আজকের আর্টিকেলে আমরা বইপড়া প্রবন্ধ রচনা নিয়ে আলোচনা করবো। মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষা এবং স্কুল পরীক্ষায় বারবার দেখা যায় এই গুরুত্বপূর্ণ রচনা। একবার মুখস্ত করে নিলে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় এই প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারবেন।
এই প্রবন্ধে আমরা বইপড়ার গুরুত্ব, বইপড়ার ফলাফল, এবং একজন ভাল পাঠক হওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। এছাড়াও, বইপড়া প্রবন্ধ রচনার নমুনা এবং টিপসও শেয়ার করা হবে।
মনে রাখবেন, নিয়মিত বইপড়া আপনার জ্ঞান, ভাষা, এবং কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করবে। তাই আজই থেকে নিয়মিত বইপড়া শুরু করুন এবং একজন জ্ঞানী ও সফল মানুষ হয়ে উঠুন।
বইপড়া – প্রবন্ধ রচনা
ভূমিকা –
আজকের জেটগতির জীবনে মানুষের সময় নষ্ট করার মতো সময় নেই। সাফল্যকে পাখির চোখ করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই করে যাচ্ছে সকল ছাত্রছাত্রী থেকে আমজনতা। যেটুকু সময় তারপরেও থাকে তা চুরি করে নিচ্ছে টিভি বা মোবাইল ফোন। বই যেন এক প্রান্তিক বিষয় হয়ে উঠেছে আজকের জীবনে। অথবা নিতান্তই তা ঘর সাজানোর উপকরণ হয়ে গেছে। অথচ বই সেই বাতিঘর যা আমাদের পৌঁছে দেয় অন্ধকারের পথ ধরে আলোর দেশে।
বই যখন কাজের জন্য –
ছাত্রছাত্রীদের কাছে বই এগিয়ে চলার প্রধান উপকরণ। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্যের হাতিয়ার হল বই। মা বই দেখে শিখে নেন নানান ধরনের রান্না। বাবার হাতে থাকে “হোমিও ওষুধে নিরাময়।” বছরের শেষে একবার ভ্রমণসঙ্গী হাতে নিয়ে চলে পায়ের তলার সর্ষের খোঁজ। আর পরীক্ষার ভালো ফল করার জন্য দিদি হাতে ধরিয়ে দেয় “The brief history of time” – ঠাকুমাকে দেখেছি ‘কথামৃত’ নিয়ে বসতে। এভাবেই চাওয়া-পাওয়ার মনের শুদ্ধিতে, রসনায় এবং সাধনায় বই সেতুর মতো কাজ করে চলেছে।
রইব তোমার ফসল খেতের কাছে –
রুশো থেকে রবীন্দ্রনাথ, শেকসপিয়র থেকে সতীনাথ ভাদুড়ি, জেমস্ জয়েস থেকে জীবনানন্দ-বইয়ের হাত ধরেই আমাদের ঘরের মধ্যে এসে হাজির হন। পথের পাঁচালির অপুর হাত ধরে যেমন আমরা পৌঁছে যাই চিরকৈশোরে। দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান সবই আমাদের কাছে পৌঁছায় বইয়ের সৌজন্যে।
অবসরে বই –
বইয়ের থেকে ভালো অবসরের বন্ধু নেই। একঘেয়ে পড়াশোনা কিংবা জীবনযাত্রার মধ্যে বই এক অন্য দিগন্ত নিয়ে আসে। পরশুরাম কিংবা শিবরাম-আনন্দের বহুবিচিত্র আয়োজন সবই পাওয়া যায় বইয়ের মধ্যে।
উপসংহার –
আধুনিক যন্ত্রজীবনে বই এক কঠিন সংকটের মুখোমুখি। মানুষ এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত, বইয়ের জন্য সামান্য মাত্র সময়ও সে ব্যয় করে না। ভোগবাদের তাড়নায় সৃষ্টিশীলতা যত বিপন্ন হচ্ছে বইও ততই প্রান্তিক হয়ে যাচ্ছে আমাদের জীবনে। তবুও মন ও সমাজের সুস্থতার জন্য বইপড়ার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করতে পারবেন না কেউই।
পরিশেষে বলা যায়, বইপড়া প্রবন্ধ রচনা শুধু পরীক্ষার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং জ্ঞান বৃদ্ধি এবং চিন্তাভাবনার প্রসারের জন্যও অপরিহার্য। নিয়মিত বই পড়ার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারি, নতুন ধারণার সাথে পরিচিত হতে পারি এবং আমাদের চিন্তাভাবনাকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারি। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের উচিত নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করা।
এই প্রবন্ধটি মুখস্ত করে ক্লাস ৬ থেকে ১২ পর্যন্ত যেকোনো পরীক্ষায় বইপড়া প্রবন্ধ রচনার প্রশ্নের উত্তর লেখা সম্ভব হলেও, কেবল মুখস্ত করে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করা যাবে না। বরং নিয়মিত বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন এবং চিন্তাভাবনার প্রসার ঘটানোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।