এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।
ব্রোমিনের সংযোজন – ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়া ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়। লাল বর্ণের ব্রোমিন জলের মধ্য দিয়ে অ্যাসিটিলিন চালনা করলে প্রথমে বর্ণহীন ডাইব্রোমো ইথিলিন উৎপন্ন হয়। ফলে ব্রোমিন জলের লাল বর্ণ বর্ণহীন হয়। এই বিক্রিয়াটি প্রমাণ করে যে অ্যাসিটিলিন একটি অসম্পৃক্ত যৌগ।
গ্যাসীয় ব্রোমিন বা তরল ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়ায় 1, 1, 2, 2-টেট্রাব্রোমোইথেন উৎপন্ন হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ব্রোমিনের সাথে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়াটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এই বিক্রিয়াটি অ্যাসিটিলিনের অসম্পৃক্ত প্রকৃতি প্রমাণ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষামূলক বিক্রিয়া। ব্রোমিনের লাল বর্ণের বিলুপ্তি দেখে সহজেই বোঝা যায় যে একটি সংযোজন বিক্রিয়া ঘটেছে, যা অ্যাসিটিলিনে একটি ত্রি-বন্ধন থাকার কারণে সম্ভব হয়েছে।
ব্রোমিনের সাথে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়াটি ধীরগতিতে হয় কেন?
অ্যাসিটিলিনে (C₂H₂) একটি ত্রি-বন্ধন রয়েছে। যদিও এটি অসম্পৃক্ত, এর ত্রি-বন্ধনটি ইথিলিনের দ্বি-বন্ধনের তুলনায় বেশি স্থিতিশীল। প্রথম ধাপে একটি ব্রোমিন অণুর সংযোজন ঘটে এবং একটি ডাইব্রোমো যৌগ তৈরি হয়, যা তুলনামূলকভাবে কম বিক্রিয়াশীল। এই মধ্যবর্তী যৌগটি তৈরি হওয়ার কারণেই সামগ্রিক বিক্রিয়ার গতি ধীর হয়।
ব্রোমিন জলের সাথে বিক্রিয়ায় কী হয়?
যখন অ্যাসিটিলিন গ্যাসকে ব্রোমিন জলের (লাল বর্ণের) মধ্য দিয়ে চালনা করা হয়, তখন ব্রোমিন অ্যাসিটিলিনের সাথে বিক্রিয়া করে বর্ণহীন যৌগ তৈরি করে। ফলে ব্রোমিন জলের লাল বর্ণ ধীরে ধীরে উধাও হয়ে যায়। এটি অ্যাসিটিলিনের অসম্পৃক্ততার একটি স্পষ্ট দৃশ্যমান প্রমাণ।
ব্রোমিনের সাথে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে কী কী উৎপাদ তৈরি হয়?
ব্রোমিনের সাথে অ্যাসিটিলিনের বিক্রিয়াটি ধাপে ধাপে ঘটে –
1. প্রথম পর্যায় – অ্যাসিটিলিন + ব্রোমিন → 1, 2-ডাইব্রোমোইথিলিন (বর্ণহীন)
2. দ্বিতীয় পর্যায় – 1,2-ডাইব্রোমোইথিলিন + ব্রোমিন → 1, 1, 2, 2-টেট্রাব্রোমোইথেন (বর্ণহীন)
1, 1, 2, 2-টেট্রাব্রোমোইথেন কী?
এটি হল অ্যাসিটিলিনের সাথে দুটি ব্রোমিন অণুর সম্পূর্ণ সংযোজন বিক্রিয়ায় প্রাপ্ত চূড়ান্ত উৎপাদ। এর গঠনে ইথেন অণুর চারটি হাইড্রোজেন পরমাণু চারটি ব্রোমিন পরমাণু দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এটি একটি বর্ণহীন তরল যৌগ।
ইথিলিন ও অ্যাসিটিলিনের সাথে ব্রোমিনের বিক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য কী?
প্রধান পার্থক্য হল বিক্রিয়ার গতি ও উৎপাদ।
1. গতি – ইথিলিনের সাথে ব্রোমিনের বিক্রিয়া খুব দ্রুত ঘটে, যেখানে অ্যাসিটিলিনের সাথে এটি তুলনামূলকভাবে ধীর।
2. উৎপাদ – ইথিলিন শুধুমাত্র একটি ব্রোমিন অণু সংযোজন করে ডাইব্রোমোইথেন দেয়। অ্যাসিটিলিন দুটি ব্রোমিন অণু সংযোজন করে টেট্রাব্রোমোইথেন দেয়, কারণ এতে দুটি π-বন্ধন রয়েছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন