কেন্দ্রে ইলেকট্রন না থাকলেও β-কণা নির্গমন কীভাবে সম্ভব এবং এতে ভর সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকে কেন?

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়? পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়? পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়? পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?

পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়?

তেজস্ক্রিয় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের 1টি নিউট্রন ভেঙে 1টি প্রোটন ও 1টি ইলেকট্রনে পরিণত হয়। এই ইলেকট্রনটিই β-কণারূপে নির্গত হয়।

\({}_0^1n\rightarrow{}_1^1p+{}_{-1}^0e\) (β-কণা)

পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?

তেজস্ক্রিয় পরমাণুর নিউক্লিয়াসের 1টি নিউট্রন ভেঙে 1টি প্রোটন ও 1টি ইলেকট্রনে পরিণত হয়। ইলেকট্রনটি β-কণারূপে নির্গত হওয়ার ফলে নতুন মৌলটির নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা আদি মৌলটি অপেক্ষা 1 একক বৃদ্ধি পায়। ফলে পারমাণবিক সংখ্যা এক একক বৃদ্ধি পায়। কিন্তু একটি নিউট্রন ভেঙে যাওয়ার ফলে নতুন মৌলটির প্রোটন ও নিউট্রনের সমষ্টি অর্থাৎ ভর সংখ্যা আদি মৌলটির ভরসংখ্যার সমান হয়। তাই পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে নতুন মৌলের পরমাণুর ভরসংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন না থাকলে β-কণা (ইলেকট্রন) সেখান থেকে আসে কীভাবে?

β-কণাটি নিউক্লিয়াসের ভেতরে প্রাক-অবস্থিত কোনো ইলেকট্রন নয়। বরং, একটি নিউট্রন (n) স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙে একটি প্রোটন (p), একটি ইলেকট্রন (e⁻), এবং একটি অ্যান্টিনিউট্রিনো (ν̄_e) কণায় পরিণত হয়। এই বিক্রিয়ায় সৃষ্ট ইলেকট্রনটিই উচ্চ শক্তি নিয়ে নিউক্লিয়াস থেকে β-কণা হিসেবে নির্গত হয়।

β-ক্ষয়ের সময় ভর সংখ্যা (A) অপরিবর্তিত থাকে কেন?

ভর সংখ্যা হলো নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রনের মোট সংখ্যা। β-ক্ষয়ে, একটি নিউট্রন একটি প্রোটনে রূপান্তরিত হয়। তাই, মৌলের মোট নিউক্লিয়ন (প্রোটন+নিউট্রন) সংখ্যা আগের মতোই থাকে। শুধু একটি নিউট্রন কমে এবং একটি প্রোটন বাড়ে। ফলে ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না।

β-ক্ষয়ের পর নতুন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা (Z) কীভাবে পরিবর্তিত হয়?

β-ক্ষয়ের ফলে নিউক্লিয়াসে প্রোটনের সংখ্যা একক বৃদ্ধি পায় (কারণ একটি নিউট্রন একটি প্রোটনে পরিণত হয়)। যেহেতু পারমাণবিক সংখ্যা মানে প্রোটনের সংখ্যা, তাই নতুন মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা মূল মৌলের চেয়ে 1 একক বেশি হয়। এটি পর্যায় সারণিতে এক ঘর ডানদিকে স্থানান্তরিত হওয়ার সমতুল্য।

β-কণা নির্গত হওয়ার পর নিউক্লিয়াসের আধান কী পরিবর্তিত হয়?

হ্যাঁ, পরিবর্তিত হয়। নিউট্রন বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ (আধান 0), কিন্তু এটি ভেঙে একটি ধনাত্মক প্রোটন (+1) এবং একটি ঋণাত্মক ইলেকট্রন (-1) তৈরি করে। ইলেকট্রনটি নির্গত হওয়ার পর নিউক্লিয়াসে শুধু অতিরিক্ত প্রোটনটি থেকে যায়। এর ফলে নিউক্লিয়াসের মোট ধনাত্মক আধান 1 একক বৃদ্ধি পায়।

β-ক্ষয়ের সময় নিউট্রনের ভাঙ্গনে শক্তি সংরক্ষণ কীভাবে হয়?

নিউট্রনের ভর প্রোটন ও ইলেকট্রনের মোট ভরের চেয়ে সামান্য বেশি। আইনস্টাইনের সূত্র E = mc² অনুসারে, এই ভর পার্থক্যই β-কণা (ইলেকট্রন) এবং অ্যান্টিনিউট্রিনোর গতিশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই শক্তিই ইলেকট্রনকে নিউক্লিয়াস থেকে বের করে আনার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়? পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “পরমাণুর কেন্দ্রে কোনো ইলেকট্রন থাকে না অথচ কেন্দ্র থেকে β-কণার নিঃসরণ কীভাবে সম্ভব হয়? পরমাণুর কেন্দ্র থেকে β-কণা নির্গত হলে উৎপন্ন নতুন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যার কোনো পরিবর্তন হয় না কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।