তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ ও তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ ও তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ ও তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ ও তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

তড়িৎ পরিবাহী – যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই তড়িৎ চলাচল করতে পারে, সেইসব পদার্থকে তড়িৎ পরিবাহী বলে। যেমন – রূপো, তামা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি তড়িৎ পরিবাহী।

তড়িৎ অপরিবাহী – যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ চলাচল করতে পারে না, সেইসব পদার্থকে তড়িৎ অপরিবাহী বলে। যেমন – কাঠ, কাচ, অভ্র ইত্যাদি তড়িৎ অপরিবাহী।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তড়িৎ পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থ বলতে কী বোঝায়?

যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ (ইলেকট্রনের প্রবাহ) সহজেই হতে পারে, সেগুলোকে তড়িৎ পরিবাহী বলে। অন্যদিকে, যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ হতে পারে না, সেগুলোকে তড়িৎ অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে।

তড়িৎ পরিবাহী পদার্থের উদাহরণ দাও।

কিছু সাধারণ তড়িৎ পরিবাহী পদার্থের উদাহরণ হলো – রূপা (সবচেয়ে ভালো পরিবাহী), তামা, অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, লোহা, গ্রাফাইট (পেন্সিলের সীস) প্রভৃতি।

তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থের উদাহরণ দাও।

কিছু সাধারণ তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থের উদাহরণ হলো – কাঠ, কাচ, প্লাস্টিক, রাবার, অভ্র, শুষ্ক বায়ু প্রভৃতি।

পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা কীসের উপর নির্ভর করে?

একটি পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতা মূলত তার মধ্যে থাকা মুক্ত ইলেকট্রনের উপস্থিতি ও সংখ্যার উপর নির্ভর করে। ধাতুতে প্রচুর মুক্ত ইলেকট্রন থাকে বলে সেগুলো ভালো তড়িৎ পরিবাহী। অপরিবাহী পদার্থে মুক্ত ইলেকট্রন প্রায় থাকে না (বা খুবই কম থাকে)।

জলের তড়িৎ পরিবাহিতা কেমন?

খাঁটি বা শুদ্ধ জল আসলে তড়িৎ অপরিবাহী। কিন্তু আমরা যে সাধারণ জল ব্যবহার করি (যেমন – নলকূপ বা নদীর জল), তাতে বিভিন্ন লবণ ও খনিজ পদার্থ মিশ্রিত থাকে, যা জলকে তড়িৎ পরিবাহী করে তোলে। এ কারণেই ভেজা হাতে বা জলের কাছে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার বিপজ্জনক।

মানবদেহ কি তড়িৎ পরিবাহী?

হ্যাঁ, মানবদেহ তড়িৎ পরিবাহী। কারণ রক্ত, পেশী ও শরীরের তরলে বিভিন্ন লবণ ও আয়ন থাকে, যা তড়িৎ পরিবহন করতে পারে। এজন্যই বৈদ্যুতিক শক লাগে।

তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থের ব্যবহার বা গুরুত্ব কী?

তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ব্যবহার উদাহরণস্বরূপ –
1. বৈদ্যুতিক তারের উপর প্লাস্টিক বা রাবারের আবরণ (যাতে হাতে ধরলে কারেন্ট না লাগে)।
2. বৈদ্যুতিক সুইচ, প্লাগ ও সরঞ্জামের হাতল তৈরি করতে।
3. বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে রাবারের স্যান্ডেল ব্যবহার।

অর্ধপরিবাহী (Semiconductor) কাকে বলে?

অর্ধপরিবাহী হলো এক বিশেষ ধরনের পদার্থ, যাদের তড়িৎ পরিবাহিতা পরিবাহী ও অপরিবাহীর মাঝামাঝি। তাপমাত্রা, আলো বা অন্য কোনো পদার্থের সংমিশ্রণের উপর ভিত্তি করে তাদের পরিবাহিতা পরিবর্তিত হয়। সিলিকন এবং জার্মেনিয়াম হলো সবচেয়ে পরিচিত অর্ধপরিবাহী, যা কম্পিউটার চিপ, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

গ্রাফাইট কি তড়িৎ পরিবাহী?

হ্যাঁ, গ্রাফাইট (যা পেন্সিলের শিসে থাকে) কার্বনের একটি রূপ হওয়া সত্ত্বেও এটি তড়িৎ পরিবাহী। এর বিশেষ স্ফটিক কাঠামোর কারণে এতে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে, যা তড়িৎ পরিবহন করতে সক্ষম।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎ পরিবাহী পদার্থ ও তড়িৎ অপরিবাহী পদার্থ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহার দ্রব্যে তামার প্রলেপ দিতে হলে ক্যাথোড ও অ্যানোডরূপে কী কী ব্যবহার করা হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়? বিক্রিয়ার সমীকরণ দাও।

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

তড়িৎলেপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

ধাতুর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ও তড়িৎবিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।