এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন?
সশস্ত্র বিপ্লববাদের ইতিহাসে বাংলার অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার এক স্মরণীয় নাম।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের বিপ্লবী দলে যোগদান –
ছাত্রাবস্থাতেই প্রীতিলতা জাতীয়তাবাদের মন্ত্রে দীক্ষিত হন। প্রথমে ঢাকার দীপালি সংঘে পরে কলকাতার দীপালি ছাত্রী সংঘে যোগ দিয়ে লাঠি খেলা, ছোড়া খেলা এবং অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নেন। পরবর্তীকালে মাস্টারদা-র নেতৃত্বে সংগঠিত বিপ্লবী দলের তিনি প্রথম মহিলা সদস্য হন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন –
মাস্টারদা-র সহকর্মীরূপে তিনি বেশ কিছু বিপ্লবী পরিকল্পনা রচনার সাক্ষী ছিলেন। 1930 খ্রিস্টাব্দের 18 এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ঘটনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। চট্টগ্রামের রেল ও টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস, পুলিশ লাইন দখল, জালালাবাদের মুক্তি যুদ্ধ প্রভৃতি কর্মসূচির তিনি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিলেন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ –
অগ্নিকন্যা প্রীতিলতার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি ছিল পাহাড়তলির ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ ও আত্মাহুতি দান। চট্টগ্রাম শহরের উত্তর দিকে পাহাড়তলি স্টেশনের কাছে অবস্থিত এই ইউরোপীয়ান ক্লাবটি ছিল ব্রিটিশের প্রমোদকেন্দ্র। প্রীতিলতার নেতৃত্বে 1932 খ্রিস্টাব্দের 24 সেপ্টেম্বর রিপাবলিকান আর্মির একদল যুবক এই ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ করেন। বিপ্লবীদের আক্রমণে একজন শ্বেতাঙ্গ নিহত ও এগারো জন আহত হয়।
প্রীতিলতার আত্মাহুতি –
ইউরোপীয়ন ক্লাব আক্রমণকালে প্রীতিলতা গুলিবিদ্ধ হন। সঙ্গীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ধরাপড়ার অসম্মান থেকে বাঁচতে তিনি পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন।
সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মন্তব্য –
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম মহিলা শহিদ হিসেবে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। তাঁর আত্মবলিদান নারী সমাজের সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল ইতিবৃত্ত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কে ছিলেন?
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের একজন অগ্রগামী নেত্রী। তিনি মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বাধীন চট্টগ্রামের বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম নারী শহিদ হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছেন।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীভাবে বিপ্লবী দলে যোগ দেন?
ছাত্রাবস্থায় ঢাকা ও কলকাতার দীপালি ছাত্রী সংঘের মাধ্যমে তিনি জাতীয়তাবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। পরে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী দলে যোগ দিয়ে অস্ত্র চালনা ও গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন।
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের ভূমিকা কী ছিল?
1930 সালের 18 এপ্রিল চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পরিকল্পনা ও সংঘটনে প্রীতিলতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি রেল ও টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ বিভিন্ন গোপন মিশনে অংশ নেন।
পাহাড়তলি ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের অবদান কী?
1932 সালের 24 সেপ্টেম্বর প্রীতিলতা একদল বিপ্লবীর নেতৃত্ব দিয়ে পাহাড়তলির ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করেন। এই ক্লাব ছিল ব্রিটিশদের প্রমোদকেন্দ্র। আক্রমণে একজন ব্রিটিশ নিহত ও 11 জন আহত হয়।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীভাবে মৃত্যুবরণ করেন?
ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং ব্রিটিশ সৈন্যদের হাতে ধরা পড়ার আগে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রীতিলতার গুরুত্ব কী?
তিনি প্রথম নারী বিপ্লবী যিনি সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আত্মাহুতি দেন। তাঁর বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম নারীদের স্বাধীনতা আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করে।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে কী উপাধি দেওয়া হয়?
তাঁকে “অগ্নিকন্যা” ও “বাংলার জননী” হিসেবে সম্মানিত করা হয়।
প্রীতিলতার আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মূল্য কী?
তাঁর আত্মবলিদান নারীদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের পথ প্রশস্ত করে এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামকে নতুন মাত্রা দেয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কীরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে নারী, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন