এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী ব্যাসার্ধ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সমযোজী ব্যাসার্ধ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
দ্বিপরমাণুক অণুর ক্ষেত্রে, পরমাণু দুটি সমযোজী একবন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকা অবস্থায়, তাদের নিউক্লিয়াস দুটির মধ্যবর্তী দূরত্বের অর্ধেককে সমযোজী ব্যাসার্ধ বলে। সাধারণত সমযোজী ব্যাসার্ধ পরিমাপ করা হয় অ্যাংস্ট্রম (Å) [1Å = 10-10 m] বা পিকোমিটার (pm) [1 pm = 10-12 m] বা ন্যানোমিটার (nm) [1 nm = 10-9 m] এককে। I2 অণুতে সমযোজী এক বন্ধন দ্বারা যুক্ত দুটি I পরমাণুর নিউক্লিয়াসদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব 278 pm। সুতরাং, এর সমযোজী ব্যাসার্ধ = \(\frac{278}2\)pm = 139 pm।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজী ব্যাসার্ধের সংজ্ঞা কী?
সমযোজী ব্যাসার্ধ হলো একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে তার সমযোজী বন্ধনের মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত কার্যকরী দূরত্ব। আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, একই মৌলের দুটি পরমাণু একটি সমযোজী একবন্ধন দ্বারা যুক্ত থাকলে, তাদের নিউক্লিয়াস দুটির মধ্যবর্তী দূরত্বের অর্ধেককেই সমযোজী ব্যাসার্ধ বলে।
সমযোজী ব্যাসার্ধ পরিমাপের একক কী?
সমযোজী ব্যাসার্ধ সাধারণত নিম্নলিখিত এককগুলোতে পরিমাপ করা হয় –
1. অ্যাংস্ট্রম (Å) – 1 Å = 10-10 m
2. পিকোমিটার (pm) – 1 pm = 10-12 m
3. ন্যানোমিটার (nm) – 1 nm = 10-9 m
I2 (আয়োডিন) অণুর সমযোজী ব্যাসার্ধ কত?
I2 অণুতে দুটি আয়োডিন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যকার দূরত্ব 278 pm। যেহেতু এটি একটি দ্বিপরমাণুক অণু, তাই আয়োডিন পরমাণুর সমযোজী ব্যাসার্ধ হবে মোট দূরত্বের অর্ধেক, অর্থাৎ 139 pm।
বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সমযোজী ব্যাসার্ধ কী একই?
না, বিভিন্ন মৌলের জন্য সমযোজী ব্যাসার্ধ ভিন্ন হয়। এটি মূলত পরমাণুর আকারের উপর নির্ভর করে। পর্যায় সারণিতে একই পর্যায়ে বাম থেকে ডানে গেলে সমযোজী ব্যাসার্ধ সাধারণত হ্রাস পায় এবং একই গ্রুপে উপর থেকে নিচে নামলে তা বৃদ্ধি পায়।
সমযোজী ব্যাসার্ধ কেন উপকারী?
সমযোজী ব্যাসার্ধ জানা অত্যন্ত উপকারী কারণ –
1. বন্ধন দৈর্ঘ্য পূর্বাভাস – দুটি পরমাণুর সমযোজী ব্যাসার্ধ যোগ করলে তাদের মধ্যে গঠিত সমযোজী একবন্ধনের দৈর্ঘ্য আনুমানিক পাওয়া যায়। উদাহরণ – C–C বন্ধনের দৈর্ঘ্য ≈ (কার্বনের ব্যাসার্ধ + কার্বনের ব্যাসার্ধ)
2. অণুর আকৃতি ও গঠন – বন্ধনের দৈর্ঘ্য একটি অণুর সামগ্রিক আকৃতি ও স্থায়িত্ব নির্ধারণে সাহায্য করে।
সমযোজী ব্যাসার্ধ এবং ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধের মধ্যে পার্থক্য কী?
সমযোজী ব্যাসার্ধ এবং ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. সমযোজী ব্যাসার্ধ – একটি সমযোজী বন্ধনে আবদ্ধ পরমাণুর কার্যকরী আকারের পরিমাপ।
2. ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধ – একটি বন্ধনহীন পরমাণুর (যেমন – একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস পরমাণু বা দুটি পৃথক অণুর সংলগ্ন পরমাণু) কার্যকরী আকারের পরিমাপ। এটি সাধারণত সমযোজী ব্যাসার্ধের তুলনায় বড় হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী ব্যাসার্ধ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন