এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড অণুর গঠন দেখাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড অণুর গঠন দেখাও।
ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) অণুর গঠন –

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডে কী ধরনের রাসায়নিক বন্ধন দেখা যায়?
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড (MgCl2) একটি আয়নীয় বন্ধন বা তড়িৎযোজী বন্ধন দ্বারা গঠিত হয়। এটি ঘটে কারণ ম্যাগনেসিয়াম একটি ধাতু এবং ক্লোরিন একটি অধাতু, যার ফলে তাদের মধ্যে ইলেকট্রনের সম্পূর্ণ আদান-প্রদান হয়।
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডে আয়নীয় বন্ধন কীভাবে গঠিত হয়?
এই গঠন নিম্নলিখিত ধাপগুলির মাধ্যমে সম্পন্ন হয় –
1. একটি নিরপেক্ষ ম্যাগনেসিয়াম (Mg) পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষে 2টি ইলেকট্রন থাকে। এটি এই 2টি ইলেকট্রন বর্জন করে একটি স্থিতিশীল, ধনাত্মক আধানযুক্ত আয়নে (Mg2+) পরিণত হয়।
2. একটি নিরপেক্ষ ক্লোরিন (Cl) পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষে 7টি ইলেকট্রন থাকে। স্থিতিশীল হওয়ার জন্য এটির 1টি ইলেকট্রন গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তাই, একটি ম্যাগনেসিয়াম পরমাণু তার দুটি ইলেকট্রন দুটি পৃথক ক্লোরিন পরমাণুকে প্রদান করে।
3. প্রতিটি ক্লোরিন পরমাণু একটি করে ইলেকট্রন গ্রহণ করে এবং একটি স্থিতিশীল, ঋণাত্মক আধানযুক্ত আয়নে (Cl−) পরিণত হয়।
অবশেষে, একটি ধনাত্মক ম্যাগনেসিয়াম আয়ন (Mg2+) এবং দুটি ঋণাত্মক ক্লোরাইড আয়নের (Cl−) মধ্যে তীব্র স্থিরতাড়িত আকর্ষণ বলের কারণে আয়নীয় যৌগ MgCl2 গঠিত হয়।
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের রাসায়নিক সংকেত MgCl2 হয় কেন, MgCl বা MgCl3 নয় কেন?
রাসায়নিক সংকেতটি একটি তড়িৎ নিরপেক্ষ যৌগ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় আয়নের অনুপাতকে বোঝায়।
ম্যাগনেসিয়াম +2 আধানযুক্ত একটি ক্যাটায়ন (Mg2+) গঠন করে।
ক্লোরিন −1 আধানযুক্ত একটি অ্যানায়ন (Cl−) গঠন করে। আধানের সমতা বজায় রাখার জন্য, একটি ম্যাগনেসিয়াম আয়নের (+2 আধান) প্রশমিত করতে দুটি ক্লোরাইড আয়নের (মোট আধান 2 × −1 = −2) প্রয়োজন হয়। এই কারণেই এর সংকেত MgCl2 হয়।
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
1. অবস্থা: এটি ঘরের তাপমাত্রায় একটি সাদা বা বর্ণহীন কেলাসাকার কঠিন পদার্থ।
2. দ্রবণীয়তা – এটি জলে অত্যন্ত দ্রবণীয়।
3. পরিবাহিতা – কঠিন অবস্থায় এটি বিদ্যুৎ পরিবহন করে না, কিন্তু গলিত বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নগুলি চলাচল করতে পারায় এটি বিদ্যুতের সুপরিবাহী।
4. গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক – আয়নীয় বন্ধনের তীব্র আকর্ষণ বলের কারণে এর গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি হয়।
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইডের কিছু সাধারণ ব্যবহার কী কী?
ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে হল –
1. শীতপ্রধান দেশে রাস্তা বরফমুক্ত রাখতে।
2. কাঁচা রাস্তায় ধুলো নিয়ন্ত্রণ করতে।
3. ঔষধ এবং পশুখাদ্যে খনিজ সম্পূরক হিসেবে।
4. ম্যাগনেসিয়াম ধাতু উৎপাদনে।
5. সয়াবিনের দুধ থেকে টফু তৈরির জন্য জমাট বাঁধায়ক (coagulant) হিসাবে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড অণুর গঠন দেখাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন