এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ধাতুসংকর এবং পারদ-সংকরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ধাতুসংকর এবং পারদ-সংকরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
ধাতুসংকর এবং পারদ-সংকরের মধ্যে পার্থক্য –
ধাতু-সংকর | পারদ-সংকর |
একক ধাতুর মতো আচরণকারী দুই বা ততোধিক ধাতু এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কতকগুলি অধাতু (কার্বন, সিলিকন, ফসফরাস প্রভৃতি) এবং ধাতুর বিভিন্ন অনুপাতের সমসত্ত্ব এবং কখনো-কখনো অসমসত্ত্ব মিশ্রণ যা উপাদান মৌলগুলির থেকে পৃথক ধর্মবিশিষ্ট হয় সেই ধাতু-ধাতুর বা ধাতু-অধাতুর কঠিন মিশ্রণকে ধাতুসংকর বলে। | ধাতুসংকর প্রস্তুতির সময় যদি পারদ একটি উপাদান হয় তখন সেই ধাতুসংকরকে পারদ-সংকর বলে। |
ধাতুসংকর কঠিনে-কঠিন পদার্থের দ্রবণ। | পারদ-সংকর পারদে (তরল) কঠিন পদার্থের দ্রবণ। |
ধাতুসংকরের মধ্যে উপাদানগুলির (ধাতু বা অধাতু) ওজনগত সংযুতি নির্দিষ্ট থাকে। | পারদ-সংকরের উপাদানগুলির ওজনগত সংযুতি নির্দিষ্ট থাকতেও পারে নাও পারে। |
ধাতুসংকরের মধ্যে কিছু বিশেষ ধর্ম দেখা যায়। তাই ধাতুর কাঠিন্য এবং ক্ষয়রোধ, তাপ এবং তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, নমনীয়তা, সম্প্রসারণশীলতা, ঘাতসহনশীলতা, গলনাঙ্ক, ঘনত্ব প্রভৃতির নিয়ন্ত্রণ ও জারণ ক্রিয়া কমাতে ধাতুসংকর প্রস্তুত করা হয়। | ধাতুর সক্রিয়তা কমিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, তড়িৎলেপন প্রস্তুতিতে জৈব রসায়নে বিজারকরূপে ব্যবহার করার জন্য পারদসংকর প্রস্তুত করা হয়। |
ধাতুসংকরের উপাদানগুলিকে সাধারণ ভৌতপ্রণালী দ্বারা পৃথক করা যায় না। রাসায়নিক প্রণালীতে পৃথক করা সম্ভব হয়। | পাতন প্রণালীর সাহায্যে কোনো কোনো পারদ-সংকরের উপাদান গুলিকে পৃথক করা সম্ভব। |
সব ধাতুসংকর পারদ-সংকর নয়। | সব পারদ-সংকরই ধাতুসংকর। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ধাতুসংকর কী?
দুই বা ততোধিক ধাতু (বা ধাতু ও অধাতুর) সমসত্ত্ব মিশ্রণ যা উপাদানগুলোর থেকে আলাদা ধর্মবিশিষ্ট, তাকে ধাতুসংকর বলে। যেমন – পিতল, ইস্পাত।
পারদ-সংকর বলতে কী বোঝায়?
যে সমস্ত ধাতুসংকর প্রস্তুতিতে পারদ একটি প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে পারদ-সংকর বলে। যেমন – সোডিয়ামের সাথে পারদের সংকর।
ধাতুসংকর ও পারদ-সংকরের মূল পার্থক্য কী?
ধাতুসংকর ও পারদ-সংকরের মূল পার্থক্য হলো তাদের অবস্থা। ধাতুসংকর সাধারণত কঠিনে-কঠিন পদার্থের দ্রবণ। অন্যদিকে, পারদ-সংকর হলো তরল (পারদে) কঠিন পদার্থের দ্রবণ।
ধাতুসংকর প্রস্তুতির প্রধান উদ্দেশ্য কী?
ধাতুর কাঠিন্য, ক্ষয়রোধ ক্ষমতা বাড়ানো, গলনাঙ্ক ও ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করা, তাপ-তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা ইত্যাদি।
পারদ-সংকর কেন তৈরি করা হয়?
ধাতুর রাসায়নিক সক্রিয়তা কমানো, বিক্রিয়ার গতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং তড়িৎলেপন বা বিজারক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
সব পারদ-সংকর কি ধাতুসংকর?
হ্যাঁ, যেহেতু পারদ-সংকর এক ধরনের বিশেষ ধাতুসংকর, তাই সব পারদ-সংকরই ধাতুসংবকর।
সব ধাতুসংকর কি পারদ-সংকর?
না, শুধুমাত্র সেইসব ধাতুসংবকরই পারদ-সংকর যেগুলোতে পারদ একটি উপাদান হিসেবে থাকে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ধাতুসংকর এবং পারদ-সংকরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন