এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “H₂S গ্যাসের ব্যবহারগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

H₂S গ্যাসের ব্যবহারগুলি লেখো।
H₂S -এর ব্যবহারগুলি হল –
- H₂S গ্যাস পরীক্ষাগারে বিজারক দ্রব্যরূপে ব্যবহৃত হয়।
- H₂S গ্যাস বিভিন্ন সালফাইড ও বাইসালফাইড লবণ প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।
- ব্যবহারিক রসায়নে অজৈব লবণের ক্ষারীয় মূলকের গুণগত বিশ্লেষণে (group analysis) H₂S -এর ব্যবহার অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
H₂S গ্যাসকে শক্তিশালী বিজারক বলা হয় কেন?
H₂S গ্যাস খুব সহজেই ইলেকট্রন ত্যাগ করে এবং নিজে জারিত হয়ে সালফার বা সালফিউরিক অ্যাসিডে পরিণত হয়। এই ইলেকট্রন ত্যাগ করার ক্ষমতার কারণেই এটিকে শক্তিশালী বিজারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, বিশেষত পরীক্ষাগারে বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায়।
H₂S গ্যাস থেকে প্রস্তুত করা হয় এমন দুটি লবণের উদাহরণ দাও।
H₂S গ্যাস থেকে বিভিন্ন ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে সংশ্লিষ্ট ধাতুর সালফাইড লবণ প্রস্তুত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ –
1. সোডিয়াম সালফাইড (Na₂S) – সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের সাথে H₂S গ্যাসের বিক্রিয়ায় প্রস্তুত করা হয়।
2. লেড সালফাইড (PbS) – লেড নাইট্রেট দ্রবণের মধ্যে H₂S গ্যাস চালনা করলে কালো বর্ণের এই লবণ পড়ে।
গুণগত বিশ্লেষণে H₂S গ্যাসের ভূমিকা কী? এটি কোন কোন ধাতু শনাক্ত করতে সাহায্য করে?
গুণগত বিশ্লেষণে H₂S গ্যাসের প্রধান ভূমিকা হল বিভিন্ন ধাতু আয়নকে তাদের দ্রবণীয়তার ভিত্তিতে পৃথকীকরণ গ্রুপে ভাগ করা। বিশেষ করে, এটি দ্বিতীয় গ্রুপ (গ্রুপ-II)-এর ধাতুগুলো (যেমন – Cu²⁺, Pb²⁺, Cd²⁺, Bi³⁺, As³⁺ ইত্যাদি) শনাক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এই ধাতুগুলি অম্লীয় মাধ্যমে H₂S গ্যাসের সাথে বিক্রিয়া করে নির্দিষ্ট রঙের অধঃক্ষেপ (প্রিসিপিটেট) তৈরি করে, যা দিয়ে ধাতুটি চিহ্নিত করা যায়।
H₂S গ্যাস এত বিপজ্জনক ও বিষাক্ত হওয়ার পরেও পরীক্ষাগারে এটি ব্যবহার করা হয় কেন?
H₂S গ্যাসের অনন্য রাসায়নিক ধর্ম—যেমন শক্তিশালী বিজারক ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট ধাতব আয়নের সঙ্গে অধঃক্ষেপ (precipitate) সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য—এটিকে পরীক্ষাগারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। তবে, এটি ব্যবহারের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়, যেমন হুডের নিচে কাজ করা, উপযুক্ত দস্তানা ও মাস্ক পরা ইত্যাদি, যাতে এর বিষাক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
H₂S গ্যাসের দহনশীলতা সম্পর্কে কী জানেন?
H₂S একটি দহনশীল গ্যাস। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের উপস্থিতিতে এটি জ্বলে নীল শিখায় এবং সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂) গ্যাস ও পানি উৎপন্ন করে। তবে, অক্সিজেনের অভাবে এটি অসম্পূর্ণ দহনের মাধ্যমে সালফারও উৎপন্ন করতে পারে। তাই আগুন বা স্পার্কের কাছাকাছি এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
H₂S গ্যাসের গন্ধ কেমন এবং এই গন্ধ থেকে কীভাবে সতর্ক হওয়া উচিত?
H₂S গ্যাসের গন্ধ পচা ডিমের মতো। কম ঘনত্বে এই গন্ধ সহজেই টের পাওয়া যায়, কিন্তু উচ্চ ঘনত্বে এটি আমাদের ঘ্রাণেন্দ্রিয়কে সাময়িকভাবে অবশ করে দেয়, ফলে গন্ধ আর টের পাওয়া যায় না। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, কারণ গন্ধ না পেয়েও কেউ বিষাক্ত মাত্রার সংস্পর্শে আসতে পারে। তাই, যেখানে H₂S গ্যাস থাকার সম্ভাবনা আছে, সেখানে সর্বদা গ্যাস ডিটেক্টর ব্যবহার করা উচিত।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “H₂S গ্যাসের ব্যবহারগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন