতটির সৃষ্টি হয়েছে।

খাম্বাত উপসাগরে এসে মিশেছে এরকম দুটি নদীর নাম লেখো।

নর্মদা এবং তাপি বা তান্তী নদী খাম্বাত উপসাগরে পড়েছে।

লুনি নদীর প্রবাহপথ সম্পর্কে লেখো।

উত্তর ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য নদী লুনি। এর দৈর্ঘ্য প্রায় 530 কিমি। লুনি রাজস্থান মরু অঞ্চলের নদী। আজমেরের পাশে আনাসাগর হ্রদ থেকে উৎপন্ন হয়ে লুনি কচ্ছের রান অঞ্চলে পড়েছে। এই নদীটির জল লোনা বলে এর নাম লুনি।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালা থেকে নির্গত কয়েকটি নদীর নাম লেখো।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিমঢাল থেকে কয়েকটি ক্ষুদ্র নদী উৎপন্ন হয়ে পশ্চিমদিকে প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে পড়েছে। এগুলির মধ্যে শরাবতী, উলহাস, নেত্রাবতী, সাবিত্রী প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

ভারতের নদনদীর দুটি প্রধান উৎস-অঞ্চল কী কী?

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল এবং পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি থেকেই ভারতের অধিকাংশ নদনদীর উৎপত্তি হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তর ভারতের বেশিরভাগ নদী হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে এবং দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পশ্চিমঘাট পর্বতশ্রেণি থেকে উৎপন্ন হয়েছে।

ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম ও অবস্থান উল্লেখ করো।

ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম হল ব্রহ্মপুত্র নদের মাজুলি। এই নদীদ্বীপটি অসম রাজ্যের জোড়হাট জেলায় অবস্থিত।

ভারতের একটি পূর্ববাহিনী এবং একটি পশ্চিবাহিনী নদীর নাম লেখো।

ভারতের একটি পূর্ববাহিনী নদী হল মহানদী এবং একটি পশ্চিমবাহিনী নদী হল নর্মদা।

ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ববাহিনী কেন?

উত্তর ভারতের সমভূমি এবং দাক্ষিণাত্য মালভূমি সাধারণভাবে পূর্বে ঢালু বলে উত্তর ভারতের প্রধান নদী গঙ্গা-সহ দাক্ষিণাত্যের অধিকাংশ নদী পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। কিন্তু গ্রস্ত উপত্যকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নর্মদা ও তাপ্তী নদী পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে আরব সাগরে মিশেছে।

দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদী পূর্ববাহিনী কেন?

মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী, ভাইগাই, পেনার প্রভৃতি দাক্ষিণাত্য মালভূমির উল্লেখযোগ্য নদী। এইসব নদী দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিভিন্ন অংশ থেকে উৎপন্ন হয়ে পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে এবং শেষে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। নদীগুলি পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়েছে, কারণ দাক্ষিণাত্য মালভূমি পশ্চিম থেকে পূর্বে চালু।

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি নৌচলাচলে উপযুক্ত নয় কেন?

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি নৌচলাচলে উপযুক্ত নয়, কারণ –

  • এখানকার নদীগুলি অধিকাংশই বৃষ্টির জলে পুষ্ট। তাই বর্ষাকাল ছাড়া এই নদীগুলিতে জল প্রায় থাকেই না, অর্থাৎ এই নদীগুলি অনিত্যবহ হয়।
  • দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি মালভূমি অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় খরস্রোতা। তাই নদীগুলি নৌপরিবহণে উপযুক্ত নয়।

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি চিরপ্রবাহী নয় কেন?

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি নাতিউচ্চ মালভূমি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তাই কোনো নদীর উৎসই হিমবাহ গলা জল থেকে সৃষ্টি হয়নি। দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ নদীই বৃষ্টির জলে পরিপূর্ণ। সেইজন্য কেবল বর্ষাকালেই এই নদীতে জলপ্রবাহ বজায় থাকে এবং তাই নদীগুলি চিরপ্রবাহী হয় না।

প্লাবন খাল কাকে বলে?

যেসব নদী কেবল বর্ষার প্লাবনে জলপূর্ণ হয় এবং বছরে অন্য সময় ক্ষীণকায় থাকে, সেইসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে প্লাবন খাল বলে। বর্ষাকাল ছাড়া প্লাবন খালগুলিতে অন্য সময় তেমন জল থাকে না। উদাহরণ – কৃষ্ণা নদীর বদ্বীপ খাল।

নিত্যবহ খাল কাকে বলে?

যেসব নদীতে সারাবছর জল থাকে, সেইসব নদী থেকে খনন করা খালগুলিকে নিত্যবহ খাল বলে। এই নদীগুলি সারাবছর জলপূর্ণ থাকে বলে নিত্যবহ খালের মাধ্যমে সারাবছরই কৃষিজমিতে জলসেচ করা হয়। যেমন – পাঞ্জাবের পশ্চিম যমুনা খাল।

বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনার উদ্দেশ্য কী?

বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনার উদ্দেশ্যগুলি হল –

  • বন্যা নিয়ন্ত্রণ,
  • জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার,
  • জলবিদ্যুৎ উৎপাদন,
  • জলপথে পরিবহণ, 
  • মৎস্যচাষ,
  • পানীয় জলসরবরাহ ইত্যাদি।

ভারতে কী কী জলসেচ পদ্ধতি আছে?

ভূগর্ভের জলস্তর, ভূপ্রকৃতি, মাটি, উন্নতা, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি পার্থক্যের ওপর নির্ভর করে প্রধানত তিনটি পদ্ধতিতে জলসেচ করা হয়। যথা –

  1. কূপ ও নলকূপ,
  2. জলাশয় এবং
  3. সেচখাল।

ভারতের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনার নাম লেখো।

ভারতের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা হল –

  • দামোদর এবং এর কয়েকটি উপনদীর ওপর রূপায়িত দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা,
  • শতদ্রু ও বিপাশা নদীর ওপর ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনা এবং
  • মহানদীর ওপর হিরাকুঁদ পরিকল্পনা।

ভারতের কয়েকটি খালের নাম করো।

ভারতের কয়েকটি খালের নাম হল – উচ্চ গঙ্গা খাল, নিম্ন গঙ্গা খাল, সারদা খাল, ইন্দিরা গান্ধি খাল, মেদিনীপুর খাল, দুর্গাপুর খাল প্রভৃতি।

নদী সংযুক্তি প্রকল্প বলতে কী বোঝ?

দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতের খরাপ্রবণ অঞ্চলে জলসেচের সুবিধা সৃষ্টি এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি উত্তর ভারতের নদী এবং কৃষ্ণা, কাবেরী, গোদাবরী প্রভৃতি দক্ষিণ ভারতের নদীগুলিকে খালের মাধ্যমে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা হল নদী সংযুক্তি প্রকল্প। এটি একটি ব্যয়বহুল পরিকল্পনা।

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি হ্রদের নাম লেখো।

হিমালয়ের কাশ্মীর অংশে অনেকগুলি স্বাদুজলের হ্রদ রয়েছে। এরমধ্যে –

  • কয়েকটি মিষ্টি বা স্বাদুজলের হ্রদ – ডাল, উলার, নৈনিতাল, ভীমতাল।
  • কয়েকটি নোনা জলের হ্রদ – সম্বর, পুষ্কর, প্যাংগং উল্লেখযোগ্য।

উত্তর ভারতের নদনদীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তর ভারতের নদনদীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল –

  • উত্তর ভারতের নদীগুলি অধিকাংশই উত্তরের হিমালয় পর্বত থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। 
  • নদীগুলি চিরপ্রবাহী। 
  • নদী অববাহিকাগুলি বৃহৎ আকারের,
  • নদীগুলি দীর্ঘ এবং নিম্নপ্রবাহে বন্যাপ্রবণ।

দক্ষিণ ভারতের নদনদীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

দক্ষিণ ভারতের নদনদীর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল –

  • নদীগুলি পশ্চিমঘাট পর্বত এবং মধ্যভারতের উচ্চভূমি থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
  • প্রতিটি নদীই বৃষ্টির জলে পুষ্ট। 
  • নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে আদর্শ।

ভৌমজলের অতিরিক্ত ব্যবহার হলে কী হবে?

অতিরিক্ত ভৌমজলের ব্যবহার জলে আর্সেনিকের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, মাটিতে নোনাভাব বৃদ্ধি পায়, ভৌমজল কমে যায়, ভূমিভাগের অবনমনও ঘটতে পারে।

জলসংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি কী কী?

জলসংরক্ষণের পদ্ধতিগুলি হল –

  • জলসঞ্চয় প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটিয়ে, 
  • জলের দূষণ কমিয়ে,
  • জলবিভাজিকা উন্নয়ন ঘটিয়ে, 
  • বৃষ্টির জল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে,
  • জলের পুনর্ব্যবহার এবং জলের পরিশোধন করে জলকে পুনরায় ব্যবহার করা যায়।

ব্রহ্মপুত্রের বাম ও ডানতীরের উপনদীগুলির নাম লেখো।

ব্রহ্মপুত্রের বামতীরের উপনদী হল বুড়িডিহং, ধানসিড়ি, দিহং এবং ডানতীরের উপনদী হল সুবনসিরি, মানস, তিস্তা প্রভৃতি।

সিন্ধুর উৎপত্তিস্থল কোথায়?

তিব্বতের মানস সরোবরের কাছে সেঙ্গে খাবাব থেকে সিন্ধু উৎপন্ন হয়েছে।

পূর্ববর্তী নদী বলতে কী বোঝ?

ভূমির উত্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যখন কোনো নদী ক্ষয়কাজ চালিয়ে যায় এবং তার প্রবাহপথ বজায় রাখে, তাকে পূর্ববর্তী নদী বলে। অর্থাৎ এইসব নদী ভূমির উত্থানকে অগ্রাহ্য করে তাদের প্রবাহপথ বজায় রাখে। যেমন – হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নদী পূর্ববর্তী নদী।

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলি চিরপ্রবাহী কেন?

হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলি প্রধানত বরফগলা জলে পুষ্ট হওয়ায় সারাবছরই নদীগুলিতে জল থাকে। তাই হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলি চিরপ্রবাহী হয়।

নর্মদা এবং তাপ্তী একে-অপরের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় কেন?

নর্মদা এবং তান্তী নদীর উপত্যকা আসলে দুটি গ্রন্ত উপত্যকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই গ্রস্ত উপত্যকা দুটি একে-অপরের সমান্তরালে অবস্থান করছে বলে নর্মদা এবং তাপ্তী নদীও একে-অপরের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়েছে।

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি খরস্রোতা কেন?

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি নাতিউচ্চ মালভূমি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও নদীগুলি চ্যুতিযুক্ত, কঠিন শিলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই কারণে দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি খরস্রোতা।

মাটির জলধারণক্ষমতার সাথে জলসেচের সম্পর্ক কী?

বিভিন্ন মাটির জলধারণক্ষমতা বিভিন্ন হয়। পলিমাটি ও বালিমাটিতে জলধারণক্ষমতা কম। তাই এই মাটিতে কৃষিকাজে বেশি জল প্রয়োজন আর কালোমাটি বা কাদামাটির জলধারণক্ষমতা বেশি বলে কৃষির জন্য কম জলসেচ প্রয়োজন।

ভারতে জলসেচের উৎসগুলি কী কী?

ভারতের জলসেচের মূল উৎসগুলি হল প্রবহমান জল, সঞ্চিত জল এবং ভৌমজল। প্রবহমান জলের ওপর নির্ভর করে খালসেচ এবং সঞ্চিত জলের ওপর নির্ভর করে জলসেচ করা হয়। অন্যদিকে ভৌমজল থেকে কূপ ও নলকূপের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়।

দক্ষিণ ভারতের মালভূমি অংশে কোন্ ধরনের জলসেচ ব্যবস্থা বেশি প্রচলিত?

দক্ষিণ ভারতে মূলত পুকুর বা জলাশয়ের মাধ্যমে জলসেচ করা হয়। কারণ দক্ষিণ ভারতের অধিকাংশ অঞ্চল কঠিন এবং অপ্রবেশ্য শিলায় গঠিত হওয়ার ফলে এখানে ভৌমজল সঞ্চয় কম থাকে। তাই এখানে কূপ এবং নলকূপ খনন করা সম্ভব নয়।

সমভূমি অঞ্চলে কী ধরনের জলসেচ ব্যবস্থা চালু রয়েছে?

ভারতের সমভূমি অঞ্চলগুলির মাটিতে ভৌমজলের পরিমাণ খুব বেশি। সেকারণে কূপ এবং নলকূপ খনন সুবিধাজনক। এ ছাড়া খালের মাধ্যমেও সমভূমি অঞ্চলে জলসেচ করা হয়।

ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে কূপ ও নলকূপের সাহায্যে জলসেচ করা হয়?

উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, রাজস্থান, বিহার, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চলে কূপ এবং নলকূপের সাহায্যে জলসেচ করা হয়। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ ও ডিজেল চালিত নলকূপের সাহায্যেও জলসেচ করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি সেচ প্রকল্পের নাম লেখো।

পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সেচপ্রকল্প হল-পশ্চিমবঙ্গের দামোদর নদের ওপর দামোদর নদী উপত্যকা পরিকল্পনা, ময়ূরাক্ষীর ওপর ময়ূরাক্ষী পরিকল্পনা প্রভৃতি।

কী কী পদ্ধতিতে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা যায়?

দুটি পদ্ধতিতে বৃষ্টির জলকে সঞ্চয় করা যেতে পারে –

  • ভূপৃষ্ঠের প্রবহমান জলকে জলাধারে আটকে রেখে এবং
  • বাড়ির ছাদের বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করে।

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির যে-কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

দক্ষিণ ভারতের নদীগুলির যে-কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

  • দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি বৃষ্টির জলে পুষ্ট। এজন্য শুষ্ক ঋতুতে নদীগুলিতে বিশেষ জল থাকে না।
  • নদীগুলি দৈর্ঘ্যে ছোটো।

ডিভিসি -এর দুটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করো।

ডিভিসি -এর দুটি উদ্দেশ্য হল –

  • দামোদর উপত্যকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং
  • জলসেচ ব্যবস্থার উন্নতিসাধন।

দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা কী?

দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা ভারতের প্রথম বহুমুখী নদী উপত্যকা পরিকল্পনা এবং পূর্ব ভারতের বৃহত্তম নদী উপত্যকা পরিকল্পনা। 1948 সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ‘টেনেসি ভ্যালি অথরিটি’ -র অনুকরণে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন গঠিত হয়। দামোদর নদীর বন্যার জল নিয়ন্ত্রণের জন্য এই বহুমুখী নদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এই পরিকল্পনার কর্মসূচি অনুযায়ী মাইথন, পাঞ্চেত, তিলাইয়া, কোনার প্রভৃতি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

দামোদর উপত্যকা পরিকল্পনা

তাল কী?

কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে অসংখ্য খতি বা নীচু জায়গা সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে ওই নীচু জায়গাগুলিতে বরফ গলা জল জমে সৃষ্টি হয়েছে হ্রদ। স্থানীয় ভাষায় ওই হ্রদগুলিকেই বলে তাল। যেমন – নৈনিতাল, সতিতাল, ভীমতাল প্রভৃতি এধরনের হ্রদ বা তাল।

কয়াল কী?

অতীতে ভূ-আন্দোলনের ফলে কেরলের মালাবার উপকূলে বহুবার উত্থান ও নিমজ্জন ঘটেছে। এর ফলে উপকূলে গড়ে উঠেছে সমুদ্র বাঁধ এবং তার পশ্চাতে অনেক উপহ্রদ। এই উপহ্রদগুলিকেই স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলে। যেমন – ভেম্বানাদ ও অষ্টমুদি কয়াল।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের জলসম্পদ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

তড়িৎলেপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

ধাতুর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ও তড়িৎবিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।