এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “দ্বৈত সূত্র কী?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

দ্বৈত সূত্র কী?
হিলিয়ামের (He) কাছাকাছি মৌলগুলির পরমাণু (H, Li ও Be) তাদের সর্ববহিস্থ কক্ষে ইলেকট্রন গ্রহণ ও বর্জনের মাধ্যমে বা ইলেকট্রন জোড় তৈরি ও সেই ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে সর্ববহিস্থ কক্ষে 2টি ইলেকট্রন সংখ্যা পূর্ণ করে হিলিয়ামের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করার প্রবণতা দেখায়। এটিই হল দ্বৈত সূত্র।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
দ্বৈত সূত্র লেখো।
দ্বৈত সূত্র হল একটি রাসায়নিক নিয়ম। এর মতে, হাইড্রোজেন (H), লিথিয়াম (Li) এবং বেরিলিয়াম (Be)-এর মতো হিলিয়ামের (He) নিকটবর্তী মৌলগুলি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সময় তাদের সর্ববহিস্থ কক্ষপথে (ভ্যালেন্স শেলে) ২টি ইলেকট্রন অর্জন, হারানো বা ভাগাভাগি করার মাধ্যমে হিলিয়ামের মতো স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস (1s²) লাভ করার চেষ্টা করে।
লিথিয়াম হাইড্রাইড অণুর গঠন বর্ণনা করো।
দ্বৈত সূত্র প্রধানত সেই সব হালকা মৌলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যাদের ভ্যালেন্স শেল পূর্ণ করতে মাত্র 2টি ইলেকট্রনের প্রয়োজন হয়। যেমন – হাইড্রোজেন (H), লিথিয়াম (Li), বেরিলিয়াম (Be)।
অক্টেট সূত্র ও দ্বৈত সূত্রের মধ্যে পার্থক্য কী?
অক্টেট সূত্র ও দ্বৈত সূত্রের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. দ্বৈত সূত্র – ভ্যালেন্স শেলে 2টি ইলেকট্রন থাকলেই স্থিতিশীল ধরা হয়। (যেমন – He, H, Li, Be)
2. অক্টেট সূত্র – ভ্যালেন্স শেলে 8টি ইলেকট্রন থাকলেই স্থিতিশীল ধরা হয়। (যেমন – Ne, Ar, C, N, O, F ইত্যাদি)
হিলিয়াম (He) কী দ্বৈত সূত্র মেনে চলে?
হ্যাঁ। হিলিয়াম একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস (Noble Gas) এবং এর ইলেকট্রন বিন্যাস 1s²। অর্থাৎ এর প্রথম ও সর্ববহিস্থ কক্ষপথে ইতিমধ্যেই ২টি ইলেকট্রন পূর্ণ আছে। এজন্য এটি অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং সাধারণত কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয় না।
একটি উদাহরণ দিয়ে দ্বৈত সূত্র ব্যাখ্যা করো। (লিথিয়াম ফ্লোরাইডের গঠন)
লিথিয়াম (Li) পরমাণুর ভ্যালেন্স শেলে 1টি ইলেকট্রন থাকে (2s¹)। এটি সেই ইলেকট্রন ত্যাগ করে Li⁺ আয়নে পরিণত হয়, যার ইলেকট্রন বিন্যাস হিলিয়ামের (He) মতো (1s²) হয়ে যায়। ফ্লোরিন (F) পরমাণু সেই ইলেকট্রন গ্রহণ করে F⁻ আয়নে রূপান্তরিত হয় এবং তার ভ্যালেন্স শেলে 8টি ইলেকট্রন পূর্ণ হয়। এখানে লিথিয়াম তার দ্বৈত সূত্র পূরণ করেছে।
হাইড্রোজেন (H) কীভাবে দ্বৈত সূত্র পূরণ করে?
হাইড্রোজেন পরমাণুর (H) একটি ইলেকট্রন থাকে (1s¹)। এটি দুটি উপায়ে দ্বৈত সূত্র পূরণ করতে পারে—
1. একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে – H⁺ (প্রোটন) গঠন করে, যদিও এটি অস্থিতিশীল।
2. একটি ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে – অন্য একটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে সহযোজী বন্ধন গঠন করে H₂ অণু তৈরি করে। এভাবে প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণু কার্যত 2টি ইলেকট্রন (দ্বৈত) ভাগ করে নেয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “দ্বৈত সূত্র কী?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন