অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – পথচলতি – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পথচলতি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইভাবে পথচলতি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি যদি তোমরা প্রস্তুত করে না যাও তাহলে পরীক্ষায় পথচলতি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলোর উত্তর দিতে পারবে না। তাই পথচলতি অধ্যায়ের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর গুলি ভালো করে মুখস্ত করে গেলে তোমরা পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল পাবে।

Table of Contents

শীতকালে গয়া থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে, লেখক দেহরা-দুন এক্সপ্রেসে ভীড়ের কারণে একটি ফাঁকা তৃতীয় শ্রেণীর বগিতে ঢুকতে বাধ্য হন। বগিতে কয়েকজন কাবুলিওয়ালা ছিল যারা দরজা আটকে রেখে হুংকার করছিল।

লেখক ফারসি ভাষায় কথা বলে, কাবুলিদের শান্ত করে জায়গা পান। পশতু ভাষায় খুব একটা অসুবিধা না হলেও, মনের ভাষায় কথোপকথন চলতে থাকে।

বৃদ্ধ আগা সাহেব, যিনি পটুয়াখালিতে শীতবস্ত্র বিক্রি করেন, তার সাথে লেখকের জমে যায় গল্প। একজন কাবুলি খুশ-হালখাঁ খট্টকের পশতু গজল শোনান। আরেকজন আদম খান গান ও গল্পের মাধ্যমে দুরখানির মহব্বতের কাহিনী বর্ণনা করেন।

ভাষা ও সংস্কৃতির ভেদাভেদ ভুলে, সকলে মিলিত হন এক সাহিত্য সভায়। রাতে কেউ নমাজ পড়ে, কেউ রোটা ও কাবাব খায়। আগা সাহেব লেখকের খোঁজ নেন।

সকালে আসানসোলে নেমে, লেখক কলকাতা চলে যান। ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সাথে এই অসাধারণ রেল ভ্রমণ লেখকের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে।

পথচলতি  – অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের আত্মজীবনীর নাম কী?

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের আত্মজীবনীর নাম’ জীবনকথা’।

ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে কোন্ গ্রন্থ রচনার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন?

ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে ‘The Origin and Development of the Bengali Language’ গ্রন্থটির জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন।

লেখকের কোন্ ট্রেন ধরার কথা ছিল?

লেখকের দেহরা-দুন এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল।

একটা তৃতীয় শ্রেণির বগির কাছে একেবারেই লোকের ভিড় নেই কেন?

তৃতীয় শ্রেণির বিরাট বগিটি গুটিকতক কাবুলিওয়ালার দখলে থাকার জন্য সেখানে একেবারেই লোকের ভিড় নেই।

পাঠানদের মাতৃভাষা কী?

পাঠানদের মাতৃভাষা হল ‘পশতু’।

বৃদ্ধ পাঠানের ডেরা বাংলাদেশের কোথায় ছিল?

বৃদ্ধ পাঠানের ডেরাটি ছিল বাংলাদেশের পটুয়াখালিতে।

খুশ-হাল খাঁ খট্টক কে ছিলেন?

আওরঙ্গজেবের সময়ের মানুষ খুশ-হাল খাঁ খট্টক ছিলেন ‘পশতু’ ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি।

আদম খাঁ ও দুরখানির কিসসার কাহিনি কেমন?

আদম খাঁ ও দুরখানির কিসসার কাহিনি হল ‘দিল-ভাঙা’।

এই পাঠ্যে কোন্ বাংলা মাসিকপত্রের উল্লেখ আছে?

এই পাঠ্যে ‘প্রবর্তক’ মাসিকপত্রটির উল্লেখ আছে।

রোজার উপোসের আগে কাবুলিওয়ালারা ভরপেট কী খেয়েছিলেন?

রোজার উপোসের আগে কাবুলিওয়ালারা ভরপেট খেয়েছিল বড়ো বড়ো পাঠান ‘রোটা’ আর ‘কাবাব’।

তসবিহ শব্দের অর্থ কী?

তসবিহ শব্দটির অর্থ হল মালা জপ করা।

আরবি ভাষায় ঈশ্বরের নিরানব্বইটি পবিত্র ও সুন্দর নামকে কী বলা হয়?

আরবি ভাষায় ঈশ্বরের নিরানব্বইটি পবিত্র ও সুন্দর নামকে ‘নব্বদ্-ও-নও অসমা-ই-হাসানা’ বলা হয়।

পথচলতি গল্পটি রচনা করেছেন বাঙালি শিক্ষাবিদ (অমিয় চক্রবর্তী/শিবনাথ শাস্ত্রী/সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়)।

সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়।

পথচলতি গল্পের কথক শ্বশুরালয় গয়া থেকে ফিরছিলেন (ভুবনেশ্বরে/দিল্লিতে/কলকাতায়)।

কলকাতায়।

কাবুলিওয়ালা পাঠানদের মাতৃভাষা ছিল (ফারসি/পশতু/উর্দু)।

পশতু।

আফগানিস্তানের শিক্ষিতজনের ভাষা হল (হিন্দি/ফারসি/পশতু)।

ফারসি।

পাঠানরা জবরদস্ত এবং মারমুখী হলেও কিন্তু (ভদ্রসভ্য/শিশুসুলভ/রাসভারী)।

শিশুসুলভ।

বৃদ্ধ আগা সাহেবের ডেরা ছিল বাংলাদেশের (নোয়াখালি/পটুয়াখালি/চট্টগ্রাম)।

পটুয়াখালি।

খুশ-হাল খাঁ খট্টকের বিখ্যাত গান হল (গজল/ঠুংরি/খেয়াল)।

গজল।

ব্যাপারটা খুব সম্ভবত ১৯২৮ সালে _ ঘটেছিল।

শীতকালে।

শ্বশুরালয় _ থেকে ফিরছি।

গয়া।

আমি দু-চারটি _ কথা বলতে পারি।

ফারসি।

ওরা একটু যেন _ হয়ে গেল।

হতভম্ব।

যেন এক মস্ত _ এসেছে।

আলেম।

পথচলতি গল্পের কথক শ্বশুরালয় গয়া থেকে কলকাতা ফিরছিলেন কবে?

পথচলতি গল্পের কথক শ্বশুরালয় গয়া থেকে কলকাতা ফিরছিলেন ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে।

ফারসি কাদের ভাষা?

ফারসি হল আফগানিস্তানের শিক্ষিতজনের ভাষা।

আগা সাহেব কোন ভাষা মাতৃভাষার মতোই বলতে পারেন?

আগা সাহেব বরিশাইল্যা ভাষা মাতৃভাষার মতোই বলতে পারেন।

খুশ-হাল খাঁ খট্টক কার সময়ের মানুষ?

খুশ-হাল খাঁ খট্টক সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ের মানুষ।

পশতু ভাষায় কোন্ কোন্ শব্দ আছে?

পশতু ভাষায় প্রচুর ফরাসি ও আরবি শব্দ আছে।

বৃদ্ধ আগা সাহেব খুব ভোরে উঠে কী করছিলেন?

বৃদ্ধ আগা সাহেব খুব ভোরে উঠে বসে ‘তসবিহ’ বা মালা জপ করছিলেন।

তৃতীয় শ্রেণির কামরার দিকে কেউ এগোলে পাঠানরা কী বলেছে?

পথচলতি গল্পে তৃতীয় শ্রেণির কামরার দিকে কেউ এগোলে পাঠানরা হুংকার ছেড়ে বলছে – ‘ইয়ে গাড়ে তোমারা ওয়াস্তে নেহি – জো তুম উদর’। জবরদস্ত চেহারার কাবুলিওয়ালা পাঠানরা এই হুংকার দিয়ে লোক ঠেকিয়ে রাখছে।

কথক তৃতীয় শ্রেণির বগির ভিতর ঢুকতেই পাঠানরা কী করল?

কথক তৃতীয় শ্রেণির বগির ভিতরে ঢুকতেই পাঠানরা একটা পুরো বেঞ্চ তাঁকে খালি করে দিল। শুধু তাই নয় – ‘যেন এক মস্ত আলেম এসেছেন’ – এইভাবে তাকে একটু সমীহও করতে লাগল তারা।

সমস্ত গাড়িটা কীসের গন্ধে ভরপুর ছিল?

সমস্ত বগিটা কাবুলিওয়ালাদের বাসি কাপড়চোপড়, দেহ নিঃসৃত ঘামের দুর্গন্ধ আর তার সঙ্গে হিং-এর উগ্র গন্ধে ভরপুর ছিল।

কথককে পাঠানরা ভালোবেসে কীসের মর্যাদা দিলেন?

পাঠানদের সঙ্গে কথক এমনভাবে মিশে গেলেন যে, তারা ভালোবেসে এবং আবেগে উৎফুল্ল হয়ে তাঁকে কলকাতার ‘কাবুলি ব্যাংক’-এর হিসাবনবিশ কেরানি বা ম্যানেজারের মর্যাদা দিলেন।

একজন পাঠান খুশ-হাল খাঁ খট্টকের গজল কীভাবে গাইলেন?

একজন পাঠান তার ভাবের আতিশয্যে, একবার কানে হাত দিয়ে, আবার বুকে হাত দিয়ে ওই খুশ-হাল খাঁ খট্টকের পশতু গজল গাইতে লাগলেন।

কথককে এক পাঠান আদম খাঁ দুরখানির কিসসা কেমন করে শোনালেন?

কথককে এক পাঠান অতি কর্কশ অথচ গুরুগম্ভীর কণ্ঠে কিছুটা গান করে এবং কিছুটা পাঠ করে শোনাতে লাগলেন আদম খাঁ দুরখানির কিসসা।

লেখকের এই অভিজ্ঞতা আমাদেরকে শেখায় যে, ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যেও বন্ধুত্ব ও সহমর্মিতা গড়ে তোলা সম্ভব। লেখক যদিও পশতু ভাষা ভালো বুঝতেন না, তবুও তিনি ফারসি ভাষার মাধ্যমে কাবুলিওয়ালাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হন।

এই যাত্রা শুধু লেখকের জন্যই নয়, কাবুলিওয়ালাদের জন্যও ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তারা লেখকের সাথে গল্প, গান ও কবিতা ভাগ করে নেয়।

এই ছোট্ট রেল ভ্রমণ লেখককে শিখিয়েছে যে, ভেদাভেদ ভুলে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা ও বোঝাপড়া গড়ে তোলা সম্ভব। লেখক এই অভিজ্ঞতা চিরকাল মনে রাখবেন।

উপসংহারে বলা যায়, পথচলতি গল্প আমাদেরকে শেখায় যে, ভাষা ও সংস্কৃতির বাধা অতিক্রম করে মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহমর্মিতা গড়ে তোলা সম্ভব।

Share via:

মন্তব্য করুন