এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?
H₂S গ্যাসের শনাক্তকরণ –
পচা ডিমের গন্ধযুক্ত কোনো গ্যাস নাকে প্রবেশ করলেই বোঝা যায় যে গ্যাসটি হাইড্রোজেন সালফাইড। এই গ্যাস লেড অ্যাসিটেট সিক্ত সাদা কাগজকে কালো করে।
(CH₃COO)₂Pb + H₂S → PbS + 2CH₃COOH
সদ্য প্রস্তুত সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড দ্রবণে NaOH ঢেলে দ্রবণকে ক্ষারীয় করে ওই ক্ষারীয় দ্রবণে H₂S গ্যাস চালনা করলে দ্রবণ সুন্দর বেগুনি বর্ণ ধারণ করে।
2NaOH + H₂S → Na₂S + 2H₂O
Na₂S + Na₂[Fe(CN)₅NO] → Na₄Fe(CN)₅NOS (বেগুনি)
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
লেড অ্যাসিটেট দিয়ে H₂S গ্যাস শনাক্ত করার রাসায়নিক বিক্রিয়াটি কী?
লেড অ্যাসিটেট [(CH₃COO)₂Pb] এর সাথে হাইডড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের বিক্রিয়ায় কালো বর্ণের লেড সালফাইড (PbS) উৎপন্ন হয়, যা সিক্ত সাদা কাগজকে কালো করে দেয়।
রাসায়নিক সমীকরণ – (CH₃COO)₂Pb + H₂S → PbS (কালো) + 2CH₃COOH
লেড অ্যাসিটেট টেস্ট পেপার কীভাবে তৈরি করতে হয়?
ফিল্টার পেপার বা যেকোনো সাদা কাগজের টুকরোকে লেড অ্যাসিটেট দ্রবণে ভিজিয়ে নিতে হয়। তারপর এই সিক্ত কাগজটি পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করতে হয়। কাগজটি শুকিয়ে গেলে তা কার্যক্ষমতা হারাতে পারে, তাই সাধারণত সিক্ত অবস্থাতেই ব্যবহার করা ভালো।
সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড পরীক্ষায় দ্রবণটি ক্ষারীয় কেন করতে হয়?
সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড [Na₂[Fe(CN)₅NO]] এর সাথে H₂S গ্যাসের বিক্রিয়া সঠিকভাবে ঘটার জন্য ক্ষারীয় মাধ্যম প্রয়োজন। NaOH যোগ করে এই ক্ষারীয় মাধ্যম তৈরি করা হয়, যা বেগুনি রঙের যৌগ [Na₄Fe(CN)₅NOS] গঠনে সাহায্য করে।
সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড পরীক্ষায় বেগুনি বর্ণের রাসায়নিক যৌগটির নাম কী?
বেগুনি বর্ণের যৌগটির নাম হল সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড-সালফাইড কমপ্লেক্স, যার রাসায়নিক সংকেত হল Na₄[Fe(CN)₅NOS]।
H₂S গ্যাসের দুটি রাসায়নিক শনাক্তকরণ পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য কী?
H₂S গ্যাসের দুটি রাসায়নিক শনাক্তকরণ পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য হল –
1. লেড অ্যাসিটেড পদ্ধতি – এটি একটি স্থির পরীক্ষা, যেখানে গ্যাসকে টেস্ট পেপারের সংস্পর্শে আনা হয়। এর ফলাফল হয় কালো বর্ণের অধঃক্ষেপ।
2. সোডিয়াম নাইট্রোপ্রুসাইড পদ্ধতি – এটি একটি দ্রবণ-ভিত্তিক পরীক্ষা, যেখানে গ্যাসকে একটি বিশেষ দ্রবণের মধ্য দিয়ে চালনা করা হয়। এর ফলাফল হয় দ্রবণের বেগুনি রঙ ধারণ করা।
হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের সবচেয়ে সহজ শনাক্তকরণ পদ্ধতি কী?
পচা ডিমের মতো স্বতন্ত্র গন্ধ হল H₂S গ্যাস শনাক্ত করার সবচেয়ে সহজ ও সাধারণ পদ্ধতি। তবে, উচ্চ মাত্রার H₂S গ্যাস দ্রুত আমাদের ঘ্রাণশক্তিকে সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে, তাই এটি একমাত্র নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি নয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন