এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জিঙ্কের আকরিকগুলির নাম ও সংকেত লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

জিঙ্কের আকরিকগুলির নাম ও সংকেত লেখো।
- সালফাইডরূপে – জিঙ্ক ব্লেন্ড (Zinc blende) [ZnS];
- কার্বনেটরূপে – ক্যালামাইন (Calamine) [ZnCO₃];
- অক্সাইডরূপে–
- জিঙ্কাইট (Zincite) বা লাল জিঙ্ক আকরিক (Red zinc ore) [ZnO];
- ফ্রাঙ্কলিনাইট (Franklinite) [ZnO, Fe₂O₃]।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
জিঙ্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকরিক কোনটি?
জিঙ্ক ব্লেন্ড বা স্ফালেরাইট (ZnS) হল জিঙ্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত আকরিক। বিশ্বের বেশিরভাগ জিঙ্ক এই আকরিক থেকে উৎপাদন করা হয়।
জিঙ্ক ব্লেন্ড এবং স্ফালেরাইট কি একই জিনিস?
হ্যাঁ, জিঙ্ক ব্লেন্ড এবং স্ফালেরাইট মূলত একই খনিজ (ZnS) কে বোঝায়। “স্ফালেরাইট” হল এর খনিজবিজ্ঞানের নাম, অন্যদিকে “জিঙ্ক ব্লেন্ড” নামটি ধাতুবিদ্যা ও শিল্পক্ষেত্রে বেশি প্রচলিত।
ক্যালামাইন বলতে কী বোঝায়? এটি কি শুধু একটি লোশন?
“ক্যালামাইন” শব্দটির দুটি অর্থ রয়েছে —
1. খনিজরূপে – এটি একটি জিঙ্ক কার্বনেট (ZnCO₃) আকরিক।
2. লোশনরূপে – ত্বকের চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিখ্যাত গোলাপি লোশনটি আসলে জিঙ্ক অক্সাইড ও ফেরিক অক্সাইডের মিশ্রণে তৈরি। যদিও এর নাম “ক্যালামাইন” খনিজটির নামানুসারে রাখা হয়েছে।
জিঙ্কাইট আকরিকটি দেখতে কেমন?
জিঙ্কাইট (ZnO) সাধারণত লাল বা কমলা-লাল রঙের হয়। এর রং মূলত ম্যাঙ্গানিজের উপস্থিতির কারণে। এই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কারণেই এটিকে কখনও কখনও “লাল জিঙ্ক আকরিক” বলা হয়।
ফ্রাঙ্কলিনাইট একটি সরল জিঙ্ক আকরিক নয় কেন?
ফ্রাঙ্কলিনাইট একটি সরল জিঙ্ক আকরিক নয় কারণ ফ্রাঙ্কলিনাইট একটি জটিল বা মিশ্র আকরিক। এতে শুধু জিঙ্ক অক্সাইড (ZnO) নয়, বরং আয়রন অক্সাইড (Fe₂O₃) -এর সাথেও যৌগ গঠিত হয়। এর রাসায়নিক সংকেত সাধারণত (ZnFe₂O₄), যা প্রমাণ করে এটি স্পিনেল গোত্রের খনিজ।
জিঙ্ক নিষ্কাশনের জন্য কোন আকরিকটি প্রথমে রোস্টিং (ভাজা) করা হয়?
সালফাইড আকরিক, যেমন জিঙ্ক ব্লেন্ড (ZnS), নিষ্কাশনের প্রথম ধাপে রোস্টিং করা হয়। বায়ুর উপস্থিতিতে তাপ প্রয়োগ করে এটিকে জিঙ্ক অক্সাইডে (ZnO) রূপান্তরিত করা হয়। পরে সেই ZnO কার্বনের সাথে বিজারণ করে ধাতব জিঙ্ক পাওয়া যায়।
জিঙ্কের আকরিক থেকে বিশুদ্ধ জিঙ্ক কীভাবে পাওয়া যায়?
সাধারণত নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয় —
1. রোস্টিং – ZnS কে বায়ুতে গরম করে ZnO তে রূপান্তরিত করা হয়।
2. বিজারণ – প্রাপ্ত ZnO কে কোক (কার্বন) -এর সাথে গরম করে বিজারিত করা হয় –
ZnO + C→Zn+CO
3. পরিশোধন – প্রাপ্ত ধাতব জিঙ্ককে বিশুদ্ধ করার জন্য ইলেক্ট্রোলাইসিস বা পাতন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
ভারতে জিঙ্কের আকরিকের প্রধান খনি কোনগুলি?
ভারতের রাজস্থান রাজ্য জিঙ্ক উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র। জাওয়ার, উদয়পুর ও ভিলওয়ারা অঞ্চলে জিঙ্ক ব্লেন্ডের বড় খনি রয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “জিঙ্কের আকরিকগুলির নাম ও সংকেত লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন