এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভরের নিত্যতা সূত্রটি লেখো ও ব্যাখ্যা করো। মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্রটি কীভাবে রক্ষিত হয় ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ভরের নিত্যতা সূত্রটি লেখো ও ব্যাখ্যা করো। মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্রটি কীভাবে রক্ষিত হয় ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় “রাসায়নিক গণনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ভরের নিত্যতা সূত্রটি লেখো ও ব্যাখ্যা করো।
ভরের নিত্যতা সূত্র – পদার্থের ভর অবিনশ্বর। একে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। কোনো রাসায়নিক পরিবর্তনের আগে ও পরে পদার্থের মোট ভর সর্বদা সমান থাকে।
ভরের নিত্যতা সূত্রের ব্যাখ্যা – ধরা যাক, A এবং B রাসায়নিক বিক্রিয়া করে C এবং D উৎপন্ন করে। দেখা যাবে বিক্রিয়ার পূর্বে A এবং B -এর মোট ভর ও বিক্রিয়ার পরে C ও D -এর মোট ভর সমান আছে। যদি m1 গ্রাম A -এর সঙ্গে m2 গ্রাম B -এর বিক্রিয়ায় m3 গ্রাম C এবং m4 গ্রাম D উৎপন্ন হয়। তাহলে m1 + m2 = m3 + m4 হবে।
মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্রটি কীভাবে রক্ষিত হয় ব্যাখ্যা করো।
মোমবাতির দহনের ফলে মোমবাতির হাইড্রোকার্বন (কার্বন ও হাইড্রোজেনের যৌগ) বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2) ও জলীয় বাষ্প উৎপন্ন করে, যা উৎপন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে মিশে যায়। তাই আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্র লঙ্ঘিত হয়। কিন্তু উৎপন্ন CO2 ও H2O -এর ভর যদি মাপা সম্ভব হয়, তাহলে দেখা যায়, মোমবাতির দহনে যে পরিমাণ ভর হ্রাস পায়, তা উৎপন্ন CO2 ও H2O -এর মোট ভরের সমান।
অর্থাৎ, মোমবাতির ভর দহনে ব্যবহৃত অক্সিজেনের ভর = দহনের পরে (উৎপন্ন CO2 -এর ভর + উৎপন্ন জলীয় বাষ্পের ভর।)
অতএব এক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্র রক্ষিত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ভরের নিত্যতা সূত্র বা সংরক্ষণ সূত্র কী?
ভরের নিত্যতা সূত্র বা সংরক্ষণ সূত্র – পদার্থের ভর অবিনশ্বর। একে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না। কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ার পূর্বে বিক্রিয়ক পদার্থের মোট ভর বা ওজন বিক্রিয়ার পরে বিক্রিয়াজাত পদার্থের মোট ভর বা ওজনের সমান থাকে।
ভরের নিত্যতা সূত্রের গাণিতিক রূপ কী?
যদি কোনো বিক্রিয়ায় m1 গ্রাম A এবং m2 গ্রাম B বিক্রিয়া করে m3 গ্রাম C এবং m4 গ্রাম D উৎপন্ন করে, তাহলে – m1 + m2 = m3 + m4
ভরের নিত্যতা সূত্র কি সব ধরনের বিক্রিয়ায় প্রযোজ্য?
সাধারণ রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ভরের নিত্যতা সূত্র প্রযোজ্য। তবে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় (যেমন – ফিশন বা ফিউশন) ভরের একটি ক্ষুদ্র অংশ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় (আইনস্টাইনের E = mc2 সূত্র অনুসারে)। সেক্ষেত্রে ভর ও শক্তির সমতুল্যতা বিবেচনা করতে হয়।
ভরের নিত্যতা সূত্র কে প্রস্তাব করেছিলেন?
রাশিয়ান বিজ্ঞানী মিখাইল লোমোনোসভ (1756 খ্রিস্টাব্দ) এবং পরে ফরাসি রসায়নবিদ অ্যান্টোইন ল্যাভয়সিয়ে (1789 খ্রিস্টাব্দ) এই সূত্রটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ ও প্রস্তাব করেন।
ভরের নিত্যতা সূত্রের ব্যবহারিক গুরুত্ব কী?
ভরের নিত্যতা সূত্রের ব্যবহারিক গুরুত্ব হল –
1. রাসায়নিক সমীকরণের সাম্যাবস্থা নির্ণয়ে সাহায্য করে।
2. শিল্পক্ষেত্রে রাসায়নিক উৎপাদনের হিসাব নিকাশে ব্যবহৃত হয়।
3. বিজ্ঞানীদের পদার্থের সংরক্ষণশীলতা নীতি বুঝতে সহায়তা করে।
একটি বদ্ধ পাত্রে ম্যাগনেসিয়াম পোড়ালে ভরের নিত্যতা সূত্র কীভাবে প্রমাণিত হয়?
বদ্ধ পাত্রে ম্যাগনেসিয়াম (Mg) পোড়ালে এটি অক্সিজেনের সাথে যুক্ত হয়ে ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড (MgO) তৈরি করে। যেহেতু পাত্রটি বদ্ধ, তাই বিক্রিয়ার আগে ও পরে মোট ভর অপরিবর্তিত থাকে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ভরের নিত্যতা সূত্রটি লেখো ও ব্যাখ্যা করো। মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্রটি কীভাবে রক্ষিত হয় ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “ভরের নিত্যতা সূত্রটি লেখো ও ব্যাখ্যা করো। মোমবাতির দহনের ক্ষেত্রে ভরের নিত্যতা সূত্রটি কীভাবে রক্ষিত হয় ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের তৃতীয় অধ্যায় “রাসায়নিক গণনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন