আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের সপ্তবিংশ অধ্যায় ‘আদাব’ – এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই প্রশ্নগুলি প্রায়ই অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় আসে।
শহরে ১৪৪ ধারা আর কারফিউ জারি হওয়ার সুযোগে কী ঘটেছিল?
শহরে হিন্দু-মুসলমানে দাঙ্গা বেধে যাওয়ার পর ১৪৪ ধারা আর কারফিউ জারি হয়েছিল। গুপ্ত ঘাতকের দল চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। অন্ধকারকে আশ্রয় করে তারা চোরাগোপ্তা হানা দিল। লুটেরাও তাদের অভিযানে বেরিয়ে পড়েছিল। বস্তিতে বস্তিতে আগুন জ্বলছিল। মৃত্যুকাতর নরনারী-শিশুর চিৎকার স্থানিক আবহাওয়াকে বীভৎস করে তুলেছিল। বিদ্রোহ দমনের জন্য স্থানে স্থানে সৈন্যবাহিনীর লোকেরা এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়ছিল।
বিড়ি খাইবা? – বিড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে কী ঘটেছিল?
দাঙ্গার পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। সবাই ভাবছিল, কে কখন গোপন অস্ত্র বের করে আক্রমণ করে বসে। এই পরিস্থিতিতে সর্বাগ্রে সবার জিজ্ঞাসা – এ হিন্দু না মুসলমান? তাই যখন সুতামজুর একটা বিড়ি নাওয়ের মাঝির দিকে এগিয়ে দিয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল, একটা বন্ধুত্বের বাতাবরণ তৈরি হতে চলেছে। কিন্তু স্যাঁতানো দেশলাই কাঠি হঠাৎ জ্বালিয়ে ফেলে মাঝি যখন সোল্লাসে ‘সোহান্-আল্লা’ বলে ফেলেছিল, তখন চিহ্নিত হয়ে পড়ে সে মুসলমান। এতে নিমেষে সুতামজুর আতঙ্কিত হয়ে যায়।
অন্ধকার গলিতে ডাস্টবিনের দু-পাশে দুটি প্রাণী নিজেদের বিপদের কথা কী ভেবেছিল?
অন্ধকার গলির দুটি প্রাণী নাওয়ের মাঝি ও সুতামজুর। তারা দাঙ্গা বোঝে না, নিতান্ত সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষ হিসেবে তাদের মনে হয়েছিল ঘরের কথা, মা-বউ, ছেলেমেয়েদের কথা। আরও মনে হয়েছিল এদের কাছে কী তারা প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারবে। অন্য একটা বিপদের কথাও তাদের মনে হয়েছে – তাদের অনুপস্থিতিতে এই দাঙ্গার বাজারে তারাই বা কীভাবে বেঁচে থাকবে।
দাঙ্গা বাধার ফলে মাঝির কী ক্ষতির সম্ভাবনা ঘনিয়ে উঠেছিল?
মাঝি খেয়াপারাপার করে জীবন নির্বাহ করে। তার আশঙ্কা ছিল যে, সে আর নৌকো ফিরে পাবে না। তাই তার বুঝি দানা মারা গেল। মাঝির এক বাঁধা খদ্দের ছিল জমিদার রূপবাবুর বাড়ির নায়েবমশাই। তিনি প্রতিমাসে একবার করে নইরার চরে কাছারি করতে যেতেন। তাঁর হাতও ছিল হজরতের হাত। তিনি মাঝিকে যাত্রী ভাড়া দিতেন পাঁচ টাকা, বকশিশ পাঁচ টাকা; অর্থাৎ তার দশ টাকা বাঁধা আয় ছিল। দাঙ্গার ফলে কী কোনো হিন্দুবাবু আর মাঝির নৌকোয় আসবে এ প্রশ্ন তার মনে উঁকি দেয়।
মাঝির সংকেত মতো সামনে তাকিয়ে সুতামজুর কী দেখেছিল?
দাঙ্গা যখন প্রবল হয় তখন পুলিশবাহিনীর আর কাজের অন্ত থাকে না। দাঙ্গা দমনে তারা যেন তখন অক্লান্ত। মাঝির সংকেত অনুযায়ী সুতামজুর দেখেছিল প্রায় একশো গজ দূরে একটা ঘরে আলো জ্বলছে। ঘরের সংলগ্ন উঁচু বারান্দায় দশ-বারোজন বন্দুকধারী পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের সামনে একজন ইংরেজ অফিসার কী যেন বলে চলেছে মুখে পাইপের ধোঁয়া ছেড়ে, হাত-পা নেড়ে। বারান্দার নীচে ঘোড়ার জিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর-একজন পুলিশ। ঘোড়াটি চঞ্চলভাবে কেবলই লাঠিতে পা ঠুকছে।
আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের সপ্তবিংশ অধ্যায় ‘আদাব’ এর ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, দয়া করে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারা উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!