দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?

দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?

মহাকাশ থেকে আসা কোনো সাদা আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা দ্বারা ওই আলোকের বিক্ষেপণ মাত্রা তরঙ্গদৈর্ঘ্যের চতুর্ঘাতের ব্যস্তানুপাতিক। নীল বা বেগুনি বর্ণের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হওয়ায় এই আলোর বিক্ষেপণ বেশি হয়। দিনের বেলায় সূর্য থেকে আসা আলো বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণা দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় এবং নীল বর্ণের আলো প্রচুর পরিমাণে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই নীল বর্ণের আলো চাঁদের হলুদ বর্ণের সমন্বয়ে সাদা আলো সৃষ্টি করে। তাই দিনের বেলায় চাঁদকে সাদা দেখায়। সূর্যাস্তের পরে নীল আলো থাকে না, ফলে চাঁদকে হলদেটে বর্ণের দেখায়।

দিনের ও রাতের আকাশে চাঁদের বর্ণ

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

দিন ও রাতের চাঁদের রং এর পার্থক্যের পিছনে মূল বিজ্ঞান কী?

মূল বিজ্ঞানটি হলো বায়ুমণ্ডলে আলোর বিক্ষেপণ (Scattering of Light)। সূর্যের সাদা আলো বিভিন্ন রং এর (তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) মিশ্রণ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা ধূলিকণা ও অণুগুলি ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো (নীল, বেগুনি) বেশি বিক্ষেপণ করে। দিনের বেলায় এই বিক্ষিপ্ত নীল আলো চাঁদের উপর পড়ে তাকে “সাদা” দেখাতে সাহায্য করে। সন্ধ্যায় নীল আলো চলে যায়, ফলে চাঁদের নিজস্ব হলুদ/সাদা আলোটা আমাদের চোখে সরাসরি পৌঁছায়।

দিনের বেলায় নীল আলো বিক্ষিপ্ত হয় বলে আমরা আকাশকে নীল দেখি। কিন্তু চাঁদকেই বা সাদা দেখায় কেন? চাঁদও কি নীল দেখানো উচিত নয়?

এর কারণ হলো আলোর উৎস এবং বস্তুর পার্থক্য।
1. আকাশ নীল দেখায় কারণ বিক্ষিপ্ত নীল আলো সরাসরি আমাদের চোখে আসে। আমরা আসলে বিক্ষেপণের প্রক্রিয়াটিকেই দেখি।
2. চাঁদ সাদা দেখায় কারণ আমরা চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত আলো দেখি। দিনের বেলায় চাঁদে যে আলো পড়ে, তা হল সাদা সূর্যালোক এবং বিক্ষিপ্ত নীল আলোর মিশ্রণ। চাঁদের পৃষ্ঠ ধূসর/সাদাটে, যা সকল রংকেই সমানভাবে প্রতিফলিত করে। তাই এই মিশ্রিত আলো আমাদের চোখে “সাদা” বলে অনুভব হয়।

সূর্যাস্তের পর শুধু কি চাঁদই হলুদ দেখায়? নাকি অন্য তারারাও?

হ্যাঁ, এই একই নীতির কারণে অন্যান্য উজ্জ্বল মহাজাগতিক বস্তু, যেমন গ্রহ (শুক্র, মঙ্গল) বা উজ্জ্বল তারা (যেমন – সিরিয়াস)ও দিগন্তের কাছাকাছি থাকলে তাদেরকেও কিছুটা হলদেটে বা লালচে দেখাতে পারে। কারণ তাদের আলোকেও বায়ুমণ্ডলের পুরু স্তর ভেদ করে আসতে হয়, যেখানে নীল আলো বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।

চাঁদ যখন আকাশের অনেক উঁচুতে থাকে, তখনও কি তাকে হলদেটে দেখায়?

না, তখন তাকে হলদেটে দেখায় না। চাঁদ যখন আকাশের অনেক উঁচুতে (যেমন – মাথার ঠিক উপরে) থাকে, তখন তার আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অপেক্ষাকৃত পাতলা স্তর ভেদ করে আমাদের চোখে পৌঁছায়। এর ফলে অপেক্ষাকৃত কম নীল আলো বিক্ষিপ্ত হয় এবং চাঁদ তার আসল বা প্রকৃত সাদা/ধূসর রং-ই ফুটে তোলে।

“নীল আলো থাকে না” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

“নীল আলো থাকে না” বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে যে, সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়ের সময় সরাসরি আমাদের চোখে আসা আলোর মধ্যে নীল আলোর পরিমাণ খুবই কমে যায়, প্রায় শূন্যের কাছাকাছি। এটি নীল আলোর বিক্ষেপণ (Scattering) এর কারণে হয়। সূর্যের সাদা আলো সাতটি রঙের (বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) মিশ্রণ।

চাঁদে দিনের বেলায় আকাশ সম্পূর্ণ কালো বলে মনে হয় কেন?

চাঁদে বায়ুমণ্ডল না থাকায় সূর্যের আলো বিক্ষিপ্ত হয় না এবং কোনো আলোই আকাশ থেকে আমাদের চোখে পৌঁছায় না। ফলে দিনের বেলাতেও চাঁদের আকাশকে কালো দেখায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “দিনের বেলায় চাঁদকে সম্পূর্ণ সাদা দেখায় কিন্তু সূর্যাস্তের পর হলদেটে বর্ণ দেখায় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik English Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রবন্ধ রচনা

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রতিবেদন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সংলাপ