এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “মিথেন অণুর ইলেকট্রন ডট্ গঠন দেখাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

মিথেন অণুর ইলেকট্রন ডট্ গঠন দেখাও।
মিথেন (CH4) অণুর গঠন –

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?
সমযোজী বন্ধন হলো এক ধরণের রাসায়নিক বন্ধন যা দুটি পরমাণুর মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় ভাগ (share) করে নেওয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। পরমাণুগুলো তাদের সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা স্থিতিশীল করার জন্য এই বন্ধন গঠন করে। মিথেন অণুতে, একটি কার্বন পরমাণু চারটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে ইলেকট্রন ভাগ করে চারটি একক সমযোজী বন্ধন তৈরি করে।
মিথেনে কার্বন কীভাবে চারটি বন্ধন তৈরি করে?
কার্বনের সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে চারটি ইলেকট্রন থাকে। স্থিতিশীল হওয়ার জন্য, এর অষ্টক পূরণের (আটটি ইলেকট্রন) জন্য আরও চারটি ইলেকট্রন প্রয়োজন। অন্যদিকে, হাইড্রোজেনের একটি ইলেকট্রন থাকে এবং এর দ্বৈত (দুটি ইলেকট্রন) পূরণের জন্য আরও একটি ইলেকট্রন প্রয়োজন।
এই কারণে, একটি কার্বন পরমাণু তার চারটি যোজক ইলেকট্রনকে চারটি পৃথক হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে ভাগ করে। প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণুও তার একটি ইলেকট্রনকে কার্বনের সাথে ভাগ করে। এর ফলে চারটি একক সমযোজী বন্ধন গঠিত হয় এবং একটি স্থিতিশীল মিথেন (CH4) অণু তৈরি হয়।
অষ্টক সূত্র কী এবং এটি এখানে কীভাবে প্রযোজ্য?
অষ্টক সূত্র হলো একটি রাসায়নিক নীতি যা অনুযায়ী পরমাণুগুলো এমনভাবে বন্ধন তৈরি করতে চায় যাতে প্রতিটির সর্ববহিঃস্থ কক্ষে আটটি ইলেকট্রন থাকে, যা তাদের একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস প্রদান করে।
1. মিথেন (CH4) অণুতে, কেন্দ্রীয় কার্বন পরমাণু চারটি হাইড্রোজেনের সাথে ইলেকট্রন ভাগ করে মোট আটটি ইলেকট্রন অর্জন করে, যা অষ্টক সূত্র মেনে চলে।
2. প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণু কার্বনের সাথে ইলেকট্রন ভাগ করে দুটি ইলেকট্রন লাভ করে, যা প্রথম কক্ষপথের জন্য স্থিতিশীল (দ্বৈত সূত্র)।
মিথেন অণুর আসল ত্রি-মাত্রিক (3D) গঠন কেমন?
যদিও লুইস ডট গঠন কাগজে সমতলভাবে আঁকা হয়, মিথেন অণুর আসল ত্রি-মাত্রিক গঠন হলো চতুষ্তলকীয় (Tetrahedral)। এতে কেন্দ্রীয় কার্বন পরমাণুটি কেন্দ্রে থাকে এবং চারটি হাইড্রোজেন পরমাণু একটি চতুষ্তলকের চারটি কোণায় অবস্থান করে। যেকোনো দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর মধ্যে বন্ধন কোণ (H-C-H) হলো প্রায় 109.5°। এই গঠনের ফলে বন্ধনে থাকা ইলেকট্রন জোড়গুলো একে অপরের থেকে দূরে থাকতে পারে, যা তাদের মধ্যে বিকর্ষণ কমিয়ে অণুটিকে স্থিতিশীল করে।
মিথেন কী এবং এর ব্যবহার কী?
মিথেন (CH4) একটি বর্ণহীন, গন্ধহীন এবং দাহ্য গ্যাস। এটি সবচেয়ে সরল হাইড্রোকার্বন এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রধান উপাদান।
এর প্রধান ব্যবহারগুলো হলো –
1. জ্বালানি হিসেবে – বাড়ি গরম রাখা, রান্না করা এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
2. রাসায়নিক শিল্পে – এটি অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থ তৈরির জন্য প্রাথমিক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “মিথেন অণুর ইলেকট্রন ডট্ গঠন দেখাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন