এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাস পর্যালোচনায় এর কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে।
শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য
- প্রথমত – শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায়ের মানুষরাই সাধারণত শ্রমিক আন্দোলনগুলিতে নেতৃত্ব প্রদান করতেন। তাদের ওপর আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি অনেকাংশে নির্ভর করত এবং অনেকক্ষেত্রেই তাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব শ্রমিক আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।
- দ্বিতীয়ত – ইতিহাসের এই পর্বে গড়ে ওঠা শ্রমিক আন্দোলনগুলি ছিল শান্তিপূর্ণ। ধর্মঘট, কর্মবিরতি ইত্যাদি ছিল তাদের আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার। শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে হিংসাত্মক ঘটনার প্রকাশ ছিল ব্যতিক্রম মাত্র। এমনকি কমিউনিস্ট নেতারাও শ্রমিকদের নিয়ে কোনো জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তোলেননি।
- তৃতীয়ত – ধর্ম ও বর্ণের ভেদ এবং আঞ্চলিক বৈষম্য ভারতের শ্রমিক আন্দোলনকে দুর্বল করে দিয়েছিল। অনেকক্ষেত্রেই শ্রমিক শ্রেণি তাদের অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়ার কথা ভুলে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে লিপ্ত হতেন।
- চতুর্থত – নিজেদের অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের পাশাপাশি জাতীয় সংগ্রামের মূল স্রোতেও শ্রমিক শ্রেণি অবগাহন করেছিল। ইংরেজ সরকারও অনেক সময় শ্রমিকদের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ভূমিকায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিল। কিন্তু জাতীয়তাবাদী নেতারাই অনেক সময় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘবদ্ধভাবে সংগ্রাম করতে অনিচ্ছুক ছিল। অনেক সময় জাতীয় নেতৃবৃন্দের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপের ফলেই শ্রমিক আন্দোলন মাঝপথে থেমে যেত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্ব কারা দিতেন?
শহুরে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও বুদ্ধিজীবীরা সাধারণত নেতৃত্ব দিতেন, কিন্তু তাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব আন্দোলনকে দুর্বল করত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শ্রমিক আন্দোলনের প্রকৃতি কেমন ছিল?
আন্দোলনগুলি মূলত শান্তিপূর্ণ ছিল—ধর্মঘট, কর্মবিরতি ইত্যাদি ছিল প্রধান পদ্ধতি। হিংসাত্মক ঘটনা ছিল খুবই বিরল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শ্রমিক আন্দোলনে ধর্ম ও বর্ণের প্রভাব কী ছিল?
ধর্ম, বর্ণ ও আঞ্চলিক বিভেদ শ্রমিক ঐক্যকে দুর্বল করত। অনেক সময় শ্রমিকরা অর্থনৈতিক দাবি ভুলে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শ্রমিক আন্দোলন কি শুধু অর্থনৈতিক দাবিতেই সীমাবদ্ধ ছিল?
না, শ্রমিকরা শুধু মজুরি-কাজের ঘণ্টার দাবিই করত না, বরং জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হয়েছিল। তবে জাতীয় নেতারা প্রায়ই শ্রমিক সংগ্রামকে পুরোপুরি সমর্থন করতেন না।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার শ্রমিক আন্দোলনকে কীভাবে দেখত?
ব্রিটিশ সরকার শ্রমিকদের সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী ভূমিকায় উদ্বিগ্ন ছিল এবং কখনও কখনও দমনমূলক ব্যবস্থা নিত।
কমিউনিস্ট নেতাদের ভূমিকা কী ছিল?
কমিউনিস্ট নেতারাও এই সময়ে জঙ্গি পথ অবলম্বন করেননি, বরং সংগঠিত আন্দোলনেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের জাতীয় নেতাদের ভূমিকা কী ছিল?
কংগ্রেস ও অন্যান্য জাতীয় নেতারা প্রায়ই শ্রমিক আন্দোলনকে অনিয়ন্ত্রিত বা বিপজ্জনক মনে করতেন, ফলে তাদের হস্তক্ষেপে অনেক আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শ্রমিক আন্দোলনের প্রধান সীমাবদ্ধতাগুলি কী ছিল?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের শ্রমিক আন্দোলনের প্রধান সীমাবদ্ধতাগুলি ছিল –
1. নেতৃত্বে মধ্যবিত্তের আধিপত্য ও ঐক্যহীনতা,
2. ধর্ম-বর্ণ বিভেদ,
3. জাতীয় নেতাদের অনীহা,
4. ব্রিটিশ দমননীতি।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন