আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘আই পি এল – বিনোদন না ক্রীড়া‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

আই পি এল – বিনোদন না ক্রীড়া
ভূমিকা – আই পি এল ভারতীয় ক্রিকেটের আজ এক উল্লেখযোগ্য নাম। শুধু ভারতীয় ক্রিকেটে নয়, সমগ্র বিশ্বের ক্রিকেটেই যার প্রভাব অনস্বীকার্য। খেলা আর বাণিজ্যের মিলিত রূপ এই আই পি এল বা ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। গত কয়েকবছরে ভারতীয় ক্রিকেটের পরিকাঠামোকেই বদলে দিয়েছে আই পি এল। সনাতনবাদীদের কাছে আই পি এল ক্রীড়া নয়, তা হল বাণিজ্য আর বিনোদনের এমন এক মঞ্চ যেখানে খেলার থেকেও বড়ো দর্শকের মনোরঞ্জন, আর তার থেকেও বড়ো বাণিজ্যিক স্বার্থপূরণ, বাণিজ্যিক প্রচার ও লাভক্ষতির হিসেবনিকেশ। আবার আজকের দ্রুতগতির জীবনে যুবসমাজের কাছে এই আই পি এল-ই হল তাদের মনোরঞ্জনের প্রাণকেন্দ্র; যেখানে রয়েছে ক্রিকেটের উন্মাদনা ছাড়াও, বিনোদন জগতের যাবতীয় আকর্ষণ – এ যেন খেলা আর সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতার মেলবন্ধন। টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে যখন দর্শকাসন শূন্য, তখন আই পি এলের একটি টিকিটের জন্য লোকে নির্দ্বিধায় কয়েক হাজার টাকাও খরচ করে ফেলে।
আই পি এল নিয়ে বিতর্ক – ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড পৃথিবীর সবথেকে ধনী ক্রিকেট বোর্ড, ক্রিকেট দুনিয়ায় তার আধিপত্যের কথা সুবিদিত। কিন্তু ভারতে আই পি এলের জৌলুষ আরও অস্বস্তিতে ফেলেছে বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে। খেলোয়াড়রা দেশের হয়ে খেলার পরিবর্তে আই পি এলে খেলতে বেশি উৎসাহী, কারণ সেখানে রয়েছে প্রচুর অর্থ আর অনেক চাপমুক্ত পরিবেশ। আই পি এলের এই অর্থপ্রাচুর্য ভারতীয় ক্রিকেটে নিয়ে এসেছে স্পট ফিক্সিং, পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় বোর্ডের সচিব ও কোশাধ্যক্ষ। আই পি এল বাণিজ্য আর বিনোদন, তাই খোদ টিম মালিকের নামও জড়িয়ে যায় বেটিং -এর সঙ্গে। ভারতের রঞ্জি বা দেওধর ট্রফির মতো ঐতিহ্যসম্পন্ন প্রথম শ্রেণির খেলায় কিন্তু উৎসাহ দেখান না কেউই। ক্রিকেটই যদি লক্ষ্য হত, তাহলে তাঁরা এই টুর্নামেন্টগুলির ব্যাপারেও উৎসাহী হতেন। আসলে খেলার থেকে আই পি এলের অনেক বড়ো লক্ষ্য বিনোদনভিত্তিক বাণিজ্য আবার অনেক ক্রিকেটার কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই সাফল্য না পেয়েও মাত্র চার ওভার বল বা এলোপাতাড়ি ব্যাট করে রাতারাতি নামিদামি ক্রিকেটার হওয়ার মঞ্চ করে নিয়েছে এই আই পি এলকে।
উপসংহার – আই পি এল থেকেই অনেক অখ্যাত খেলোয়াড়কে আমরা প্রথম চিনেছি। এই প্রতিযোগিতা তাদের খ্যাতি দিয়েছে, জীবনে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটের অনেক উঠতি খেলোয়াড় বিশ্বসেরাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বলা যায় খেলা অপেক্ষা অর্থনৈতিক লেনদেন মুখ্য হয়ে ওঠায় আই পি এল ক্রিকেটকেই কলুষিত করেছে। শুধু বিনোদন হিসেবে তা দেখলে মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু ক্রিকেট হিসেবে কোনো অর্থেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘আই পি এল – বিনোদন না ক্রীড়া‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন