বাংলার লৌকিক খেলাধুলা – প্রবন্ধ রচনা

Souvick

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘বাংলার লৌকিক খেলাধুলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

বাংলার লৌকিক খেলাধুলা - প্রবন্ধ রচনা

বাংলার লৌকিক খেলাধুলা

ভূমিকা – খেলাধুলার মাধ্যমে একটি সম্প্রদায়ের সাহস ও বিক্রম প্রকাশ পায়। প্রতিযোগিতার খেলায় খেলোয়াড়ের মনোবল ও সাহসিক গুণগুলি বিকশিত হয়। জীবজন্তুর সঙ্গে খেলাতেও সাহস ও শক্তি লাগে। বাংলার নিজস্ব ক্রীড়াশৈলীর প্রকৃত রূপ আজ খুঁজে বের করা কঠিন। পাল যুগের পর থেকে মহামারি, মন্বন্তর ছাড়াও হিন্দু-বৌদ্ধ সংঘর্ষ, তুর্কি আক্রমণ, ইংরেজ ঔপনিবেশিকতা বাংলার নিজস্বতাকে ব্যাহত করেছে বারবার। বাঙালির ইতিহাসে তাই লোকক্রীড়ার ধারা খুঁজে পাওয়া অসম্ভবপ্রায়।

নীহাররঞ্জন রায় তাঁর ‘বাঙালির ইতিহাস’ বইতে বলেছেন – রাজা-মহারাজা-সামন্ত-মহাসামন্ত প্রমুখের প্রধান বিহারই ছিল শিকার বা মৃগয়া। আর অন্ত্যজ ও ম্লেচ্ছ শবর, পুলিন্দ, চণ্ডাল, ব্যাধ প্রভৃতিদের শিকারই ছিল প্রধান উপজীব্য ও বিহার। পাশাখেলা, দাবাখেলা, নারীদের জলক্রীড়াও খুব প্রচলিত ছিল।

উৎসবে ক্রীড়া – কয়েকশো বছর আগে ফুটবল-ক্রিকেট-টেনিস-হকি ছিল না। তখন ছিল হাডুডু, কিতকিত, ডাংগুলি, কুস্তি, লাঠি খেলা, গুলি খেলা, শরীরচর্চা ইত্যাদি। এ ছাড়া পশুপাখি নিয়ে খেলাও চলত বাংলাদেশে।

তখন মহরম উৎসবে লাঠি, তলোয়ার খেলা, ‘নবান্ন’, ‘গাজন’ ইত্যাদি উৎসবে শারীরিক কসরতের খেলা, গোরু-বলদের দৌড়, মুরগি, তিতির লড়াই প্রচলিত ছিল। নানা ব্রতপার্বণ পালনের সঙ্গে এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠান, মাঙ্গলিকতাতেও খেলার অনুষ্ঠান থাকত।

একটি লোকখেলার বর্ণনা – প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির জনপ্রিয় খেলার একটি ছিল কিতকিত, যা একাদোক্কা খেলারই নামান্তর। ময়মনসিংহে এর নাম খুঁদখুঁদ। ঘরের উঠোনে বা অন্যত্র একটি আয়তাকার ঘর কেটে তাতে সরলরেখা টেনে পাঁচটি খোপ করা হয়। পাঁচ নম্বর ঘরটি জিরানি বা বিশ্রামঘর। কোথাও কোথাও চার ও ছয় নম্বর ঘরদুটিকে মাঝামাঝি খাড়া রেখা টেনে দুভাগ করা হয়। খেলার সময় উপকরণ ভাঙা হাঁড়ি বা কলশির টুকরো। একে ‘চিলুক’ বা ‘ঘুঁটি’ বা ‘ডিগা’ বা ‘চাকতি’ বলে। খেলা দুজন বা বেশি জনে হতে পারে। চিলুকটি প্রথম ঘরে ছুঁড়ে মুখে ‘কুতকুত’ (কিতকিত) শব্দ করতে করতে একপায়ে ভর দিয়ে পঞ্চম ঘর অবধি গিয়ে আবার ফিরে আসে। ফিরতে পারলে ঘরের দিকে পিছু ঘুরে মাথার ওপর দিয়ে চিলুক ছুঁড়ে দেয়। চিলুক যে ঘরে পড়বে সেটি ওই খেলোয়াড়ের ঘর হবে এবং অন্যান্যরা এ ঘরে পা দিতে পারবে না। এভাবে যে বেশি ঘর জিতবে সে-ই খেলাতে জিতবে।


আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘বাংলার লৌকিক খেলাধুলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - প্রবন্ধ রচনা

ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

একটি নৌকাভ্রমণের অভিজ্ঞতা - প্রবন্ধ রচনা

একটি নৌকাভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা - প্রবন্ধ রচনা

মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

উদাহরণসহ উদ্ভিদের বিভিন্ন উদ্দীপনায় সাড়া-প্রদানের বিষয়টি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

সংবেদনশীলতা কাকে বলে? উদ্ভিদের সাড়া প্রদানে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর ভূমিকা

ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

একটি নৌকাভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা