মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের কৃষি – ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” এর অন্তর্গত “ভারতের কৃষি” বিভাগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষা বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি পরীক্ষায় প্রায়ই আসতে দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।

Table of Contents

মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের কৃষি

ফসল রোপণের সময় অনুসারে ভারতের কৃষিজ ফসলের শ্রেণিবিভাগ করো।

ফসল রোপণের সময় অনুসারে ভারতে উৎপাদিত কৃষিজ ফসল তিনটি ভাগে বিভক্ত। নীচে তা সারণির আকারে আলোচনা করা হলো –

কৃষিজ ফসল রোপণের সময় উদাহরণ
খরিফ শস্য জুন-নভেম্বর আমন ধান, পাট, আখ
রবি শস্য ডিসেম্বর-মার্চ গম, যব, সরষে
জায়িদ শস্য মার্চ-জুন কুমড়ো, শশা, তরমুজ

ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে ভারতে উৎপন্ন ফসলের শ্রেণিবিভাগ করো।

ব্যবহারের প্রকৃতি অনুসারে ভারতে উৎপন্ন ফসলগুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা —

  • খাদ্য ফসল
  • অর্থকরী ফসল

খাদ্য ফসলগুলিকে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা —

  1. দানাশস্য, যেমন — ধান, গম প্রভৃতি।
  2. পানীয় ও ভেষজ ফসল, যেমন — চা, কফি, তামাক প্রভৃতি।
  3. অন্যান্য খাদ্য ফসল, যেমন — আখ, মশলা, ফল প্রভৃতি।

অন্যদিকে, অর্থকরী ফসলগুলিও অন্ততপক্ষে তিনটি ভাগে বিভক্ত। যথা —

  1. তৈলবীজ, যেমন — সরষে, তিল, চিনাবাদাম প্রভৃতি।
  2. তন্তু ফসল, যেমন — তুলো, পাট, শন প্রভৃতি।
  3. অন্যান্য ফসল, যেমন — রবার, তুঁত প্রভৃতি।

প্রসঙ্গত, চা, কফি, রবার, মশলা, কলা ইত্যাদিকে বাগিচা ফসল বলা হয় এবং সব বাগিচা ফসলকে অর্থকরী ফসলও বলা হয়।

ভারতের কয়েকটি প্রধান প্রধান কৃষিজ ফসল

ধানের শ্রেণিবিভাগ করো।

ধানের শ্রেণিবিভাগ

সময় বা ঋতু অনুসারে ধান তিন প্রকার হয়। যেমন —

ধানের নামসময় বা ঋতু
আউশ ধানযে ধান গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয় এবং বর্ষাকালে সংগ্রহ করা হয়, তাকে আউশ ধান বলে। এই ধান বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ (এপ্রিল-মে) মাসে চাষ করা হয় ও শ্রাবণ-ভাদ্র (আগস্ট-সেপ্টেম্বর) মাসে কাটা হয়। “আউশ” শব্দটির অর্থ আশু বা শীঘ্র। এই ধান খুব তাড়াতাড়ি পাকে।
আমন ধানযে ধান বর্ষাকালে চাষ করা হয় এবং শীতকালে সংগ্রহ করা হয়, তাকে আমন ধান বলে। এই ধান আষাঢ় (জুন) মাসে চাষ করা হয় ও অগ্রহায়ণ-পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) মাসে কাটা হয়। অগ্রহায়ণ মাসে পাকে বলে আমন ধানকে “অঘ্রাণী” বা “আঘ্রাণী” – ও বলে।
বোরো ধানযে ধরণের ধান শীতকালে চাষ করা হয় ও গ্রীষ্মকালে সংগ্রহ করা হয়, তাকে বোরো ধান বলা হয়। এই ধান সাধারণত কার্তিক-অগ্রহায়ণ (নভেম্বর-ডিসেম্বর) মাসে চাষ করা হয় ও চৈত্র-বৈশাখ (এপ্রিল-মে) মাসে কাটা হয়।

গমের শ্রেণিবিভাগ করো।

চাষের সময় অনুসারে গমকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় –

গমের নামচাষের সময় বা ঋতু
শীতকালীন গমযে গম শরৎকালে চাষ করা হয় এবং গ্রীষ্মের প্রারম্ভে কাটা হয়, তাকে শীতকালীন গম বলা হয়।
বসন্তকালীন গমযে গম বসন্তকালে চাষ করা হয় এবং গ্রীষ্মকালের শেষে কাটা হয়, তাকে বসন্তকালীন গম বলা হয়।

ভারতে প্রধানত শীতকালীন গমের চাষ করা হয়। তবে উত্তর ভারতের কোনো কোনো স্থানে, যেমন—উত্তরাখণ্ড ও হিমাচলপ্রদেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে বসন্তকালীন গমও চাষ করা হয়।

ভারতে ধান চাষের সমস্যা এবং সেগুলির সমাধান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

ভারতে ধান চাষের সমস্যা ও সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল –

সমস্যাসমস্যা সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থা
ধানের স্বল্পমূল্য কৃষকদের ধান চাষে নিরুৎসাহিত করছে।মহাজন বা বণিকদের এড়িয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য সরকারি সংস্থা গঠিত হয়েছে।
হেক্টর প্রতি স্বল্প উৎপাদন। ভারতে হেক্টর-প্রতি উৎপাদনের পরিমাণ মাত্র 2424 কেজি (2013-14)উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক ও সার ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ফসল সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।সরকারিভাবে ফসল সংরক্ষণাগার বা গোডাউন তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে।
কৃষিজোতগুলি খণ্ডিত ও বিক্ষিপ্ত হওয়ায় কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুযোগ কম।খণ্ডিত কৃষিজমিতে সমবায় পদ্ধতিতে চাষ ও উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার (যেমন—ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার প্রভৃতি) করে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
জলসেচ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে বৃষ্টিবিহীন সময়ে ও স্বল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়।অধিক সংখ্যক বিদ্যুৎচালিত গভীর নলকূপ বা ডিজেলচালিত মধ্যম গভীরতা সম্পন্ন নলকূপ স্থাপন করার জন্য সরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

ভারতে গম চাষের সমস্যা ও তার সমাধান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

ভারতে গম চাষের সমস্যা ও সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল —

সমস্যাসমস্যা সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থা
হেক্টর প্রতি স্বল্প উৎপাদন। ভারতে হেক্টর-প্রতি গম উৎপাদন গড়ে মাত্র 3075 কেজি (2013-14)। উচ্চ ফলনশীল বীজ, কীটনাশক ও সার ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গমের স্বল্পমূল্য কৃষকদের গম চাষে নিরুৎসাহিত করছে।মহাজন বা বণিকদের এড়িয়ে Food Corporation of India-র মাধ্যমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে গম কেনা হচ্ছে।
উপযুক্ত সংরক্ষণ ব্যবস্থার অভাবে প্রত্যেক বছরই প্রচুর গম নষ্ট হয়।উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণাগার তৈরি হয়েছে।
উন্নত যন্ত্রপাতির ব্যবহার কম।বাণিজ্যিকভাবে গম চাষ বৃদ্ধির জন্য যন্ত্রপাতির (যেমন—ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার প্রভৃতি) ব্যবহার যাতে বৃদ্ধি পায় সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি তরফে প্রত্যেক বছরই মূলধন বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
জলসেচ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে বৃষ্টিবিহীন সময়ে ও স্বল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়।বিদ্যুৎচালিত গভীর নলকূপ বা ডিজেলচালিত মধ্যম গভীরতা সম্পন্ন নলকূপ  স্থাপন করার জন্য সরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
 ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের কৃষি – ব্যাখ্যামূলক উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

উত্তর ভারতে বেশি গম চাষ হয় কেন?

উত্তর ভারতে বেশি গম চাষের কারণগুলি হলো –

  1. উত্তর ভারতের পাঞ্জাব সমভূমি, উচ্চ-গঙ্গা সমভূমি ও মধ্য-গঙ্গা সমভূমি অঞ্চলে শীতকালীন উষ্ণতা 14-20°সে থাকে, যা গম চাষের পক্ষে আদর্শ।
  2. উত্তর ভারতের গম চাষের এলাকাগুলিতে শীতকালে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত হয় তা গম চাষের পক্ষে উপকারী। এখানে জলসেচ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি ঘটায় চাষের প্রয়োজনীয় জল জলসেচের মাধ্যমেও মেটানো যায়।
  3. উর্বর ভারী দোআঁশ ও কাদামাটি দিয়ে গঠিত পলল মৃত্তিকা উত্তর ভারতে গম চাষের পক্ষে অনুকূল।
  4. উত্তর ভারতের সমতল ভূপ্রকৃতিও গম চাষে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
  5. বিহার ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত কৃষি শ্রমিকরা পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে গম চাষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভারতে চা চাষের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে কী জান? আলোচনা করো।

ভারতে চা চাষের সমস্যা ও সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হলো –

সমস্যাসমস্যা সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থা
অধিকাংশ চা বাগানই দীর্ঘদিনের। যেমন — উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনো কোনো বাগানের বয়স 100 বছরেরও বেশি। এ ছাড়া, বাগানগুলি সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমির অভাব রয়েছে।নতুন করে অব্যবহৃত জমিতে ছোটো ছোটো চা বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।
বাগান মালিকরা আর্থিক অসুবিধার কারণে বহু বাগান বন্ধ করে দিয়েছেন।সমবায় পদ্ধতিতে শ্রমিকদের দ্বারা অথবা সরকারি অধিগ্রহণের মাধ্যমে ওইসব বাগান চালুর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
চা উৎপাদন ব্যয় বিশ্বের অন্যান্য চা উৎপাদনকারী দেশ অপেক্ষা বেশি।চায়ের উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করার জন্য শ্রমিকদের উৎপাদিকা শক্তি বৃদ্ধি, বেশি দিন (15-18 দিন) চা গাছ থেকে চা পাতা সংগ্রহ, সৌরশক্তির ব্যবহার ইত্যাদি উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে।
তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় চায়ের বিক্রি পূর্বাপেক্ষা হ্রাস পেয়েছে।ভারতীয় চায়ের গুণমান আরও বৃদ্ধি ও মূল্য হ্রাস করে করে আন্তর্জাতিক বাজারে চা রপ্তানি বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রধানত তরুণদের মধ্যে নানা ধরনের নরম পানীয় গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবর্তে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।চায়ের ব্যবহার মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষে এবং নানাবিধ রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবিষয়ে প্রচার সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।

চায়ের শ্রেণিবিভাগ করো।

চা পাতাকে ব্যবহারের উপযোগী করার জন্য এর প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি অনুসারে চা ছয়টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন —

চায়ের নামপ্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি
কালো চাচায়ের পাতাগুলি গাছ থেকে তুলে প্রথমে রোদে শুকিয়ে নিয়ে পরে আবার যন্ত্রের সাহায্যে শুকিয়ে কালো করে নেওয়া হয়। এভাবে প্রস্তুত চা-কে কালো চা বলে।
সবুজ চাচা গাছের কচি পাতা ও কুঁড়ি রোদে শুকিয়ে যে চা প্রস্তুত করা হয়, তাকে সবুজ চা বলে। ভারতে সবুজ চায়ের প্রচলন খুব কম।
সাদা চাচা গাছের নবীন কুঁড়িগুলিকে শুকিয়ে নেওয়ার আগে গরম বাষ্প অথবা আগুন জ্বালিয়ে গরম করে যে হালকা গন্ধের চা প্রস্তুত করা হয়, তাকে সাদা চা বলে।
উলং চাএই ধরনের চা গাছের পাতা প্রথমে প্রখর সূর্যকিরণে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর মেশিনে গরম হাওয়া দিয়ে আরও শুকিয়ে বাঁকিয়ে ও মুচড়িয়ে এই চা প্রস্তুত করা হয়।
ইস্টক চাচা গাছের নিকৃষ্ট পাতা, চা পাতার ডাঁটি, গুঁড়ো চা, ভাতের মাড়, মশলা, মাখন ইত্যাদি একসঙ্গে মিশিয়ে চাপ দিয়ে ছোটো ছোটো আয়তাকার খণ্ডে পরিণত করে যে চা প্রস্তুত করা হয়, তাকে ইস্টক চা বলে।
পুয়ের চাএই ধরনের চা উৎপাদনের জন্য প্রথমে চায়ের পাতা তুলে সূর্যকিরণে কিছুটা শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর চা পাতাকে শুকনো ভাজা করে গুটিয়ে নিয়ে নানা আকৃতি প্রদান করা হয় ও আবার সূর্যালোকে শুকিয়ে নিয়ে পুয়ের চা প্রস্তুত হয়। চিনে এই চায়ের প্রচলন রয়েছে।
মাধ্যমিক ভূগোল - ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ - ভারতের কৃষি

কফির শ্রেণিবিভাগ করো।

কফি তিন ধরনের হয়। যেমন —

কফির নামকফির বৈশিষ্ট্য
আরবীয় কফি সর্বোৎকৃষ্ট এই কফির আদি বাসভূমি হল আরব উপদ্বীপের ইয়েমেন। আরবীয় কফি গাছ 9 -12 মিটার লম্বা হয় এবং এর পূর্ণতা প্রাপ্তির জন্য 7 বছর সময় লাগে।
রোবাস্টা কফিঅপেক্ষাকৃত নিকৃষ্ট মানের এই কফির আদি বাসভূমি হল পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকা। প্রায় 10 মিটার পর্যন্ত উঁচু এই কফি গাছের ফলগুলি পরিপক্ক হতে 10-11 মাস সময় লাগে।
লাইবেরীয় কফিপশ্চিম আফ্রিকার লাইবেরিয়ায় এই জাতীয় কফির চাষ হয়। তাই একে লাইব্রেরীয় কফি বলে। এই কফি গাছগুলি 20 মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। এক বিশেষ প্রজাতির লাইবেরীয় কফি হল ব্যারাকো। স্বাদে লাইবেরীয় কফি অন্যান্য ধরনের কফির তুলনায় অনেক নিরেস।

তুলোর শ্রেণিবিভাগ করো।

তুলোর আঁশের দৈর্ঘ্য অনুসারে তুলো চার প্রকার। যেমন —

তুলোর নামবৈশিষ্ট্য
অতিরিক্ত দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলোএই জাতীয় তুলোর আঁশ 35 মিমি ও তার বেশি দীর্ঘ হয়। সর্বোৎকৃষ্ট এই তুলো দিয়ে উন্নত মানের রিং-এ লাগানোর সুতো, পলিয়েস্টার তন্তুর সঙ্গে মিশিয়ে উচ্চ গুণমানের কাপড় প্রস্তুত করা হয়।
দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলোএই জাতীয় তুলোর আঁশের দৈর্ঘ্য 25-35 মিমির মধ্যে হয়। এই তুলো সাগরদ্বীপীয় তুলো নামেও পরিচিত।
মাঝারি আঁশযুক্ত তুলোএই জাতীয় তুলোর আঁশ 20-25 মিমির মধ্যে হয়।
ক্ষুদ্র আঁশযুক্ত তুলোএই জাতীয় তুলোর আঁশের দৈর্ঘ্য 20 মিমি-র কম হয়। ক্ষুদ্র আঁশযুক্ত তুলো গুণগত মানে অনেক নিকৃষ্ট, আঁশ মোটা ও খসখসে হয়।

ভারতে তুলো চাষের সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভারতে তুলো চাষের সমস্যা ও সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল —

সমস্যাসমস্যা সমাধানে গৃহীত ব্যবস্থা
প্রধানত মাঝারি ও ক্ষুদ্র আঁশযুক্ত তুলো জন্মায়, যা উন্নত মানের সুতিবস্ত্র উৎপাদনের অনুপযুক্ত।বিদেশ থেকে উন্নত বীজ এনে এবং দেশের গবেষণাগারগুলিতে উন্নত বীজ তৈরি করে দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলোর চাষ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে।
হেক্টরপ্রতি উৎপাদন অনেক কম। ভারতে তুলো উৎপাদনের পরিমাণ হেক্টর প্রতি মাত্র 532 কেজি। বল উইভিল পোকার উপদ্রব হেক্টর-প্রতি উৎপাদন কম হওয়ার একটি প্রধান কারণ।উন্নত যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক ও জলসেচ ব্যবস্থার প্রসার ঘটানো হচ্ছে।
তুলো চাষে প্রচুর মূলধনের দরকার হয়, যা সহজে পাওয়া যায় না।তুলো চাষে নিযুক্ত কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলিকে নির্দেশ প্রদান করেছে।

ভারতের প্রধান বাগিচা ফসল কী কী ও কোথায় উৎপন্ন হয়?

ভারতের প্রধান বাগিচা ফসলগুলি হল চা এবং কফি।

উৎপাদন অঞ্চল –

চা –
ভারতের শতকরা প্রায় 77.9 ভাগ চা পূর্ব ভারতের অসম ও পশ্চিমবঙ্গে উৎপন্ন হয়। অসমের দরং, শিবসাগর, লখিমপুর, এবং কাছাড় জেলা অর্থাৎ সমগ্র ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার ঢালু সমভূমি এবং তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে চা উৎপন্ন হয়। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার পার্বত্য অঞ্চল, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার ডুয়ার্স অঞ্চল এবং উত্তর দিনাজপুর জেলায় যথেষ্ট পরিমাণে চা উৎপন্ন হয়। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, ও কেরল রাজ্যে সামান্য পরিমাণে (20.2%) চা উৎপন্ন হয়।

কফি –
দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক (72.3%), কেরল (19.9%), ও তামিলনাড়ু (5.0%) রাজ্যগুলি কফি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে। কর্ণাটকের চিকামাগালুর, কোদাগু, ঈমান, শিভামোগা এবং মহীশূর জেলা; কেরলের পালাক্কাড়, ওয়াইনাড়, ইদুক্কি, কোল্লাম প্রভৃতি জেলা; এবং তামিলনাড়ুর মাদুরাই, সালেম, এবং কোয়েম্বাটোর জেলায় কফি উৎপন্ন হয়।

দক্ষিণ ভারতে কফি উৎপাদন বেশি হয় কেন?

দক্ষিণ ভারতের দক্ষিণ কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের পার্বত্য অঞ্চল এবং তামিলনাড়ু ও কেরলের পার্বত্য অঞ্চলে কফি উৎপাদনের পরিমাণ খুব বেশি হওয়ার কারণগুলি হল –

  1. আবহাওয়া – এই অঞ্চলের আবহাওয়া সারাবছরই উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে। উষ্ণতা গড়ে 20-30°সে এবং বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাত 150-250 সেমি পর্যন্ত হয়, যা কফি চাষের পক্ষে আদর্শ।
  2. মাটি – এই অঞ্চলে কফি চাষের পক্ষে উপযুক্ত লাভাজাত উর্বর দোআঁশ মাটি দেখা যায়।
  3. ভূপ্রকৃতি – এই অঞ্চলে পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি থাকায় ঢালু পাহাড়ি ঢালে প্রায় 800-1600 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত কফির বাগিচাগুলি গড়ে উঠেছে। পাহাড়ি ঢালে বৃষ্টির জল জমতে না পারায় কফির চাষ খুব ভালো হয়।

ভারতীয় কৃষিতে সবুজ বিপ্লব বলতে কী বোঝা হয়?

স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী সময়ে ভারতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য 1960-এর দশকের শেষ থেকে কৃষিকাজে অত্যন্ত আধুনিক পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু হয়। উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের প্রয়োগ, ট্র্যাক্টর, হারভেস্টর প্রভৃতি আধুনিক কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার, এবং জলসেচ-ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়। এইসব ব্যবস্থার ফলে 1968 থেকে 1978 সালের মধ্যে ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে, বিশেষত পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় গম উৎপাদনে এবং তামিলনাড়ু রাজ্যে ধান উৎপাদনে যে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে তাকেই সবুজ বিপ্লব আখ্যা দেওয়া হয়।

উদাহরণস্বরূপ, 1960-61 সালে সমগ্র ভারতে যেখানে গমের উৎপাদন ছিল 1 কোটি 10 লক্ষ টন, 1980-81 সালে তা তিনগুণেরও বেশি বেড়ে হয় 3 কোটি 63 লক্ষ টন।

কৃষিতে সবুজ বিপ্লবের সুবিধা ও অসুবিধা লেখো

সুবিধা –

  1. খাদ্যশস্যের ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধি।
  2. কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি।
  3. কৃষিক্ষেত্রে পোকামাকড়ের উপদ্রব হ্রাস।
  4. জাতীয় আয়ের বৃদ্ধি।
  5. বিদেশ থেকে খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ এবং দেশ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ম্ভর হওয়া।

অসুবিধা –

  1. ক্রমাগত বর্ধিত হারে রাসায়নিক সার প্রয়োগে মাটির গুণমান কমে যাওয়া।
  2. কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশকসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রভাবে উদ্ভিদ-বন্ধু অনেক পাখি ও পোকামাকড়ের বিলুপ্তি।
  3. ভূগর্ভস্থ জলের দূষণ।
  4. নতুন ধরনের সংকর বীজের ব্যবহারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ-জিন হারিয়ে যাওয়া, যার ফলে বীজ বৈচিত্র্যের ওপর প্রভাব পড়া।

শীতকালে ভারতে গম চাষ হয় কেন?

অথবা, গম নাতিশীতোয় জলবায়ুর ফসল হলেও উত্তর-পশ্চিম ভারতে কেন এত গমের উৎপাদন হয়?

গম ভারতের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য। গম নাতিশীতোয় জলবায়ু অঞ্চলের ফসল হলেও ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে শীতকালে প্রচুর গম উৎপাদন করা হয়। এর কারণগুলি হল —

  • উষ্ণতা – গম চাষের জন্যে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হল 14-20°সে। ভারতে শীতকালে ওই ধরনের তাপমাত্রা দেখা যায়।
  • জলের প্রাপ্যতা – সাধারণত বার্ষিক 50-100 সেমি বৃষ্টিপাত গম চাষের পক্ষে আদর্শ। উত্তর-পশ্চিম ভারতে শীতকালে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে 5-15° সে বৃষ্টিপাত হয়। এই পরিমাণ বৃষ্টিপাত গম চাষের জন্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় ভারতের সর্বত্র জলসেচের সাহায্যে গমের চাষ করা হয়।
  • রোদ ঝলমলে শীতল আবহাওয়া – গম চাষের প্রথম অবস্থায় আর্দ্র ও শীতল আবহাওয়া, শিষ বেরোনোর সময় শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়া, গমের দানার পুষ্টির সময় হালকা বৃষ্টি এবং গম পাকার সময় রোদ ঝলমলে শুষ্ক ও শীতল আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়। ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শীতকালে এই ধরনের আবহাওয়া দেখা যায়।
  • তুষারমুক্ত দিন – গম চাষের জন্য 110টি তুষারমুক্ত দিনের প্রয়োজন হয়। ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শীতকালে যথেষ্ট শীতল আবহাওয়া থাকলেও তুষারপাত হয় না। ফলে ভারতে শীতকালে গম চাষ যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেছে।

ভারতীয় কৃষির তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখো।

ভারত কৃষিপ্রধান দেশ। ভারতীয় কৃষির তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল —

  • জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি – ভারতীয় কৃষকেরা তাদের নিজস্ব প্রয়োজন মেটাবার জন্য বেশিরভাগ ফসল উৎপাদন করে। তাই এই কৃষিকাজ জীবিকাসত্তাভিত্তিক। উৎপাদিত শস্যের বেশিরভাগটাই নিজেদের প্রয়োজনে লাগে বলে বিক্রয়যোগ্য রপ্তানিযোগ্য উদ্বৃত্ত বিশেষ থাকে না।
  • খাদ্যশস্য উৎপাদন অধিক গুরুত্বপূর্ণ – ভারতীয় কৃষিতে খাদ্যশস্য উৎপাদন বাণিজ্যিক ফসলগুলি উৎপাদন অপেক্ষা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দেশের বপিত জমির 75 শতাংশেরও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। ভারতের কৃষিজাত দ্রব্যের মোট মূল্যের 52 শতাংশেরও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদন থেকে পাওয়া যায়।
  • কৃষিতে পশুশক্তির প্রাধান্য – ভারতের কৃষিতে এখনও সেভাবে যান্ত্রিকীকরণ হয়নি। বলদ গোরু, মহিষ ও অন্যান্য পশুশক্তির ব্যবহার ভারতীয় কৃষির বৈশিষ্ট্য। বিদেশে যেখানে ট্র্যাক্টর, হারভেস্টার, হেলিকপ্টার ও অন্যান্য যন্ত্র ব্যবহৃত হয়, ভারতে এখনও প্রাচীন পশুশক্তির ব্যবহার হয়ে চলেছে।

ভারতীয় কৃষির তিনটি সমস্যা আলোচনা করো।

ভারতীয় কৃষি নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে তিনটি হল —

  • হেক্টরপ্রতি কম উৎপাদন – ভারতীয় কৃষিতে শস্য উৎপাদনের হার খুব কম। সীমিত জলসেচ, সার, কীটনাশকের স্বল্প ব্যবহার, কৃষকের স্বল্প কৃষিজ্ঞান, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অনীহা এসবের কারণে ভারতে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। ভারতে হেক্টরপ্রতি ধান উৎপাদন হয় 2424 কেজি (2013-14)।
  • কৃষিজমির মালিকানা – ভারতের অধিকাংশ কৃষিজমি অতি অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে আছে। বেশিরভাগ কৃষক ভূমিহীন, না হয় প্রান্তিক কৃষক। কৃষিজমি যদি কৃষকের না হয় তবে ফসল উৎপাদনে গতি আসে না।
  • প্রকৃতিনির্ভর কৃষি – ভারতের কৃষিকাজ মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল। মৌসুমি বায়ু অনিয়মিত ও অনিশ্চিত হওয়ায় খরা বা বন্যার ফলে প্রায় প্রতিবছর ফসল বিনষ্ট হয়।

ভারতীয় কৃষির সমস্যাগুলিকে কীভাবে সমাধান করা যায়?

ভারতীয় কৃষির সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলি নেওয়া যেতে পারে —

  • উচ্চফলনশীল বীজের অধিক ব্যবহার – কৃষিতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ভারতে উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। এ বিষয়ে ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ (Indian Council of Agricultural Research) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাতীয় বীজ নিগম, ভারতের রাজ্য খামার নিগম, অনেকগুলি রাজ্য বীজ নিগম এবং শতাধিক বেসরকারি বীজ কোম্পানি একাজে যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে ভারতে প্রায় ১০০টি উচ্চফলনশীল ধান বীজ এবং 250টি উচ্চফলনশীল গম বীজ ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • রাসায়নিক সারের ব্যবহার বৃদ্ধি – কৃষিতে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ভারতে রাসায়নিক সার হিসেবে নাইট্রোজেন, ফসফেট এবং পটাশ সার ব্যবহার করা হয়। ভারতে অনেকগুলি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা রাসায়নিক সার উৎপাদন করে। তবে চাহিদা দেশজ উৎপাদন অপেক্ষা বেশি হওয়ায় প্রচুর সার আমদানিও করা হয়। ভারতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনের হারও বাড়ছে।
  • মৃত্তিকা সংরক্ষণ – এই কর্মসূচির অধীনে সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ, ধাপ চাষ, উন্নত কৃষি ব্যবস্থার প্রয়োগ করে মৃত্তিকা ক্ষয় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মৃত্তিকা সংরক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয় মৃত্তিকা এবং জল সংরক্ষণ বোর্ড গঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি উদ্যোগে মৃত্তিকা সংরক্ষণে ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে।

ভারতে কোথায় কোথায় চা উৎপন্ন হয়?

ভারতে চায়ের চাষ প্রধানত উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ ভারত এবং উত্তর ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে হয়। ভারতের মোট চা উৎপাদনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি উৎপাদিত হয় অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। 2015-16 সালের হিসাব অনুযায়ী, ভারতে মোট চায়ের উৎপাদন ছিল 123.31 কোটি কেজি। চা উৎপাদনে ভারতের স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (চীনের পরে)। বিশ্বের মোট চা উৎপাদনের 22.68% (2016) ভারতে উৎপাদিত হয়।

রাজ্যভিত্তিক চা উৎপাদক জেলা ও উল্লেখযোগ্য তথ্য –

  1. অসম
    • উৎপাদক জেলা – দরং, গোয়ালপাড়া, কামরূপ, লখিমপুর, ডিব্ৰুগড়, নগাঁও, শিবসাগর, কাছাড়, কার্বি আংলং
    • উল্লেখযোগ্য তথ্য – i. ভারতের শীর্ষস্থানীয় চা উৎপাদক রাজ্য। ii. 307.08 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়। iii. 65.30 কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে (2015-16)।
  2. পশ্চিমবঙ্গ
    • উৎপাদক জেলা – দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর
    • উল্লেখযোগ্য তথ্য – i. ভারতের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চা উৎপাদক রাজ্য। ii. 140.44 হাজার হেক্টর জমিতে চা চাষ হয়। iii. 32.97 কোটি কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে (2015-16)।

তন্তু ফসল ও বাগিচা ফসলের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

তন্তু ফসল ও বাগিচা ফসলের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –

বিষয়তন্তু ফসলবাগিচা ফসল
ব্যবহারএই ধরনের ফসল থেকে যে তন্তু পাওয়া যায় তা দিয়ে দড়ি, কাপড়, কাগজ ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়।এই ধরনের ফসল সাধারণত ফল, পানীয় এবং মশলারূপে ব্যবহার করা হয়।
ফসল প্রাপ্তিএই জাতীয় ফসল একবার রোপণ করলে মাত্র একবারই ফসল পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছর ফসল পাওয়ার জন্য নতুন করে চারাগাছ রোপণ করতে হয়। যেমন – পাট, তুলো, শন ও মেস্তা।এই জাতীয় ফসলের গাছ একবার রোপণ করলে বহুবছর তা থেকে ফসল পাওয়া যায়। যেমন – চা, কফি, রবার, ফল ও মশলা।
ফসলের সঞ্চয়এই ধরনের ফসল দীর্ঘদিন সঞ্চয় করা যায়।এই ধরনের ফসলের অধিকাংশই দীর্ঘদিন সঞ্চয় করা যায় না।

খরিফ শস্য ও রবি শস্যের মধ্যে পার্থক্য লেখো

খরিফ শস্য ও রবি শস্যের মধ্যে পার্থক্যগুলি হলো –

পার্থক্যের বিষয়খরিফ শস্যরবি শস্য
চাষের মরশুমজুন মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে যেসব শস্যের চাষ হয়, সেগুলিকে খরিফ শস্য বলা হয়। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ খরিফ শস্যের চাষ শুরু হয়। উদাহরণ – ধান, আখ, তুলা, ভুট্টা প্রভৃতি।অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে যেসব শস্যের চাষ হয়, সেগুলিকে রবি শস্য বলা হয়। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাবর্তনকালীন সময়ে অধিকাংশ রবি শস্যের চাষ আরম্ভ হয়। উদাহরণ – গম, সরিষা, ছোলা, যব প্রভৃতি।
ফসল কাটার সময়শীতের শুষ্ক দিনে এই শস্য কাটা হয়।এই শস্য কাটা হয় বসন্তকালে।

ধাপচাষ ও ফালিচাষের মধ্যে পার্থক্য লেখো

ধাপচাষ ও ফালিচাষের মধ্যে পার্থক্যগুলি হলো –

পার্থক্যের বিষয়ধাপচাষফালিচাষ
ধারণাপার্বত্য অঞ্চলের ঢালু অংশে ছোটো ছোটো সিঁড়ি বা ধাপ কেটে যে চাষ করা হয়, তাকে ধাপচাষ বলা হয়।অনেক সময় ভূমির ঢালের আড়াআড়িভাবে লম্বা ফালি তৈরি করে সেই ফালির মধ্যে শস্য রোপণ করে যে চাষ-আবাদ করা হয়, তাকে ফালিচাষ বলা হয়।
চাষের প্রকৃতিএই ধরনের চাষের ক্ষেত্রে পাহাড়ের ঢালে ধাপ তৈরি করে শস্য চাষ করা হয়।এই ধরনের চাষের ক্ষেত্রে জমিতে আড়াআড়িভাবে লম্বা ফালি তৈরি করে শস্য চাষ করা হয়।
অঞ্চলউচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের ঢালে এই ধরনের চাষ করা হয়।পর্বতের পাদদেশীয় অঞ্চলে এই ধরনের চাষ করা হয়।

পাঞ্জাব, হরিয়ানা রাজ্যে কৃষি উন্নতির প্রধান তিনটি কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করো।

পাঞ্জাব-হরিয়ানায় কৃষিসমৃদ্ধির কারণসমূহ

ভারতের কৃষিক্ষেত্রে দুটি বিশেষ অঞ্চল তথা রাজ্য পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য নাম। ভারতের এই দুটি অঞ্চলে কৃষি উন্নতির কারণ হলো –

  1. মাটি – এই অঞ্চলের ভূমিভাগ মূলত সিন্ধুর পাঁচটি উপনদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে গঠিত। সুতরাং নদীবাহিত পলিমাটি হওয়ায় এখানে মাটি উর্বর। আবার বহু জায়গায় মাটিতে বালির ভাগ বেশি হলেও এর মধ্যে নানা খনিজ মৌল বেশি থাকায় ফসল উৎপাদনের হার খুব বেশি।
  2. জলসেচ – ভারতের সর্ববৃহৎ জলসেচ প্রকল্পটি এই দুই রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেছে। ভাকরা-নাঙ্গাল পরিকল্পনার মাধ্যমে বিস্তৃত জমিতে জলসেচ করা যায়। সারাবছর ধরে জলসেচ করা সম্ভব হয় বলে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় বছরে তিন-চার বার চাষ হয়।
  3. উচ্চফলনশীল বীজ – ড. নরম্যান বোরলগের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে প্রথম উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার শুরু হয়। ধান, গম, তুলো ও অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রে উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার এই অঞ্চলকে কৃষি উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছে।

ভারতে কৃষিজ ফসলের স্বল্প উৎপাদনশীলতার কারণ কী?

স্বল্প উৎপাদনশীলতা ভারতীয় কৃষির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এর কারণ —

  1. ছোট আয়তনের কৃষিজোত – ভারতের অধিকাংশ কৃষিজোত আয়তনে ছোট। সেজন্য ভারতে কৃষিযন্ত্রপাতির সীমিত ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
  2. উচ্চফলনশীল বীজের সীমিত ব্যবহার – ভারতীয় কৃষিতে এখনও উচ্চফলনশীল বীজের ব্যবহার যথেষ্ট কম। এই কারণে হেক্টরপ্রতি উৎপাদনের হার কম।
  3. কীটনাশক ও সারের সীমিত ব্যবহার – ভারতীয় কৃষিতে সীমিত কীটনাশক ও সারের ব্যবহার অত্যন্ত কম। এতে কৃষিজ ফসলের উৎপাদনশীলতা বেশ কম।
  4. জলসেচের অসুবিধা – ভারতে সব কৃষিজমি এখনও জলসেচের আওতায় আসেনি। এই অসুবিধার জন্য প্রধানত বৃষ্টির জলের ওপর নির্ভর করে ভারতে কৃষিকাজ হয়ে থাকে।
  5. জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি – ভারতীয় কৃষকরা নিজেদের খাদ্যের চাহিদা মেটানোর উদ্দেশ্যে চাষাবাদ করে। এতে উৎপাদন স্বল্প হয়। ফলে উদ্বৃত্ত ফসলের পরিমাণ খুব কম হয় বা উদ্বৃত্ত থাকে না। তাই কৃষি থেকে কৃষকরা লাভবান হয় না।

অসম চা চাষে উন্নত কেন?

অসমে ভারতের সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদিত হয়। অসম চা চাষে এত উন্নত হওয়ার কারণগুলি হলো —

  1. অনুকূল জলবায়ু – চা ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলের কৃষিজ ফসল। এই রাজ্যে বছরে মোট ২০০ সেমি বৃষ্টিপাত হয় এবং ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করে, যা চা উৎপাদনে যথেষ্ট সহায়ক। এছাড়া প্রতি মাসেই কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে।
  2. ঢালু ভূমিভাগ – এই রাজ্যের বহু স্থানের ভূমিভাগ উঁচুনীচু ও ঢালু। এরূপ ঢালু জমি চা চাষের উপযোগী।
  3. উপযুক্ত মৃত্তিকা – অসমের মাটি অম্লধর্মী পলিমাটি। এই মাটি চা চাষের পক্ষে আদর্শ।
  4. অন্যান্য – এ ছাড়া, বিনিয়োগকারীরা চা বাগিচাগুলিতে প্রচুর মূলধন বিনিয়োগ করেছে। গুয়াহাটি চা নিলাম কেন্দ্র, কলকাতা বন্দরের সুবিধা, পরিকাঠামোয় উন্নতি অসমে চা চাষে উন্নতি ঘটিয়েছে।

ভারতে বাণিজ্যিক কৃষির তুলনায় জীবিকা-সত্তাভিত্তিক কৃষির প্রাধান্য বেশি কেন?

জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা হলো শুধু নিজেদের বা স্থানীয় প্রয়োজন মেটানোর জন্য কৃষিকাজ করা। ভারতে এই ধরনের কৃষি পদ্ধতি বেশি প্রচলিত। কারণ —

  1. বিপুল জনসংখ্যার চাপ – জমির ওপর জনসংখ্যার বিপুল চাপ থাকায় কৃষির সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অথবা নতুন কৃষিব্যবস্থা গড়ে তোলার জমি পাওয়া যায় না।
  2. ক্ষুদ্রায়তনের জমি – জমিগুলি ছোটো বা ক্ষুদ্র আয়তনের।
  3. জমির মালিকানা – জমিগুলি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। সমবায় প্রথায় চাষ প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে।
  4. ফসল উৎপাদনের উদ্দেশ্য – কৃষক কেবল খাদ্যশস্য উৎপাদনের দিকে নজর দেয়, অর্থকরী বা বাণিজ্যিক ফসল উৎপাদনে আগ্রহ কম।
  5. প্রাচীন কৃষি পদ্ধতি – কৃষিপদ্ধতি প্রাচীন ও অনুন্নত।
  6. মূলধনের অভাব – কৃষকদের মধ্যে প্রান্তিক ও দরিদ্র কৃষকের সংখ্যা বেশি। এই শ্রেণির কৃষকদের হাতে কৃষিতে বিনিয়োগ করার মতো মূলধনের অভাব রয়েছে। এই সমস্যাগুলির জন্য আধুনিক পদ্ধতিতে মূলধন বিনিয়োগ করে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কৃষিকাজ করা হয় না। তাই ভারতে জীবিকাসত্তাভিত্তিক কৃষির প্রাধান্য বেশি।

শস্যাবর্তন কৃষি বলতে কী বোঝ?

একই জমিকে বছরের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন শস্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করার পদ্ধতিকে শস্যাবর্তন কৃষি বলা হয়। যেহেতু বিভিন্ন প্রকার শস্য মাটির ভিন্ন ভিন্ন পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে তাই কোনো এক ধরনের পুষ্টি ক্রমাগত নিঃশেষিত হয় না। এই কারণে শস্যাবর্তনের মাধ্যমে জমির স্বাভাবিক উর্বরতা রক্ষিত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জমিতে প্রধানত নাইট্রোজেনের জোগান অব্যাহত রাখতে, ভারতে অন্যান্য ফসলের সঙ্গে নিয়মিতভাবে ডালজাতীয় ফসলের চাষ হয়। এটি শস্যাবর্তন কৃষির একটি উদাহরণ।

ভারতের কার্পাস চাষের সমস্যা কী?

ভারতে কার্পাস চাষের কয়েকটি সমস্যা হলো —

  1. উৎকৃষ্ট মানের কার্পাসের অভাব – ভারতে উৎপন্ন অধিকাংশ কার্পাস মাঝারি ও ছোটো আঁশযুক্ত। এই ধরনের কার্পাস দিয়ে উন্নত মানের সুতিবস্ত্র উৎপাদন করা যায় না। তাই উন্নত মানের সুতিবস্ত্র উৎপাদনের জন্য দীর্ঘ আঁশযুক্ত কার্পাস বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
  2. পোকার আক্রমণ – ভারতে কার্পাস গাছে বল উইভিল পোকার উপদ্রব খুব বেশি হয়। এই পোকা ফসলকে নষ্ট করে দেয়।
  3. হেক্টর প্রতি উৎপাদন কম – উচ্চফলনশীল বীজের অভাব, রাসায়নিক সারে ও কীটনাশকের সীমিত প্রয়োগ ইত্যাদি কারণে ভারতে হেক্টর প্রতি তুলোর উৎপাদন মাত্র ৫৩২ কেজি (২০১৩-১৪), যা উন্নত দেশগুলির তুলনায় যথেষ্ট কম।
  4. আধুনিক কৃষিযন্ত্রপাতির সীমিত ব্যবহার – এদেশে তুলো চাষে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার খুব কম।

ভারতের কৃষির গুরুত্ব লেখো।

ভারতের কৃষির গুরুত্বগুলি নিম্নরূপ —

  1. কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র – কৃষি ভারতের কর্মসংস্থানের প্রধানতম ক্ষেত্র। কর্মসংস্থানের সুযোগের দিক থেকে এককভাবে কৃষিক্ষেত্রের অবদান সবচেয়ে বেশি।
  2. খাদ্যের উৎস – ভারতের বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্যের জোগান দেয় ভারতীয় কৃষি।
  3. জাতীয় আয়ের উৎস – কৃষি ভারতের জাতীয় আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।
  4. শিল্পে কাঁচামালের জোগান – চা, কফি, সুতিবস্ত্র বয়ন, পাটবয়ন, চিনি, ভোজ্য তেল, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি শিল্পের কাঁচামাল কৃষি থেকেই পাওয়া যায়। কৃষিজ কাঁচামাল জোগানের ওপর এই শিল্পগুলির উন্নতি ও ক্রমবিকাশ নির্ভর করে।
  5. বিদেশী মুদ্রা আয়ের উৎস – ভারত পাটজাত সামগ্রী, চা, কফি, চিনি, কাজুবাদাম, তামাক প্রভৃতি কৃষিজাত সামগ্রী রপ্তানি করে মূল্যবান বিদেশী মুদ্রা আয় করে।
  6. ব্যবসা ও পরিবহণ ব্যবস্থার প্রসার – কৃষি ভারতের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ব্যবসা বাণিজ্য ও পরিবহণ ব্যবস্থার প্রসারে সাহায্য করে। কৃষিজ সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় এবং রেলপথ ও সড়কপথে খাদ্যশস্য ও শিল্পের কাঁচামাল পরিবহণ করা হয়। এছাড়া, শিল্পজাত পণ্যের বাজার সৃষ্টি ও সরকারি আয়ের একটি প্রধান উৎস হল ভারতীয় কৃষি।

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” এর “ভারতের কৃষি” বিভাগ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক ও কম্পিটিটিভ পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনার প্রস্তুতির জন্য সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকে, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি সহায়তা করার চেষ্টা করবো। এছাড়া, এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন যাদের এটি উপকারী হতে পারে। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন