এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বীণা দাস স্মরণীয় কেন? বীণা দাস স্নাতক হয়েও তাঁর সাম্মানিক ডিগ্রি পাননি কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বীণা দাস স্মরণীয় কেন? বীণা দাস স্নাতক হয়েও তাঁর সাম্মানিক ডিগ্রি পাননি কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বীণা দাস স্মরণীয় কেন?
সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন কলকাতার বৈপ্লবিক সংগঠন “ছাত্রী সংঘের” সদস্যা সুভাষচন্দ্রের শিক্ষাগুরু বেণীমাধব দাসের কনিষ্ঠা কন্যা বীণা দাস। 1932 খ্রিস্টাব্দের 6ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বল্পভাষিণী ও শান্ত প্রকৃতির ছাত্রী বীণা দাস বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে খুব কাছ থেকে পাঁচটি গুলি করেন, কিন্তু তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হন ও ধরা পড়েন। বিচারে তাঁর নয়-বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয় এবং ব্রিটিশ সরকার তাঁর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আটকে দেয়। জেল কর্তৃ পক্ষ শাস্তির মেয়াদ দু-বছর কম করে সাত বছর পর 1939 খ্রিস্টাব্দে তাঁকে মুক্তি দেয়। মুক্তিলাভের পর তিনি “মন্দিরা ” পত্রিকা সম্পাদনা করে বিপ্লবী আদর্শ প্রচার করেন। তিনি তাঁর বিপ্লবী জীবনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আত্মজীবনী “শৃঙ্খলঝংকার” ও “পিতৃদান” রচনা করেন।
বীণা দাস স্নাতক হয়েও তাঁর সাম্মানিক ডিগ্রি পাননি কেন?
তরুণী বীণা দাস কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে সাফল্যের সঙ্গে ইংরেজিতে তাঁর স্নাতক স্তরের পড়াশুনা সমাপ্ত করলেও সমাবর্তন উৎসবে ডিগ্রি প্রাপ্তি তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। সশস্ত্র বিপ্লববাদের আদর্শে দীক্ষিত বীণা 1932 খ্রিস্টাব্দের 6 ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উৎসবে আচার্য হিসেবে ভাষণরত গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে লক্ষ করে পরপর পাঁচটি গুলি ছোড়েন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তিনি লক্ষভ্রষ্ট হন এবং পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। মাতৃভূমির যজ্ঞে এইভাবে বীণা কেবল তাঁর স্নাতক ডিগ্রি নয়, তিনি নিজেকেই আহুতি দেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
বীণা দাস কে ছিলেন?
বীণা দাস ছিলেন একজন সশস্ত্র বিপ্লবী এবং কলকাতার “ছাত্রী সংঘ” এর সদস্যা। তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন।
বীণা দাস কেন স্মরণীয়?
বীণা দাস 1932 সালের 6ই ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বাংলার গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসন-কে গুলি করার সাহসী প্রচেষ্টার জন্য স্মরণীয়। যদিও তিনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হন এবং গ্রেফতার হন, তবুও তাঁর এই সাহসিকতা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বীণা দাসের শাস্তি কী হয়েছিল?
তাঁর বিচারে 9 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তবে পরে তা কমিয়ে 7 বছর করা হয়। তিনি 1939 সালে জেল থেকে মুক্তি পান।
বীণা দাসের লেখা বইগুলির নাম কী?
বীণা দাস তাঁর বিপ্লবী জীবন নিয়ে দুটি আত্মজীবনী লিখেছেন – “শৃঙ্খলঝংকার”, “পিতৃদান”।
বীণা দাস কেন তাঁর স্নাতক ডিগ্রি পাননি?
বীণা দাস বেথুন কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক পাস করলেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে গভর্নরকে গুলি করার কারণে ব্রিটিশ সরকার তাঁর ডিগ্রি আটকে দেয়।
জেল থেকে মুক্তির পর বীণা দাস কী করেছিলেন?
মুক্তির পর তিনি “মন্দিরা” নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করে বিপ্লবী আদর্শ প্রচার করেন।
বীণা দাসের পরিবার সম্পর্কে কী জানা যায়?
তিনি ছিলেন বেণীমাধব দাস -এর কন্যা, যিনি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর শিক্ষাগুরু ছিলেন।
বীণা দাসের আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিল?
তিনি ব্রিটিশ শাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন, যা ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি সাহসী পদক্ষেপ।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বীণা দাস স্মরণীয় কেন? বীণা দাস স্নাতক হয়েও তাঁর সাম্মানিক ডিগ্রি পাননি কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বীণা দাস স্মরণীয় কেন? বীণা দাস স্নাতক হয়েও তাঁর সাম্মানিক ডিগ্রি পাননি কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন