আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘ছাত্রজীবন ও খেলাধুলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

ছাত্রজীবন ও খেলাধুলা
ভূমিকা – কথায় বলে স্বাস্থ্যই সম্পদ অর্থাৎ স্বাস্থ্যবান মানুষ দেশের বা জাতির প্রকৃত সম্পদে পরিণত হতে পারে। শরীর সুস্থ থাকলে মনও সুস্থ থাকবে। ছাত্রজীবন থেকেই স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন থাকা দরকার। কারণ শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশের জন্য শিক্ষার যেমন প্রয়োজন, তেমনই প্রয়োজন স্বাস্থ্যবান হওয়া। আর এই কাজের জন্য ছাত্রছাত্রীদের খেলাধুলার প্রতি মনোযোগ দেওয়া একান্তভাবেই প্রয়োজন।
খেলার প্রকারভেদ – খেলাধুলাকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন – ইন্ডোর গেম এবং আউটডোর গেম। ইন্ডোর গেম বলতে দাবা, ক্যারাম, লুডো, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদিকে বোঝায়। আউটডোর গেম বলতে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, ঘোড়দৌড়, দৌড় ইত্যাদি খেলাকে বোঝায়। আমরা এখানে খেলাধুলা বলতে মূলত আউটডোর গেমকেই বোঝাব।
ছাত্রজীবনে খেলাধুলা – ছাত্রজীবনের প্রধান উদ্দেশ্য অধ্যয়ন – একথা ঠিক, তবে ছাত্রছাত্রীর সঠিক বিকাশে খেলাধুলার উপযোগিতা রয়েছে। খেলাধুলা নানাভাবে জীবনে প্রভাব ফেলে। যেমন – দেহ-মনকে সুস্থ ও সবল রাখার ক্ষেত্রে খেলাধুলার ভূমিকা অনস্বীকার্য। নিয়মিত ব্যায়াম, খেলাধুলা অর্থাৎ শরীরচর্চা করলে দেহ সবল ও সুগঠিত হবে। তাতে পড়াশোনার ধকল বা অতিরিক্ত চাপ নেবার ক্ষমতা তৈরি হবে। চরিত্রগঠনেও খেলাধুলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। খেলাধুলার মাধ্যমে সহযোগিতা, সহমর্মিতা, একতা, দলবদ্ধতা, জাতীয় চেতনা প্রভৃতি চারিত্রিক গুণের বিকাশ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ঘটে থাকে। দেশের সুনাগরিক হবার চেতনাও এখান থেকেই শিক্ষার্থীর মনের মধ্যে গড়ে উঠতে থাকে। সবসময় পড়াশোনার মধ্যে থাকায় শিক্ষার্থীর মধ্যে মানসিক ক্লান্তি দেখা দেয়। সেই সময় যদি শিক্ষার্থী একটু খেলাধুলার সুযোগ পায় তবে সেই ক্লান্তি দূর হয় এবং নতুন করে নিজেকে আবার প্রস্তুত করতে পারে। পড়াশোনার মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ে একটু খেলাধুলার আয়োজন থাকলে, তা শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করে। খেলাধুলা, মনকে আনন্দ দেয় ফলে পাঠগ্রহণ অনেক বেশি মনোগ্রাহী হয়ে ওঠে। সকল শিক্ষার্থী যে পড়াশোনায় খুব ভালো হবে, তা হতে পারে না। অনেক ছাত্রছাত্রী ভবিষ্যতে বড়ো খেলোয়াড় হয়ে পরবর্তী জীবনে বড়ো ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ ছাত্রজীবনে খেলাধুলায় মনোযোগী হলে তারা বড়ো খেলোয়াড় হতে পারে। ছাত্রজীবনে খেলাধুলা শিক্ষার্থীকে সবল, কষ্টসহিষ্ণু, শৃঙ্খলাপরায়ণ ও নিয়মনিষ্ঠ করে তোলে। ছোটো বয়সে এই গুণগুলি অর্জন করলে বৃহত্তর জীবনে শিক্ষার্থী সফল হয়। এভাবে তারা উন্নত ও উদার মানসিকতার অধিকারী হয়ে ওঠে। এই ছাত্ররাই পারে সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গঠন করতে।
উপসংহার – বর্তমানে প্রায় সকল শিক্ষাবিদই অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলাকেও প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। তাই শিক্ষালয়েও খেলাধুলার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। অর্থাৎ দেহকে পড়াশোনার উপযুক্ত করে তৈরি রাখার জন্যও খেলাধুলাকে গ্রহণ করতে পারলে আমাদের উপকার হবে। তাই বলা দরকার যে, ছাত্রজীবনে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘ছাত্রজীবন ও খেলাধুলা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন