অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – গাছের কথা – বিষয়সংক্ষেপ

Rahul

আজকের আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের সপ্তদশ অধ্যায়গাছের কথা’ – এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এই বিষয় সংক্ষেপটি অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এখান থেকে প্রশ্নোত্তর প্রায়ই পরীক্ষায় আসে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – গাছের কথা

গাছের কথা অধ্যায়ের লেখক পরিচিতি

আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর জন্ম ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ নভেম্বর, অধুনা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায়। পিতা ভগবানচন্দ্র বসু ও মাতা বামাসুন্দরী দেবী। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে তিনি স্নাতক হন। এরপর ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (অনার্স) ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাস করে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক নিযুক্ত হন। বিনা তারে বার্তাপ্রেরণ পদ্ধতি তিনিই প্রথম আবিষ্কার করলেও উপযুক্ত প্রচারের অভাবে এই সম্মান পেয়ে যান ইতালির বিজ্ঞানী মার্কনি। নিজের উদ্ভাবিত ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি উদ্ভিদের উপর বিদ্যুৎস্পর্শে জাগ্রত স্পন্দন পরিমাপ করেন। এই বিষয়ে তাঁর ‘Responses in the living and non-living’ নামক বিখ্যাত গবেষণাগ্রন্থ আছে। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। রবীন্দ্রনাথের অন্তরঙ্গ সুহৃদ জগদীশচন্দ্র একাধারে ছিলেন বিজ্ঞানসাধক, দার্শনিক ও সুসাহিত্যিক। ‘অব্যক্ত’ নামক গ্রন্থটি তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে রচিত প্রবন্ধের সংকলন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ নভেম্বর তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

গাছের কথা অধ্যায়ের পাঠপ্রসঙ্গ

সমগ্র জীবজগতের মধ্যে মৌলিক সাদৃশ্য এবং উদ্ভিদের মধ্যে প্রাণের লক্ষণ-এই রচনাপাঠে সেই বিষয়টিই উপলব্ধি করা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, পাঠ্যপুস্তকে লেখকের জন্মস্থান ‘বিক্রমপুর’ মুদ্রিত হলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁর জন্ম ময়মনসিংহে।

গাছের কথা অধ্যায়ের বিষয়সংক্ষেপ

লেখক প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখে উদ্ভিদের মধ্যে নানা অনুভূতি ও দোষ-গুণের প্রকাশ লক্ষ করেছেন। তাদের জীবনধারণের সংগ্রামকেও তিনি বুঝতে পেরেছেন। জীবনের লক্ষণ হল গতি ও বৃদ্ধি, যা উদ্ভিদ ও প্রাণী উভয়ের মধ্যেই দেখা যায়। পাখির ডিমের মতোই বীজে গাছের জীবন ঘুমন্ত থাকে। মাটি, জল ও উত্তাপের মতো অনুকূল পরিবেশ পেলে তবেই বীজ থেকে বৃক্ষশিশু জন্ম নেয়। বীজ বিভিন্ন উপায়ে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে উদ্ভিদজগৎকে সম্প্রসারিত করে। অনুকূল পরিবেশ না পাওয়া পর্যন্ত বীজ তার কঠিন আবরণের মধ্যে ঘুমন্ত বৃক্ষশিশুকে নিরাপত্তা দেয়। নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও পৃথিবী যেন মায়ের মতো তাকে কোলে করে রাখে এবং বীজের আবরণ ও বীজের নিরাপত্তা পেয়ে বৃক্ষশিশু নিরাপদে ঘুমিয়ে থাকে।

গাছের কথা অধ্যায়ের নামকরণ

নামকরণ সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক বিন্দুতে সিন্ধু দর্শনের মতো সাহিত্য-বিষয়টি পাঠ করার আগেই সাহিত্য-বিষয়টি সম্পর্কে খানিক ধারণা লাভ করতে পারেন। সাহিত্যে নামকরণ নানা উপায়ে হতে পারে। যথা – চরিত্রকেন্দ্রিক, ঘটনাকেন্দ্রিক, ব্যঞ্জনাধর্মী ইত্যাদি।

প্রবন্ধের নামকরণ তার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পূর্ণ সংগতিপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান প্রবন্ধে লেখক ‘গাছ’ অর্থাৎ উদ্ভিদের মধ্যে জীবনের লক্ষণ, প্রাণীদের সঙ্গে তার সাদৃশ্য, বীজ থেকে গাছের জন্মের উপযুক্ত পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছেন। অর্থাৎ গাছেদের বিষয়ে নানা কথাই এখানে বলা হয়েছে। সুতরাং ‘গাছের কথা’ নামকরণটি সার্থক এবং সুপ্রযুক্ত হয়েছে এ কথা বলা যায়।

গাছের কথা অধ্যায়ের শব্দার্থ ও টীকা।

কীটপতঙ্গ – পোকামাকড়; সন্ধিপদ এবং পাখাযুক্ত বিভিন্ন অমেরুদণ্ডী প্রাণী। অবধি – পর্যন্ত। যাহা – যা। ইহাদের – এদের। আহার – খাদ্যগ্রহণ। ইহাদিগকেও – এদেরকেও। সদ্‌গুণ – ভালোগুণ। বৃক্ষদের – গাছের। সহিত – সঙ্গে। সচরাচর – প্রায়ই; প্রায়শই। তোমাদিগকে – তোমাদেরকে। শুষ্ক – শুকনো। পার্শ্বে – পাশে। প্রভেদ – পার্থক্য। লক্ষণ – চিহ্ন। উত্তাপ – গরম; উষ্ণতা। পাখির ছানা – শিশু পাখি। বীজ – বিচি; ফলের আঁটি। নিদ্রা – ঘুম। প্রকাণ্ড – বিশাল। সরিষা – সর্ষে। অপেক্ষা – থেকে। ক্ষুদ্র – ছোটো। জনমানবশূন্য – নির্জন; জনহীন। দেশান্তর – অন্য দেশ। অঙ্কুর – বীজ থেকে চারাগাছ জন্মানোর জন্য যা বের হয়। নিরাপদ – বিপদহীনতা। ছড়াইয়া – ছড়িয়ে। প্রবল – শক্তিশালী; খুব বলবান। চক্ষু – চোখ। বিধাতা – ভাগ্যদেবতা।

আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের সপ্তদশ অধ্যায়গাছের কথা’ – এর বিষয়সংক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। এই বিষয়সংক্ষেপ অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরীক্ষায় প্রায়শই আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও কোনো তথ্য প্রয়োজন হয়, নির্দ্বিধায় টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও এ থেকে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

দীপালি সংঘ কেন প্রতিষ্ঠিত হয়? দীপালি সংঘের কার্যাবলি কী ছিল?

অ্যান্টি-সার্কুলার সোসাইটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার ও পুনর্নবীকরণ কাকে বলে? বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার ও পুনর্নবীকরণের মধ্যে পার্থক্য

বীণা দাস বিখ্যাত কেন? বীনা দাস সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

রশিদ আলি দিবস কেন পালিত হয়? রশিদ আলি দিবস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।