এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চুম্বকের উপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া দেখাতে ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া প্রমাণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চুম্বকের উপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া দেখাতে ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া প্রমাণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চুম্বকের উপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া দেখাতে ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো।
অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া প্রমাণ করো।
বিজ্ঞানী ওরস্টেড প্রথম তড়িৎপ্রবাহের চুম্বকীয় ফলের বিষয়টি পরীক্ষার সাহায্যে দেখান।
পরীক্ষা – একটি পরিবাহী তার AB -কে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর রাখা হল। ওই তারের নীচে তারের সমান্তরালে উত্তর-দক্ষিণ মুখ করে একটি চুম্বকশলাকা রাখা হল।


পর্যবেক্ষণ – এখন তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে শলাকার বিক্ষেপ ঘটবে ও শলাকাটি তারের দিকের সঙ্গে তির্যকভাবে অবস্থান করবে। তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ বিপরীত দিকে করলে চুম্বকশলাকার বিক্ষেপ উলটো দিকে হতে দেখা যাবে। আবার শলাকাটি তারের উপরে রেখে তড়িৎপ্রবাহ পাঠালে তড়িৎপ্রবাহের একই অভিমুখের জন্য শলাকার বিক্ষেপ পূর্বের বিপরীত দিকে হবে। প্রবাহমাত্রা বেশি হলে বিক্ষেপ বেশি হবে, তড়িৎ প্রবাহমাত্রা কম হলে বিক্ষেপ কম হবে। তারটিকে শলাকার উপরে বা নীচে শলাকাটির দৈর্ঘ্যের সঙ্গে লম্বভাবে রেখে প্রবাহ পাঠালে শলাকার কোনো বিক্ষেপ হবে না।
ফলাফল –
পরিবাহী তারের অবস্থান | প্রবাহের অভিমুখ | চুম্বক শলাকার উত্তর মেরুর (N) বিক্ষেপ |
চুম্বক শলাকার উপরে | দক্ষিণ থেকে উত্তরে | পশ্চিম দিকে |
চুম্বক শলাকার উপরে | উত্তর থেকে দক্ষিণে | পূর্ব দিকে |
চুম্বক শলাকার নীচে | দক্ষিণ থেকে উত্তরে | পূর্ব দিকে |
চুম্বক শলাকার নীচে | উত্তর থেকে দক্ষিণে | পশ্চিম দিকে |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ওরস্টেডের পরীক্ষার প্রধান সিদ্ধান্ত বা আবিষ্কার কী ছিল?
ওরস্টেডের পরীক্ষা প্রমাণ করেছিল যে তড়িৎপ্রবাহ এবং চৌম্বকক্ষেত্র পরস্পর সম্পর্কিত। একটি তারে তড়িৎপ্রবাহ প্রবাহিত হলে তার চারপাশে একটি চৌম্বকক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়, যা একটি কোম্পাস সুইকে বিক্ষিপ্ত করতে পারে। এটি ছিল তড়িৎ ও চুম্বকত্বের মধ্যে যোগসূত্র প্রতিষ্ঠাকারী প্রথম পরীক্ষা।
তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া দেখানোর জন্য একটি সহজ এবং আধুনিক পরীক্ষা বর্ণনা করো।
একটি সোজা তারের পরিবর্তে আমরা একটি কুণ্ডলী (coil) নিতে পারি। একটি লোহার দণ্ডকে ( যেমন – একটি বড় পেরেক) কাঁচা তারের কুণ্ডলী দিয়ে পেঁচিয়ে একটি সরল তড়িৎচুম্বক (electromagnet) তৈরি করতে হবে। তারটিকে একটি ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ করলে লোহার দণ্ডটি একটি শক্তিশালী চুম্বকে পরিণত হবে এবং ছোট লোহা বা ইস্পাতের ক্লিপগুলোকে আকর্ষণ করবে। ব্যাটারি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলে চৌম্বক ধর্মও অদৃশ্য হয়ে যাবে। এটি তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়ারই একটি প্রায়োগিক উদাহরণ।
চুম্বকশলাকার বিক্ষেপের দিক কীসের উপর নির্ভর করে?
চুম্বকশলাকার বিক্ষেপের দিক প্রধানত দুটি জিনিসের উপর নির্ভর করে –
1. তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখ (Direction of Current) – প্রবাহের দিক উল্টে দিলে শলাকার বিক্ষেপের দিকও উল্টে যায়।
2. চুম্বকশলাকাটির তারের সাপেক্ষে অবস্থান (Position relative to the wire) – শলাকাটি তারের উপরে রাখা না নীচে রাখা হয়েছে, তার উপরেও বিক্ষেপের দিক নির্ভর করে।
যদি তড়িৎপ্রবাহ না থাকে, তাহলে চুম্বকশলাকার কী অবস্থান হবে?
যদি তারের মধ্য দিয়ে কোনও তড়িৎপ্রবাহ না থাকে, তাহলে চুম্বকশলাকাটি পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের কারণে উত্তর-দক্ষিণ দিকে নিজের মতো করে স্থির থাকবে এবং কোনও অতিরিক্ত বিক্ষেপ দেখাবে না।
ওরস্টেডের পরীক্ষাটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কীভাবে উপযোগী (useful) হয়েছে?
ওরস্টেডের মৌলিক আবিষ্কারটিই আধুনিক বিশ্বের অগণিত যন্ত্রপাতির ভিত্তি তৈরি করেছে। এর উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে –
1. তড়িৎচুম্বক (Electromagnets) – যা ক্রেন দিয়ে ভারী লোহার বস্তু তুলতে, ডোরবেল, এবং MRI মেশিনে ব্যবহার হয়।
2. ইলেকট্রিক মোটর (Electric Motors) – পাখা, ওয়াশিং মেশিন, গ্রাইন্ডার – সবই মোটরের মাধ্যমে কাজ করে যা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়ার নীতিতে চলে।
3. জেনারেটর (Generators) – যারা যান্ত্রিক শক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে (মোটরের বিপরীত প্রক্রিয়া)।
তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বকক্ষেত্রের দিক কীভাবে নির্ণয় করা যায়?
দক্ষিণ হস্তের মুষ্টি নিয়ম (Right-Hand Thumb Rule) ব্যবহার করে তারের চারপাশে সৃষ্ট চৌম্বকক্ষেত্রের দিক নির্ণয় করা যায়। নিয়মটি হলো – ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলিকে তড়িৎপ্রবাহের অভিমুখে রাখলে, হাতের অন্য আঙ্গুলগুলো যে দিকে ঘিরে ধরে, সেটিই হবে চৌম্বকক্ষেত্ররেখার দিক।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চুম্বকের উপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া দেখাতে ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া প্রমাণ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চুম্বকের উপর তড়িৎপ্রবাহের ক্রিয়া দেখাতে ওরস্টেডের পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। অথবা, একটি সহজ পরীক্ষার দ্বারা তড়িৎপ্রবাহের চৌম্বক ক্রিয়া প্রমাণ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের ষষ্ঠ অধ্যায় “চলতড়িৎ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন