আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতীয় নারীর জয়যাত্রা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতীয় নারীর জয়যাত্রা
“……..তবুও খো খো খেলুড়ে মেয়ে
– অমিতাভ দাশগুপ্ত
লড়ছে এমন লড়াই
তাকে নিয়েই দেশযুদ্ধ
আমজনতার বড়াই।”
ভূমিকা – ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীর বিজয়গাথার ইতিহাস আজকের নয়। অন্দরমহলের গণ্ডিটুকু ছাড়িয়ে নারীশক্তির বিস্তার বর্তমানে বিশ্বব্যাপ্ত। শিক্ষা, প্রযুক্তি, ক্রীড়া, সংস্কৃতি সবক্ষেত্রেই সে আজ অপরাজেয়। নানাবিধ প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ করে সে যেমন উন্মুক্ত করতে পারে ক্রিকেটের বাইশ গজের লড়াইকে তেমনই ফুটবলের টানটান নব্বই মিনিটে শিহরন তোলে বিশ্বজুড়ে। হকি স্টিক থেকে টেনিস বল, ব্যাডমিন্টন থেকে তিরন্দাজ হিসেবে তার লম্ফ সবক্ষেত্রেই অবাধ। আবার অতল জলের আহ্বানে সে পেরোয় ইংলিশ চ্যানলে – “ফাইট কোনি ফাইট।” পিটি উষা, জ্যোতির্ময়ী সিকদার, আরতি সাহা, হিমা দাস, স্বপ্না বর্মন, মিতালি রাজ, দীপা কর্মকার প্রমুখ যে জয়যাত্রার মশাল নিয়ে হেঁটেছিল তাদেরকে অনুসরণ করে আজ বিশ্বজয়ের মুকুট পড়েছে পিভি সিন্ধু, মেরী কম, মীরাবাঈ চানু-একদল নতুন মুখ।
সাম্প্রতিক সাফল্য – বিশ্বব্যাপী অতিমারিশেষে গতবছরেই অলিম্পিকের আসর সাজিয়েছিল টোকিয়ো। আর সেখানেও নারীশক্তির পদক জয়ের তালিকা আশা জাগায়। উনপঞ্চাশ কেজি ভার উত্তোলনে রুপো পায় মীরাবাঈ চানু। অন্যদিকে ব্যাডমিন্টনে ব্রোঞ্জ ছিনিয়ে নেয় হায়দরাবাদের পিভি সিন্ধু। পিভি সিন্ধু একমাত্র মহিলা যিনি পরপর দুটো অলিম্পিকে পদক জিতেছেন। অর্থাৎ 2016 রিও অলিম্পিকে রুপো এবং 2020 টোকিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয় লাভ করেছেন। এর পাশাপাশি সাক্ষী মালিক প্রথম মহিলা কুস্তিগির যিনি 2016 রিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ এবং 2022 কমনওয়েলথ-এ সোনাজয়ী। তবে এই সাফল্যকেও ছাড়িয়ে গেছে 2022 -এর কমনওয়েলথের বিজয়রথ। ভারতীয় মহিলা বক্সার নিখাট জারিন প্রতিপক্ষ ইউনাইটেড কিংডম-কে হারিয়ে সোনা জিতে নিয়েছেন। পাশাপাশি বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমস-এ জুডোয় রুপোর ইতিহাস লিখেছেন তুলিকা মান। এখানেও ভার উত্তোলনে মীরাবাঈ চানু, অচিন্ত শিউলি; কুস্তিতে সাক্ষী মালিক; ব্যাডমিন্টনে পিভি সিন্ধু এমনকি প্যারা টেবিলটেনিসে ভাবিনা প্যাটেল লিখেছেন সাফল্যের ইতিহাস।
নতুন নতুন কত গড়ে ইতিহাস – 2022 কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম ব্রোঞ্জ পদক জিতল ভারতীয় মহিলা হকি দল। দীর্ঘ 16 বছর পরে তাদের এই বিস্ময়কর জয় ক্রীড়াবিশ্বকে অভিভূত করেছে। ভারতকে 1-0 তে এগিয়ে দিয়েছিলেন যিনি তিনি সালিমা তেতে। শুধু তাই নয় প্রথমবার কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেটের ফাইনালে ভারত। হরমন প্রিতের দল ছিনিয়ে আনল রুপোর পদকও। যদিও ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের এই সাফল্যের পরেই ক্রিকেটের মক্কা তথা লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে থামল চাকদা এক্সপ্রেস। অবসর নিলেন ঝুলন গোস্বামী। নজির রেখে গেলেন সবথেকে বেশি উইকেট তার ঝুড়িতে ভরে।
উপসংহার – ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতীয় কন্যা রত্নদের অবদান অনস্বীকার্য। ক্রীড়াবিশ্বে ভারতের সফল অবস্থানকে এখন সমানে সমানে নিয়ন্ত্রণ করছে মহিলা ক্রীড়াবিদরাও। আগামী দিনেও তাদের এই জয়যাত্রা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক, দেশবাসীর এটাই প্রত্যাশা।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতীয় নারীর জয়যাত্রা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন