মাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল – আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ – দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল” -এর “আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভূগোল - বায়ুমণ্ডল - আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ - দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর

বৃষ্টিপাত কীভাবে হয়?

বৃষ্টিপাত সৃষ্টি –

  1. বায়ুতে সব সময়ই কিছু পরিমাণে জলীয়বাষ্প থাকে এবং এই জলীয়বাষ্প হালকা বলে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ওপরে উঠে যায়।
  2. জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু যতই ওপরে ওঠে, তার চাপ কমে, আয়তন বাড়ে এবং উষ্ণতা হ্রাস পায়।
  3. এর ফলে ঊর্ধ্বাকাশে ওই বায়ু পরিপৃক্ত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা বা মেঘ সৃষ্টি করে। জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু পরিপৃত্ত হলে মেঘ সৃষ্টি হয়, কারণ – যে-কোনো বায়ুরই জলীয়বাষ্প ধারণ করার একটি নির্দিষ্ট সীমা বা ক্ষমতা আছে। উষ্ণ বায়ু অধিক জলীয়বাষ্প ধারণ করে এবং উষ্ণতা হ্রাসের সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতাও কমে যায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট উষ্ণতায় বায়ু নির্দিষ্ট পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে। যখন কোনো জায়গায় বায়ুতে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছোয়, তখন একে বায়ুর পরিপৃক্ত অবস্থা বলা হয়। পরিপৃক্ত বায়ুর উষ্ণতা শিশিরাঙ্কের নীচে নেমে গেলে অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয় এবং বায়ুতে ভাসমান ধূলিকণা, লবণের কণা, কয়লার কণা প্রভৃতিকে আশ্রয় করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা ও তুষারকণায় পরিণত হয়ে মেঘ হিসেবে ভেসে বেড়ায়।
  4. মেঘের মধ্যে ভাসমান জলকণাসমূহ ছোটো-বড়ো নানা আকারের হয়। ভাসমান অবস্থায় বড়ো কণার সঙ্গে ছোটো কণার ধাক্কা লাগলে বড়ো কণা ছোটো কণাকে গ্রাস করে। এর ফলে বড়ো কণাগুলি আরও বড়ো ও ভারী হয়ে যায় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে নীচের দিকে পড়তে থাকে ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
বৃষ্টিপাত সৃষ্টির প্রক্রিয়া

অধঃক্ষেপণের শ্রেণিবিভাগ করো।

উষ্ণ, জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু প্রসারিত ও শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং ছোটো ছোটো জলকণা ও তুষারকণায় পরিণত হয়। অনেকগুলি জলকণা ও তুষারকণা যখন পরস্পর যুক্ত হয়ে আয়তনে বাড়ে ও ভারী হয় এবং মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে নীচের দিকে নেমে আসে, তখন তাকে অধঃক্ষেপণ বলে। অধঃক্ষেপণ দুইভাবে হয় –

  1. তরলরূপে এবং
  2. কঠিনরূপে।

তরলরূপে –

উষ্ণ, জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু প্রসারিত ও শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং মেঘের সৃষ্টি করে। মেঘের মধ্যে ওই জলকণাগুলি যখন পরস্পর যুক্ত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পায় ও ভারী হয় এবং মাধ্যাকর্ষণের টানে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে, তখন তাকে বৃষ্টিপাত বলে। বৃষ্টিপাত তিন প্রকার –

  1. পরিচলন বৃষ্টিপাত,
  2. শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ও
  3. ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত।

কঠিনরূপে –

  • তুষারপাত – শীতপ্রধান দেশে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস হিমাঙ্কের থেকে কম উষ্ণতায় ঘনীভূত হলে সেগুলি তুষারকণায় পরিণত হয় ও ময়দার গুঁড়োর মতো ঝরে পড়ে। একে তুষারপাত বলে।
  • শিলাবৃষ্টি – ঊর্ধ্বমুখী প্রবল ঝড় জলকণাপূর্ণ বায়ুকে অনেক ওপরে তুলে নিয়ে যায় এবং প্রবল ঠান্ডায় জলকণা জমে বরফখণ্ডে পরিণত হয়। ওই সব বরফখণ্ডের আয়তন বাড়লে ভারী হয়ে নীচে নামতে থাকে। পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বমুখী বায়ুর ধাক্কায় বরফখণ্ডগুলি আবার ওপরে উঠে যায় এবং আরও জলকণা সংগ্রহ করে আরও ভারী হয় এবং বৃষ্টির সঙ্গে বরফখণ্ডরূপে নেমে আসে। একেই শিলাবৃষ্টি বলে।
  • স্লিট – নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলে বৃষ্টির ফোঁটা প্রথমে শীতল বায়ুস্তরের মধ্যে দিয়ে নামবার সময় বায়ুস্তরে জমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুষারকণায় পরিণত হয় এবং ওই সব তুষারকণাগুলির অধঃক্ষেপণকে স্লিট বলে।

বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টিপাতের প্রক্রিয়া বর্ণনা করো।

অথবা, উদাহরণসহ বিভিন্ন প্রকার বৃষ্টিপাত সংক্ষেপে আলোচনা করো।
অথবা, যে-কোনো দুই প্রকার বৃষ্টিপাতের চিত্রসহ বর্ণনা দাও।

বিভিন্ন প্রকার বৃষ্টিপাত

উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট্যগত তারতম্যের ভিত্তিতে বৃষ্টিপাতকে তিনভাগে ভাগ করা যায় –

বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ

বিভিন্ন প্রকার বৃষ্টিপাত নীচে সারণির মাধ্যমে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

বৃষ্টিপাতধারণাপদ্ধতিউদাহরণ
পরিচলন বৃষ্টিপাতভূপৃষ্ঠ উষ্ণ হলে পরিচলন পদ্ধতিতে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু প্রবল বেগে ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে পরিচলন বৃষ্টিপাত বলা হয়।ভূপৃষ্ঠের যে সমস্ত স্থানে জলভাগ বেশি সেখানে দিনের বেলায় প্রখর সূর্যকিরণে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু হালকা ও প্রসারিত হয়ে দ্রুত অনেক ওপরে উঠে গিয়ে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে মেঘের সৃষ্টি করে। পরে ওই মেঘের জলকণাগুলি ধূলিকণা ও লবণের কণাকে আশ্রয় করে ভাসতে থাকে এবং পরস্পর যুক্ত হয়ে ক্রমশ বড়ো হয় ও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পরিচলন বৃষ্টিরূপে নেমে আসে।নিরক্ষীয় অঞ্চলে সারাবছর ধরে বিকেলের দিকে এই বৃষ্টি হয়।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাতজলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু পর্বতের গায়ে প্রতিহত হয়ে ওপরে উঠে গিয়ে ক্রমশ শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত বলা হয়।জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময়ে পর্বত, শৈলশিরা, মালভূমি ইত্যাদিতে বাধা পেলে, পর্বতের ঢাল বেয়ে ওপরে ওঠে এবং প্রসারিত ও শীতল হয়। এর ফলে জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে পর্বতের প্রতিবাত ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।
পর্বত অতিক্রম করে ওই বায়ু বিপরীত দিকের ঢাল বেয়ে ওপর থেকে নীচে নামে বলে উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতাও বেড়ে যায়। এজন্য পর্বতের বিপরীত পার্শ্বে বা অনুবাত ঢালে এবং এর সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত বা খুব কম হয়। এইরূপ কম বৃষ্টিপাতযুক্ত বা বৃষ্টিপাতহীন এলাকাকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে।
1. দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পশ্চিম ঢালে প্রচুর পরিমাণে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত হয়। তবে এই পর্বতমালার পূর্ব ঢাল এবং সন্নিহিত এলাকাসমূহে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল দেখা যায়।
2. এ ছাড়া, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি, মৌসিনরামে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রবল বর্ষণ হলেও শিলং পাহাড়ের বিপরীত দিকের অনুবাত অংশে অবস্থিত শিলং বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাতবাতাসের ঘূর্ণনগতির জন্যে জলীয়বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বায়ু ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টিপাত ঘটায়, তাকে ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত বলা হয়।1. ক্রান্তীয় অঞ্চলে প্রবল নিম্নচাপের সৃষ্টি হলে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী বায়ু নিম্নচাপের কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং উত্তপ্ত হয়। এরপর এই বায়ু কুণ্ডলাকারে প্রবল বেগে ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে এই প্রকার বৃষ্টিপাত ঘটায়।
2. নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে শীতল ও উষ্ণ বায়ু পরস্পরের অভিমুখে প্রবাহিত হলে হালকা উষ্ণ বায়ু শীতল বায়ুর ওপর উঠে যায়। ফলে উষ্ণ বায়ুর মধ্যে থাকা জলীয়বাষ্প শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বিপরীতধর্মী এই দুই বায়ুর সীমান্ত বরাবর এই ধরনের বৃষ্টিপাত ঘটায়।
1. সমুদ্র-সংলগ্ন ক্রান্তীয় অঞ্চলে।
2. উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এই প্রকার বৃষ্টিপাত হয়।
বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টিপাতের প্রক্রিয়া বর্ণনা করো।

কীভাবে নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত হয়?

নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে দুটি বিপরীতমুখী ভিন্ন উষ্ণতার বায়ু মিলিত হয়। উত্তর-পূর্ব দিক থেকে শীতল ও শুষ্ক বায়ু এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু পরস্পর মুখোমুখি এগিয়ে আসে এবং দুটি বায়ুপুঞ্জ পরস্পরের সাথে মিলিত হয়। এভাবে তাদের মিলনস্থলে সীমান্তপৃষ্ঠের সূচনা হয়। এই সীমান্ত বরাবর তরঙ্গ গঠিত হয়। উষ্ণ বায়ুপুঞ্জের কিছু অংশ শীতল বায়ুপুঞ্জের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

উষ্ণ বায়ু যেখানে ঠান্ডা বা শীতল বায়ুর মধ্যে বক্রাকারে প্রবেশ করে সেই সীমানাকে উষ্ণ সীমান্ত বলে। উষ্ণ বায়ুর পিছনে যেখানে শীতল বায়ু এসে ধাক্কা মারে, তাকে শীতল সীমান্ত বলে।

নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত

উষ্ণ সীমান্তে বৃষ্টিপাত – উষ্ণ সীমান্ত অঞ্চলে উষ্ণ বায়ু শীতল মেরু বায়ুর ওপরে উঠে যায় এবং শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

শীতল সীমান্তে বৃষ্টিপাত – শীতল সীমান্তে শীতল বায়ু উষ্ণ বায়ুকে পিছন থেকে ঠেলে দেয়। ফলে উষ্ণ বায়ু ওপরে উঠে শীতল হয়ে মেঘ তৈরি করে ও বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী বৃষ্টিপাত ঘটায়।

উৎপত্তি – ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতকালে নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত সৃষ্টি হয়।

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত কীভাবে সংঘটিত হয়?

পদ্ধতি – উভয় গোলার্ধের 5°-20° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যবর্তী বিস্তৃত অঞ্চলে এই ধরনের ঘূর্ণবাত সৃষ্টি হয়। প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে এখানে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। ওই নিম্নচাপের দিকে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে শীতল ও ভারী বায়ু ছুটে এলে সেই বায়ু উষ্ণ হয়ে ওপরে উঠে যায়। এইরকম ঊর্ধ্বগামী বায়ু প্রসারিত ও শীতল হয়ে ঘনীভূত হয় এবং বৃষ্টিপাত ঘটায়। নিম্নচাপ যত গভীর হয় ততই বায়ুর গতি বাড়তে থাকে। এই ঝড়ের কেন্দ্র বা চক্ষু একটি ক্ষুদ্র অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করে। এই অঞ্চলটি শান্ত থাকে, কিন্তু এর চারিদিকের বায়ু ভীষণ গতিতে প্রবাহিত হয়ে ঝড়ের সৃষ্টি করে এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়।

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবৃষ্টি

আবার বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ুর আগমনে দুর্বল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবৃষ্টি হয়। উষ্ণ আর্দ্র মৌসুমি বায়ু শুষ্ক স্থলবায়ুর সংস্পর্শে এসে দুর্বল ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। এই ধরনের দুর্বল ঘূর্ণবাত থেকে কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিপাত হতে পারে।

বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং প্রভাব গুলি লেখো। 

বর্তমানে ক্রমবর্ধমান হারে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, জলীয়বাষ্প, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি নির্গত হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী ক্রমশ উষ্ণতার বৃদ্ধি ঘটে চলেছে, পরিবেশবিদরা যাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং নাম দিয়েছেন। সুন্দরবনে এই বিশ্ব উষ্ণায়নের অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। যেমন –

  1. মেরু ও পার্বত্য অঞ্চলে বরফ ও হিমবাহের গলন বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্রে জলের জোগান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার ফলে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বেড়ে চলেছে। এজন্য সুন্দরবনের নীচু এলাকাসমূহ চিরতরে জলমগ্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই দশটি দ্বীপ আংশিক বা সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয়েছে। যেমন – নিউমুর দ্বীপটি সম্পূর্ণ এবং ঘোড়ামারা দ্বীপটি আংশিক জলমগ্ন হয়েছে। লোহাচড়া দ্বীপটিও নিমজ্জিত হয়েছিল, তবে সাম্প্রতিক সময়ে পলি সঞ্চয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সামান্য জেগে উঠেছে।
  2. এইভাবে বহু দ্বীপ জলমগ্ন হওয়ায় দ্বীপগুলির অধিবাসীরা উদবাস্তু হয়ে সুন্দরবনের মূল ভূখণ্ডে সরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
  3. সুন্দরবনের মহামূল্যবান ম্যানগ্রোভ অরণ্যও বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে সুন্দরবনে –
  4. ঝড়-ঝঞ্ঝা-ঘূর্ণবাতের প্রকোপ অনেক বেড়েছে।
  5. নদীবাঁধ ভেঙে বন্যার আশঙ্কা অনেক বেড়েছে।
  6. বাষ্পীভবন বেড়ে যাওয়ায় জলে লবণতার পরিমাণ বেড়েছে, যা এখানকার জীবকূলের কাছে বড়ো সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।
  7. জলঘটিত রোগব্যাধির পরিমাণ বেড়েছে এবং
  8. কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এককথায় এখানকার জীবকূলসহ সমগ্র সুন্দরবনেরই অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে।

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল” -এর “আর্দ্রতা ও অধঃক্ষেপণ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “দীর্ঘধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

তড়িৎলেপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

ধাতুর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ও তড়িৎবিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।