আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

একটি অচল পয়সার আত্মকথা – প্রবন্ধ রচনা
আমি একটি অচল পয়সা। শুনবে আমার অভিজ্ঞতার কথা? একদিন আমিও সচল ছিলাম। যেদিন টাঁকশাল থেকে আমার জন্ম হল সেদিন আমার কী রূপ ছিল জানো? আমি সোনার মতো চকচকে ছিলাম। একদিন সবার মতো আমিও প্যাকেট বন্দি হয়ে এলাম রিজার্ভ ব্যাংকে। সেখান থেকে এলাম একটি স্থানীয় ব্যাংকে, তারপর সেখান থেকে আমাকে এক দোকানদার নিয়ে এলেন। দোকানের ক্যাশ বাক্সের মধ্যে পড়ে থেকে রোজই দেখতাম যে আমার অন্য বন্ধুরা একে একে অন্যের কাছে খুচরো হয়ে ফেরত চলে যাচ্ছে। একদিন আমারও পালা এল, এক বৃদ্ধ মানুষের পকেটে করে আমিও ক্যাশ বাক্স থেকে বাইরের জগতে বেরিয়ে পড়লাম। ফেরার পথে বৃদ্ধ গেলেন এক কালীমন্দিরে। অনেকবার ‘মা’ ‘মা’ বলে ডেকে কপালে হাত জোড় করে প্রণাম করে তিনি পকেটে হাত দিলেন। আর ব্যাস, পড়বে তো পড় আমার গায়েই হাত! ঠুং করে ছিটকে পড়লাম প্রণামীর থালায়। ভারি রাগ হল, কেন রে! পয়সা বলে কি তার ব্যথা লাগতে নেই? ছুঁড়ে ফেলতে হবে। এরপর রাতে আবার প্যাকেট বন্দি হয়ে গেলাম পুরোহিতের বাড়ি। সেখানে তাঁর ছেলে আমার অনেক বন্ধু পয়সাদের মধ্যে আমাকেই বেছে নিল কারণ আমি তখনও যে নতুন আর চকচকে। ছেলেটি ছিল খুব ভালো, যত্ন করে সে আমাকে একটা টিনের কৌটোয় তুলে রাখল। জানলাম সে আমার মতো পয়সাদের জমায়। রইলাম বেশ কিছুদিন তার কৌটোতে। কিন্তু সবদিন তো সমান যায় না। একদিন দুপুরে এক বুড়ি এল ভিক্ষা চাইতে। বাড়িতে কেউ নেই, দয়ালু শরীর ছেলেটি কৌটো খুলে আমাকেই দান করল বুড়ির হাতে। ব্যাস আবার আমার পথ চলা শুরু হল। এইভাবে এহাত ওহাত ঘুরে আমিও দিন কাটাচ্ছিলাম। হঠাৎ এল দুর্দিন। এক দোকানদার আমাকে নিতে গিয়ে বললেন, “এতো অচল, আর চলবে না।” আমিও তো শুনে অবাক! অচল মানে? জানলাম সিকি পয়সা নাকি বন্ধ হয়ে গেছে। বাজারে আর তার মূল্য নেই, কেউ নেয় না। আমাকে নিয়ে হিসেব করার নাকি খুব অসুবিধা, আর আমার মূল্যের জিনিস নাকি আর নেই। তাহলে বলোতো আমার কী হবে? কেউ কি আমায় আর আগের মতো আদর করবে? জানি না ভাগ্যে কী আছে। একটা ভাঙা কৌটোয় বন্দি হয়ে পড়ে থাকি। মাঝে মাঝে গল্প শুনি আমাদের মতো পয়সাদের নাকি গলিয়ে ফেলা হবে। ভাবি আর শিউরে উঠি। জানি না কতদিন এই চেহারা নিয়ে তোমাদের মাঝে থাকতে পারব। কালকের দিনটা আবার দেখতে পাব কিনা।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন