বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?
Contents Show

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন?

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ বিশেষ অংশগ্রহণ করেনি। প্রথমত, জমিদার শ্রেণির স্বার্থে পরিচালিত এই আন্দোলনে গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষক সমাজের উন্নতির জন্য কোনো আকর্ষণীয় কর্মসূচি গৃহীত হয়নি। দ্বিতীয়ত, সরকারি তরফে বঙ্গভঙ্গের সুফল স্বরূপ মুসলিম সমাজের ভবিষ্যৎ উন্নতিলাভের সম্ভাবনার কথা প্রচার করা হলে অধিকাংশ মুসলিম কৃষক পরিবার আন্দোলন থেকে দূরে থাকে।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের ভূমিকা – 

1905 সালের 16 অক্টোবর লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করেন। ফলে শুরু হয় বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন বা স্বদেশি আন্দোলন। কৃষকরা এই আন্দোলন থেকে দূরে থাকে।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ –

স্বদেশি আন্দোলন থেকে কৃষক শ্রেণির দূরে থাকার কারণ –

  • কৃষকদের দুরবস্থা – কৃষকরা আর্থিক অনটন,নিজ সমস্যা এবং ভূমি রাজস্বের চাপে জর্জরিত ছিল। ফলে কোন রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগদানের কথা তারা ভাবেনি।
  • কৃষি কর্মসূচির অভাব – জমিদারি অত্যাচার বন্ধ, খাজনা হ্রাস বা বয়কট, ভূমিস্বত্ব আইন সংরক্ষণ জাতীয় কোন কৃষি কর্মসূচি স্বদেশি আন্দোলনে ছিল না। তাই এই আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণিরও আগ্রহ ছিল না।
  • জমিদার ঘেঁষানীতি – এই আন্দোলনে কৃষি কর্মসূচী গ্রহণ করে সাহায্যকারি জমিদারদের চটিয়ে কৃষকদের সমর্থনের বিরোধী ছিল স্বদেশি আন্দোলনের নেতারা।
  • কৃষকদের প্রতি উদাসীনতা – এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়। তারা সচেতন ভাবে কৃষক শ্রেণিকে আন্দোলনে শরিক করার ক্ষেত্রে উদাসীন ছিলেন।
  • দূরদর্শিতার অভাব – কৃষি প্রধান ভারতে কৃষকদের বাদ দিয়ে কোন আন্দোলন সফল হতে পারেনা – এই সত্যকে স্বদেশীনেতারা উপেক্ষা করে। এই অদূরদর্শিতার কারণেই কৃষক শ্রেণিকে তারা আন্দোলনে সামিল করতে পারেনি।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার মূল্যায়ন –

ঐতিহাসিক সুমিত সরকার বঙ্গভঙ্গ বিরোধী স্বদেশি আন্দোলনের অসাফল্য ও দুর্বলতার জন্য এই আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনীহার কথা বলেছেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের নেতারা কেন কৃষকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হন?

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের নেতারা কৃষকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হন কারণ –
1. আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন শিক্ষিত উচ্চবিত্ত শ্রেণি, যারা কৃষকদের সমস্যা নিয়ে উদাসীন ছিলেন।
2. জমিদারদের সমর্থন হারানোর ভয়ে নেতারা কৃষক-বান্ধব কোনো নীতি (খাজনা হ্রাস, ভূমিস্বত্ব সংস্কার) গ্রহণ করেননি।

ঐতিহাসিক সুমিত সরকার বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের কী সমালোচনা করেছেন?

সুমিত সরকারের মতে, স্বদেশি আন্দোলনের ব্যর্থতার একটি বড় কারণ ছিল কৃষকদের এই আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করতে না পারা। নেতাদের দূরদর্শিতার অভাব ও কৃষক-বিরোধী নীতিই এই ব্যর্থতা ডেকে আনে।

মুসলিম কৃষকরা কেন বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়নি?

ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে মুসলিম অধ্যুষিত পূর্ববঙ্গকে আলাদা করে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। ফলে, অনেক মুসলিম কৃষক এই আন্দোলনের বিরোধিতা না করে ব্রিটিশ নীতিকে সমর্থন করে।

জমিদাররা কি বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছিল?

হ্যাঁ, জমিদার ও উচ্চবিত্ত নেতৃত্ব কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করেছিলেন। তারা ভয় পেতেন যে কৃষকদের সমর্থন পেলে জমিদারি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের ব্যর্থতার জন্য কি কৃষকদের অনিহা দায়ী?

আংশিকভাবে হ্যাঁ, কিন্তু মূল দায়িত্ব ছিল নেতৃত্বের কৃষক-বিচ্ছিন্ন নীতির উপর। তারা কৃষকদের সমস্যা ও শক্তিকে গুরুত্ব দেয়নি।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ অংশগ্রহণ করেনি কেন? বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি কৃষক শ্রেণির অনিহার কারণ কী ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

সময়ের মূল্য – প্রবন্ধ রচনা

ঘন মাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের চিত্র অঙ্কন করো এবং কৌণিক চ্যুতি নির্ণয় করো।

লঘু মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের চিত্র অঙ্কন করো এবং কৌণিক চ্যুতি নির্ণয় করো।

অবতল দর্পণ কাকে বলে? দন্ত চিকিৎসকগণ অবতল দর্পণ ব্যবহার করেন কেন?

গোলীয় দর্পণের মেরু, বক্রতা কেন্দ্র, বক্রতা ব্যাসার্ধ ও প্রধান অক্ষ কাকে বলে?