এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি উল্লেখ করো। α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি উল্লেখ করো। α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি উল্লেখ করো।
তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি হল –
- আলফা (α) রশ্মির প্রকৃতি – α-রশ্মি ধনাত্মক তড়িদাধান যুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদার্থ কণার সমষ্টি। তীব্র বেগে নির্গত হয় বলে এইসব পদার্থকে রশ্মি বলে মনে হয়।
- β-রশ্মির প্রকৃতি – β-রশ্মি ঋণাত্মক তড়িদাধান যুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পদার্থ কণার সমষ্টি। তীব্র বেগে নির্গত হয় বলে রশ্মি বলে মনে হয়।
- γ-রশ্মির প্রকৃতি – γ-রশ্মি কোনো কণা নয়। এটি অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিশিষ্ট তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ।
α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা করো।
α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা হল –
α-কণা | β-কণা | γ-রশ্মি |
প্রতিটি α-কণার ভর 4 একক অর্থাৎ প্রতিটি α-কণার ভর 6.642 × 10-27 কিলোগ্রাম। | β-কণার ভর প্রায় নেই। একটি β-কণার ভর 0.000548 amu অর্থাৎ প্রতিটি β-কণার ভর 9.108 × 10-31 কিলোগ্রাম। | ভর নেই। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
আলফা, বিটা ও গামা রশ্মির মধ্যে ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি কার?
ভেদন ক্ষমতার দিক থেকে – γ (গামা) রশ্মি > β (বিটা) রশ্মি > α (আলফা) রশ্মি।
গামা রশ্মি তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় এর ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এটি কংক্রিট বা সিসার মোটা স্তরও ভেদ করতে পারে। আলফা রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে কম; একটি কাগজের পাত দিয়েও এটিকে আটকানো যায়।
আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিগুলোর আধান বা চার্জের প্রকৃতি কী?
আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিগুলোর আধান বা চার্জের প্রকৃতি হল –
1. আলফা (α) রশ্মি – ধনাত্মক আধানযুক্ত (+2), হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের মতো।
2. বিটা (β) রশ্মি – ঋণাত্মক আধানযুক্ত (-1), ইলেকট্রনের মতো।
3. গামা (γ) রশ্মি – কোনো আধান নেই, কারণ এটি একটি তরঙ্গ (নিরপেক্ষ)।
আলফা, বিটা ও গামা রশ্মির মধ্যে আয়নীভবন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি কার?
আয়নীভবন ক্ষমতার দিক থেকে – α (আলফা) রশ্মি > β (বিটা) রশ্মি > γ (গামা) রশ্মি।
আলফা কণার ভর ও আধান বেশি হওয়ায় এটি বাতাসের অণু-পরমাণুর সাথে প্রবলভাবে সংঘর্ষ করে এবং সবচেয়ে বেশি আয়ন তৈরি করে। গামা রশ্মির আধান নেই, তাই এর আয়নীভবন ক্ষমতা সবচেয়ে কম।
চৌম্বক ক্ষেত্রে আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিগুলোর উপর কী প্রভাব পড়ে?
চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় –
1. আলফা রশ্মি – খুব সামান্য বেঁকে যায় (ভর বেশি হওয়ায়)।
2. বিটা রশ্মি – প্রচণ্ডভাবে বেঁকে যায় এবং আলফা রশ্মির বিপরীত দিকে বিচ্যুত হয় (ভর কম ও বিপরীত আধানযুক্ত হওয়ায়)।
3. গামা রশ্মি – কোনো বিচ্যুতি হয় না; একদম সোজা চলে যায় (আধানহীন হওয়ায়)।
তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের সময় নিউক্লিয়াস থেকে আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিগুলো কীভাবে সৃষ্টি হয়?
তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের সময় নিউক্লিয়াস থেকে আলফা, বিটা ও গামা রশ্মিগুলো সৃষ্টি হয় –
1. আলফা রশ্মি: যখন কোনো ভারী ও অস্থিতিশীল নিউক্লিয়াস (যেমন – ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম) 2টি প্রোটন ও 2টি নিউট্রন একসাথে হিলিয়াম নিউক্লিয়াস আকারে নির্গত করে।
2. বিটা রশ্মি – যখন নিউক্লিয়াসে একটি নিউট্রন প্রোটন ও ইলেকট্রনে ভেঙে যায়। সেই ইলেকট্রনই বিটা কণা হিসেবে বের হয়।
3. গামা রশ্মি – নিউক্লিয়াস উত্তেজিত অবস্থা থেকে নিম্নশক্তির (স্থিতিশীল) অবস্থায় এলে অতিরিক্ত শক্তি তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ আকারে নির্গত হয়। এটি প্রায়শই আলফা বা বিটা ক্ষয়ের পরপরই নির্গত হয়।
জীবদেহের জন্য কোন রশ্মিটি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক এবং কেন?
জীবদেহের জন্য যে রশ্মিটি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক –
1. আলফা রশ্মি – বাহ্যিকভাবে কম ক্ষতিকর (ত্বকই এটিকে আটকে দেয়), কিন্তু শরীরের ভেতরে প্রবেশ করলে (শ্বাস বা খাদ্যের মাধ্যমে) সবচেয়ে ক্ষতিকর। কারণ, এর আয়নীভবন ক্ষমতা অত্যন্ত বেশি এবং এটি কোষের DNA -র মারাত্মক ক্ষতি করে।
2. গামা রশ্মি – বাহ্যিকভাবেও অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ এটি শরীর ভেদ করে গভীরভাবে ক্ষতি করতে পারে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি উল্লেখ করো। α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে নির্গত তিনটি রশ্মির প্রকৃতি উল্লেখ করো। α-কণা, β-কণা ও γ-রশ্মির ভরের তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন