নবম শ্রেণী ইতিহাস – ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক – বিষয়সংক্ষেপ

Souvick

আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর ইতিহাস বইয়ের প্রথম অধ্যায়, “ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক” -এর “বিষয়সংক্ষেপ” নিয়ে আলোচনা করব। এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু পড়ার সময় অধ্যায়টির কাঠামো ও প্রধান বিষয়াবলি বুঝতে সাহায্য করবে, যা আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, এই সংক্ষিপ্ত বিবেচনা আপনাদের প্রস্তুতি আরও ভালো করতে সাহায্য করবে।

নবম শ্রেণী ইতিহাস - ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক - বিষয়সংক্ষেপ
Contents Show

বিপ্লব (Revolution) –

ইতিহাসে বিপ্লব বলতে বোঝায় রাষ্ট্র, সমাজ, শিল্প বা কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার অতি দ্রুত আমূল পরিবর্তন।

ফরাসি বিপ্লব (French Revolution) –

ফরাসি বিপ্লব হল একটি সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক পরিবর্তন যাতে প্রচলিত শাসক ও শাসনপ্রণালীর পরিবর্তে একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে ‘পুরাতনতন্ত্র’ (Ancién Regime) -এর অবসান ঘটে এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের সূচনা হয়। 1789 খ্রিস্টাব্দের ফরাসি বিপ্লব ছিল পরবর্তীকালে পৃথিবীর বিভিন্ন বিপ্লবী আন্দোলনের আদর্শ ও অনুপ্রেরণা।

ফরাসি বিপ্লবের সূচনা –

1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই ফরাসি জনতা কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ ধ্বংস করে। 14 জুলাই -এর এই ঘটনাটিকে ফরাসি বিপ্লবের সূচনা হিসেবে ধরা হয়।

দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব (1792 খ্রিস্টাব্দ) –

1792 খ্রিস্টাব্দের 10 আগস্ট ফ্রান্সের উত্তেজিত জনতা দ্বিতীয়বার টুইলারিস (Tuilleries) রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে। জনতার আক্রমণে রাজার দেহরক্ষী বাহিনী নিহত হয়। রাজা সপরিবারে আইনসভাকক্ষে আশ্রয় গ্রহণ করেন। উত্তেজিত জনতা ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের অবসানের দাবি জানায়। জনতার চাপে আইনসভা রাজাকে বরখাস্ত করে। ঐতিহাসিক লেফেভর (Lefebvre) এই ঘটনাকে ‘দ্বিতীয় ফরাসি বিপ্লব’ বলে অভিহিত করেছেন।

রাজনৈতিক কারাগার –

1789 খ্রিস্টাব্দে বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে ‘লেতর দ্য ক্যাশে’ (Lettres de cachet) নামক একপ্রকার গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রচলিত ছিল। এই গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে রাজকীয় কর্মচারীরা যে-কোনো সাধারণ নাগরিককে গ্রেফতার করে বিনা বিচারে রাজকীয় কারাগার বা বাস্তিল দুর্গে আটকে রাখতে পারত। এর ফলে বাস্তিল দুর্গ বিপ্লবের পূর্বে সর্বদা বন্দিতে পরিপূর্ণ থাকত। দার্শনিক ভলতেয়ার-ও রাজনৈতিক বন্দিরূপে বাস্তিল দুর্গে আটক ছিলেন।

লেতর দ্য ক্যাশে

ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর –

1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম কারণ ছিল ফ্রান্সের বিপ্লব পূর্ববর্তী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। ফরাসি সমাজব্যবস্থায় যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায় ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী ও সুবিধাভোগী শ্রেণি। এঁরা বিভিন্ন কর দেওয়া থেকে রেহাই পেতেন। ফ্রান্সের 96% কর আদায় করা হত তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের কাছ থেকে। এদের রাজকীয় করের পাশাপাশি ‘টাইথ’ নামক ধর্মকর এবং ‘তেরাজ’ নামক পথকর যথাক্রমে চার্চ ও সামন্তপ্রভুকে দিতে হত। কর আদায়ের পদ্ধতিও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কর ধার্য করার ক্ষেত্রে ‘বিশেষ অধিকার’ অর্থাৎ যাদের কর দেওয়ার ক্ষমতা আছে তাদের উপর কম হারে কর আরোপ এবং করে ছাড় ফ্রান্সের রাজস্বব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দেয়। উপরন্তু ‘ইনটেনডেন্ট’ (Intendent) নামক রাজস্ব আদায়কারী কর্মচারীরা আদায়ীকৃত রাজস্বের পুরো অংশ রাজকোশে জমা না দিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করত। রাজপরিবারের বিলাসবৈভব এবং দেশের বাইরে নানান যুদ্ধে যোগদানের জন্য রাজকোশে যে ঘাটতি দেখা দেয় তা বিদেশি ঋণ নিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ফ্রান্সের এই বিভ্রান্তিমূলক ত্রুটিপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্যই অ্যাডাম স্মিথ (Adam Smith) ফ্রান্সকে ‘ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’ (Museum of Economic Errors) বলে উল্লেখ করেছেন।

দৈব রাজতন্ত্রের ধারণা –

প্রাক্-বিপ্লব ইউরোপে রাজারা দৈবসত্তায় (Divine Origin) বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা দাবি করতেন রাজা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নন। তিনি ঈশ্বরকর্তৃক প্রেরিত দূত বা প্রতিনিধি। তাই তিনি তাঁর কাজের জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নন। রাজার এই দৈবসত্তার ধারণা রাজাকে সাধারণ মানুষের থেকে পৃথক করেছিল।

অঁসিয়া রেজিম (Ancién Regime) –

অঁসিয়া রেজিম বা Ancién Regime কথার অর্থ প্রাচীন আমল।

ফ্রান্সে বুরবোঁ বংশের সম্রাটগণ –

সম্রাটরাজত্বকাল
চতুর্থ হেনরি (Henry IV)1589 – 1610 খ্রিস্টাব্দ।
ত্রয়োদশ লুই (Louis XIII)1610 – 1643 খ্রিস্টাব্দ।
চতুর্দশ লুই (Louis XIV)1643 – 1715 খ্রিস্টাব্দ।
পঞ্চদশ লুই (Louis XV)1715 – 1774 খ্রিস্টাব্দ।
ষোড়শ লুই (Louis XVI)1774 – 1792 খ্রিস্টাব্দ।

বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে প্রচলিত বিভিন্ন কর –

করঅর্থ (মানে)
টেইলি (Taille)
ক্যাপিটেশন (Capitation)
ভিংটিয়েমে (Vingtieme)
প্রত্যক্ষ কর –
ভূমিকর বা সম্পত্তির
উপর ধার্য কর
উৎপাদনকর
আয়কর (স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির উপর ধার্য কর)
গ্যাবেলা (Gabelle)লবণ কর
টাইথ (Tithe)ধর্মকর
করভি (Corvee)বেগার খাটানো, শ্রমকর
তেরাজপথঘাট ব্যবহারের কর
লদ – এ – ভঙজমি হস্তান্তরের কর
ব্যানালাইট (Banalités)শস্য ভানার কর
এইটস (Aides)ভোগ্যপণ্য কর (তামাক, মদ প্রভৃতি)

এইসব কর দিতে ফরাসি কৃষকদের আয়ের 80% ব্যয় হয়ে যেত।

প্রাক্-বিপ্লব ফরাসি সমাজকাঠামো –

প্রাক্-বিপ্লব ফরাসি সমাজ কাঠামো

বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজ

বিপ্লবের পূর্বে ফরাসি সমাজ

ফ্রান্সের সমাজের তিনটি এস্টেট বা সম্প্রদায়

ফ্রান্সের সমাজের তিনটি এস্টেট বা সম্প্রদায়

সাঁকুলোৎ (Sans-Culottes) –

এরা ফ্রান্সের শহরবাসী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। এদের মধ্যে ছিল দিনমজুর, মুটে, মালি, ভিস্তি (জলবাহক), গৃহভৃত্য প্রভৃতি। আক্ষরিক অর্থে সাঁকুলোৎ বলতে বোঝায় যারা ব্রিচেস বা কুলোৎ ছাড়া ট্রাউজার পরত। এদের মেনু পিপল (Menu Peuple) -ও বলা হত। এর আক্ষরিক বাংলা অনুবাদ হল ছোটো লোক।

ফ্রান্সে ‘সক্রিয়’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’ নাগরিক –

1792 খ্রিস্টাব্দে সংবিধানে বলা হয়, যেসকল 25 বছর বয়সি ফরাসি নাগরিকরা অন্তত তিন দিনের নির্ধারিত মজুরি (দেড় থেকে তিন লিভর) সরকারকে প্রত্যক্ষ কর হিসেবে দেয়, তারাই ভোটদানের অধিকার পাবে। এইভাবে সম্পত্তির ভিত্তিতে ভোটাধিকারপ্রাপ্তরা ‘সক্রিয় নাগরিক’ এবং ভোটাধিকারহীন ব্যক্তিরা ‘নিষ্ক্রিয় নাগরিক’ নামে পরিচিত হন- ফলে তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হন।

ফরাসি বিপ্লব ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ –

প্রকৃতপক্ষে ফরাসি বিপ্লব ছিল কয়েকটি শ্রেণিবিপ্লবের সমষ্টি এবং বুর্জোয়া বিপ্লব ছিল তার একটি পর্যায় মাত্র। তাই রাজনৈতিক দিক থেকে সচেতন, অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ ও নব্য ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ফরাসি বুর্জোয়া শ্রেণি 1789 খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবে প্রধান ভূমিকা পালন করে। বিপ্লবের ফলে গৃহীত অবাধ বাণিজ্য নীতি, সম্পত্তির ভিত্তিতে ভোটাধিকার ও সরকারি চাকরি লাভের সুযোগ বুর্জোয়া শ্রেণির ক্ষমতালাভকে প্রশস্ত করে। তাই এই বিপ্লবকে ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ নামে অভিহিত করা হয়।

বিপ্লব পূর্ববর্তী সময়ে ফরাসি দার্শনিকগণের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ –

দার্শনিকসময়কালরচিত গ্রন্থ
মস্তেস্কু (Montesquieu)1689 – 1755 খ্রিস্টাব্দদ্য স্পিরিট অফ লজ (The Spirit of the Laws, 1748 খ্রিস্টাব্দ)। দ্য পার্সিয়ান লেটারস (The Persian Letters, 1721 খ্রিস্টাব্দ)।
ভলতেয়ার (Voltaire)1694 – 1778 খ্রিস্টাব্দকাঁদিদ (Candide, 1759 খ্রিস্টাব্দ)।
লেতর ফিলজফিক (Lettres Philosophiques, 1734 খ্রিস্টাব্দ)।
জাঁ জেকুইস রুশো (Jean Jacques Rousseau)1712 – 1778 খ্রিস্টাব্দসোশ্যাল কন্ট্রাক্ট (সামাজিক চুক্তি, Social Contract, 1762 খ্রিস্টাব্দ)।
অরিজিন অফ ইনইক্যুয়ালিটি (অসাম্যের সূত্রপাত, Origin of Inequality)।

প্রাক্-বিপ্লব যুগের ফরাসি দার্শনিকগণ (Philosophers) –

ফিজিওক্র্যাটস (Physiocrats) –

এক শ্রেণির অর্থনীতিবিদ যাঁরা অবাধ বাণিজ্য ও বেসরকারি শিল্পস্থাপনের সমর্থক ছিলেন। কুয়েসনে (Quesnay) ও অ্যাডাম স্মিথ (Adam Smith) এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা। অ্যাডাম স্মিথ তাঁর রচিত ‘দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস’ (The Wealth of Nations) গ্রন্থে অবাধ বাণিজ্যের কথা বলেছেন।

অ্যাডাম স্মিথ ও কুয়েসনে

এনসাইক্লোপিডিয়া (বিশ্বকোশ, Encyclopedia) –

ফরাসি জ্ঞানদীপ্তির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ ঘটেছিল ‘এনসাইক্লোপিডিয়া’ বা ‘বিশ্বকোশ’ -এর মাধ্যমে। 1751 থেকে 1780 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সমসাময়িক বিভিন্ন পণ্ডিতদের সহযোগিতায় 35 খণ্ডে এই গ্রন্থ সংকলিত হয়। এনসাইক্লোপিডিস্টরা (Encyclopedist) সামাজিক অসাম্য, ক্রীতদাস প্রথার অবসান, বৈষম্যমূলক করব্যবস্থা, ত্রুটিপূর্ণ বিচারব্যবস্থা ইত্যাদি নানান বিষয়ে তাঁদের যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনা এই গ্রন্থের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেন। 1765 খ্রিস্টাব্দে এই গ্রন্থের 4 হাজার কপি বিক্রি হয়েছিল।

ভলতেয়ার (Voltaire) –

ভলতেয়ার হল ছদ্মনাম। তাঁর আসল নাম ফ্রাঁসোয়া মারি আরুয়ে (Francois Marie Arouet)। তিনি ঈশ্বরবাদী ছিলেন। ঈশ্বর ও ধর্মের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি ঈশ্বর না থাকেন, তবে তাকে সৃষ্টি করা প্রয়োজন’ (If God did not exist, it would be necessary to create Him.)

রুশো (Rousseau) –

রুশোর প্রকৃত নাম জাঁ জেকুইস রুশো (Jean Jacques Rousseau)। তাঁর রচিত ‘সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট’ গ্রন্থটিকে ‘ফরাসি বিপ্লবের বাইবেল’ বলা হয়।

আবে সিয়েস –

“What is the Third Estate?” গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন আবে সিয়েস (Abbe Siyes)। এটি 1789 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।

দার্শনিকদের ভূমিকা –

সামাজিক ক্ষমতা ও সম্পদ বণ্টনে অসাম্যের বিরুদ্ধে জনমত গঠন –

প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সে সমগ্র ফরাসি সমাজ তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল – প্রথম শ্রেণিতে যাজক সম্প্রদায়, দ্বিতীয় শ্রেণিতে অভিজাত সম্প্রদায় এবং তৃতীয় শ্রেণিতে দেশের অবশিষ্ট সমস্ত মানুষ (প্রায় 98%)। এই তিন শ্রেণির মধ্যে প্রথম দুই শ্রেণির মানুষেরা অর্থাৎ যাজক ও অভিজাতরা ছিলেন সুবিধাভোগী সম্প্রদায়। এঁরা রাষ্ট্রে প্রচলিত কোনো প্রকার কর রাজাকে প্রায় দিতেনই না। উপরন্তু রাষ্ট্রের সমস্ত সুযোগসুবিধা গ্রহণ করতেন। অন্যদিকে তৃতীয় সম্প্রদায় সমস্ত প্রকার সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে রাষ্ট্রে প্রচলিত সমস্ত প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর প্রদানে বাধ্য ছিলেন। ফরাসি দার্শনিকগণ তাঁদের লেখনীর মাধ্যমে তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন এবং জনমত গঠনে সাহায্য করেন।

রাজা ষোড়শ লুই -এর অর্থমন্ত্রীগণ –

অর্থমন্ত্রীকার্যকাল
তুর্গো (Turgot)1774 – 1776 খ্রিস্টাব্দ।
নেকার (Necker)1776 – 1781 খ্রিস্টাব্দ।
ক্যালোন (Calonne)1783 – 1787 খ্রিস্টাব্দ।
ব্রিয়াঁ (Brienne)1787 – 1788 খ্রিস্টাব্দ।
নেকার (Necker)1788 – 1789 খ্রিস্টাব্দ।

স্টেটস্ জেনারেল (States General) –

ফরাসি জাতীয় সভা। 1789 খ্রিস্টাব্দে সম্রাট ষোড়শ লুই (Louis XVI) স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশন আহ্বান করেন। এর জন্য 1789 খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ফ্রান্সে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

স্টেটস্ জেনারেলের মোট সদস্যসংখ্যা 1214 জন। যাজক – 308 জন। অভিজাত 285 জন। তৃতীয় শ্রেণি – 621 জন।

স্টেটস্ জেনারেল আহ্বানের তাৎপর্য –

স্টেটস্ জেনারেলের অধিবেশনের সূচনা থেকে অভিজাত ও বুর্জোয়া – এই দুই সম্প্রদায়ের শ্রেণিচেতনা এবং বিশেষ অধিকারভোগ সংক্রান্ত বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। স্টেটস্ জেনারেলের আহ্বানের সূত্রে তৃতীয় এস্টেট জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হয়। জাতীয় পরিষদ গঠন ও টেনিস কোর্টের শপথগ্রহণ ইত্যাদি বিষয়গুলি ফরাসি জাতির সার্বিক বৈষম্যমুক্তির প্রত্যাশা জাগরিত করে।

টেনিস কোর্টের শপথ (Tennis Court Oath) –

ফ্রান্সের স্টেটস্ জেনারেলের তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা 1789 খ্রিস্টাব্দের 20 জুন টেনিস খেলার মাঠে যে শপথগ্রহণ করেন, তাকেই ‘টেনিস কোর্টের শপথ’ বলা হয়। শপথের মূল বিষয় ছিল – “যতদিন না একটি সংবিধান রচনা হবে ততদিন তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের কাজ করে যাবে।”

ত্রুটির দাঙ্গা ও তার তাৎপর্য –

1788 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। 1788 -1789 খ্রিস্টাব্দে ব্যাপক তুষারপাতের ফলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কম হয়। এই সময়ে অজন্মা অঞ্চলের মানুষেরা ব্যাপক হারে প্যারিসে চলে আসে। ক্ষুধার্ত মানুষজন রুটির দোকানগুলিতে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা শুরু করে, ক্রমে ওই ধরনের রুটির দাঙ্গা দুর্ভিক্ষপীড়িত অঞ্চলগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। প্যারিসের খাদ্য আন্দোলন বন্ধ করবার জন্য ফরাসি সরকার সৈন্যবাহিনীকে ব্যবহার করে। ফলে দাঙ্গার প্রকোপ বৃদ্ধি পায় এবং বাস্তিল দুর্গের পতন ত্বরান্বিত হয় (1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই)।

‘সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দ্য ক্লার্জি (Civil Constitution of the Clergy, 1791 খ্রিস্টাব্দ): 1789 খ্রিস্টাব্দের সংবিধান সভা ‘সিভিল কনস্টিটিউশন অফ দ্য ক্লার্জি’ বা ‘ধর্মযাজকদের সংবিধান’ নামে একটি আইন পাস করে। এতে বলা হয় –

  1. চার্চের উপর পোপের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না।
  2. চার্চ রাষ্ট্রের একটি দপ্তর হিসেবে কাজ করবে।
  • গ্যালিকান চার্চ (Galican Church) – ফরাসি চার্চ ‘গ্যালিকান চার্চ’ নামে পরিচিত হয়।
  • অ্যাসাইনেট (Assignat) – ফ্রান্সে প্রচলিত এক ধরনের কাগজের নোট।
  • ফরাসি বিপ্লবের সময় প্রধান রাজনৈডিক দল –
    • ফিউল্যান্ট (Feuillant),
    • জিরন্ডিন (Girondin),
    • জেকোবিন (Jacobin)।
অ্যাসাইনেট

ফ্রান্সের বিপ্লবী প্রতিনিধিসভা –

প্রথম বিপ্লবী প্রতিনিধিসভাসংবিধানসভা1789 – 1791 খ্রিস্টাব্দ।
দ্বিতীয় বিপ্লবী প্রতিনিধিসভাআইনসভা1791 – 1792 খ্রিস্টাব্দ।
তৃতীয় বিপ্লবী প্রতিনিধিসভাজাতীয় মহাসভা (ন্যাশনাল কনভেনশন)1792 – 1795 খ্রিস্টাব্দ।

ফ্রান্সের নতুন আইনসভা (1 অক্টোবর, 1791 খ্রিস্টাব্দ – 23 সেপ্টেম্বর, 1792 খ্রিস্টাব্দ) –

  1. নতুন সংবিধান সভার প্রথম অধিবেশন বসে 1791 খ্রিস্টাব্দের 1 অক্টোবর।
  2. 1791 খ্রিস্টাব্দে নতুন আইনসভা গঠিত হয়। আইনসভায় 745 জন সদস্য ছিল। আইনসভায় প্রধান দুটি দল ছিল –
    • দক্ষিণপন্থী ও
    • বামপন্থী।

দক্ষিণপন্থী দল –

ফ্রান্সের আইনসভায় যে সদস্যরা স্পিকারের ডানদিকে বসত তাদের ‘দক্ষিণপন্থী’ বলা হয়। আইনসভায় দক্ষিণপন্থীদের সদস্যসংখ্যা ছিল 264 জন। দক্ষিণপন্থীরা ফিউল্যান্ট (Feuillant) নামে পরিচিত ছিল। এরা রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও যাজকতন্ত্রের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল বলে, এদের ‘নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রী’ -ও বলা হত।

নেতা – এই দলের প্রধান নেতা ছিলেন বার্নেভ।

বামপন্থী দল –

এই দলের সদস্যরা স্পিকারের বাঁদিকে বসত। বামপন্থীরা দুটি দলে বিভক্ত ছিল –

  1. ব্রিসোটিন বা জিরন্ডিন (Girondin) ও
  2. জেকোবিন (Jacobin)।

জিরন্ডিন (Girondin) –

বামপন্থীদের প্রভাবশালী গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন ব্রিসো, তাঁর নাম অনুসারে তাঁর অনুগামীদের বলা হত ব্রিসোটিন বা ব্রিসোপন্থী। পরবর্তীকালে এই গোষ্ঠী জিরন্ডিন নামে বেশি পরিচিত হয়। কারণ এই দলের অধিকাংশ সদস্য ফ্রান্সের জিরন্ড প্রদেশের অধিবাসী ছিলেন। ‘জিরন্ডিন’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন লা-মার্টিন। বামপন্থী নেতা ব্রিসো ছিলেন এক সাধারণ রেস্তোরাঁ মালিকের পুত্র। তাঁর ব্যক্তিত্ব ছিল আকর্ষণীয়। তাই আইনসভার প্রায় 350 জন সদস্যই ছিল তাদের পক্ষে।

জেকোবিন (Jacobin) –

ফরাসি বিপ্লবের সময় ফ্রান্সে অনেক রাজনৈতিক ক্লাব গড়ে উঠেছিল। জেকোবিন ক্লাব ছিল এই বিপ্লবী ক্লাবগুলির অন্যতম।

  • ‘জেকোবিন’ নামকরণের কারণ হল- জেকোবিন কনভেন্টের হলঘরে এই ক্লাবের সদস্যরা সমবেত হয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতেন। সারা দেশে এক হাজারেরও বেশি এর কেন্দ্র ছিল এবং বিপ্লবের পক্ষে জনমত গঠনে সক্রিয় ছিল।
  • 1791 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি আইনসভায় জেকোবিন দলের সদস্য ছিল 136 জন। সভাকক্ষে তাঁদের আসনগুলি উঁচু জায়গায় ছিল বলে তাঁদের মাউন্টেন (Mountain) বলা হত।

নেতা – জেকোবিন দলের বিখ্যাত নেতা ছিলেন – রোবসপিয়র (Robespierre), দাঁতো (Danton), হিবার্ট (Hébert) প্রমুখ।

ফরাসি সংবিধান –

  • 1791 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের প্রথম লিখিত সংবিধান – (সংবিধান সভার লাফায়েৎ, মিরাবো, ট্যালির‍্যান্ট, রোবসপিয়র প্রমুখ এই সংবিধান রচনা করেন)।
  • 1793 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের দ্বিতীয় সংবিধান – (1792 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রথম বর্ষে জেকোবিনদের নেতৃত্বে এই সংবিধান রচিত হয়)।
  • 1795 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের তৃতীয় সংবিধান – প্রজাতান্ত্রিক ফ্রান্সের তৃতীয় বর্ষে এই সংবিধান রচিত হয় বলে এটি তৃতীয় বর্ষের সংবিধান নামে পরিচিত। এই সংবিধানের রচয়িতা হলেন ধনী ও সম্পত্তিবান শ্রেণির মুখপাত্র বয়েসি দ্য অ্যাংলাস। এই সংবিধান দ্বারা বুর্জোয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়।
  • 1799 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের চতুর্থ সংবিধান- ফ্রান্সে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অষ্টম বর্ষে এই সংবিধান রচিত হয় বলে এটি অষ্টম বর্ষের সংবিধান নামে পরিচিত। এই সংবিধান দ্বারা যে নতুন সরকার গঠিত হয়, তার নাম হয় ‘ডাইরেক্টরি’ বা পরিচালক সমিতির শাসন।

ফরাসি সংবিধান সভা গৃহীত ‘সাসপেনসিভ ভেটো’ (Suspensive Veto) বা রাজার স্থগিতাদেশ ক্ষমতা –

ফরাসি সংবিধান সভা 1791 খ্রিস্টাব্দের সংবিধানে রাজ্য ক্ষমতার উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। বলা হয় আইনসভায় গৃহীত কোনো আইন পছন্দ না হলে রাজা তা বাতিল করতে পারবেন না, তবে তিনি ভেটো প্রয়োগ করে যে-কোনো আইনকে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে পারবেন। অবশ্য যে-কোনো আইন পরপর তিনবার আইনসভায় গৃহীত হলে রাজা তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন, রাজার এই ‘ভেটো’ ক্ষমতাকেই ‘সাসপেনসিভ ভেটো’ বলা হয়।

1789 খ্রিস্টাব্দে ইউরোপ

সন্ত্রাসের রাজত্ব (Reign of Terror) –

জেকোবিন নেতারাই ফ্রান্সে সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছিলেন। এই দলের নেতা রোবসপিয়র ছিলেন সন্ত্রাসের শাসনের কেন্দ্রীয় চরিত্র।

গিলোটিন –

গিলোটিন নামক যন্ত্রটিতে দুটি কাষ্ঠদণ্ডের মাঝখানে ঝুলন্ত এক ভারী ওজনের লোহার কাটারি থাকত, যা সহজেই নীচে শায়িত মানুষের মুণ্ডচ্ছেদ করতে পারত।

ডঃ গিলোটিন নামক একজন ব্যক্তি শিরশ্ছেদের এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করেন। আবিষ্কর্তার নাম অনুসারে এই যন্ত্রের নাম হয় গিলোটিন।

সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড (September Massacre) –

ব্রান্সউইক ঘটনার প্রত্যুত্তরে ফ্রান্সের ক্ষিপ্ত জনতা 2 থেকে 6 সেপ্টেম্বরের মধ্যে কয়েক হাজার ব্যক্তিকে হত্যা করে। প্যারিস কারাগারের বন্দিরাও এর থেকে রেহাই পায়নি। এই ঘটনাকে ‘সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ড’ বলা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেকোবিন দলের নেতা জাঁ পল ম্যারাট (Marat)।

ফরাসি জনচেতনায় গুজবের প্রভাব –

1789 খ্রিস্টাব্দের 14 জুলাই প্যারিসের ক্ষিপ্ত জনতার হাতে বাস্তিল দুর্গের পতনের ঘটনা গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের উত্তেজিত করে। তারাও জমিদারদের আক্রমণ করতে থাকে। এরূপ পরিস্থিতিতে গুজব রটে যে, জমিদারদের ভাড়াটে গুন্ডারা কৃষকদের শস্যক্ষেত্র পুড়িয়ে দিতে আসছে। এই রটনা কৃষকদের ক্ষিপ্ত করে তোলে। তারা জমিদারদের বসতবাড়ি, খামারবাড়ি ইত্যাদি পুড়িয়ে দিতে থাকে। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে নতুন সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠে।

ফরাসি বিপ্লব সংক্রান্ত কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থ ও তার গ্রন্থকারের নামসমূহ –

  • রিফ্লেকশনস অন দ্য রেভোলিউশন ইন ফ্রান্স (Reflections on the Revolution in France) – এডমন্ড বার্ক (Edmund Burke)।
  • দ্য ফ্রেঞ্চ রেভোলিউশন ফ্রম 1793 টু 1799 (The Förench Revolution from 1793 to 1799) – জর্জ লেফেভর (George Lefebvre)।
  • দ্য ফ্রেঞ্চ রেভোলিউশন (The French Revolution) – অ্যালবার্ট গুডউইন (Albert Goodwin)।
  • ইউরোপ সিন্স নেপোলিয়ন (Europe Since Napoleon) – ডেভিড থমসন (David Thomson)।
  • এ হিস্ট্রি অফ ইউরোপ (A History of Europe) – এইচ এ এল ফিশার (H A L Fisher)।
  • দ্য এজ অফ রেভোলিউশন, 1789 – 1848 (The Age of Revolution, 1789 – 1848) – এরিক হবসবম (Eric Hobsbawm)।
  • রেভোলিউশনারি ইউরোপ (Revolutionary Europe) – জর্জ বুদে (George Rude)।
  • সোশ্যাল ইন্টারপ্রিটেশন অফ দ্য ফ্রেঞ্চ রেভোলিউশন (Social Interpretation of the French Revolution) – অ্যালফ্রেড কোবান (Alfred Cobban)।

আজকের আর্টিকেলে আমরা নবম শ্রেণীর ইতিহাস বইয়ের প্রথম অধ্যায়, “ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক” –এর “বিষয়সংক্ষেপ” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই অধ্যায়ের বিষয়বস্তু অধ্যয়নের সময় অধ্যায়টির কাঠামো ও প্রধান বিষয়াবলি বুঝতে সাহায্য করবে, যা আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কিছুটা হলেও সহায়ক হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন, মতামত বা সহায়তার প্রয়োজন হয়, নিচে মন্তব্য করে জানাতে পারেন কিংবা টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন—আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত।

Please Share This Article

Related Posts

নবম শ্রেণী ইতিহাস - প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস - বিপ্লবী আদর্শ,নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - বিষয়সংক্ষেপ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – বিষয়সংক্ষেপ

নবম শ্রেণী ইতিহাস - বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

মুম্বাই বন্দর সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্ল্যাটিনাম তারকে সহজেই কাচের দণ্ডে সিল করা যায় কিন্তু তামার তারকে করা যায় না কেন?

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – তাপীয় রোধ

মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান – পদার্থের তাপ পরিবাহিতা

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ