কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।

কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।

কোনো মৌলের ভরসংখ্যা A এবং পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z সুতরাং ওই মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা = Z এবং নিউট্রন সংখ্যা = A – Z

∴ যদি একটি প্রোটনের ভর mp এবং একটি নিউট্রনের ভর mn হয় তবে পরমাণুটির নিউক্লিয়াসের ভর = Zmp + (A – Z)mn। যদি পরমাণুটির নিউক্লিয়াসের স্থির ভর (পরীক্ষালব্ধ ভর) M হয় তবে

ভরত্রুটি, ∆m = [Zmp + (A – Z)mn] – M

∴ বন্ধন শক্তি (∆E) = {[Zmp + (A – Z)mn] – M} C2

বা, ΔΕ = Δmc2

যেখানে হল শূন্যস্থানে আলোর বেগ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

বন্ধন শক্তি কী? এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

নিউক্লিয়াসের প্রোটন ও নিউট্রনগুলিকে একত্রে আবদ্ধ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিই হল বন্ধন শক্তি। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ –
1. এটি নিউক্লিয়াসের স্থিতিশীলতা নির্ধারণ করে। যার বন্ধন শক্তি বেশি, সে নিউক্লিয়াস বেশি স্থিতিশীল।
2. নিউক্লীয় বিভাজন (Fission) এবং নিউক্লীয় সংযোজন (Fusion) প্রক্রিয়ায় এই শক্তিরই নির্গমন বা শোষণ ঘটে।

ভরত্রুটি (Δm) বলতে কী বোঝায়? এটি কীভাবে সৃষ্টি হয়?

পৃথক পৃথক নিউক্লিয়নগুলির (প্রোটন ও নিউট্রন) মোট ভর এবং তাদের সমন্বয়ে গঠিত প্রকৃত নিউক্লিয়াসের ভরের পার্থক্যই হল ভরত্রুটি।
এটি সৃষ্টি হয় আইনস্টাইনের ভর-শক্তি সমতুল্যতা সূত্র (E = mc²) অনুসারে। যখন নিউক্লিয়নগুলি একত্রিত হয়ে নিউক্লিয়াস গঠন করে, তখন তারা কিছু ভরকে শক্তিতে (বন্ধন শক্তি) রূপান্তরিত করে। এই “হারানো” ভরই হল ভরত্রুটি।

বন্ধন শক্তি এবং ভরত্রুটি-এর মধ্যে সম্পর্ক কী?

আইনস্টাইনের বিখ্যাত সূত্র E = Δmc² দ্বারা এই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ, বন্ধন শক্তি (ΔE) ভরত্রুটির (Δm) সাথে আলোর বেগের বর্গ (c²) এর গুণফলের সমান। ভরত্রুটি যত বেশি হবে, নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তিও তত বেশি হবে।

বন্ধন শক্তির একক কী?

বন্ধন শক্তির সাধারণ একক হল মেগা ইলেকট্রন-ভোল্ট (MeV)। ভরত্রুটির জন্য একটি বিশেষ একক ব্যবহার করা হয়, যার নাম পরমাণু ভর একক (u)। 1 u ভরকে শক্তিতে রূপান্তর করলে প্রায় 931.5 MeV শক্তি পাওয়া যায়। তাই ব্যবহারিকভাবে, সূত্রটি লেখা হয় – ΔE (MeV) = Δm (u) × 931.5।

গড় বন্ধন শক্তি কী? এটি কীভাবে স্থিতিশীলতা ব্যাখ্যা করে?

নিউক্লিয়াসের মোট বন্ধন শক্তিকে নিউক্লিয়ন সংখ্যা (A) দ্বারা ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায়, তাকে গড় বন্ধন শক্তি বলে।
1. গড় বন্ধন শক্তি = মোট বন্ধন শক্তি (ΔE)/ভর সংখ্যা (A)
2. এটি প্রতিটি নিউক্লিয়নের জন্য গড় বন্ধন শক্তি নির্দেশ করে। লোহার (Fe)-এর কাছাকাছি ভরবিশিষ্ট নিউক্লিয়াসগুলির গড় বন্ধন শক্তি সর্বাধিক, তাই তারা সবচেয়ে স্থিতিশীল। অন্যদিকে হালকা (যেমন: হাইড্রোজেন, হিলিয়াম) এবং ভারী (যেমন: ইউরেনিয়াম) নিউক্লিয়াসগুলির গড় বন্ধন শক্তি তুলনামূলকভাবে কম, তাই তারা কম স্থিতিশীল।

হাইড্রোজেন নিউক্লিয়াসের (একটি প্রোটন) জন্য কি বন্ধন শক্তি গণনা করা যায়?

না, যায় না। কারণ একটি মাত্র নিউক্লিয়ন (প্রোটন) দিয়ে গঠিত নিউক্লিয়াসে একত্রিত হওয়ার কোনো প্রক্রিয়া নেই। তাই সেখানে কোনো ভরত্রুটি বা বন্ধন শক্তির ধারণা প্রযোজ্য নয়। বন্ধন শক্তি শুধুমাত্র একাধিক নিউক্লিয়নবিশিষ্ট নিউক্লিয়াসের জন্য প্রাসঙ্গিক।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কোনো নিউক্লিয়াসের ভর সংখ্যা A, পরমাণু ক্রমাঙ্ক Z হলে বন্ধন শক্তির রাশিমালাটি প্রতিষ্ঠা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শুষ্ক করতে গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে শনাক্ত করবে কীভাবে?

দেখাও যে H₂S গ্যাস অম্লধর্মী। অথবা, দেখাও যে H₂S দ্বি ক্ষারীয় অ্যাসিড?

হাইড্রোজেন সালফাইড শুষ্ক করতে কেন গাঢ় H₂SO₄ বা অনার্দ্র CaCl₂ ব্যবহার করা হয় না?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে গাঢ় HNO₃ ব্যবহার করা হয় না কেন?

হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস প্রস্তুতিতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয় না কেন?