আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

স্বচ্ছ ভারত অভিযান
ভূমিকা – জাতির জনক মহাত্মা গান্ধি বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতার চেয়ে স্বাস্থ্যবিধি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।’ স্বাধীনতা পূর্বসময়ে তাঁর সুচিন্তিত বক্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি সম্যকভাবে উপলব্ধি করেছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষে সৃষ্টি হয়েছে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি। তাই তিনি প্রাত্যহিক জীবনযাপনে ভারতীয় জনগণের মধ্যে পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি সচেতনতার উপরে জোর দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার বহু বছর পর গান্ধিজির সেই স্বপ্নের ভারতকে কলুষমুক্ত ও নির্মল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষের সার্বিক পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধিসম্মত জীবনযাপনের কাজকে ত্বরান্বিত করতে সারা ভারত জুড়েই প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সূত্রপাত – ভারত সরকারের উদ্যোগে সারা ভারত জুড়ে ‘স্বচ্ছ ভারতের লক্ষ্য-2019’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে 2 অক্টোবর 2014 খ্রিস্টাব্দে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির ১৪৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচির সূচনা করেন। এই অভিযানের সময়সীমার পরিসমাপ্তি হবে জাতির জনকের 150 তম জন্মবার্ষিকী 2019 খ্রিস্টাব্দে। সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষকে একটি স্বচ্ছ ও নির্মল দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীকে সক্রিয় অংশগ্রহণেরও আহ্বান জানানো হয়েছে। এই প্রচারাভিযানের সূচনায় দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রাজপথে নেমেছিলেন।
অভিযানে শামিল দেশবাসী – স্বচ্ছ ভারত অভিযানে দেশের প্রায় ত্রিশ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের প্রচারাভিযানে দেশের ন-জন বিখ্যাত মানুষকে নির্বাচন করেছেন, যারা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের সুবিধামতো দিনে জনগণের সঙ্গে এই কাজ করবেন। প্রধানমন্ত্রী আরও অনুরোধ করেছেন, ওই ন-জন বিশিষ্ট ব্যক্তি যেন আরও ন-জন ব্যক্তিকে মনোনীত করেন যারাও এই প্রচারকর্মসূচিতে শামিল হবেন নিজ নিজ এলাকার মানুষদের নিয়ে। এইভাবে ন-জনের শৃঙ্খলটি একসময় শাখাপ্রশাখাযুক্ত বৃক্ষের মতো হয়ে দাঁড়াবে। তখন সমগ্র দেশেই এই অভিযানের কাজ ছড়িয়ে পড়বে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের জন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ব্যবহারের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশের জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই সম্ভব স্বচ্ছতার এই অভিযান।
উপসংহার – দেশকে ভালোবাসার অর্থ দেশের মানুষকে ভালোবাসা। দেশের শ্রীবৃদ্ধির অর্থ দেশবাসীর শ্রীবৃদ্ধি। দেশবাসীর সামগ্রিক উন্নয়নে দেশের শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। দেশবাসীর সামগ্রিক উন্নয়নে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যবিধিসম্মত উন্নত জীবনযাপন কাম্য। আর তাই ভারতবর্ষের সমস্ত প্রান্তে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের বার্তা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। গান্ধিজির স্বপ্নের ভারতবর্ষকে বিশ্বসভায় শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসাতে এই প্রকল্পের গুরুত্ব অপরিসীম।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন