আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করব। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় এই রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। একবার ভালোভাবে আয়ত্ত করলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি — যেকোনো ক্লাসের পরীক্ষাতেই তোমরা এই রচনার প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে!

পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা
ভূমিকা – মানুষের জানার শেষ নেই। অনন্ত জিজ্ঞাসা, অন্তহীন জ্ঞান, আত্মার আনন্দকে ধরে রাখে গ্রন্থ। যেখানে গ্রন্থ সংগ্রহ করে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়, তাকে বলে পাঠাগার। তাই পাঠাগারে সংরক্ষিত থাকে মানুষের চিন্তা, জ্ঞান, ধ্যানধারণা। পাঠাগারে বিভিন্ন ধরনের গ্রন্থ থাকে। তাই গ্রন্থাগার যেন নীরব এক জ্ঞানসমুদ্র।
পাঠাগারের গুরুত্ব – মানুষের মানসিক বিকাশের জন্য গ্রন্থের প্রয়োজন। তাই বলা যায় দেহের পুষ্টির জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন, তেমনি মনের বিকাশের জন্য গ্রন্থের প্রয়োজন। আমাদের জ্ঞানের চাহিদার শেষ নেই। সেই জ্ঞানের চাহিদার জন্য আমরা পাড়ায় পাড়ায় পাঠাগার তৈরি করি। এই পাঠাগারে বিভিন্ন ধরনের পুস্তক পাওয়া যায়। যেমন – ভূগোল, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি, বিজ্ঞান, জানবার কথা ইত্যাদি। আসলে একজন মানুষের পক্ষে সব বই কিনে পড়া সম্ভব নয়। তাই পাড়ায় পাঠাগার থাকলে সেখানে গিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো বই পড়া যায়। তা ছাড়া পাড়ার মধ্যে অনেক বয়স্করা থাকেন যারা সেখানে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে পারেন। তাঁদের সময় কিছুটা অতিবাহিত হয় এবং একাকিত্ব কাটে। নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পড়ার শেষে সাহিত্যবিষয়ক আলোচনা হয়, যার মাধ্যমে জ্ঞানের প্রসার ঘটে।
সামাজিক উপকারিতা – অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার আগ্রহ সবসময় আমাদের মধ্যে থাকে। তার জন্য প্রয়োজন গ্রন্থ। যেখানে গ্রন্থ বা পাঠ্যবই থাকে সেখানে সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ এসে জড়ো হয়। এরা পড়ার আনন্দে পাঠাগারে আসেন। বর্তমানে শহর কলকাতায় অনেক পাঠাগার রয়েছে যেখানে গিয়ে বসে বই পড়া যায় – যেমন ‘রামমোহন লাইব্রেরি’, ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’, ‘এশিয়াটিক সোসাইটি’, ‘চৈতন্য লাইব্রেরি’, ‘ইম্পিরিয়াল লাইব্রেরি’ ইত্যাদি। এইসব পাঠাগারে নানা দুষ্প্রাপ্য বই পাওয়া যায়। যেখান থেকে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি।
পাঠাগারের অবদান – পাঠাগারের গুরুত্ব অপরিসীম। পাঠাগারের দায়িত্ব হল পাঠকের চাহিদা ও রুচি অনুযায়ী গ্রন্থ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা। আধুনিক যুগে অনেক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এসে গেছে। তার সাহায্যে আমরা পুস্তক সংগ্রহ করতে পারি। তা ছাড়া পাঠকের মতামত নেওয়া যায়। তাদের চাহিদা অনুসারে পাঠাগারে পুস্তক সংগ্রহ করা যেতে পারে।
উপসংহার – পাঠাগারে সবসময় শান্তি বজায় রাখা দরকার। অনেক পাঠক আছেন যারা পুস্তকের প্রতি যত্নবান হন না। অসৎ পাঠক কালি দিয়ে বইয়ের পাতা নষ্ট করেন। এটা এক সামাজিক অপরাধ। এই দিকে পাঠাগার-কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি থাকতে হবে। পাঠাগারই পারে মানুষকে প্রকৃত শান্তি দিতে। নানারকম গ্রন্থ পড়ে যদি পাঠক তৃপ্ত হন তবেই পাঠাগারের সার্থকতা। পাঠাগারই পারে মানুষকে সঠিকভাবে শিক্ষিত করে মানবতার বন্ধনে আবদ্ধ রাখতে।
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ‘পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা‘ প্রবন্ধ রচনাটি নিয়ে আলোচনা করেছি। মাধ্যমিক বা স্কুল পরীক্ষায় ‘একটি অচল পয়সার আত্মকথা‘ রচনাটি প্রায়ই আসে এবং এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।





মন্তব্য করুন