আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তি‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তি
“ও আমার দেশের মাটি
তোমার পরে ঠেকাই মাথা।”
ভূমিকা – পুণ্যভূমি ভারতবর্ষ। তার ঐতিহ্য সুমহান। তাই যুগে যুগে কালে কালে পৃথিবীর নানা দেশ থেকে নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধানের মানুষ এসে বাধা পড়েছে ভারতভূমির ঐক্যবন্ধনে। তেমনই এই দেশে বাণিজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে এসেছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। কিন্তু ‘বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল, পোহালে শব্বরী রাজদণ্ডরূপে।’ বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজের পতনে 1757-র পলাশির প্রান্তরে খোদিত হল দীর্ঘ 200 বছরের পরাধীনতা। শতসহস্র বিপ্লবীর আত্মদানে 1947 -এর 15 আগস্ট, মধ্যরাতে বেজে উঠেছিল জয়ের ভেরি। সূচিত হয়েছিল ভারতবর্ষের স্বাধীনতা। এবছর সারা দেশে উদ্যাপিত হল সেই স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তি উৎসব।
ইতিহাস – 1757 সালে পলাশির প্রান্তরে অস্তমিত হয়েছিল স্বাধীনতার সূর্য। এরপর শুরু হল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজশাসন। 1857 সালে কোম্পানির ক্ষমতা হস্তান্তরিত হয় ব্রিটিশরাজের হাতে। তাদের অমানুষিক অত্যাচারে রক্তাক্ত হয় ভারতভূমি। এগিয়ে আসে তরুণ বিপ্লবীরা। ফাঁসির মঞ্চে রচিত হয় স্বাধীনতার জয়গান। মঙ্গল পান্ডে থেকে শুরু করে ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশ, সূর্য সেন, ভগৎ সিং-ভারতমাতার বিদ্রোহী সন্তানেরা প্রাণের বিনিময়ে লড়াই করতে থাকে। আবির্ভূত হন সর্বভারতীয় নেতারা-মহাত্মা গান্ধি, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাস প্রমুখ। যদিও ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের বিতাড়িত করার পথ এত সহজ ছিল না।
1947 -এর 15 আগস্ট রাতারাতি ব্রিটিশরাজেরা দেশ ছাড়েন। যদিও লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট আদেশ দিয়েছিল 1948 -এর 30 জুনের মধ্যে ভারতের স্বাধীনতা ঘোষণা করার। কিন্তু তার আগেই 1947 -এর 15 আগস্ট স্বাধীন হল ভারতবর্ষ। যদিও পণ্ডিত নেহরু, মহম্মদ আলি জিন্নাহ বাধ্য হয়েছিলেন অখণ্ড ভারতকে ভাগ করতে।
স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তি – করোনা মহামারি দীর্ঘ 2 বছরব্যাপী স্তব্ধ করে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। তাই এবছর মহামারিশেষে স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচি ছিল ‘হর ঘর তেরঙ্গা’। প্রধানমন্ত্রীর অমৃত মহোৎসবের অন্তর্ভুক্ত হয় এই কর্মসূচি। কেবল পতাকা উত্তোলনই নয়, সমগ্র সোশ্যাল মিডিয়া জাতীয় পতাকায় শোভিত হয়। সমগ্র দেশে উদ্যাপিত হয় স্বাধীনতার মহোৎসব। স্মরণ করা হয় বীর সংগ্রামীদের। আমাদের রাজ্যেও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ণাঢ্য উৎসবে পরিণত হয় এই দিনটি।
উপসংহার – কেবল উৎসব উদ্যাপনেই দেশপ্রেম প্রকাশিত হয় না। দেশের স্বার্থে প্রতিটি দিন গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিটি দিন দেশকে ভালোবাসতে হবে। ক্ষুদ্র স্বার্থ, বিভেদ-বৈষম্য যাতে দেশকে স্পর্শ করতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে আমাদের। দেশের সুরক্ষার দায়িত্ব কেবল সীমান্তের প্রহরী বা দেশচালকের নয়, প্রতিটি সাধারণ মানুষেরও। তাই আমাদের প্রত্যেককে দেশের প্রতি সচেতন হতে হবে। ঐক্য বিধান করতে হবে। এই দায়িত্ববোধই স্বাধীনতার উদ্যাপনকে সার্থক করে তুলবে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘স্বাধীনতার 75 বছর পূর্তি‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন