মাধ্যমিক ভূগোল – বায়ুমণ্ডল – বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

Souvick

আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল” -এর “বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

মাধ্যমিক ভূগোল - বায়ুমণ্ডল - বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

বায়ুর উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বলতে কী বোঝ?

বায়ুর ওজন আছে, তাই চাপও আছে। তবে, বায়ুর চাপ বেশি হবে না কম হবে তা নির্ভর করে বায়ুতে কী পরিমাণ বায়ুকণা আছে তার ওপর।

বায়ুর উচ্চচাপ – একটি নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত ভর বেশি হলে (বেশি সংখ্যক বায়ুকণা থাকলে) ওই বায়ুর ওজন ও চাপ বেশি হবে, অর্থাৎ বায়ুর উচ্চচাপ হবে।

বায়ুর নিম্নচাপ – নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত ভর কম হলে (কম সংখ্যক বায়ুকণা থাকলে) ওই বায়ুর ওজন ও চাপ কম হবে, অর্থাৎ বায়ুর নিম্নচাপ হবে।

বায়ুর উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ সাধারণত ব্যারোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে পরিমাপ করা হয়। যদি ব্যারোমিটারে বায়ুচাপের মাত্রা 1013 মিলিবার বা তার বেশি হয় তবে সেই অবস্থাকে বায়ুর উচ্চচাপ এবং 986 মিলিবার বা তার কম হয় তাহলে সেই অবস্থাকে বায়ুর নিম্নচাপ বোঝায়।

‘অশ্ব অক্ষাংশ’ বলতে কী বোঝ?

অশ্ব অক্ষাংশের অবস্থান – উভয় গোলার্ধে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ে (30°-35° উত্তর ও দক্ষিণ) শীতল ও ভারী বায়ু ওপর থেকে নীচে নেমে আসায় ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ু প্রবাহিত হয় না। ফলে এখানকার বায়ুমণ্ডলে সারাবছর শান্তভাব বিরাজ করে। একে বলা হয় উপক্রান্তীয় শান্তবলয়।

অশ্ব অক্ষাংশ

অশ্ব অক্ষাংশের নামকরণ – প্রাচীনকালে অশ্ববোঝাই পালতোলা জাহাজসমূহ ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা বা পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার সময় উপক্রান্তীয় শান্তবলয়ে (উত্তর গোলার্ধের) এসে গতিহীন হয়ে পড়েছিল। তখন খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবহার কমাতে এবং জাহাজকে কিছুটা হালকা করার জন্য নাবিকেরা অনেক অশ্বকে জলে ফেলে দিত। সেই ঘটনা থেকে 30° থেকে 35° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশ অর্থাৎ উপক্রান্তীয় শান্তবলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ বলা হয়।

বায়ুচাপ বলয় কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলে কী কী বায়ুচাপ বলয় দেখা যায়?

বায়ুচাপ বলয় – ভূপৃষ্ঠের কতকগুলি নির্দিষ্ট স্থানে প্রায় সারাবছর ধরে বায়ুর উচ্চচাপ বা নিম্নচাপ লক্ষ করা যায়। বায়ুর এই উচ্চচাপ বা নিম্নচাপ এক-একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল ধরে পৃথিবীকে যেন বলয়ের মতো ঘিরে আছে। এগুলিকেই বলা হয় বায়ুচাপ বলয়।

বিভিন্ন বায়ুচাপ বলয় – ভূপৃষ্ঠে মোট সাতটি বায়ুচাপ বলয় আছে। এগুলি হল –

  1. নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়,
  2. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়,
  3. মকরীয় উচ্চচাপ বলয়,
  4. সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়,
  5. কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়,
  6. সুমেরু উচ্চচাপ বলয় এবং
  7. কুমেরু উচ্চচাপ বলয়।

ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী?

ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমির অবস্থান – আফ্রিকার সাহারা ও কালাহারি, দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা, ভারত-পাকিস্তানের থর, উত্তর আমেরিকার সোনোরান, এশিয়ার আরবের মরুভূমি প্রভৃতি পৃথিবীবিখ্যাত উষ্ণ মরুভূমিগুলি ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে।

ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টির কারণ হল – ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয় অঞ্চলগুলি (কর্কটীয় ও মকরীয়) উচ্চচাপ বলয়ের অন্তর্গত। এই অঞ্চলে বায়ু ওপর থেকে ক্রমশ নীচে নামে, তাই উষ্ণতা ও জলীয়বাষ্প ত্যাগ করার পরিবর্তে বায়ুর এগুলি গ্রহণ ও ধারণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এখানে উচ্চচাপ থাকায় জলীয়বাষ্পপূর্ণ হালকা বায়ু প্রবেশ করতে পারে না। এজন্য এইসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বিশেষ হয় না। বৃষ্টিহীন অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় এইসব অঞ্চলে বিস্তৃত উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে।

বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক লেখো।

বায়ুর উষ্ণতার ওপর বায়ুর চাপ নির্ভর করে। কারণ –

  • বায়ু যখন উষ্ণ হয় তখন তার আয়তন বাড়ে বা বায়ু প্রসারিত হয়। বায়ু যখন প্রসারিত হয় তখন তার চাপ কমে। সুতরাং, বায়ু উষ্ণ হলে তার চাপ কমে। যেমন – নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ বলে এখানে বায়ুর চাপও কম।
  • বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ু সংকুচিত হয়। বায়ু যতই সংকুচিত হয় তার ঘনত্ব তথা চাপ ততই বাড়ে। সুতরাং, বায়ুর উষ্ণতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে। যেমন – দুই মেরু অঞ্চলে অত্যধিক ঠান্ডার জন্য বায়ুর চাপ বেশি হয়।

বায়ুচাপ বলয়ের সীমা পরিবর্তনের কারণ কী?

উভয় গোলার্ধের ভূপৃষ্ঠ-সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলে মোট 7টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় আছে। এগুলি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় হলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে এদের সীমা কিছুটা উত্তরে বা দক্ষিণে সরে যায়। এর কারণ হিসেবে বলা যায় – পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির জন্য আকাশে সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ন ঘটে বলে সর্বোচ্চ উষ্ণতারেখা বা তাপ বিষুবরেখা (heat equator) বা তাপীয় বিষুবরেখা (thermal equator) কিছুটা উত্তরে ও দক্ষিণে সরে যায়। যেমন – উত্তর গোলার্ধের গ্রীষ্মকালে অর্থাৎ জুন-জুলাই মাসে এই রেখাটি নিরক্ষরেখার কিছুটা উত্তরে সরে আসে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের গ্রীষ্মকালে, অর্থাৎ ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে রেখাটি নিরক্ষরেখার কিছুটা দক্ষিণে সরে যায়। সাধারণত 12° উত্তর অক্ষাংশ থেকে 6° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত রেখাটির এই স্থান পরিবর্তন হয়। এর ফলে স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলিও সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে 5° থেকে 10° উত্তরে বা দক্ষিণে সরে যায়। তবে, সাধারণত উচ্চ অক্ষাংশের তুলনায় নিম্ন অক্ষাংশে বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমা পরিবর্তন বেশি ঘটে।

বায়ুচাপ বলয়ের অবস্থান পরিবর্তন

পৃথিবীর বিভিন্ন বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তনের প্রভাব কী কী?

সূর্যের উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়নের সাথে সাথে বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমাও 5°-10° উত্তরে বা দক্ষিণে সরে যায়, এই ঘটনাকে বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তন বলে। এর ফলে নানা ঘটনা ঘটে –

  • বায়ুচাপ বলয়ের সীমানা পরিবর্তিত হলে নিয়ত বায়ুপ্রবাহেরও পরিবর্তন ঘটে।
  • বায়ুচাপ বলয়ের সাথে সাথে বৃষ্টি বলয়গুলিও সরে যায়। যেমন – গ্রীষ্মে আয়ন বায়ু উত্তরে সরে গেলে সাভানা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়।
  • স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির স্থান পরিবর্তনের জন্যে উভয় গোলার্ধে 30°-40° অক্ষাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে জলবায়ুর ঋতুগত পরিবর্তন ঘটে। যেমন – শীতকালে বায়ুচাপ বলয়গুলি দক্ষিণে সরে যাওয়ায় ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে আর্দ্র পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু গ্রীষ্মকালে আয়ন বায়ু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত হয় বলে এখানে বৃষ্টিপাত হয় না। এখানে শুষ্ক থাকে।

বায়ুপ্রবাহের সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক কী?

বায়ুচাপের তারতম্য হলে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। বায়ুপ্রবাহের দিক এবং গতিবেগ বায়ুচাপের তারতম্যের ওপর নির্ভর করে।

যেসব অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ সেখানে বায়ুর চাপ কম হয়। এই কম চাপযুক্ত অঞ্চলে পার্শ্ববর্তী শীতল ও উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল থেকে বাতাস ছুটে আসে। একেই বায়ুপ্রবাহ বলে।

তবে বায়ুপ্রবাহের তীব্রতা নির্ভর করে বায়ুচাপের পার্থক্যের মাত্রার ওপর। বায়ুচাপের পার্থক্য বেশি হলে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ বেড়ে যায়, এবং বায়ুর চাপ কমে গেলে বায়ু ধীর গতিতে প্রবাহিত হয়।

বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকলে বায়ু হালকা হয় কেন?

শুক বায়ু ভারী হওয়ায় তার চাপ বেশি, কিন্তু আর্দ্র বায়ু হালকা হওয়ায় তার চাপ কম। কারণ, শুষ্ক বায়ু মূলত অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস দ্বারা গঠিত। কিন্তু বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকলে সেই বায়ুর চাপ কমে যায় কারণ জলীয় বাষ্পের অণুগুলি নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের অণুগুলি অপেক্ষা হালকা। সেইজন্য বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকলে সেই ভিজে বায়ু হালকা হয়ে যায়।

সাময়িক বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে যে-কোনো একটি বায়ুর সম্পর্কে চিত্রসহ আলোচনা করো।

সাময়িক বায়ুর ধারণা – দিনের বিভিন্ন সময়ে ও বছরের বিভিন্ন ঋতুতে জলভাগ এবং স্থলভাগে বায়ুচাপের তারতম্যের ওপর নির্ভর করে সাময়িকভাবে যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়, তাকে সাময়িক বায়ু বলে।

সাময়িক বায়ুর প্রকারভেদ – এটি তিন রকমের –

  1. সমুদ্রবায়ু,
  2. স্থলবায়ু ও
  3. মৌসুমি বায়ু।
  • সমুদ্রবায়ু – দিনেরবেলা সমুদ্র থেকে যে বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে সমুদ্রবায়ু বলে।
  • কারণ – জলের আপেক্ষিক তাপগ্রাহীতা স্থলভাগের তুলনায় বেশি হওয়ায় দিনেরবেলা একই পরিমাণ সূর্যালোক সম আয়তনের জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগকে বেশি উত্তপ্ত করে। সেকারণে স্থলভাগের বাতাস দ্রুত উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে গেলে সেখানে বায়ুর চাপ হ্রাস পায়। কিন্তু জলভাগ তখনও অপেক্ষাকৃত শীতল থাকায় সেখানে বায়ুর চাপ স্থলভাগের তুলনায় বেশি থাকে। ফলে স্থলভাগ ও জলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের পার্থক্য তৈরি হয়। একারণে শীতল বাতাস সমুদ্র থেকে থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ুপ্রবাহ সমুদ্রের দিক থেকে আসে বলে একে সমুদ্রবায়ু বলে।
  • সময়কাল – সমুদ্রবায়ু সাধারণত সকালবেলা থেকে প্রবাহিত হতে শুরু করলেও দুপুর থেকে বিকেলবেলার মধ্যে এই বায়ুর গতিবেগ সবচেয়ে বেশি হয়।
  • প্রভাব – সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে এজন্য জলবায়ু সমভাবাপন্ন হয়।

পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে মহাদেশের পশ্চিমদিকে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় কেন?

পশ্চিমা বায়ু সাধারণত 30°-60° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু পশ্চিমের সাগর-মহাসাগর অর্থাৎ জলভাগের ওপর দিয়ে আসে বলে মহাদেশের পশ্চিমদিকে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

শীতকালে সমুদ্রের উপরিস্থিত জলভাগ স্থলভাগ অপেক্ষা বেশি উষ্ণ থাকে। উষ্ণ সমুদ্রের ওপর দিয়ে আসার সময় এই বায়ুর উষ্ণতা বেড়ে যায় এবং যথেষ্ট পরিমাণে জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে। জলীয়বাষ্পপূর্ণ এই পশ্চিমা বায়ু দুই মেরু প্রদেশীয় অঞ্চলে ঠান্ডা মেরু বায়ুর সংস্পর্শে দ্রুত ঘনীভূত হয় এবং বৃষ্টিপাত ঘটায়। পশ্চিমা বায়ু শীতকালে বিশেষত দক্ষিণ গোলার্ধে সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী হয়।

বায়ু প্রবাহিত হয় কেন?

নানা কারণে বায়ু প্রবাহিত হয়ে থাকে –

  • বায়ুচাপের পার্থক্য – বায়ুচাপের তারতম্যের কারণেই মূলত বায়ু প্রবাহিত হয়। চাপের সমতাবিধানের উদ্দেশ্যে বায়ু সবসময় উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপ, অভিমুখে প্রবাহিত হয়।
  • উষ্ণতার পার্থক্য – বায়ু উষ্ণ হলে হালকা ও প্রসারিত হয়ে ওপরে ওঠে, ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়, তখন পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের ঠান্ডা বায়ু সেদিকে ছুটে গিয়ে বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি করে।
  • জলীয়বাষ্পের পরিমাণ – বায়ুতে জলীয়বাষ্প থাকলে সেই বায়ুর চাপ কম হয় এবং নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। তাই সেখানে পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু ছুটে আসে।

ব্যারোমিটারের সাহায্যে কীভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া যায়?

ব্যারোমিটারের সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া যায়। –

  • ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা যদি হঠাৎ নেমে যায়, তবে বুঝতে হবে ওই অঞ্চলের বায়ুর চাপ খুব কমে গেছে। অর্থাৎ সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে ঝড়ঝঞ্ঝা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি ঘটার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
  • এই চাপ আরও কমে যায় তাহলে বোঝা যাবে সেখানে বায়ুতে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এই সব গভীর নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলে পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু ছুটে এসে ঝড়বৃষ্টি ঘটাতে পারে।
  • আবার, পারদস্তম্ভের চাপ বেড়ে গেলে বুঝতে হবে সেখানে বায়ুর চাপ বেশি। অর্থাৎ আবহাওয়া হবে ঝড়ঝঞ্ঝামুক্ত, আকাশ পরিষ্কার থাকবে।

প্রতীপ ঘূর্ণবাত সম্পর্কে কী জানো?

হিমমণ্ডল ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে স্বল্প পরিসর কোনো স্থানে বেশি ঠান্ডার জন্য উচ্চচাপ সৃষ্টি হলে সেই উচ্চচাপ কেন্দ্র থেকে বাতাস বাইরের নিম্নচাপের দিকে যদি প্রবলবেগে প্রবাহিত হয় তবে তা প্রতীপ ঘূর্ণবাত। এই বায়ু কেন্দ্রবহির্মুখী ও নিম্নগামী হয়।

প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য –

  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে উচ্চচাপ থাকে।
  • এই বায়ু সর্বদা কেন্দ্র বহির্মুখী।
  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বায়ু শীতল ও নিম্নগামী।
  • প্রতীপ ঘূর্ণবাত উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে প্রবাহিত হয়।
  • প্রতীপ ঘূর্ণবাতে আবহাওয়া ঝড়ঝঞ্ঝামুক্ত ও আকাশ মেঘমুক্ত থাকে।

জেট বায়ু কী? এর বৈশিষ্ট্য লেখো।

জেট বায়ুর ধারণা – ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ারে প্রবাহিত অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন, সংকীর্ণ, সর্পিলাকার বায়ুকে জেট বায়ু বলে।

জেট বায়ুর বৈশিষ্ট্য –

  • ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে এই বায়ুপ্রবাহ সমচাপ রেখার সমান্তরালে প্রবাহিত হয়। তাই এটি জিওস্ট্রফিক বায়ু।
  • এটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং দ্রুতগামী বায়ু। এই বায়ু ঘণ্টায় 100-500 কিমি বেগে প্রবাহিত হয়।
  • জলের পাইপের মতো বা নদীর মতো প্রবাহিত হয় বলে একে জেট স্ট্রিম বা জেট প্রবাহ বলে।
  • এই বায়ু দুটি গোলার্ধেই 30°-60° অক্ষাংশের মধ্যে পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রবাহিত হয়। তবে সূর্যের উত্তরায়ণ বা দক্ষিণায়নের সাথে সাথে জেট বায়ুর স্থান পরিবর্তন হয়।
  • জেট বায়ু তিনপ্রকারের হয় – মেরুদেশীয় জেট বায়ু, উপক্রান্তীয় জেট বায়ু ও ক্রান্তীয় জেট বায়ু।

জেট বায়ু কত রকমের হয়?

জেট বায়ু তিন রকমের হয় –

  • মেরুদেশীয় জেট বায়ু – উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ থেকে আসা পশ্চিমা বায়ু ও মেরুদেশীয় উত্তর-পূর্ব বায়ুপ্রবাহের মিলন অঞ্চলের ওপর ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ার 45°-60° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে পশ্চিম থেকে পূর্বে যে জেট বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে মেরুদেশীয় জেট বায়ু বলে।
  • উপক্রান্তীয় জেট বায়ু – উপক্রান্তীয় অঞ্চলে 25° থেকে 30° অক্ষরেখা বরাবর যে জেট বায়ু প্রবাহিত হয় সেটি হল উপক্রান্তীয় জেট বায়ু। মেরুদেশীয় জেট বায়ুর তুলনায় এই জেট বায়ু দুর্বল।
  • ক্রান্তীয় জেট বায়ু – উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে পুবালি জেট বায়ু প্রবাহিত হয়। এটি দুর্বল এবং প্রধানত গ্রীষ্মকালে প্রবাহিত হয়।

জেট বায়ু বা জেট স্ট্রিমের গুরুত্ব লেখো।

জেট স্ট্রিম অনেক উঁচু দিয়ে প্রবাহিত হলেও বায়ুমণ্ডলের নীচু স্তরে এর প্রভাব যথেষ্ট। –

  • নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়।
  • দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মৌসুমি বায়ুর আগমন ও প্রত্যাবর্তন জেট বায়ুর ওপর নির্ভরশীল।
  • জেট প্রবাহের ওপর নির্ভর করে বিমানগুলি সময় ও জ্বালানি বাঁচায়।
  • পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুপুঞ্জের প্রবাহ ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও অন্যান্য নানা বিষয় জেট বায়ু দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।
  • বিশ্বব্যাপী তাপের সমতাবিধান করে।

মৌসুমি বায়ুর ওপর জেট বায়ুর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

মৌসুমি বায়ুর ওপর ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় জেট বায়ুর প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন –

  • দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা বহুলাংশে ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ুর অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল। যদি এই বায়ু তার স্বাভাবিক অবস্থানের তুলনায় বেশি উত্তরে সরে যায় তাহলে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের ছেদ (Break of Monsoon) ঘটে। 
  • বর্ষাকালে ভারতের ওপর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি এবং সেগুলির তীব্রতার হ্রাস-বৃদ্ধি ক্রান্তীয় জেট বায়ুর ওপর নির্ভরশীল।
  • দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের ওপর একটি স্থায়ী উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি অনেকাংশে ক্রান্তীয় পূবালি জেট বায়ুর ওপর নির্ভর করে। এই উচ্চতাপের কারণে গঠিত খাড়া বায়ুচাপের ঢাল গঠনের ওপর গ্রীষ্ম মৌসুমি বায়ুর শক্তি নির্ধারিত হয়।
  • ভারতে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনের ফলে শীতের তীব্রতা উপক্রান্তীয় জেট বায়ুর অবস্থান ও সক্রিয়তার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান কাকে বলে?

যেসব উপাদানের গড় অবস্থা বিচার করে কোনো স্থানের আবহাওয়া ও জলবায়ু নির্ধারণ করা হয়, সেগুলিকেই বলা হয় আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদান। এই উপাদানগুলি হল –

  1. বায়ুর উষ্ণতা,
  2. বায়ুর চাপ,
  3. বায়ুপ্রবাহ,
  4. বায়ুর আর্দ্রতা,
  5. মেঘ,
  6. বৃষ্টিপাত,
  7. তুষারপাত প্রভৃতি।

কোনো জায়গার আবহাওয়া ও জলবায়ু সম্পর্কে ধারণা করতে হলে এইসব উপাদান পর্যবেক্ষণ করতে হয়।

বায়ুচাপের পার্থক্য কীভাবে বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি করে?

ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন অংশে বায়ুচাপের পার্থক্যের জন্য প্রধানত বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। কারণ, বায়ু সর্বদা উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে যায়। কোনো স্থানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। ভূপৃষ্ঠে বায়ুর চাপের সমতা আনার জন্য তখন চারিদিকের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু ওই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ছুটে যায় অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ – উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু প্রবাহিত হয়।

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

  • ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে যেখানে বায়ুর চাপ সবচেয়ে কম থাকে, সেই অংশটিকে বলে ঘূর্ণবাতের ‘চক্ষু’।
  • ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে সাধারণত পরিষ্কার আকাশ থাকে এবং শান্ত আবহাওয়া বিরাজ করে।
  • ঘূর্ণবাত কেন্দ্রের চারপাশে সাধারণত ঘন কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থাকে।
  • চারপাশ থেকে বায়ু নিম্নচাপযুক্ত কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং চারপাশে প্রবল ঘূর্ণিঝড়সহ প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে বায়ু ছুটে আসার সময় উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার গতির বিপরীত দিকে বা বামাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার গতির দিকে বা দক্ষিণাবর্তে বেঁকে যায়।

কালবৈশাখী সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

অথবা, কালবৈশাখীকে ‘নরওয়েস্টার’ বলা হয় কেন?

কালবৈশাখীর অবস্থান ও সময় কাল – গ্রীষ্মকালের অপরাহ্ণে পূর্ব-ভারতে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড রাজ্যে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আগত ক্রান্তীয় ঝড়ের প্রভাবে বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়-বৃষ্টিপাত ও কোনো কোনো সময় শিলাবৃষ্টিও হয়। একে বলা হয় কালবৈশাখী। এটি একটি আকস্মিক বায়ু।

কালবৈশাখীর সৃষ্টির কারণ – সকাল থেকে প্রখর সূর্যতাপে ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের পাথুরে ভূমি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে অপরাহ্ণের দিকে ওই অঞ্চলের বায়ুমণ্ডলে যে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় তারই প্রভাবে এই ক্রান্তীয় ঝড়ের উৎপত্তি হয়। সাধারণত এই বজ্রঝড় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ছুটে আসে বলে একে ইংরেজিতে Nor’wester (নরওয়েস্টার) বলা হয়।

কালবৈশাখীর আবহাওয়াতে প্রভাব – কালবৈশাখীর মাধ্যমে বৃষ্টিপাত কম হলেও গ্রীষ্মের উত্তাপ কিছুটা হ্রাস পায় এবং তা কৃষিকাজের পক্ষে বিশেষ সহায়ক হয়।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো।

আবহাওয়া ও জলবায়ুর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –

বিষয়আবহাওয়াজলবায়ু
সংজ্ঞাগতউষ্ণতা, বায়ুর চাপ, বৃষ্টিপাত, বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলির কার্যকারণে সৃষ্ট অবস্থাকে আবহাওয়া বলে।জলবায়ু হল আবহাওয়ার বৈশিষ্ট্যসমূহের দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা।
স্থানগতআবহাওয়া স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ুমণ্ডলের অবস্থা সূচিত করে।জলবায়ু বিস্তৃত অঞ্চলের আবহাওয়ার গড় অবস্থার পরিচয় দেয়।
সময়গতআবহাওয়া স্বল্প সমকালীন বায়ুমণ্ডলীয় কতকগুলি উপাদানের অবস্থা। সাধারণত আবহাওয়া 12 ঘণ্টার পূর্বাভাস দেয়।জলবায়ু বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলি দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা। কমপক্ষে 35 বছরের আবহাওয়ার গড় অবস্থা জলবায়ু নির্ধারণে সাহায্য করে।

নিয়ত বায়ুপ্রবাহ সৃষ্টির কারণ কী?

নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সারা বছর প্রায় লম্বভাবে কিরণ দেওয়ার জন্যে বায়ু প্রচণ্ড উত্তপ্ত হয়ে উর্ধ্বে উঠে যায়। প্রচুর পরিমাণে জলীয়বাষ্পপূর্ণ হালকা এই বায়ু ভূপৃষ্ঠ থেকে 12-15 কিমি উচ্চতায় পৌঁছে ঠান্ডা হয়। এই শীতল বায়ু দুই পার্শ্বের দিকে অগ্রসর হয় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলে পৌঁছে উষ্ণতা ও আর্দ্রতা উভয়ই হ্রাস পায়। এর ফলে বায়ু ভারী হয়ে ক্রান্তীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের কাছে নেমে আসে এবং ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে আয়ন বায়ুরূপে আবার নিরক্ষীয়প্রদেশে পৌঁছোয়। এভাবে আয়ন বায়ুর উৎপত্তি ঘটে।

উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে বায়ু মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় অভিমুখেও ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়। এভাবে পশ্চিমা বায়ুর উৎপত্তি ঘটে। দুই মেরু প্রদেশে কোরিওলিস বলের প্রভাবে সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়। এই কোরিওলিস বলের প্রভাবে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে বায়ু ছিটকে মেরুবৃত্ত প্রদেশের দিকে পৌঁছোয়। এভাবে মেরুবায়ুর উৎপত্তি হয়।

দক্ষিণ গোলার্ধের পশ্চিমা বায়ু উত্তর গোলার্ধের পশ্চিমা বায়ু অপেক্ষা অধিকতর বেগে প্রবাহিত হয় কেন?

অথবা, পশ্চিমা বায়ুকে কেন প্রবল পশ্চিমা বায়ু বলা হয়?

একটি উল্লেখযোগ্য নিয়ত বায়ু হল পশ্চিমা বায়ু। এই বায়ু উভয় গোলার্ধে 35° থেকে 60° অক্ষাংশের মধ্যে প্রবাহিত হয়। উত্তর গোলার্ধে 35° থেকে 60° অক্ষাংশের মধ্যে জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ বেশি থাকায় পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহের গতির ওপর ঘর্ষণজনিত বল বা বাধার প্রভাব খুব বেশি পড়ে। ফলে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ বাধাপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে 35° থেকে 60° অক্ষাংশের মধ্যে স্থলভাগের তুলনায় জলভাগ বেশি থাকায় ঘর্ষণজনিত বাধা কম পড়ে। ফলে বিস্তৃত জলরাশির ওপর দিয়ে পশ্চিমা বায়ু প্রবল বেগে সশব্দে প্রবাহিত হতে পারে। তাই দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুকে প্রবল পশ্চিমা বায়ু বলা হয়।

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ুর পার্থক্যগুলি আলোচনা করো।

অথবা, সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর তিনটি পার্থক্য লেখো।

স্থলবায়ু ও সমুদ্রবায়ু উভয়ই উল্লেখযোগ্য সাময়িক বায়ু হলেও উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে, যেমন –

বিষয়স্থলবায়ুসমুদ্রবায়ু
দিকস্থলভাগ থেকে সংলগ্ন সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।জলভাগ থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়।
সময়রাতেরবেলা বা ভোরের দিকে প্রবাহিত হয়।দিনেরবেলায় প্রবাহিত হয়।
উৎপত্তিস্থলভাগ শীতল এবং সংলগ্ন সমুদ্র উষ্ণ হলে এই বায়ুর উৎপত্তি হয়।সমুদ্র শীতল এবং সংলগ্ন স্থলভাগ উষ্ণ হলে এই বায়ুর সৃষ্টি হয়।
বায়ুর চাপএই বায়ু যখন প্রবাহিত হয় তখন স্থলভাগের ওপর থাকে বায়ুর চাপ বেশি এবং সমুদ্রের ওপর বায়ুর চাপ কম থাকে।এই বায়ু যখন প্রবাহিত হয় তখন সমুদ্রের ওপর থাকে বায়ুর চাপ বেশি এবং স্থলভাগের ওপর বায়ুর চাপ কম থাকে।
বায়ুর প্রকৃতিস্থলভাগ থেকে আসে বলে এই বায়ু শুষ্ক।সমুদ্র থেকে আসে বলে এই বায়ু আর্দ্র।

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মধ্যে প্রভেদ কী?

অথবা, ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মধ্যে চারটি পার্থক্য নির্দেশ করো।

ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত-উভয়ই আকস্মিক বায়ু। তবে উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। যেমন –

বিষয়ঘূর্ণবাতপ্রতীপ ঘূর্ণবাত
বায়ুচাপের অবস্থানঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ।প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে উচ্চচাপ।
বায়ুপ্রবাহের দিকএই বায়ু উত্তর গোলার্ধে বামাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে প্রবাহিত হয়।এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামাবর্তে প্রবাহিত হয়।
গতিগতি বেশি, প্রায়ই ঝড়রূপে প্রবাহিত হয়।গতি কম, বেশিরভাগ সময়েই শান্ত।
কেন্দ্রে বায়ুর প্রকৃতিকেন্দ্রের বায়ু উষ্ণ এবং ঊর্ধ্বমুখী।কেন্দ্রের বায়ু শীতল ও নিম্নমুখী।
স্থায়িত্বঅল্পক্ষণ স্থায়ী হয়, তবে খুব শক্তিশালী।দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়, তবে ঘূর্ণবাতের মতো অত শক্তিশালী নয়।
আবহাওয়ার প্রকৃতিআবহাওয়া ঝটিকাসংকুল। গ্রীষ্মকালে বৃষ্টিপাত ও শীতকালে তুষারপাত হয়। উভয় ঋতুতেই বজ্রঝঞ্ঝা দেখা যায়, তবে গ্রীষ্মকালে এর প্রভাব বেশি থাকে।আবহাওয়া শান্ত ও বায়ু শুষ্ক। গ্রীষ্মকাল মেঘমুক্ত ও উজ্জ্বল। তবে মাঝে মাঝে হালকা কুয়াশা (haze) দেখা যায়। শীতকালে ঘন কুয়াশা (fog) দেখা যায় ও তুহিন (frost) পড়ে।

মরুভূমি সৃষ্টিতে আয়ন বায়ুর ভূমিকা আলোচনা করো।

পৃথিবীর বড়ো বড়ো উষ্ণ মরুভূমি সৃষ্টির ক্ষেত্রে আয়ন বায়ুর বিশেষ ভূমিকা আছে। কারণ, আয়ন বায়ু উপক্রান্তীয় অঞ্চল (উচ্চ অক্ষাংশ) থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের (নিম্ন অক্ষাংশের) দিকে ছুটে যায়। সুতরাং, অপেক্ষাকৃত শীতল অঞ্চল থেকে উষ্ণ অঞ্চলের দিকে বয়ে যায় বলে এই বায়ু ক্রমশ উষ্ণ হয় এবং জলীয়বাষ্প ত্যাগের পরিবর্তে গ্রহণ ও ধারণের ক্ষমতা বেড়ে যায়। এজন্য আয়ন বায়ুর গতিপথে সাধারণত বৃষ্টিপাত হয় না এবং তাই সাহারা, থর, কালাহারি, আটাকামা প্রভৃতি উষ্ণ মরুভূমি আয়ন বায়ুর গতিপথেই সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় বায়ু কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

যেসব বায়ু স্থানীয় ভূপ্রকৃতি ও পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাদের স্থানীয় বায়ু বলে। উদাহরণ –

  1. লু,
  2. ফন,
  3. চিনুক,
  4. পাম্পেরো প্রভৃতি।

এইসব বায়ু পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে স্থানীয়ভাবে প্রবাহিত হয়, যেমন –

  1. লু – গ্রীষ্মকালে উত্তর-পশ্চিম ভারতের উত্তপ্ত স্থলভাগের ওপর দিয়ে যে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালভাবে প্রবাহিত হয়, তা লু নামে পরিচিত।
  2. ফন – ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের উত্তর ঢালে রাইন নদী উপত্যকায় শীতকালে যে উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রবাহিত হয়, তাকে বলা হয় ফন।
  3. চিনুক – ইংরেজিতে চিনুক শব্দের অর্থ snow eater (তুষার ভক্ষক বা তুষার খাদক)। উত্তর আমেরিকার রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্ব চাল থেকে এক ধরনের উষ্ণ ও শুষ্ক বায়ু প্রেইরি সমভূমিতে নেমে আসার ফলে ওখানকার তুষার গলে যায়। তাই ওই বায়ু চিনুক নামে পরিচিত।
  4. পাম্পেরো – দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চল থেকে যে শীতল ও শুষ্ক বায়ু পম্পাস তৃণভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পাম্পেরো।

‘লু’ কী? কোন্ ঋতুতে এই বায়ু প্রবাহিত হতে দেখা যায়? ভারতের কোন্ অঞ্চলে এই বায়ুর প্রভাব দেখা যায়?

লু – ‘লু’ একপ্রকার উষ্ণ ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ু।

প্রবাহকাল – ভারতে গ্রীষ্মঋতুতে এই বায়ু প্রবাহিত হতে দেখা যায়।

ভারতে প্রভাবিত অঞ্চল – উত্তর-পশ্চিম ভারতের পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ও রাজস্থান রাজ্যে এই প্রকার বায়ু প্রবাহিত হতে দেখা যায়।

বায়ুপ্রবাহের কারণ ব্যাখ্যা করো।

পৃথিবীর বায়ুস্তরে চাপের তারতম্য হলে উচ্চচাপ বা বেশি বায়ুযুক্ত অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ বা স্বল্পবায়ু সমন্বিত অঞ্চলের দিকে বায়ু প্রবাহিত হয়। সাধারণত উষ্ণতা বৃদ্ধি পেলে বায়ুর চাপ কমে যায় বা বায়ুশূন্য অবস্থার সৃষ্টি হতে থাকে। তখন অপেক্ষাকৃত কম উষ্ণ অঞ্চল থেকে বায়ু ওই শূন্যস্থান পূরণের জন্য ছুটে আসে। সুতরাং চাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ।

বায়ুর চাপ কাকে বলে?

আবহাওয়া ও জলবায়ুর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান – বায়ুর চাপ। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বায়ুকেও নিজ কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণ করে বলে অন্যান্য পদার্থের মতো বায়বীয় কণাগুলির ওজন আছে। বায়ুর ওজনকে বলা হয় বায়ুর চাপ। সাধারণভাবে বলা যায়, গড়ে 1 বর্গসেন্টিমিটার ভূপৃষ্ঠের ওপর বায়ুমণ্ডলের চাপ প্রায় 1 কিগ্রা।

বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

  • ভূপৃষ্ঠের সব জায়গায় বায়ুর চাপ সমান নয়, কোথাও বেশি অর্থাৎ উচ্চচাপ, কোথাও কম অর্থাৎ নিম্নচাপ।
  • ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুর ঘনত্ব বেশি বলে বায়ুর চাপও বেশি এবং ক্রমশ ওপরের দিকে বায়ুর চাপ কম।
  • বায়ু উষ্ণ হলে তার চাপ কমে, শীতল হলে চাপ বাড়ে।
  • উচ্চতা, উষ্ণতা, বায়ুপ্রবাহ, জলীয়বাষ্প প্রভৃতি বায়ুচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ প্রভৃতি বর্গসেন্টিমিটার প্রায় এক কিলোগ্রাম।

সমচাপ রেখা বা সমপ্রেষ রেখা কাকে বলে?

কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভূপৃষ্ঠের যে সকল স্থানের বায়ুর চাপ সমান থাকে, মানচিত্রে সেই সকল স্থানকে যে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয়, তাকে সমচাপ রেখা বা সমপ্রেষ রেখা বলে। যেহেতু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি 300 মিটার উচ্চতায় বায়ুর চাপ প্রায় 34 মিলিবার কমে যায়, তাই সমচাপরেখা আঁকার সময় কোনো জায়গার বায়ুর চাপের পরিমাণকে সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপে পরিবর্তিত করতে হয়।

বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে?

জলভাগ ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুর উষ্ণতা ও চাপের পার্থক্য হয় বলে তাপ ও চাপ বলয়গুলি অনেক জায়গায় বলয় হিসেবে বিস্তৃত না থেকে ছোটো ছোটো ভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান করে। বায়ুচাপের এই ছোটো ছোটো বিভাগগুলিকে বলা হয় বায়ুচাপ কক্ষ। মহাদেশ ও মহাসাগরগুলির অবস্থানগত বৈশিষ্ট্যের জন্য উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষ বেশি দেখা যায়।

বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে?

হিমালয় পর্বতে আরোহণকারীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করেন কেন?

ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বায়ুর চাপ বেশি এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমতে থাকে। বায়ুর চাপ কমে গেলে বায়ুর ঘনত্ব হ্রাস পায়, ফলে বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। তাই আমাদের শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হয়। যেহেতু সুউচ্চ হিমালয় পর্বতে বায়ুর চাপ কম, তাই হিমালয় পর্বতে আরোহণকারীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করেন।

আয়ন বায়ুর গতিপথে পৃথিবীর অধিকাংশ মরুভূমিগুলির সৃষ্টি হয়েছে কেন?

আয়ন বায়ু অপেক্ষাকৃত শীতল উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে উষ্ণ নিরক্ষীয় অঞ্চল অভিমুখে প্রবাহিত হয় বলে ক্রমশ উষ্ণ হয় এবং জলীয়বাষ্প ধারণক্ষমতাও বেড়ে যায়। এজন্য আয়ন বায়ুর গতিপথে সাধারণত বৃষ্টি হয় না। সে কারণে মহাদেশগুলির পশ্চিমে আয়ন বায়ুর গতিপথে আফ্রিকায় সাহারা ও কালাহারি, দক্ষিণ আমেরিকায় আটাকামা মরুভূমি এবং এশিয়ায় আরব মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।

বায়ুচাপ ঢালের ধারণা দাও।

সমচাপরেখা থেকে জানা যায়, ওই রেখা বরাবর বায়ুর চাপ একই রয়েছে। সমচাপরেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রতি একক অঞ্চলে বায়ুচাপের যে পার্থক্য তৈরি হয়, তাকে বায়ুচাপ ঢাল বলে।

মানচিত্রে –

  • সমচাপ রেখাগুলি যত কাছাকাছি থাকে সেখানকার বায়ুচাপ ঢাল তত বেশি হবে। আবার,
  • যেখানে সমচাপ রেখাগুলি দূরে দূরে অবস্থান করে সেখানে বায়ুচাপের ঢাল কমে যায়। ভূপৃষ্ঠের দুটি স্থানের মধ্যে বায়ুচাপের পার্থক্য যত বেশি হবে বায়ুচাপ ঢালও তত বেশি খাড়াভাবে অবস্থান করবে। বায়ুচাপের ঢাল বাড়লে বায়ুপ্রবাহের গতি বেড়ে যায়।
সমচাপ রেখা ও বায়ুচাপ ঢাল

বায়ুর চাপ থাকা সত্ত্বেও আমরা তা অনুভব করতে পারি না কেন?

সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ 760 মিমি পারদস্তম্ভের উচ্চতার সমান যা প্রতি বর্গসেমিতে প্রায় 101325 ডাইনের (dyne) সমান। আমাদের ফুসফুস, কান, পাকস্থলি ইত্যাদির ওপর বায়ুর চাপ আর আমাদের দেহের বাইরের চাপ ঠিক সমান হওয়ায় আমরা বায়ুর চাপ অনুভব করি না। আমাদের দেহ যথেষ্ট নমনীয় হওয়ায় দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাইরের চাপ সমান না হলেও আমরা সেই চাপের তারতম্য সহজেই মানিয়ে নিতে সক্ষম।

ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে কেন?

ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে বায়ুর চাপ ক্রমশ কমে। কারণ –

  • উচ্চতা যত বাড়ে ততই বায়ুমণ্ডলীয় ভর ক্রমশ কমে। বায়ুমণ্ডলীয় ভর কমলে বায়ুর ঘনত্ব ও ওজন উভয়ই কমে আর ওজন কমলে বায়ুর চাপও কমে যায়।
  • ভূপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে উঠলে বায়ু প্রসারিত হয় ও গভীরতা কমে যায়। এর ফলে প্রতি একক আয়তনের বায়ুতে বায়বীয় কণার সংখ্যা কমে যাওয়ায়, বায়ুচাপ কম হয়। প্রতি 110 মিটার উচ্চতা বাড়লে বায়ুর চাপ 1 সেমি হারে কমে যায়। যদি সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুর চাপকে 100% ধরা যায় তবে ভূপৃষ্ঠ থেকে 18 কিমি উচ্চতায় বায়ুচাপ হয় 1%।

বায়ুচাপের পরিমাপের একক সম্পর্কে লেখো।

বর্তমান পৃথিবীতে ইঞ্চির পরিবর্তে মিলিবারে বায়ুর চাপ মাপা হয়। মিলিবার হল বায়ুর চাপ মাপার এমন একটি একক যা প্রতি বর্গসেমিতে 1000 ডাইনের সমান। আবার ডাইন হল বলের একটি একক। 1 ডাইন প্রায় 1 কেজি ওজনের সমান। বায়ুচাপ মাপার যন্ত্রের নাম ব্যারোমিটার। ব্যারোমিটারের পারদস্তম্ভের উচ্চতা দেখে কোনো স্থানের বায়ুর চাপ কত তা সহজেই জানা যায়।


আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোলের দ্বিতীয় অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল” -এর “বায়ুর চাপ বলয় ও বায়ুপ্রবাহ” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ “ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) ভূগোল পরীক্ষার জন্য ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক (দশম শ্রেণী) পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায় দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে, আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Categories -
Please Share This Article

Related Posts

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – মানচিত্র চিহ্নিতকরণ

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল - উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র - সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

মাধ্যমিক ভূগোল – উপগ্রহ চিত্র ও ভূবৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র – সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ধাতু নিষ্কাশনে তড়িৎবিশ্লেষণের প্রয়োগ উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?

লোহায় তামার প্রলেপ দিতে কোন ধাতু ক্যাথোড ও অ্যানোড হিসেবে ব্যবহার হয়? তড়িৎবিশ্লেষ্য কী? বিক্রিয়ার সমীকরণ লেখো।

তড়িৎলেপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।

ধাতুর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ ও তড়িৎবিশ্লেষ্যের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।