এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?
অগ্নিযুগের বাংলায় প্রতিষ্ঠিত হয় বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স নামক গুপ্তসমিতি, যা বি. ভি. নামেই ইতিহাসে সমধিক পরিচিত।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের প্রতিষ্ঠা –
বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ 1912 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ঢাকায় এই বিপ্লবী দল গড়ে তোলেন।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে ঢাকায় বিপ্লব প্রচেষ্টা –
বিপ্লবী দল হিসেবে বি. ভি. -এর প্রথামিক কাজকর্ম ঢাকাতেই পরিচালিত হয়েছিল। বি. ভি. -এর সদস্য বিনয়কৃষ্ণ বসু অত্যাচারী পুলিশ আধিকারিক লোম্যানকে হত্যা করেন। এরপর তিনি ছদ্মবেশে কলকাতায় চলে আসেন এবং কলকাতায় এই দলের অপর দুই সদস্য বাদল বসু ও দীনেশ গুপ্তের সঙ্গে পরিচিত হন।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে অলিন্দ যুদ্ধ –
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের তিন তরুণ বিপ্লবী বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত 1930 খ্রিস্টাব্দের 12 ডিসেম্বর বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের মূল কেন্দ্র রাইটার্স বিল্ডিং অভিযান করেন এবং কারা বিভাগের অধিকর্তা সিম্পসন-কে হত্যা করেন। তাদের সঙ্গে রাইটার্স বিল্ডিং -এর অলিন্দে ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে যে খন্ডযুদ্ধ সংঘটিত হয়, তা ‘অলিন্দ যুদ্ধ’ নামে খ্যাত। ধরা পড়ার অসম্মান থেকে বাঁচার জন্য বিনয় ও বাদল আত্মহত্যা করেন এবং বিচারে দীনেশের ফাঁসি হয়।
মেদিনীপুরে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স –
পূর্ববঙ্গের ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হলেও পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরেই বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের পুনর্জন্ম ঘটে বলা চলে। মেদিনীপুরে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের কাজকর্ম ব্রিটিশ শাসককে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তোলে। 1931-1933 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মেদিনীপুরের পর পর তিন জন জেলাশাসক যথাক্রমে পেডি, ডগলাস ও বার্জ বি. ভি. -এর সদস্যদের হাতে নিহত হন।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের মন্তব্য –
বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লববাদের ক্ষেত্র প্রস্তুতিতে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স -এর অবদান অবিস্মরণীয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স (বি. ভি.) দল কী?
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স ছিল একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন, যা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেয়। এটি 1912 খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের প্রধান কার্যক্রম কোথায় পরিচালিত হয়?
প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এর কার্যক্রম শুরু হলেও পরে কলকাতা ও মেদিনীপুরে এর প্রভাব বিস্তৃত হয়।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কী?
1. লোম্যান হত্যাকাণ্ড (1930 খ্রিস্টাব্দ) – বিনয়কৃষ্ণ বসু ঢাকার অত্যাচারী পুলিশ আধিকারিক লোম্যানকে হত্যা করেন।
2. অলিন্দ যুদ্ধ (1930 খ্রিস্টাব্দ) – বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করে কারা অধিকর্তা সিম্পসনকে হত্যা করেন।
3. মেদিনীপুরে জেলাশাসক হত্যা (1931-1933 খ্রিস্টাব্দ) – পেডি, ডগলাস ও বার্জ নামক তিন ব্রিটিশ জেলাশাসক বি. ভি. সদস্যদের হাতে নিহত হন।
অলিন্দ যুদ্ধ কী?
1930 সালের 12 ডিসেম্বর বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করেন এবং ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এই যুদ্ধে বিনয় ও বাদল আত্মহত্যা করেন এবং দীনেশ গুপ্তের ফাঁসি হয়।
মেদিনীপুরে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের ভূমিকা কী ছিল?
মেদিনীপুরে বি. ভি. সদস্যরা সক্রিয়ভাবে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালায়। 1931-1933 সালের মধ্যে তিন জেলাশাসক তাদের হাতে নিহত হন।
বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের অবদান কী?
বি. ভি. সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসকদের আতঙ্কিত করে তোলে এবং বাংলায় বিপ্লবী চেতনা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের প্রধান নেতারা কারা ছিলেন?
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের প্রধান নেতারা ছিলেন – হেমচন্দ্র ঘোষ (প্রতিষ্ঠাতা), বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত, দীনেশ গুপ্ত।
বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের পতন কবে হয়?
1930 -এর দশকে ব্রিটিশ সরকার কঠোর দমননীতি গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে এই সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলের নেতৃত্বে বাংলায় বৈপ্লবিক আন্দোলনের কীরূপ প্রসার ঘটেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন