এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?
তড়িৎলেপনের সময় নীচের বিষয়গুলির ওপর নজর রাখা প্রয়োজন —
- তড়িদবিশ্লেষ্য পদার্থের দ্রবণের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা বেশি হওয়া প্রয়োজন। দ্রবণের তড়িৎ পরিবহণ ক্ষমতা কম হলে উচ্চ পরিবহণ ক্ষমতাবিশিষ্ট ধাতব লবণ যোগ করা উচিত।
- উষ্ণ দ্রবণে ধাতব আয়নের পরিমাণ বেশি থাকা দরকার।
- দ্রবণে অ্যানোডের জারিত হওয়ার হার এমন হওয়া উচিত যাতে দ্রবণের ধাতব আয়নের গাঢ়ত্ব সর্বদা স্থির থাকে।
- তড়িদবিশ্লেষ্য দ্রবণটি যেন স্থায়ী প্রকৃতির হয় অর্থাৎ বাতাসের সংস্পর্শে এটি যেন বিক্রিয়া না করে সেটি লক্ষ রাখা উচিত।
- তড়িৎলেপনের ক্ষেত্রে বেশি সময় ধরে কম মাত্রায় সমপ্রবাহী তড়িৎপ্রবাহ চালনা করা উচিত, ফলে তড়িদবিশ্লেষ্য দ্রবণটি গরম হয়ে ওঠে না।
- যে ধাতব বস্তুটি ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত হবে সেটির পৃষ্ঠতল মসৃণ ও পরিষ্কার হওয়া দরকার, তাহলে তড়িৎলেপন সমানভাবে পাতলা স্তরের প্রলেপ পড়বে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
তড়িৎলেপনের জন্য দ্রবণের কী কী গুণ থাকা আবশ্যক?
তড়িৎলেপনের জন্য দ্রবণের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ হল –
1. দ্রবণের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা বেশি হতে হবে।
2. দ্রবণটি স্থায়ী হতে হবে, অর্থাৎ বাতাসের সাথে সহজে বিক্রিয়া করবে না।
3. দ্রবণে ধাতব আয়নের পরিমাণ পর্যাপ্ত এবং সম্ভব হলে উষ্ণ অবস্থায় রাখা ভালো।
4. অ্যানোডের জারণের হার এমন হতে হবে যাতে দ্রবণে ধাতব আয়নের ঘনত্ব স্থির থাকে।
দ্রবণের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা কম হলে কী করা উচিত?
দ্রবণের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা কম হলে, তাতে উচ্চ পরিবহন ক্ষমতাসম্পন্ন ধাতব লবণ যোগ করা উচিত। এটি দ্রবণের মাধ্যমে তড়িৎপ্রবাহ চলাচল সহজ করে।
তড়িৎলেপনের সময় তড়িৎপ্রবাহ কী রকম হওয়া প্রয়োজন?
তড়িৎলেপনের সময় কম মাত্রার সমপ্রবাহী (DC) তড়িৎপ্রবাহ ব্যবহার করা উচিত এবং তা অধিক সময় ধরে চালনা করতে হবে। এতে দ্রবণ অতিরিক্ত গরম হয় না এবং মসৃণ ও সমান প্রলেপ পড়ে।
ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত বস্তুর পৃষ্ঠতল কেমন হওয়া দরকার এবং কেন?
ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত বস্তুর পৃষ্ঠতল অবশ্যই সম্পূর্ণ মসৃণ ও পরিষ্কার হওয়া দরকার। এর প্রধান কারণ হল –
1. মসৃণ ও সমান প্রলেপ – পরিষ্কার ও মসৃণ পৃষ্ঠতলে প্রলেপ সমানভাবে এবং পাতলা স্তরে জমা হয়।
2. প্রলেপের মজবুতি – পৃষ্ঠতলে ময়লা, তৈল বা জারণ থাকলে প্রলেপ দুর্বলভাবে লাগে এবং সহজে খসে পড়তে পারে।
অ্যানোডের ভূমিকা কী?
অ্যানোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল দ্রবণে ধাতব আয়নের ঘনত্ব বজায় রাখা। অ্যানোডটি এমন ধাতু দিয়ে তৈরি হয় যেটি জারিত হয়ে দ্রবণে ধাতব আয়ন সরবরাহ করে। এর ফলে দ্রবণের ধাতব আয়নের গাঢ়ত্ব স্থির থাকে এবং লেপন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে চলে।
তড়িৎলেপন কেন করা হয়?
তড়িৎলেপনের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হল –
1. সুরক্ষা – মরিচা বা ক্ষয়রোধ করা (যেমন, লোহার ওপর জিংক বা ক্রোমিয়ামের প্রলেপ)।
2. সৌন্দর্য্যবর্ধন – চকচকে ও আকর্ষণীয় উপস্থিতি দেওয়া (যেমন, সোনা বা রূপার প্রলেপ)।
3. পৃষ্ঠতলের মজবুতি – যান্ত্রিক টেকসইতা ও ঘর্ষণ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎলেপনের সময় কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন