সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

Gopi

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
Contents Show

সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

কৃষিপ্রধান দেশ ভারতের জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ কৃষক সমাজকে গণআন্দোলনে শামিল করার সচেতন প্রচেষ্টা শুরু হয় মোটামুটিভাবে 1920-1930 -এর দশকে। সমাজতান্ত্রিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ কংগ্রেসের কিছু যুব নেতা কৃষক আন্দোলনগুলিকে সংগঠিত করতে প্রয়াসী হন। ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে আবির্ভূত হয় ‘সারাভারত কিষান সভা’।

সারা ভারত কিষান সভার প্রতিষ্ঠা –

1930 -এর দশকের গোড়া থেকেই বাংলা, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ প্রভৃতি অঞ্চলে প্রাদেশিক কিষান সভা গড়ে উঠতে থাকলেও 1936 খ্রিস্টাব্দেই লক্ষ্ণৌতে ‘নিখিল ভারত কিষান সভা’র প্রথম অধিবেশন বসে, সভাপতি মনোনিত হন স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী আর সম্পাদক নিযুক্ত হন এন. জি. রঙ্গ।

সারা ভারত কিষান সভার উদ্দেশ্য –

1936 খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে সারাভারত কিষান সভার তরফ থেকে যে ইস্তাহার প্রকাশিত হয়, তা থেকে এই সংগঠনের উদ্দেশ্যগুলি সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে –

  • জমিদারি ও মহাজনি প্রথার বিলোপ,
  • ভূমি রাজস্ব ও খাজনার পরিমাণ হ্রাস,
  • বেগার প্রথার অবসান,
  • অরণ্যচারীদের বনজ সম্পদ আহরণের চিরাচরিত অধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা,
  • সেচ ব্যবস্থার প্রসার প্রভৃতি দাবি আদায়, এবং
  • জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে কৃষক শ্রেণির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করা।

সারা ভারত কিষান সভার মন্তব্য –

ভারতে কৃষক আন্দোলনের ইতিহাসে কিষান সভার প্রতিষ্ঠা এক স্মরণীয় ঘটনা। এর মাধ্যমে চিরাচরিত ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন সূচিত না হলেও এর দ্বারা কৃষক শ্রেণির রাজনৈতিক সচেতনতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায় এবং তারা একটি সংঘবদ্ধ শ্রেণিরূপে আবির্ভূত হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

সারা ভারত কিষান সভা কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

সারা ভারত কিষান সভা (নিখিল ভারত কিষান সভা) আনুষ্ঠানিকভাবে 1936 সালে লক্ষ্ণৌতে প্রথম অধিবেশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।

কিষান সভার প্রতিষ্ঠাতা বা প্রধান নেতারা কারা ছিলেন?

1. প্রথম সভাপতি – স্বামী সহজানন্দ সরস্বতী।
2. প্রথম সম্পাদক – এন. জি. রঙ্গা।

কিষান সভা গঠনের পেছনে মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?

কিষান সভা গঠনের পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল –
1. জমিদারি ও মহাজনি প্রথার বিলোপ।
2. ভূমি রাজস্ব ও খাজনা কমানো।
3. বেগার প্রথা (জবরদস্তি শ্রম) বন্ধ করা।
4. কৃষকদের বনজ সম্পদ ব্যবহারের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
5. সেচ সুবিধার উন্নয়ন।
6. জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে কৃষকদের সম্পৃক্ত করা।

কিষান সভার প্রথম অধিবেশন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

প্রথম অধিবেশন 1936 সালে লক্ষ্ণৌতে অনুষ্ঠিত হয়।

কিষান সভা গঠনের পটভূমি কী ছিল?

1920-1930 -এর দশকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছিল। সমাজতান্ত্রিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ কংগ্রেসের কিছু যুব নেতা কৃষকদের সংগঠিত করার জন্য এই সভা গঠন করেন।

কিষান সভার ইস্তাহার (ঘোষণাপত্র) কবে প্রকাশিত হয়?

1936 সালের আগস্ট মাসে কিষান সভার ইস্তাহার প্রকাশিত হয়, যেখানে তাদের দাবিগুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়।

কিষান সভার প্রভাব কী ছিল?

কিষান সভার প্রভাব ছিল –
1. কৃষকদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পায়।
2. কৃষকরা সংঘবদ্ধভাবে তাদের অধিকারের দাবি তুলতে সক্ষম হয়।
3. ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কৃষকদের অংশগ্রহণ বাড়ে।

কিষান সভা ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সম্পর্ক কেমন ছিল?

অনেক কংগ্রেস নেতাই কিষান সভাকে সমর্থন করতেন, কিন্তু কিষান সভা মূলত কৃষকদের স্বার্থে স্বাধীনভাবে কাজ করত।

কিষান সভার দাবিগুলো কতটা সফল হয়েছিল?

স্বাধীনতার পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয় এবং কৃষকদের কিছু দাবি মেটানো হয়, তবে অনেক ক্ষেত্রেই পূর্ণ সাফল্য আসেনি।

বর্তমানে কিষান সভার অস্তিত্ব আছে কি?

হ্যাঁ, বিভিন্ন রাজ্যে কিষান সভার শাখা সক্রিয় রয়েছে এবং কৃষকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে চলেছে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

About The Author

Gopi

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

অধঃক্ষেপণ কাকে বলে? অধঃক্ষেপণের রূপভেদ গুলি আলোচনা করো।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা সম্পর্কে টীকা লেখো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে ভারতের শ্রমিক আন্দোলনগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে কৃষক সমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল?