আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘তোমার প্রিয় খেলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

তোমার প্রিয় খেলা
ভূমিকা – মানবজীবন বৈচিত্র্যময়। এই বৈচিত্র্যই মানবজীবনকে পরিপূর্ণতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। খেলাধুলা মানবজীবনের অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। পড়াশোনা হোক, কিংবা দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মই হোক তাকে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে হলে খেলাধুলা আবশ্যক। চরিত্রগঠনের ক্ষেত্রেও খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। স্বয়ং স্বামীজি তরুণ ও যুবসমাজে খেলাধুলা ও চরিত্রগঠনের ভূমিকাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। আমার প্রিয় খেলা হল ফুটবল।
ফুটবলের ইতিহাস – প্রাচীন গ্রিসের মতো ভারতেও সুপ্রাচীনকাল থেকে খেলাধুলার বিশেষ গুরুত্ব ছিল। মহাভারতে ফুটবল খেলার উল্লেখ আছে। এটি একটি জনপ্রিয় খেলা। স্কুল-কলেজের ছাত্ররা ফুটবল প্রতিযোগিতায় উৎসাহভরে যোগদান করে থাকে। কলকাতার বিখ্যাত ফুটবল দলগুলি হল – ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিং, টালিগঞ্জ প্রভৃতি। অজস্র দর্শক ফুটবল খেলা দেখে অপরিসীম আনন্দ উপভোগ করে থাকেন।
জাতীয় জীবনে ফুটবল – ফুটবল প্রতিযোগিতায় দুটি দলের ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রকাশ পায়। প্রতিটি দলে এগারো জন করে খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে। একটি আয়তক্ষেত্রাকার মাঠে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রতিযোগিতায় সহযোগী বন্ধুত্বের মনোভাব থেকেই জাতীয় ঐক্য ও সংহতির আদর্শ ফলপ্রসূ হয়ে ওঠে। বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রথম থেকেই ফুটবল খেলা শেখার মাধ্যমে শৃঙ্খলাবোধ জাগ্রত করে তোলা আবশ্যক।
ফুটবলের উদ্দেশ্য – পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যালয়-মহাবিদ্যালয়ে এবং বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কলকাতায় আই এফ এ, সন্তোষ ট্রফি ও গৌহাটি ট্রফির নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তা ছাড়া রয়েছে সুব্রত ট্রফি। এসব প্রতিযোগিতা থেকে ক্রীড়ামোদী দর্শকগণ অনাবিল আনন্দ উপভোগ করে থাকেন। ফুটবল জাতীয় জীবনের ক্লান্তি দূর করে নতুন উদ্দীপনা ও আগ্রহ সঞ্চার করে।
বিশ্বকাপ ফুটবল – বাংলার তথা ভারতবর্ষের ফুটবল এখনও বিশ্বপর্যায়ে উত্তীর্ণ হতে সমর্থ হয়নি। তার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ অনুশীলন, সাধনা এবং আত্মত্যাগ। কিন্তু ক্লাবগুলির মধ্যে প্রশাসনিক দুর্বলতা রয়েছে, রয়েছে পারস্পরিক অসম প্রতিযোগিতা। পদপ্রাপ্তির লড়াই ভারতীয় খেলার মানোন্নয়নের অন্যতম অন্তরায়। অত্যন্ত প্রাচীন ফুটবলের পরিকাঠামো ভারতবর্ষে এখনও অনুসৃত হয়ে থাকে। মিথ্যাভাষণ, প্রতিশ্রুতিভঙ্গ প্রভৃতি অনৈতিকতা খেলোয়াড়দের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তা ছাড়া বিদেশি খেলোয়াড়দের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা ভারতীয় খেলার মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে উঠেছে।
উপসংহার – ফুটবল খেলা আজ বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। বত্রিশটিরও অধিক দল বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করে থাকে। ফুটবল দুনিয়ায় প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব – পেলে, মারাদোনা। ভারতবর্ষ এখনও বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করতে সমর্থ হয়নি। তার জন্য প্রশাসনের দুর্বলতা, খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত অর্থলালসাকে বিশেষভাবে দায়ী করা যায়। তবে বাংলা তথা ভারতবর্ষের ফুটবল আরও পরিণত ও পরিশীলিত হয়ে একদিন বিশ্ব ফুটবলের দরবারে পদার্পণ করতে সফল হবে, এই আশা করাই যায়। তারজন্য ফুটবল খেলাকে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘তোমার প্রিয় খেলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন