চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।
Contents Show

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।

1930 এর দশকের সূচনায় যে ঘটনাটি বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লববাদের পুনরাগমনের বার্তা বয়ে আনে, তা হল মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের সরকারি অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং চট্টগ্রামে ব্রিটিশের নিয়ন্ত্রণমুক্ত অস্থায়ী জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ঘটনা।

চট্টগ্রামে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি গঠন –

1930 খ্রিস্টাব্দের গোড়ায় মাস্টারদা চট্টগ্রামে গড়ে তোলেন ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি নামে এক গুপ্ত সমর বাহিনী। এই দলে তাঁর সহযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত প্রমুখ।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন –

1930 খ্রিস্টাব্দের 18 এপ্রিল মাস্টারদার পরিচালনায় তার সহযোদ্ধারা চট্টগ্রামের সরকারি অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন। পরিকল্পনানুযায়ী, রেল ও টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামে অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা –

এরপর চট্টগ্রামে অস্থায়ী স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সূর্য সেন এই সরকারের সর্বাধিনায়ক ঘোষিত হন।

চট্টগ্রামে জালালাবাদের মুক্তি যুদ্ধ –

চট্টগ্রামের বিপ্লবী কার্যকলাপ দমনের লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার সেনাবাহিনী পাঠালে সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা নিকটবর্তী জালালাবাদ পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। 22 এপ্রিল উভয় পক্ষের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের বহুলোক হতাহত হন। এরপর বিপ্লবীরা সম্মুখ যুদ্ধ এড়িয়ে গেরিলা পদ্ধতিতে সংগ্রাম চালিয়ে যান।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ব্যর্থতা –

অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির ব্যর্থতা ছিল স্বাভাবিক, তথাপি 1932 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তারা চট্টগ্রামে ব্রিটিশ প্রশাসনকে অচল করে দিয়েছিল।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের মন্তব্য –

সমসাময়িক সরকারি আধিকারিকের রিপোর্টে চট্টগ্রামের অসম সাহসী অভ্যুত্থানকে ‘বিপ্লববাদের ইতিহাসে অভূতপূর্ব’ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার লিখেছেন – ‘ইংরেজের সহিত প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পরিকল্পনা ও তাহার জন্য প্রস্তুতি বঙ্গদেশে ও ভারতের অন্যান্য স্থানে পরিলক্ষিত হইলেও প্রকৃতপক্ষে ইহার প্রথম দৃষ্টান্ত জালালাবাদে চট্টগ্রামের যুদ্ধ।’

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন কী?

1930 সালের 18 এপ্রিল মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা চট্টগ্রামের ব্রিটিশ সরকারি অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন। এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন অভিযানের নেতৃত্বে কে ছিলেন?

মাস্টারদা সূর্য সেন এই অভিযানের মূল নেতা ছিলেন। তাঁর সহযোগীদের মধ্যে ছিলেন গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত প্রমুখ।

ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি (IRA) কী?

এটি ছিল সূর্য সেন গঠিত একটি গুপ্ত বিপ্লবী বাহিনী, যার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম করা।

চট্টগ্রামে অস্থায়ী সরকার কখন গঠিত হয়?

অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পর 1930 সালের 18 এপ্রিলই চট্টগ্রামে একটি অস্থায়ী স্বাধীন সরকার গঠিত হয়, যার সর্বাধিনায়ক ছিলেন সূর্য সেন।

জালালাবাদের যুদ্ধ কী?

ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিপ্লবীদের 22 এপ্রিল জালালাবাদ পাহাড়ে তীব্র যুদ্ধ হয়। এতে উভয় পক্ষের অনেক হতাহত হয়, কিন্তু বিপ্লবীরা গেরিলা পদ্ধতিতে লড়াই চালিয়ে যান।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন কি সফল হয়েছিল?

দীর্ঘমেয়াদে ব্রিটিশরা দমন করতে পারলেও, 1932 সাল পর্যন্ত বিপ্লবীরা চট্টগ্রামে ব্রিটিশ প্রশাসনকে অচল করে রেখেছিলেন।

প্রীতিলতা ও কল্পনা দত্তের ভূমিকা কী ছিল?

প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণে নেতৃত্ব দেন এবং কল্পনা দত্ত গেরিলা যুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন।

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে ব্রিটিশ সরকার কী প্রতিক্রিয়া দেখায়?

ব্রিটিশ সরকার কঠোর দমননীতি নেয় এবং বিপ্লবীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান চালায়। শেষ পর্যন্ত 1933 সালে সূর্য সেন গ্রেপ্তার হন ও ফাঁসি দেওয়া হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – রচনাধর্মী প্রশ্ন

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Life Science Suggestion 2026 – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – স্তম্ভ মেলাও

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সত্য মিথ্যা