আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘আমার প্রিয় ভ্রমণকাহিনি‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

আমার প্রিয় ভ্রমণকাহিনি
ভূমিকা – ভ্রমণকাহিনির একনিষ্ঠ পাঠক আমি। অনেক ভ্রমণকাহিনিই আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। কিন্তু এদের মধ্যে যেটি আমার কাছে এখনও পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ সেটি চার্লস ডারউইনের লেখা ‘দ্য ভয়েজ অফ দ্য বিগল’ (The Voyage of the Beagle)।
বইটির বর্ণনার অনুসরণ – ডারউইনের লেখার জাদু এমনই তাঁর সঙ্গী হয়ে পাঠকও কখন যেন পাড়ি দেবে বিগল নামের জাহাজে করে, 1831 খ্রিস্টাব্দের 27 ডিসেম্বর, পৃথিবী পর্যবেক্ষণের জন্যে।
প্রথমেই ব্রাজিলে এসে পৌঁছায় জাহাজ। নৌকায়, পায়ে হেঁটে, খচ্চরের পিঠে-নানাভাবে স্থলপথে যাত্রা করা হল। আর ডারউইন সংগ্রহ করে চললেন আরশোলা, মাছ, পাখি, সাপ, ব্যাঙ, গাছ, ফল, ফুল-সবকিছুর নমুনা। ব্রাজিলের এক জঙ্গলে দেখলেন এমন এক প্রজাপতি যে দৌড়োনোর জন্যে পা ব্যবহার করে।
রিও নদী ধরে বাহিয়া ব্লাঙ্কা যাবার পথে পাখি, মাকড়শা, সাপ ধরে জাহাজ বোঝাই করতে লাগলেন তিনি, অন্য যাত্রীদের প্রাণ তখন ভয়ে ওষ্ঠাগত। ক্যাপটেন কিন্তু তার আবদার রেখে ফিরতি মালবাহী জাহাজে সেগুলি পাঠিয়ে দিচ্ছেন বিলেতে।
আর্জেন্টিনার তৃণভূমিতে পৌঁছে এবার শুরু হল তাঁর জীবাশ্ম সংগ্রহ। উটপাখির মতো দেখতে, উড়তে অক্ষম বিশাল এক পাখি-যার নাম রিয়া, তাদের মধ্যেও দুই ভিন্ন জাতের প্রমাণ বিলেতে পাঠালেন তিনি। তাদেরই একটির নামকরণ হল ডারউইনের রিয়া।
প্যাটাগোনিয়া, ফকল্যান্ড দ্বীপ, ম্যাগেলান প্রণালী হয়ে অন্য মহাসাগরে পড়ল জাহাজ। সাগরের জীবজন্তু হয়ে ওঠে ডারউইনের আগ্রহের বিষয়। কখনও ভাসমান হিমবাহের জীবনচক্র তাঁর ঘুম কেড়ে নেয়। চিলিতে এসে আন্দিজ পর্বতমালার জন্মের কারণ খুঁজতে লাগলেন তিনি। এখানে হামিংবার্ডের ঝাঁক দেখতে পেলেন। আবার এমন লম্বা ফুলও দেখলেন যাতে তাঁর মনে হল নিশ্চয় খুব লম্বা ঠোঁটের এক হামিংবার্ড থাকতেই হবে, না হলে পরাগসংযোগ (pollination) হবে না।
জাহাজ এরপর ভিড়ল গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জে। সেখানে প্রত্যেকটি দ্বীপের বিশাল কচ্ছপগুলি যে সব আলাদা আলাদা প্রজাতির, কচ্ছপের পিঠের খোলা দেখিয়ে ডারউইন তা প্রমাণ করে ছাড়লেন। মকিং বার্ড, ফিঞ্চজাতীয় খুদে পাখি, সাগর ইগুয়ানা-যারা বিশ্বের একমাত্র ইগুয়ানা যারা সাঁতরাতে পারে-এসব নিয়ে মেতে উঠলেন তিনি।
জাহাজ এবার তাহিতি হয়ে নিউজিল্যান্ড, তারপর অস্ট্রেলিয়ার দিকে পাড়ি দিল। সেই সাগরে প্রবাল নিয়ে মেতে উঠলেন তিনি। রঙিন প্রবাল রীফ আর দ্বীপগুলির জন্মবৃত্তান্ত, তাদের বাসিন্দা-এ সবেই ডুবে গেলেন ডারউইন।
বিগল জাহাজের পাঁচ বছরের যাত্রা প্রায় শেষ। মরিশাস থেকে ব্রাজিল হয়ে আবার বিলেত ফিরে গেল সেই জাহাজ।
উপসংহার – এই ভ্রমণের বইটি শুধু অজানা দেশের না-জানা প্রাণী-উদ্ভিদের বর্ণনাসমৃদ্ধ বলেই নয়, সাহিত্যগুণেও বিশ্বসাহিত্যে একটি উজ্জ্বল স্থান অধিকার করে আছে। ডারউইন আর কোনো ভ্রমণের বই লিখলেন না কেন, এই আক্ষেপ বইটি শেষ করার পর পাঠকমাত্রেরই হবে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘আমার প্রিয় ভ্রমণকাহিনি‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন