আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা
“এই তো সেদিন কে যেন বুলছিল কথাঠো, শুনছিলাম কানে,
মঙ্গল গ্রহটায় নাকি জমি ইজারা মিলবে,
-ভাবিবার পার?”
ভূমিকা- নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যের ‘দেবীগর্জন’ নাটক পড়ার সময় উদ্ধৃত কথাটিকে কল্পনা মনে হলেও মনের মধ্যে একটা তীব্র বাসনা ছিল, যদি কোনোদিন সত্যি সত্যিই সুযোগ পাই তো মঙ্গল গ্রহে অবশ্যই যাব। কারণ অদেখাকে দেখা, অচেনাকে চেনার আগ্রহ আমার প্রবল। জল আর স্থলের অনেক জায়গাই আমার ঘোরা কিন্তু অন্তরিক্ষ অভিযান কখনও করিনি।
যাত্রার প্রস্তুতি – পৃথিবীর নানা দেশ শামিল হয়েছে মহাকাশ গবেষণায়। মহাশূন্যের রহস্য উন্মোচন করতে সমর্থ হয়েছে। ভারতবর্ষও পিছিয়ে নেই। পিছিয়ে নেই ISRO। ISRO -র এক মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. রাজগোপাল বর্মা, যিনি আমার কাকা, তিনিই আমাকে দিলেন সেই দুর্লভসুযোগ মঙ্গলগ্রহ অভিযান। সাত বিজ্ঞানীর সঙ্গে আমি! ভাবতেই রোমাঞ্চ হয়। খবরটা শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন।
যাত্রাপথের বিবরণ – অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে আমাদের যাত্রা শুরু। পৃথিবীর প্রথম মানুষ হিসেবে আমরাই মঙ্গলগ্রহের যাত্রী। 5 জানুয়ারি 2014 আমরা রকেটে উঠলাম। কম্পিউটার জানিয়ে দিল আমরা 21 ডিসেম্বর 2014 -তে মঙ্গলে প্রথম পা রাখব। 2টো 38মিটার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রকেট সোঁ করে ওপরে উঠতে শুরু করল। মেঘের মধ্য দিয়ে বায়ুমণ্ডলের নানা স্তর ভেদ করে কতদিন, কত সময় কাটিয়েছি রকেটের মধ্যে। তারপর হিসেব অনুযায়ী রকেটটি পৃথিবীর চারিদিকে ছয়বার প্রদক্ষিণ করে মুক্তিবেগ লাভ করে পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়ে, তারপরে নির্দিষ্ট দিনে মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশ করে।
স্থানটির বর্ণনা – কাকা রাজগোপাল বর্মা প্রধান বিজ্ঞানী। তাই মঙ্গলের মাটিতে তিনিই প্রথম পা রাখলেন, তারপর একে একে আমরা সবাই। চারিদিকে শুধুই শূন্যতা। লালচে পাথরযুক্ত মাটি, জল নেই, তবে কোনো এককালে জল ছিল বলে মনে হচ্ছে, উষ্ণতা কত ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। আমি ভারতবর্ষের তেরঙা পতাকা মাটিতে পুঁতে দিলাম, কিছুটা মাটি সংগ্রহ করলাম। বিজ্ঞানীরা MCC ক্যামেরার সাহায্যে ছবি তুলতে লাগলেন, LAP -এর সাহায্যে মঙ্গলের আবহাওয়ায় মিথেনের সন্ধান শুরু হল, শুরু হল MENCA -এর সাহায্যে বর্ণালি বিশ্লেষণ, TIS -এর সাহায্যে মঙ্গল পৃষ্ঠের উষ্ণতার পরিমাণের মাপজোখ।
অভিজ্ঞতা – এ অভিযানের অভিজ্ঞতা খুবই বিচিত্র। কাকা সুযোগ না দিলে এ সুযোগ কোনোদিন ঘটত বলে মনে হয় না। আমাদের এই অভিযানের দিকে তাকিয়ে আছে সারা পৃথিবী। সাত জন বিজ্ঞানীর পাশাপাশি আমার নামটিও লেখা হয়ে থাকবে পৃথিবীর ইতিহাসে। মঙ্গলে আমাদের স্থিতি মাত্র সাতদিনের, তাই পৃথিবীতে আবার ফিরে আসতে হল।
উপসংহার – বিদায় মঙ্গল। আর কোনোদিন হয়তো আসা হবে না, কিন্তু “মঙ্গল গ্রহটায় নাকি জমি ইজারা মিলবে” – কথাটা হয়তো একদিন সত্যি হবেই। সেই আশা মনে রেখে আমরা পৃথিবীর মাটিতে পুনরায় সুস্থভাবে পা রাখতে সমর্থ হলাম।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘মঙ্গলের মাটিতে কিছুক্ষণ কাটানোর অভিজ্ঞতা’ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন