মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের কৃষি – দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভূগোল - ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ - ভারতের কৃষি - দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

ভারতের কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

ভারতীয় কৃষির প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ –

ভারতের কৃষি বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। ভারতীয় কৃষির মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

  • জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি – ভারতীয় কৃষকরা তাদের নিজস্ব প্রয়োজন মেটাবার জন্য বেশিরভাগ ফসল উৎপাদন করে। তাই এই কৃষিকাজ জীবিকাসত্তাভিত্তিক। উৎপাদিত শস্যের বেশিরভাগটাই কৃষকদের নিজেদের প্রয়োজনে লাগে বলে বিক্রয়যোগ্য বা রপ্তানিযোগ্য উদ্বৃত্ত বিশেষ থাকে না।
  • কৃষিতে পশুশক্তির প্রাধান্য – ভারতের কৃষিতে এখনও সেভাবে যান্ত্রিকীকরণ হয়নি। বলদ গোরু, মহিষ ও অন্যান্য পশুশক্তির ব্যবহার ভারতীয় কৃষির বৈশিষ্ট্য। বিদেশে যেখানে ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার, হেলিকপ্টার ও অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহৃত হয়, ভারতে এখনও প্রাচীন পশুশক্তির ব্যবহার হয়ে চলেছে।
  • মৌসুমি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীলতা – ভারতের কৃষিকাজ মৌসুমি বায়ুর ওপর নির্ভরশীল। মৌসুমি বায়ু প্রভাবিত দেশে খরা, বন্যা, অতিবৃষ্টি প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি নিয়মিত ঘটনা। এর ফলে প্রচুর পরিমাণ ফসল প্রতিবছর নষ্ট হয়। স্বাধীনতার পর থেকে কৃষিক্ষেত্রে জলের সরবরাহ বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন নদী উপত্যকা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও তা সীমিত অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছে। মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করে বর্ষাকালে খরিফ শস্য ও শীতকালে জলসেচের মাধ্যমে রবি শস্য চাষ করা হয়।
  • জলসেচের প্রসার – বর্তমানে ভারতের মোট বপিত জমির প্রায় 48 শতাংশ জলসেচের আওতায় এসেছে। শুষ্ক সময়ে স্থানীয় জলের (নদী, জলাশয়, ভৌমজল) ওপর নির্ভর করে জলসেচ করা হয়।
  • ক্ষুদ্রাকৃতি কৃষিজোত – এদেশে কৃষিজমিগুলির আয়তন খুব ছোটো, ছোটো। মূলত একান্নবর্তী পরিবারগুলিতে উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা হস্তান্তরের জন্য কৃষিজোতগুলির আয়তন ক্রমাগত ছোটো হচ্ছে। এই ধরনের ক্ষুদ্রাকৃতি কৃষিজোতে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা যায় না। এর ফলে জমিতে উৎপাদিত ফসলের পরিমাণও কম হয়।
  • খাদ্যশস্যের প্রাধান্য – ভারত পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ। এই বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যের জোগান সুনিশ্চিত করতে ভারতের মোট বপিত জমির তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি জমিতে ধান, গম, ভুট্টা, মিলেট প্রভৃতি খাদ্যশস্যের চাষ করা হয়।
  • বহু ধরনের শস্যের উৎপাদন – ভারতীয় কৃষি একটি বহুফসলি কৃষিব্যবস্থা। এখানে ধান, গম, জোয়ার, বাজরা, রাগি, ইক্ষু, তামাক, পাট, চা, কফি, তুলো, রবার, তৈলবীজসহ বহু ধরনের শস্য উৎপাদন করা হয়।
  • নিবিড় প্রথায় চাষ – ভারতে বপিত জমিগুলি বছরে একাধিকবার ফসল উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়। তবে ভারতের বহুফসলি জমির পরিমাণ বপিত জমির আয়তনের 28 শতাংশ মাত্র।

ভারতের কৃষির প্রধান সমস্যাগুলি কী কী? সেগুলি সমাধানে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

অথবা, ভারতের কৃষির সমস্যা ও সমাধানগুলি উল্লেখ করো।

ভারতের কৃষির সমস্যা –

ভারতের কৃষির অনেকগুলি সমস্যা আছে এবং এর সমাধানকল্পে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

  • হেক্টর প্রতি ফসল উৎপাদন কম – ভারতে কৃষিতে হেক্টর প্রতি শস্যের উৎপাদন কম। সীমিত জলসেচ, উচ্চফলনশীল বীজের অভাব, কৃষিযন্ত্রপাতির সীমিত ব্যবহার, আধুনিক কৃষিপদ্ধতি সম্পর্কে ধারণার অভাব প্রভৃতি এর কারণ।
    • সমাধান – স্বাধীনতা লাভের পর বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকার কৃষি উন্নয়নের অনেকগুলি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এতে হেক্টর প্রতি উৎপাদন খানিকটা বেড়েছে।
  • মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ কম – ভারতে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ মাত্র 0.3 হেক্টর, কিন্তু উন্নত দেশগুলিতে মাথাপিছু কৃষিজমির পরিমাণ প্রায় 11 হেক্টর। ছোটো ছোটো কৃষিজমিতে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির প্রয়োগ অসুবিধাজনক। ফলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়।
    • সমাধান – এইসব ছোটো খণ্ড খণ্ড জমিকে একত্রিত করে সমবায় কৃষিপদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষিকাজ করলে উৎপাদন বাড়ে।
  • ভূমিক্ষয় – অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পশুচারণ, অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাছ কাটার জন্য প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ উর্বর মাটি কৃষিজমি থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে অপসারিত হচ্ছে। এতে কৃষিজমির উর্বরতা কমছে, কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।
    • সমাধান – সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ, ধাপচাষ, গালিচাষ, ফালিচাষ ও অন্যান্য বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে চাষ করলে ভূমিক্ষয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করার জন্য শস্যাবর্তন পদ্ধতিতে কৃষিকাজ, কৃষিক্ষেত্রে জৈব সার ও ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় মৃত্তিকা সংরক্ষণ বোর্ড ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
  • কৃষিশিক্ষার অভাব ও দারিদ্র্য – কৃষকদের কৃষিশিক্ষার অভাব, কুসংস্কার প্রভৃতি কারণে অধিকাংশ কৃষক অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করে। কৃষিজমির প্রকৃতি, প্রয়োজনীয়তা বিচার না করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে রাসায়নিক সার, কীটনাশক ইত্যাদি ব্যবহার করায় মাটি দূষিত হয়ে পড়ে। এ ছাড়াও অধিকাংশ কৃষক অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ায় কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে সক্ষম হয় না ফলে কৃষি উৎপাদন কম হয়।
    • সমাধান – কৃষি-সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা প্রদান, সমবায় প্রথায় চাষ, কৃষিঋণের ব্যবস্থা করা ইত্যাদির মাধ্যমে এইসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
  • ত্রুটিপূর্ণ জমিবণ্টন ব্যবস্থা – ভারতে জমিবণ্টন ব্যবস্থায় ত্রুটির জন্য বহু ক্ষুদ্র এবং দরিদ্র চাষির উদ্ভব ঘটেছে।
    • সমাধান – সরকার আইন করে ভূমিসংস্কার নীতি প্রণয়ন করেছে। এর মাধ্যমে ভূমিহীন, বর্গাদার কৃষকদের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে জমি বিলি-বণ্টনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
  • মহাজন শ্রেণিনির্ভর বিনিয়োগ – ভারতীয় কৃষকরা বেশিরভাগই দরিদ্র। তাই মহাজনদের থেকে ঋণ নিয়ে কৃষিকাজ করে। এতে কৃষকরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য অল্প দামে ফসল বিক্রি করে দেয়।
    • সমাধান – সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কৃষি ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া, সরকার ন্যায্য মূল্যে ফসল কেনার ব্যবস্থাও করেছে।

ভারতের ধান উৎপাদক অঞ্চলগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

অথবা, ভারতে ধান উৎপাদনে বিভিন্ন রাজ্যের ভূমিকা আলোচনা করো এবং ভারতে ধানের বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

ভারতের ধান উৎপাদক রাজ্যসমূহ –

ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই ধান চাষ করা হয়। তবে দেশের মোট উৎপাদনের অর্ধাংশ পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব প্রভৃতি রাজ্য থেকে। ভারতীয় কৃষিমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে 4.34 কোটি হেক্টর জমিতে 10.43 কোটি টন (2015-2016) ধান উৎপন্ন হয়। ধান উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (চিনের পরেই)। ভারতে হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদনের পরিমাণ 2404 কেজি (2015-2016)।

ভারতের ধান উৎপাদক অঞ্চল

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, মুরশিদাবাদ, বীরভূম, বাঁকুড়া, দক্ষিণ ও উত্তর 24 পরগনা, হুগলি, নদিয়া।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ধান উৎপাদনে ভারতে শীর্ষ স্থানাধিকারী রাজ্য।
    • 54.60 লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়।
    • মোট উৎপাদন প্রায় 1.57 কোটি টন।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন 2883 কেজি।

উত্তরপ্রদেশ রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – বারাণসী, গোরক্ষপুর, ফৈজাবাদ, পিলিভিত, লখিমপুর খেরি।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ধান উৎপাদনে ভারতে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী রাজ্য।
    • 58.7 লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়।
    • মোট উৎপাদন প্রায় 1.25 কোটি টন।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন 2132 কেজি।

পাঞ্জাব রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – পাতিয়ালা, জলন্ধর।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ধান উৎপাদনে ভারতে স্থান তৃতীয়।
    • 29.8 লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়।
    • মোট উৎপাদন প্রায় 1.18 কোটি টন ধান।
    • পাঞ্জাবে হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদনের পরিমাণ ভারতে সর্বোচ্চ, হেক্টর প্রতি প্রায় 3974 কেজি।

অন্যান্য রাজ্য –

উৎপাদক জেলা –

  • অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী, কৃষ্ণা, গুন্টুর, নালগোন্ডা;
  • ওডিশার সম্বলপুর, কটক;
  • তামিলনাড়ুর উত্তর ও দক্ষিণ আর্কট, থাঞ্জাভুর;
  • ছত্তিশগড়ের রায়পুর, দুর্গ, বাস্তার;
  • বিহারের গয়া, দ্বারভাঙ্গা;
  • কর্ণাটকের শিমোগা, মান্ডিয়া;
  • হরিয়ানার জিন্দ, হিসার।

তথ্যসূত্র – Directorate of Economics and Statistics, Department of Agriculture and Cooperation.

বাণিজ্য –

2016-2017 সালের তথ্য অনুসারে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ। ভারত থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাল রপ্তানি করা হয়। যেমন – ইরান, সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইয়েমেন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ, জর্ডন, ওমান, প্রভৃতি দেশে বাসমতী চাল রপ্তানি করা হয়। অন্যদিকে, বাসমতী ছাড়া অন্যান্য ধরনের চাল বেনিন, সেনেগাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশে রপ্তানি করা হয়।

ধান উৎপাদনের উপযোগী ভৌগোলিক অবস্থা বর্ণনা করো।

ধান উৎপাদনের উপযোগী ভৌগোলিক অবস্থা –

ভারতের প্রধান কৃষিজ ফসল ধান। ধান উৎপাদনের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থার প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর উষ্ণ-আর্দ্র পরিবেশে ধানের চাষ হয়।
    • উষ্ণতা – ধান চাষের জন্য গড়ে 20°C-30°C উষ্ণতা প্রয়োজন।
    • বৃষ্টিপাত – ধান চাষের জন্য বার্ষিক 100 থেকে 200 সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত বাঞ্ছনীয়। ধানের চারা বড়ো হওয়ার সময় প্রতি মাসে 12.5 সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টি হলে ধানের ফলন ভালো হয়। ধান পাকা ও কাটার সময় শুষ্ক ও রোদ-ঝলমলে আবহাওয়া প্রয়োজন।
  • মৃত্তিকা –
    • উর্বর দোআঁশ মাটি এবং নদী উপত্যকার পলিমাটি ধান চাষের পক্ষে আদর্শ।
    • পলিমাটির নীচে অপ্রবেশ্য কাদামাটির স্তর থাকলে জমিতে জল জমে থাকে, যা ধান চাষের পক্ষে সহায়ক হয়।
  • ভূমির প্রকৃতি – জমিতে জল জমে থাকলে ধান সবচেয়ে ভালো জন্মায়। তাই নদী উপত্যকা ও বদ্বীপের সমতলভূমি ধান চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী।
  • ভূমির উচ্চতা –
    • সাধারণত সমুদ্র সমতলে বা সমুদ্র সমতলের সামান্য উঁচুতেই ধানের চাষ হয়। তবে,
    • কেরলের আলাপুঝা জেলাতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার চেয়ে নীচু অঞ্চলেও ধানের চাষ হয়। আবার,
    • দেরাদুন (435 মিটার), কাশ্মীর উপত্যকা (1850 মিটার) এবং মুসৌরি (2006 মিটার)-তেও ধানের চাষ করা হয়।

অর্থনৈতিক পরিবেশ –

  • শ্রমিক – জমি কর্ষণ করা, আগাছা পরিষ্কার করা, চারা লাগানো, শস্য ঝাড়াই করা প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর সুলভ ও দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
  • অন্যান্য – উচ্চফলনশীল বীজ, সার (জৈব ও রাসায়নিক), কীটনাশক, জলসেচ, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি প্রভৃতি ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া গেলে ধানের উৎপাদন বাড়ে। এসবের জন্য প্রচুর মূলধনেরও প্রয়োজন হয়। সর্বোপরি চাহিদা বা বাজারও ধান চাষকে প্রভাবিত করে।

এ ছাড়া, বর্তমানে ধান ভারতের অনেক স্থানে বাণিজ্যিক ফসল হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। তাই উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা ধান চাষকে আরও লাভজনক চাষে পরিণত করতে পারে।

ভারতের কোথায় কোথায় গম উৎপাদিত হয়?

অথবা, গম উৎপাদনে ভারতে বিভিন্ন রাজ্যের ভূমিকা আলোচনা করো। ভারতে গমের বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

ভারতের গম উৎপাদক রাজ্যসমূহ –

শীতকালে উত্তর ভারতের বৃহৎ সমভূমি ও উপদ্বীপীয় মালভূমির অনুচ্চ অংশে গম চাষ করা হয়। ভারতের মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক গম উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাব রাজ্য থেকে পাওয়া যায়। ভারতীয় কৃষিমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রায় 3.02 কোটি হেক্টর জমিতে 9.35 কোটি টন গম (2015-2016) উৎপন্ন হয়। গম উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (চিনের পরেই)। ভারতে গমের গড় উৎপাদনশীলতা হেক্টর প্রতি প্রায় 3093 কেজি (2015-2016)। নীচের সারণিতে ভারতের প্রধান প্রধান গম উৎপাদক রাজ্যের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল –

ভারতের গম উৎপাদক অঞ্চল

উত্তরপ্রদেশ রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – সাহারানপুর, মুজফ্ফরনগর, মিরাট, এটাওয়া, মোরাদাবাদ।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের শীর্ষস্থানাধিকারী গম উৎপাদক রাজ্য।
    • 96.5 লক্ষ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়।
    • মোট গম উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় 2.69 কোটি টন।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন 2786 কেজি।

মধ্যপ্রদেশ রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – সাগর, বিদিশা, গোয়ালিয়র, ছতরপুর জেলা।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • গম উৎপাদনে ভারতে স্থান দ্বিতীয়।
    • 59.1 লক্ষ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়।
    • 1.77 কোটি টন গম উৎপাদিত হয়েছে।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন প্রায় 2993 কেজি।

পাঞ্জাব রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – ফিরোজপুর, লুধিয়ানা, পাতিয়ালা, বাথিন্ডা, গুরুদাসপুর।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদক রাজ্য।
    • 35.0 লক্ষ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়।
    • মোট গম উৎপাদনের পরিমাণপ্রায় 1.61 কোটি টন।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন ভারতে সর্বোচ্চ, প্রায় 4596 কেজি।

অন্যান্য রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা –
    • হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র, কর্ণাল, সোনেপত;
    • রাজস্থানের গঙ্গানগর, ভরতপুর, কোটা;
    • বিহারের পূর্ণিয়া, মুঙ্গের, চম্পারণ;
    • গুজরাতের মহেষাণা, খেড়া, রাজকোট;
    • মহারাষ্ট্রের ধূলে, জলগাঁও, অমরাবতী;
    • পশ্চিমবঙ্গের মুরশিদাবাদ, নদিয়া, বীরভূম।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য – হরিয়ানায় প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় 4407 কেজি গম উৎপাদিত হয়।

Source – Directorate of Economics and Statistics, Department of Agriculture and Cooperation.

বাণিজ্য –

ভারত থেকে গম রপ্তানি করা হয়। 2015-2016 সালে ভারত থেকে 955 কোটি টাকা মূল্যের প্রায় 6.04 লক্ষ টন গম রপ্তানি করা হয়েছে। ভারত থেকে বাংলাদেশ, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, তাইওয়ান, ফিলিপিনস, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ জর্ডন প্রভৃতি দেশে গম রপ্তানি করা হয়।

চা চাষের উপযুক্ত ভৌগোলিক পরিবেশ কী কী?

চা চাষের উপযোগী ভৌগোলিক পরিবেশ –

ভারতের প্রধান পানীয় ফসল চা। চায়ের উৎপাদনে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান (2013) অধিকার করে। চা চাষের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক পরিবেশ বিশেষ প্রয়োজনীয় –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – অল্প উষ্ণ, অধিক আর্দ্র মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের উচ্চভূমি বা পর্বতের ঢালে চায়ের চাষ হয়।
    • উষ্ণতা – চা চাষের জন্য গড়ে 16°C-30°C উষ্ণতা প্রয়োজন। চা গাছ সামান্য বেশি উষ্ণতা বা অনেকটা ঠান্ডা আবহাওয়া সহ্য করতে পারলেও শীতকালে তুষারপাত এবং গ্রীষ্মকালে শিলাবৃষ্টিতে চা চাষের খুব ক্ষতি হয়।
    • বৃষ্টিপাত – চা চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়, বছরে প্রায় 150 সেমি থেকে 250 সেমি।
    • অন্যান্য – বৃষ্টিহীন গুমোট আবহাওয়া, ঘন কুয়াশা, শিশির বা তুহিন এবং তীব্র রোদ চা চাষের পক্ষে ক্ষতিকর।
  • মৃত্তিকা – লৌহসমৃদ্ধ উর্বর দোআঁশ মাটি এবং পার্বত্য তৃণভূমির জৈবপদার্থ সমৃদ্ধ মাটিতে (চারনোজেম মৃত্তিকা) চা চাষ ভালো হয়।
  • ঢালু জমি – চা গাছের গোড়ায় জল জমলে গাছের ক্ষতি হয়। এজন্য মালভূমি বা পাহাড়ের ঢালে চা চাষ করা হয়।
  • উচ্চতা – তুষারপাতের সম্ভাবনা মুক্ত খুব উঁচু পার্বত্য ঢালে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট চা উৎপন্ন হয়। ভারতে তরাই অঞ্চলে 90 মিটার উচ্চতা থেকে শুরু করে দার্জিলিং-এ 1980 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত চা বাগিচা রয়েছে।

অর্থনৈতিক পরিবেশ –

  • শ্রমিক – চা গাছ থেকে বছরের বিভিন্ন সময়ে পাতা তোলা এবং বাগিচার পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর নিপুণ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। চা পাতা তোলার কাজে সাধারণত নারী ও শিশুশ্রমিক নিয়োগ করা হয়।
  • অন্যান্য – চা বাগিচা ফসল। আধুনিক যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক প্রভৃতি ব্যবহারের সুযোগসুবিধা, যথেষ্ট মূলধন, উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাহিদা প্রভৃতির ওপর চা চাষ নির্ভরশীল।

উৎপাদক অঞ্চলসহ ধান ও গম উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা করো।

ভারতে ধান ও গম উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও উৎপাদন অঞ্চলসমূহ –

ভারতের ধান ও গম উৎপাদনের প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল –

ধান উৎপাদনের প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – ক্রান্তীয় মৌসুমি।
  • উষ্ণতা – 20°C-30°C। ধান পাকার সময় গড় উষ্ণতা 24°C প্রয়োজন।
  • বৃষ্টিপাত – বার্ষিক 100 সেমি থেকে 200 সেমি। ধানের চারা বৃদ্ধির সময় প্রতি মাসে 12.5 সেমি বৃষ্টির দরকার। ধান পাকার সময় শুষ্ক আবহাওয়া প্রয়োজন।
  • মৃত্তিকা – পলিমাটি। তলদেশে একটি অপ্রবেশ্য কাদার স্তর থাকা প্রয়োজন।
  • ভূপ্রকৃতি – সমতলভূমি বিশেষত নদী উপত্যকা ও বদ্বীপের নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল।
  • উৎপাদক রাজ্য –
    • পশ্চিমবঙ্গ (প্রথম স্থান) – বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, উত্তর 24 পরগনা জেলা।
    • উত্তরপ্রদেশ (দ্বিতীয় স্থান) – বারাণসী, গোরক্ষপুর, ফৈজাবাদ, পিলিভিত জেলা।
    • অন্ধ্রপ্রদেশ (তৃতীয় স্থান) – পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী, কৃষ্ণা, গুন্টুর, নালগোন্ডা জেলা।
    • অন্যান্য রাজ্য – পাঞ্জাব, ওডিশা, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, বিহার।

গম উৎপাদনের প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – নাতিশীতোষ্ণ ও উপক্রান্তীয়।
  • উষ্ণতা – অঙ্কুরোদ্গম ও চারা বৃদ্ধির সময় 15°C-20°C উষ্ণতা, ফসল পাকার সময় 25°C উষ্ণতা প্রয়োজন।
  • বৃষ্টিপাত – বার্ষিক মোট 50 সেমি থেকে 100 সেমি। 50 সেমির কম বৃষ্টিপাত হলে জলসেচের প্রয়োজন। 100 সেমির বেশি বৃষ্টিপাত ফসলের পক্ষে ক্ষতিকর।
  • মৃত্তিকা – ভারী দোআঁশ ও হালকা কাদামাটি।
  • ভূপ্রকৃতি – উত্তম জল-নিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত প্রায় সমতল অথবা সামান্য ঢালু জমি।
  • উৎপাদক রাজ্য –
    • উত্তরপ্রদেশ (প্রথম স্থান) – মিরাট, মোরাদাবাদ, গোরক্ষপুর, বুলন্দশহর, মুজফ্ফরনগর, বুদাউন জেলা।
    • পাঞ্জাব (দ্বিতীয় স্থান) – ফিরোজপুর, জলন্ধর, লুধিয়ানা, বাথিন্ডা জেলা।
    • মধ্যপ্রদেশ (তৃতীয় স্থান) – সাগর, বিদিশা, গোয়ালিয়র, ছতরপুর।
    • অন্যান্য রাজ্য – হরিয়ানা, রাজস্থান, বিহার, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড।

কফি চাষের উপযুক্ত ভৌগোলিক পরিবেশ সম্পর্কে আলোচনা করো।

কফি চাষের উপযোগী ভৌগোলিক পরিবেশ –

পানীয় ফসল হিসেবে ভারতে চা -এর পরেই কফির স্থান। কফি উৎপাদনের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থা প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ-আর্দ্র পরিবেশ, বিশেষত নিরক্ষীয় আবহাওয়ায় কফি চাষ ভালো হয়।
    • উষ্ণতা – কফি চাষের জন্য বেশি উষ্ণতার প্রয়োজন। সাধারণত 20°C-25°C উষ্ণতায় কফি চাষ করা হয়।
    • বৃষ্টিপাত – 150 থেকে 250 সেন্টিমিটার বা তারও বেশি বৃষ্টিপাত হলে কফি চাষ ভালো হয়।
    • ছায়া – কফি চারাগাছগুলিকে প্রখর সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচানোর জন্য বাগিচার মধ্যে ছায়াপ্রদায়ী গাছ হিসেবে কলা, ভুট্টা প্রভৃতি বড়ো পাতার গাছ রোপণ করা হয়।
  • মৃত্তিকা – লাভা-সৃষ্ট উর্বর মাটি এবং লাল দোআঁশ মাটি কফি চাষের উপযোগী।
  • ভূমির প্রকৃতি – ঢালু উচ্চভূমি, বিশেষত পর্বতের পাদদেশে কফি গাছ ভালো হয়। দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণ কর্ণাটক, পার্বত্য অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তর কেরলের পার্বত্য অঞ্চল ও তামিলনাড়ুর উত্তরাংশে প্রচুর কফি উৎপন্ন হয়।

অর্থনৈতিক পরিবেশ –

  • শ্রমিক – গাছ লাগানো, পরিচর্যা করা, কফি ফল তোলা, ভাজা, কফি ফল গুঁড়ো করা প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
  • অন্যান্য – কফি বাগিচা ফসল। তাই উন্নত পরিচালন ব্যবস্থা গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে বাগিচার মধ্যেই কফি গাছ লাগানো থেকে শুরু করে কফি প্রস্তুত করা এবং তাকে টিনজাত করে বিদেশে রপ্তানির উপযোগী করে তোলার মতো সব ধরনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। এ ছাড়া, উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা (কফি বাগিচা থেকে বন্দর পর্যন্ত) এবং প্রচুর মূলধনেরও প্রয়োজন হয়।

ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে চা উৎপাদিত হয়?

অথবা, ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও এবং ভারতে চায়ের বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতে চায়ের চাষ প্রধানত উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ ভারত ও উত্তর ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে হয়ে থাকে। ভারতের মোট চা উৎপাদনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি উৎপাদিত হয় অসম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। 2015-2016 সালের হিসাব অনুসারে ভারতের মোট চায়ের উৎপাদন 123.31 কোটি কেজি। চা উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (চিনের পরেই)। বিশ্বের মোট চা উৎপাদনের 22.68% (2016) ভারতে উৎপাদিত হয়।

অসম রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – দরং, গোয়ালপাড়া, কামরূপ, লিখিমপুর, ডিব্রুগড়, নাগাওঁ, শিবসাগর, কাছাড়, কার্বি আংলং।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য – 
    • ভারতের শীর্ষস্থানাধিকারী চা উৎপাদক রাজ্য।
    • 307.08 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়।
    • 65.30 কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে (2015-2016)।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চা উৎপাদক রাজ্য।
    • 140.44 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়।
    • 32.97 কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে (2015-2016)।

তামিলনাড়ু রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – কন্যাকুমারী, তিরুনেলভেলি, মাদুরাই, কোয়েম্বাটোর, নীলগিরি।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • চা উৎপাদনে ভারতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
    • 69.62 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়।
    • 16.15 কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে (2015-2016)।

অন্যান্য রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা –
    • কেরলের ওয়াইনাড়, ত্রিসুর, ইদুক্কি, কোট্টায়াম;
    • কর্ণাটকের কোদাগ;
    • হিমাচল প্রদেশের কাংড়া, মাণ্ডি;
    • উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন, তেহরি গাড়োয়াল, আলমোড়া;
    • মেঘালয়;
    • ত্রিপুরার কিছু অঞ্চল।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • কেরলে প্রায় 35.01 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়ে থাকে।
    • কেরলে উৎপাদিত চা -এর পরিমাণ 5.66 কোটি কেজি (2015-2016)।

Source: Tea Board of India.

ভারতের চা উৎপাদক অঞ্চল

বাণিজ্য –

ভারত চা রপ্তানিতে বিশ্বে চতুর্থ স্থান অধিকার করে | 2016 সালের হিসাব অনুসারে ভারত বিদেশে 21.68 কোটি কেজি চা রপ্তানি করেছে। রাশিয়া, কাজাখস্তান, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ইরান, পোল্যান্ড প্রভৃতি দেশে চা রপ্তানি করা হয়।

ভারতের কফি উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও।

অথবা, ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে কফি উৎপাদিত হয়?

ভারতের কফি উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতে কফি প্রধানত তিনটি দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যে, যথা-কর্ণাটক, কেরল ও তামিলনাডুতে চাষ করা হয়। কর্ণাটক রাজ্য একাই ভারতের মোট কফি উৎপাদনের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ উৎপাদন করে। ভারতে 2015-2016 সালে কফি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল 3.48 লক্ষ মেট্রিক টন। কফি উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে সপ্তম (2016-2017)।

ভারতের কফি উৎপাদক অঞ্চল

নীচে সারণির মাধ্যমে ভারতের কফি উৎপাদক অঞ্চলসমূহের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল –

কর্ণাটক রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – চিকামাগালুর, হাসান, কোদাগু, মহীশূর, শিমোগা।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের শীর্ষস্থানাধিকারী কফি উৎপাদক রাজ্য।
    • 2015-2016 সালে উৎপাদিত কফির পরিমাণ 2.52 লক্ষ মেট্রিক টন।

কেরল রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – ওয়াইনাড়, পালাক্কাড়, ইদুক্কি, কোল্লাম।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের দ্বিতীয় স্থানাধিকারী কফি উৎপাদক রাজ্য।
    • 2015-2016 সালে উৎপাদিত কফির পরিমাণ 69230 মেট্রিক টন।

তামিলনাড়ু রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – নীলগিরি, সালেম, কোয়েম্বাটোর, মাদুরাই, তিরুনেলভেলি।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য – 
    • ভারতের তৃতীয় স্থানাধিকারী কফি উৎপাদক রাজ্য।
    • 2015-2016 সালে উৎপাদিত কফির পরিমাণ 17295 মেট্রিক টন।

অন্যান্য রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা –
    • অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম জেলার আরাকু উপত্যকা;
    • ওডিশার কোরাপুট, রায়াগাড়া, কালাহাণ্ডি, কণ্ধমাল জেলা;
    • মেঘালয়ের রিভোই, পূর্ব খাসি পাহাড়, পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলা;
    • অসমের কাছাড় জেলা।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য – 2015-2016 সালে অন্ধ্রপ্রদেশের উৎপাদন ছিল 9200 মেট্রিক টন।

Source: Coffee Board of India.

উৎপাদক অঞ্চলসহ ভারতে চা ও কফি উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ বর্ণনা করো।

ভারতে চা ও কফি উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতে চা ও কফি উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ হল নিম্নরূপ –

চা উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয়।
  • উষ্ণতা – 16°C-30°C। আদর্শ গড় উষ্ণতা 25°C। তুহিন ও তুষারপাত ক্ষতিকর।
  • বৃষ্টিপাত – সারাবছরব্যাপী মোট 200 সেমি থেকে 250 সেমি বৃষ্টিপাত। খরা এই ফসলের পক্ষে ক্ষতিকর।
  • মৃত্তিকা – লোহাযুক্ত দোআঁশ বা হিউমাস-সমৃদ্ধ আম্লিক পডসল মাটি। মাটিতে পটাশের পরিমাণ বেশি থাকলে চায়ের স্বাদ ভালো হয়।
  • ভূপ্রকৃতি – ঢালু পার্বত্য অঞ্চল উপযোগী। 34° পর্যন্ত ঢালবিশিষ্ট জমি চা চাষের পক্ষে উপযোগী। 34° থেকে উচ্চ ঢালবিশিষ্ট জমি চা চাষের উপযুক্ত নয় | চায়ের বাগিচাগুলি 2500 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত দেখা যায়।
  • উৎপাদক রাজ্য –
    • অসম (প্রথম স্থান) – লখিমপুর, ডিব্রুগড়, শিবসাগর, দরং, কামরূপ, গোয়ালপাড়া, নাগাঁও, কাছাড় জেলা।
    • পশ্চিমবঙ্গ (দ্বিতীয় স্থান) – দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর জেলা।
    • তামিলনাড়ু (তৃতীয় স্থান) – নীলগিরি, কোয়েম্বাটোর, তিরুনেলভেলি জেলা।
    • অন্যান্য রাজ্য – কেরল, কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড।

কফি উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয়।
  • উষ্ণতা – 20°C-25°C। প্রখর সূর্য-কিরণ কফির চারা সহ্য করতে পারে না। খুব ঠান্ডা বা তুহিন কফি গাছের পক্ষে ক্ষতিকর।
  • বৃষ্টিপাত – সারাবছরব্যাপী মোট 150 সেমি থেকে 250 সেমি বৃষ্টিপাত। কফির চারা রোপণ করার সময় হালকা বৃষ্টিপাত এবং কফি ফল পাকার সময় শুষ্ক আবহাওয়া বিশেষ সহায়ক।
  • মৃত্তিকা – লোহা, পটাশ ও নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ লোহিত মৃত্তিকা।
  • ভূপ্রকৃতি – জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঢালু জমি। ভারতে কফির বাগিচাগুলি 800-1600 মিটার উচ্চতার মধ্যে দেখা যায়।
  • উৎপাদক রাজ্য – 
    • কর্ণাটক (প্রথম স্থান) – চিকামাগালুর, কোদাগু, হাসান, মহীশূর, শিমোগা জেলা।
    • কেরল (দ্বিতীয় স্থান) – ওয়াইনাড়, পালাক্কাড়, ইদুক্কি জেলা।
    • তামিলনাড়ু (তৃতীয় স্থান) – নীলগিরি, সালেম, কোয়েম্বাটোর, মাদুরাই, তিরুনেলভেলি জেলা।
    • অন্ধ্রপ্রদেশ – বিশাখাপত্তনম জেলা।

তুলো চাষের জন্য কী ধরনের ভৌগোলিক অবস্থার প্রয়োজন?

অথবা, ভারতে কার্পাস চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ আলোচনা করো।

তুলো চাষের উপযোগী ভৌগোলিক পরিবেশ –

তুলো ভারতের প্রধান তন্তু ফসল। তুলো চাষের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থা বিশেষভাবে প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – তুলো ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল। তাই মাঝারি ধরনের উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে তুলো চাষ করা হয়।
    • উষ্ণতা – তুলো চাষের জন্য গড়ে 20°C-26°C উষ্ণতা প্রয়োজন।
    • বৃষ্টিপাত – বার্ষিক 60 থেকে 100 সেমি বৃষ্টিপাতে তুলো চাষ ভালো হয় | অবশ্য উত্তর-পশ্চিম ভারত ও দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলে জলসেচের সাহায্যে 60 সেমি-র কম বৃষ্টিপাতযুক্ত এলাকায়ও তুলো চাষ করা হচ্ছে।
    • সামুদ্রিক বাতাস – সামুদ্রিক লোনা বাতাসে তুলো চাষ ভালো হয়।
  • মৃত্তিকা – চুন-মেশানো উর্বর দোআঁশ মাটি তুলো চাষের পক্ষে আদর্শ। এ ছাড়া, চারনোজেম মাটি এবং লাভা থেকে গঠিত দাক্ষিণাত্যের কালো রেগুর মাটিতে প্রচুর পরিমাণে তুলো উৎপাদিত হয়।
  • ভূমির প্রকৃতি – তুলো গাছের গোড়াতে যাতে জল জমতে না পারে সেজন্য উত্তম জলনিকাশি সুবিধাযুক্ত সমতল জমি বা সামান্য ঢালু জমি চাষের পক্ষে আদর্শ তুলো চাষ করা হয়।

অর্থনৈতিক পরিবেশ –

  • শ্রমিক – গাছ লাগানো, গাছের পরিচর্যা করা, গুটি তোলা, গুটি থেকে আঁশ ছাড়ানো প্রভৃতি কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ শ্রমিকের দরকার হয়।
  • সার – তুলো চাষে জমির উর্বরতা খুব দ্রুত কমে যায়। তাই জমিতে পরিমিত জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়।
  • কীটনাশক – তুলো গাছে প্রায়ই পোকা লাগে। যেমন – বল উইভিল নামে এক ধরনের পোকা তুলো চাষের খুব ক্ষতি করে। এজন্য তুলো চাষে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।
  • অন্যান্য – সার, কীটনাশক, উচ্চফলনশীল বীজ, আধুনিক কৃষি-যন্ত্রপাতি, জলসেচ প্রভৃতির সাহায্যে তুলো চাষ করার জন্য প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া, বাজারে তুলোর চাহিদা, তুলো পরিবহণের ভালো ব্যবস্থা প্রভৃতিও তুলোর উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।

ভারতের কোথায় কোথায় তুলো উৎপন্ন হয়?

অথবা, ভারতের তুলো উৎপাদক অঞ্চলগুলির পরিচয় দাও। ভারতের তুলোর বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

ভারতের তুলো উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতে তুলোর চাষ প্রধানত দাক্ষিণাত্য মালভূমির কৃষ্ণ মৃত্তিকা অঞ্চলে দেখা যায়। এই অঞ্চলে উৎপন্ন হয় ভারতের অর্ধেকেরও বেশি তুলো। ভারতে প্রায় 118.7 লক্ষ হেক্টর জমিতে 301.5 লক্ষ বেল (2015-2016) তুলো উৎপন্ন হয়। তুলো উৎপাদনে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় (2013) স্থানাধিকারী দেশ। ভারতে হেক্টর প্রতি তুলো উৎপাদনের পরিমাণ 432 কেজি (2015-2016)।

ভারতের তুলো উৎপাদক অঞ্চল

গুজরাত রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – আমেদাবাদ, ভারুচ, ভাদোদরা, সুরেন্দ্রনগর, সুরাত।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • তুলো উৎপাদনে ভারতে প্রথম স্থানাধিকারী রাজ্য।
    • প্রায় 27.2 লক্ষ হেক্টর (2015-16) জমিতে তুলো চাষ হয়।
    • 97 লক্ষ বেল (2015-2016) তুলো উৎপাদিত হয়েছে।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন 606 কেজি।

মহারাষ্ট্র রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – আকোলা, অমরাবতী, ওয়ার্ধা, ইয়াভাৎমল, নাগপুর, পারভানি।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • ভারতের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ তুলো উৎপাদক রাজ্য।
    • প্রায় 38.3 লক্ষ হেক্টর জমিতে তুলো চাষ হয়।
    • 65 লক্ষ বেল (2015-2016) তুলো উৎপাদিত হয়েছে।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন 289 কেজি।

তেলেঙ্গানা রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা – আদিলাবাদ, ওয়ারাঙ্গাল, খাম্মাম, মেডাক।
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য –
    • তুলো উৎপাদনে ভারতে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
    • 17.7 লক্ষ হেক্টর জমিতে তুলো চাষ হয়।
    • 2015-2016 সালে 38.6 লক্ষ বেল তুলো উৎপাদিত হয়েছে।
    • হেক্টর প্রতি উৎপাদন প্রায় 370 কেজি।

অন্যান্য রাজ্য –

  • উৎপাদক জেলা –
    • হরিয়ানার হিসার, সিরসা, জিন্দ;
    • পাঞ্জাবের অমৃতসর, ফিরোজপুর, ফরিদকোট, বাথিন্ডা;
    • মধ্যপ্রদেশের পূর্ব ও পশ্চিম নিমার, উজ্জয়িন;
    • রাজস্থানের চিতোরগড়, ভিলওয়াড়া;
  • উল্লেখযোগ্য তথ্য – 2015-2016 সালের তথ্য অনুযায়ী তুলোর হেক্টর প্রতি উৎপাদনে মধ্যপ্রদেশ ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে (652 কেজি/হেক্টর)।

উৎপাদক অঞ্চলসহ তুলো উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ বর্ণনা করো।

তুলো উৎপাদনের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতের তুলো উৎপাদনের প্রাকৃতিক পরিবেশগুলি হল –

তুলো ফসল –

  • জলবায়ু – ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয়।
  • উষ্ণতা – প্রথম অবস্থায় 20°C উষ্ণতা এবং সারাবছর 20°C-35°C উষ্ণতা। শুষ্ক ও রৌদ্রোকরোজ্জ্বল আবহাওয়া ও 200টি তুহিন মুক্ত দিন প্রয়োজন।
  • বৃষ্টিপাত – বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 65 সেমি থেকে 100 সেমি।
  • মৃত্তিকা – চুনমিশ্রিত উর্বর দোআঁশ মাটি অথবা কাদাযুক্ত কৃষ্ণমৃত্তিকা বা রেগুর।
  • ভূপ্রকৃতি – উত্তম জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত সমতল জমি অথবা তরঙ্গায়িত ঢালু জমি।
  • উৎপাদক রাজ্য –
    • গুজরাত (প্রথম স্থান) – আমেদাবাদ, ভারুচ, সুরাত, ভাদোদরা, সুরেন্দ্রনগর জেলা।
    • মহারাষ্ট্র (দ্বিতীয় স্থান) – অমরাবতী, আকোলা, ইয়াভাৎমল, ওয়ার্ধা, নাগপুর, পারভানি জেলা।
    • অন্ধ্রপ্রদেশ (তৃতীয় স্থান) – আদিলাবাদ, মেডাক, কুর্নুল জেলা।
    • অন্যান্য রাজ্য – হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু।

আখ উৎপাদনের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং ভারতে আখের বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

আখ উৎপাদনের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ –

আখের রস থেকে চিনি প্রস্তুত করা হয়। আখ উৎপাদনের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থা প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – আখ ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল। খরিফ শস্য হিসেবে আখ চাষ করা হয়।
    • উষ্ণতা – আখ চাষের জন্য 20°C-27°C তাপমাত্রা প্রয়োজন। এর থেকে বেশি উষ্ণতা আখ গাছের ক্ষতি করে।
    • বৃষ্টিপাত – বছরে 75-150 সেমি বৃষ্টিপাত আখ চাষের আদর্শ। তবে এর থেকে কম বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে জলসেচের মাধ্যমে আখ চাষ করা হয়।
    • সামুদ্রিক আবহাওয়া – সামুদ্রিক লবণাক্ত আবহাওয়ায় আখ গাছ বেড়ে ওঠে এবং আখের রসে মিষ্টত্ব বাড়ে। তাই পশ্চিম ভারতে বেশি ভালো আখ উৎপাদন হয়।
    • কুয়াশা – কুয়াশা, ধোঁয়াশা, তুষারপাত আখ চাষে খুব ক্ষতি করে।
  • মাটি – চুনযুক্ত দোআঁশ এবং কালো মাটি আখ চাষে বিশেষ উপযোগী।
  • ভূমির প্রকৃতি – আখ চাষের জমিতে জল দাঁড়ালে তা চাষে ক্ষতি করে। একারণে সামান্য ঢালযুক্ত সমভূমি আখ চাষের পক্ষে আদর্শ। তাই ভালো জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঈষৎ ঢালু জমি ব্যবহৃত হয়।

অর্থনৈতিক পরিবেশ –

  • শ্রমিক – আখ চারা রোপণ, চাষ, ফসল কাটার জন্য প্রচুর নিপুণ এবং সুলভ শ্রমিকের প্রয়োজন। সেজন্য জনবহুল অঞ্চলে আখ চাষ করা হয়।
  • পরিবহণের সুবিধা – পরিবহণ ব্যবস্থা ভালো না হলে আখ চাষ করা উচিত নয়। কারণ আখ কাটার 24 ঘণ্টার মধ্যে তা থেকে রস বের করে না নিলে আখের রসের পরিমাণ ও মিষ্টত্ব কমে যায়। একারণে চিনিকলগুলি আখ চাষের জমির নিকটবর্তী স্থানে গড়ে ওঠে।
  • মূলধন – আখ জমির উর্বরতা দ্রুত নষ্ট করে দেয়। তাই প্রচুর সার প্রয়োগ করতে হয়। এ ছাড়া, কীটনাশক প্রয়োগ, জলসেচ করা, সুলভ শ্রমিক নিয়োগ এসবের জন্য প্রচুর অর্থের দরকার হয়।
  • চাহিদা ও বাজার – আখকে গুদামজাত করা যায় না। তাই চাহিদার ওপর নির্ভর করে চিনিকলগুলি এবং আখের বাজার গড়ে ওঠে। ভারতে বিপুল জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে আখ চাষের জমির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে।

বাণিজ্য –

2016-2017 সালে ভারত থেকে 8993 কোটি টাকা মূল্যের প্রায় 29.4 লক্ষ টন চিনি ও ঝোলাগুড় বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে। বৈদেশিক বাণিজ্যে আখ থেকে উৎপাদিত চিনির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

উৎপাদক অঞ্চলসহ মিলেট চাষের অনুকূল অবস্থা লেখো। ভারতে মিলেট শস্যের বাণিজ্য সম্পর্কে লেখো।

জোয়ার, বাজরা, রাগিকে একত্রে মিলেট বলে। এগুলি ক্রান্তীয় শুষ্ক অঞ্চলের ফসল। নীচের সারণিতে ভারতে মিলেট চাষের অনুকূলে ভৌগোলিক পরিবেশ এবং উৎপাদক অঞ্চল সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল –

জোয়ার ফসল

  • উষ্ণতা – 26°C-33°C উষ্ণতার প্রয়োজন। 16°C -এর কম উষ্ণতা ও অধিক আর্দ্রতা জোয়ার চাষে ক্ষতি করে।
  • বৃষ্টিপাত – বছরে 30-100 সেমি বৃষ্টিপাত দরকার।
  • অন্যান্য – দীর্ঘস্থায়ী খরা উৎপাদন ব্যাহত করে।
  • মাটি – পলিমাটি, লোহিত মাটিতে জোয়ার হয়। তবে কালোমাটি আদর্শ।
  • ভূপ্রকৃতি – সমভূমিতেই জোয়ার ভালো হয়। পাহাড়ের মৃদু ঢালেও চাষ করা যায়।
  • উৎপাদক অঞ্চল –
    • মহারাষ্ট্র – প্রথম। জলগাঁও, বুলধানা আকোলা, অমরাবতী প্রভৃতি জেলা।
    • কর্ণাটক – দ্বিতীয়। বিজয়পুরা, ধারওয়ার, রায়চুর, বেল্লারি প্রভৃতি জেলা।
    • তামিলনাড়ু – (তৃতীয়)। এ ছাড়া, অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে জোয়ার চাষ হয়।
    • ভারতে 2015-16 সালে 44.1 লক্ষ টন জোয়ার উৎপাদিত হয়।

বাজরা ফসল –

  • উষ্ণতা – 25°C-30°C উষ্ণতায় বাজরা চাষ হয়। ফসল পাকার সময় উষ্ণতা বেশি হওয়া দরকার।
  • বৃষ্টিপাত – বছরে 40-50 সেমি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন।
  • মাটি – বালিমাটিতে খুব ভালো চাষ হয়। তবে কালোমাটি ও লোহিত মাটিতেও এই চাষ হয়।
  • ভূপ্রকৃতি – সমতল ও মালভূমিতে বাজরা চাষ হয়।
  • উৎপাদক অঞ্চল –
    • রাজস্থান – প্রথম। যোধপুর, বিকানের, চুরু, বারমের প্রভৃতি জেলা।
    • উত্তরপ্রদেশ – বাজরা উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে।
    • এছাড়া, গুজরাত, হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের শুষ্ক অঞ্চলে বাজরা চাষ করা হয়। 2015-2016 সালে 80.6 লক্ষ টন বাজরা উৎপাদিত হয়।

রাগি ফসল –

  • উষ্ণতা – 20°C-30°C উষ্ণতায় রাগি চাষ হয়।
  • বৃষ্টিপাত – বছরে 50-100 সেমি বৃষ্টিপাত প্রয়োজন।
  • মাটি – হালকা কালোমাটি, লালমাটি ও বালিময় পলল মাটিতে রাগি চাষ হয়।
  • ভূপ্রকৃতি – তরঙ্গায়িত মালভূমি অঞ্চলে রাগি চাষ হয়।
  • উৎপাদক অঞ্চল –
    • কর্ণাটক – প্রথম। এখানকার হাসান, চিত্রদূর্গ, টুমাকুরু, মহীশূরে প্রচুর রাগি চাষ হয়।
    • তামিলনাডু – দ্বিতীয়। নীলগিরি, উত্তর ও দক্ষিপ আর্কট, সালেম প্রধান রাগি উৎপাদক অঞ্চল।
    • অন্যান্য – উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন হিমালয়ে, মহারাষ্ট্রে, অন্ধ্রপ্রদেশে, বিহারে রাগি চাষ হয়।
মিলেট উৎপাদক অঞ্চল

Source: Directorate of Economics and Statistics, Department of Agriculture and Coorporation.

বাণিজ্য –

ভারত থেকে মিলেট বিদেশে রপ্তানি করা হয়। FAO (2013) -এর তথ্য অনুসারে ভারত থেকে প্রায় 82 হাজার 602 টন মিলেট বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে।

পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষিসমৃদ্ধির কারণগুলি কী কী?

পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষিসমৃদ্ধির কারণসমূহ –

ভারতের কৃষিক্ষেত্রে দুটি বিশেষ অঞ্চল তথা রাজ্য পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য নাম। ভারতের এই দুটি অঞ্চলে কৃষি উন্নতির কারণ হল –

  • মাটি – এই অঞ্চলের ভূমিভাগ মূলত সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে গঠিত। সুতরাং নদীবাহিত পলিমাটি হওয়ার জন্য এখান মাটি উর্বর। আবার বহু জায়গায় মাটিতে বালির ভাগ বেশি হলেও এর মধ্যে নানা খনিজ মৌল বেশি থাকায় ফসল উৎপাদনের হার খুব বেশি।
  • জলসেচ – ভারতের সর্ববৃহৎ জলসেচ প্রকল্পটি এই দুই রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেছে। ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনার মাধ্যমে বিস্তৃত জমিতে জলসেচ করা যায়। সারাবছর ধরে জলসেচ করা সম্ভব হয় বলে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় বছরে তিন-চার বার চাষ হয়।
  • যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চাষ – পাঞ্জাব, হরিয়ানা অঞ্চলে ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার প্রভৃতির মাধ্যমে চাষ করা হয়। বৃহৎ জমিতে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষবাস কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার – ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হয়। সেকারণে ভারতের এই দুটি রাজ্যে উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি হয়।
  • কৃষি প্রশিক্ষণ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন – ঋতু, মাটির প্রকৃতি অনুযায়ী কৃষি পদ্ধতি অবলম্বন করার জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রতিনিয়ত কৃষিতে উন্নতির লক্ষ্যে গবেষণা চালানো হচ্ছে।
পাঞ্জাব-হরিয়ানা কৃষি অঞ্চল

এ ছাড়া, সরকার কর্তৃক উৎপাদিত ফসলের দাম নির্ধারণ, বিদ্যুতের সুবিধা, ভারতের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার, সরকারি পরিকাঠামোর উন্নয়ন প্রভৃতি কারণে পাঞ্জাব ও হরিয়ানাতে কৃষির ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। যেমন – 2015-2016 সালের তথ্য অনুসারে, পাঞ্জাব হেক্টর প্রতি গম উৎপাদনে ভারতে প্রথম (4596 কেজি), হরিয়ানা দ্বিতীয় (4407 কেজি)। আবার হেক্টর প্রতি ধান উৎপাদনে পাঞ্জাব প্রথম (3974 কেজি), হরিয়ানা চতুর্থ (3061 কেজি)। অন্যদিকে, হেক্টর প্রতি তুলো উৎপাদনে হরিয়ানা (381 কেজি) ও পাঞ্জাব (226 কেজি) ভারতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে।

[Source: Directo-rate of Economics and Statistics, Department of Agriculture and Cooperation]

ভারতের প্রধান প্রধান ইক্ষু বা আখ উৎপাদক অঞ্চলের নাম করো।

ভারতের প্রধান ইক্ষু উৎপাদক অঞ্চলসমূহ –

ভারতের প্রধান প্রধান ইক্ষু উৎপাদক অঞ্চলের নামগুলি হল –

  • উত্তরপ্রদেশ – ভারতে ইক্ষু উৎপাদনে উত্তরপ্রদেশের স্থান প্রথম। উত্তরপ্রদেশে মোট ইক্ষু চাষের আওতাধীন জমির পরিমাণ 21.7 লক্ষ হেক্টর। এই রাজ্যের মুজফ্ফরনগর, মিরাট, মোরাদাবাদ, সাহারানপুর, দেওরিয়া, গাজিয়াবাদ, বেরিলি, সীতাপুর প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক জেলা।
  • মহারাষ্ট্র – ইক্ষু উৎপাদনে এই রাজ্যের স্থান ভারতে দ্বিতীয়। মহারাষ্ট্র রাজ্যের 9.90 লক্ষ হেক্টর জমিতে ইক্ষু চাষ করা হয়। উত্তরপ্রদেশের তুলনায় মহারাষ্ট্রে উৎপাদিত ইক্ষু গুণমানের দিক থেকে উন্নত। কালো মাটি, সামুদ্রিক আবহাওয়ার জন্য এখানে উন্নতমানের ইক্ষু পাওয়া যায়। এখানকার আহমেদনগর, কোলাপুর, পুনে, নাসিক, সানগ্লি, সাতারা, ওসমানাবাদ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য ইক্ষু উৎপাদক অঞ্চল।
  • কর্ণাটক – এই রাজ্যের প্রায় 4.50 লক্ষ হেক্টর জমিতে ইক্ষুচাষ করা হয়। ইক্ষু উৎপাদনে এই রাজ্যের স্থান বর্তমানে ভারতে তৃতীয়। এখানকার মহীশূর, বিজয়পুরা, শিমোগা, চিত্রদূর্গ প্রভৃতি জেলাগুলিতে ইক্ষুচাষ করা হয়।
  • অন্যান্য – এ ছাড়া, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব রাজ্যে ইক্ষু চাষ করা হয়।

উৎপাদন – 2015-2016 সালে ভারতে ইক্ষুর মোট উৎপাদন ছিল 35.22 কোটি টন। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশ 14.54, মহারাষ্ট্র 7.23, এবং কর্ণাটক 3.85 কোটি টন ইক্ষু উৎপাদন করে।

ভারতের ইক্ষু উৎপাদক অঞ্চল

ভারতের ইক্ষু চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

15 নং দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নের উত্তরের ‘প্রাকৃতিক পরিবেশ’ শীর্ষক অংশটি দ্যাখো।

ভারতের ইক্ষু চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ –

আখের রস থেকে চিনি প্রস্তুত করা হয়। আখ উৎপাদনের জন্য নিম্নলিখিত ভৌগোলিক অবস্থা প্রয়োজন –

প্রাকৃতিক পরিবেশ –

  • জলবায়ু – আখ ক্রান্তীয় অঞ্চলের ফসল। খরিফ শস্য হিসেবে আখ চাষ করা হয়।
    • উষ্ণতা – আখ চাষের জন্য 20°C-27°C তাপমাত্রা প্রয়োজন। এর থেকে বেশি উষ্ণতা আখ গাছের ক্ষতি করে।
    • বৃষ্টিপাত – বছরে 75-150 সেমি বৃষ্টিপাত আখ চাষের আদর্শ। তবে এর থেকে কম বৃষ্টিযুক্ত অঞ্চলে জলসেচের মাধ্যমে আখ চাষ করা হয়।
    • সামুদ্রিক আবহাওয়া – সামুদ্রিক লবণাক্ত আবহাওয়ায় আখ গাছ বেড়ে ওঠে এবং আখের রসে মিষ্টত্ব বাড়ে। তাই পশ্চিম ভারতে বেশি ভালো আখ উৎপাদন হয়।
    • কুয়াশা – কুয়াশা, ধোঁয়াশা, তুষারপাত আখ চাষে খুব ক্ষতি করে।
  • মাটি – চুনযুক্ত দোআঁশ এবং কালো মাটি আখ চাষে বিশেষ উপযোগী।
  • ভূমির প্রকৃতি – আখ চাষের জমিতে জল দাঁড়ালে তা চাষে ক্ষতি করে। একারণে সামান্য ঢালযুক্ত সমভূমি আখ চাষের পক্ষে আদর্শ। তাই ভালো জলনিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত ঈষৎ ঢালু জমি ব্যবহৃত হয়।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

তড়িদবিশ্লেষণের ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।

অ্যানোড মাড কী? এর একটি অর্থনৈতিক গুরুত্ব লেখো।

কপার বিশুদ্ধ করতে তড়িৎবিশ্লেষণ পদ্ধতির প্রয়োগ ব্যাখ্যা করো।

তড়িৎ বিশ্লেষণের মূলনীতিটি লেখো।

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।