আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘উৎসবে শব্দদানব‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

উৎসবে শব্দদানব
শব্দদানব ও উৎসব – অবাঞ্ছিত, অস্বস্তিকর, স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর শব্দ শব্দদূষণ ঘটায়। নিত্যদিনের যানবাহনের শব্দ, কলকারখানার বিকট আওয়াজ তো আছেই, উপরন্তু উৎসবকে কেন্দ্র করে এর মাত্রা আরও বাড়ে এবং শব্দদানবের দৌরাত্ম্য সীমাহীন হয়ে ওঠে। বিভিন্ন পুজো-পার্বনে ব্যবহৃত মাইক, বক্স, লাউডস্পিকার প্রভৃতি শব্দদূষণ ঘটায়। এর সঙ্গে রয়েছে শব্দবাজির তাণ্ডব। তবে এখন শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বিয়ে-অন্নপ্রাশন প্রভৃতি সামাজিক অনুষ্ঠানেও শব্দবাজির রমরমা, শব্দদূষণের প্রচণ্ডতা। তা ছাড়া খেলাধুলা, রাজনৈতিক জয়কে উপলক্ষ্য করে বিজয়োৎসবে মেতে ওঠে মানুষ, আর দেখা যায় শব্দদানবের প্রবল পরাক্রম। তাই উৎসব এলেই শব্দবাজির দাপট দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয় প্রশাসনকে।
শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব – শব্দদূষণের প্রভাব আজ সর্বাত্মক। প্রচণ্ড শব্দে মানুষের কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে, এমনকি চিরস্থায়ী বধিরতাও সৃষ্টি হতে পারে। শব্দদূষণ থেকে রক্তচাপ বৃদ্ধি, হৃৎপিণ্ডের অসুখ, মানসিক ক্লান্তি, মনঃসংযোগের অভাব, স্নায়বিক দৌর্বল্য দেখা দেয়। অনেক দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির পাখি ও প্রাণী বর্তমানে লুপ্তপ্রায়। এর মূলেও রয়েছে শব্দদানব।
উপসংহার – উৎসবে শব্দদূষণকে প্রতিহত করতে সরকারি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শব্দবাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, মাইক্রোফোনের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বলাবাহুল্য, এই সরকারি নিষেধাজ্ঞা শব্দদূষণ রোধ করার পক্ষে পর্যাপ্ত নয়। শব্দদূষণের প্রতিকারকল্পে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সঠিক সচেতনতা, নাগরিকদের দায়িত্ববোধ। তাদের মনে রাখতে হবে যে, তাদের উৎসব-অনুষ্ঠান যেন অপরের ক্ষতি না করে। লাউডস্পিকার, মাইক্রোফোন প্রভৃতির নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার একান্ত বাঞ্ছনীয়। শুধু বসুন্ধরা সম্মেলন করে বা আইন করে শব্দদানবকে নির্মূল করা যাবে না। উৎসব-অনুষ্ঠানে আমার আনন্দ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক – এই কল্যাণী ইচ্ছা মানুষের মধ্যে সর্বাত্মকভাবে জাগ্রত হলে শব্দদানব ও তার তাণ্ডবকে সমূলে বিনাশ করা যাবে বলেই আশা করা যায়।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘উৎসবে শব্দদানব‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন